নিকোস বেলোয়ানিস (Nikos Beloyannis) (১৯১৫ - ৩০ মার্চ, ১৯৫২) একজন গ্রীক সাম্যবাদী রাজনীতিবিদ এবং নাৎসি বিরোধী প্রতিরোধ বাহিনীর সদস্য, শহীদ।[১]
বেলোয়ানিস ১৯১৫ সালে গ্রিস দেশের আমালিয়াদা'তে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার তুলনামূলক ভাবে অবস্থাপন্ন ছিলনা। তিনি অ্যাথেন্স এ আইন পড়তে যান। এথেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন কমিউনিস্ট ইউথ অফ গ্রীস নামক ছাত্র সংগঠনের সংগে যুক্ত হন। গ্রীস কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ পান ১৯৩৪ সালে। বিপ্লবাত্মক কাজকর্মের জন্যে লোয়ানিস মেটাজাসের শাসনের সময় তিনি গ্রেপ্তার হন। আইন পাঠ সম্পন্ন হওয়ার আগে বন্দী করে তাকে আক্রোনাপোলিয়া জেলখানায় পাঠানো হয়।[২]
গ্রীসে অক্ষশক্তির প্রবেশ ঘটলে তিনি ১৯৪১ সালে আবার গ্রেপ্তার হন এবং জেল থেকে পালিয়ে যান ১৯৪৩ সালে। নাৎসী ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী গ্রীক গণ মুক্তি ফৌজ (Greek Peoples Liberation Army) এ যোগদান করেন মুক্তি ফৌজ নেতা বিপ্লবী আরিস ভেলুচিওটিস এর নেতৃত্বে। ডেমোক্রেটিক আর্মি অফ গ্রীসে'র পলিটিকাল কমিশার নির্বাচিত হন। গ্রীক গৃহযুদ্ধে পরাজয়ের পর ১৯৪৯ সালে দেশ ছাড়েন। ১৯৫০ সালে বেলোয়ানিস আবার স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন ও কমিউনিস্ট পার্টি পূনর্গঠনের কাজে হাত দেন। তখন গ্রীস কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ সংগঠন ছিল। ২০ ডিসেম্বর, ১৯৫০ সালে তিনি আবার গ্রেপ্তার হয়ে যান গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে তিনি ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
১৯ অক্টোবর, ১৯৫১ বেলিয়ানিসের বিচার শুরু হয় এথেন্সে সামরিক আদালতে। সর্বমোট ৯৪ জনকে দেশ বিরোধী অভ্যুত্থান, নিষিদ্ধ সংগঠনকারী, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন বেলিয়ানিস। তাকে ম্যান উইথ কারনেশন' বলা হতো। শিল্পী পাবলো পিকাসোর আঁকা ছবিতে তার কারনেশন ফুলের সাথের ছবিটি সর্বজনপরিচিত। তাদের বিচারে আন্তর্জাতিক বুদ্ধিজীবী মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। কোর্ট মার্শালে বেলোয়ানিস ও তার সাথীদের মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হলে সারা পৃথিবীর শিল্পী সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবী দের হাজার হাজার টেলিগ্রাম এসে পৌছায় গ্রীক সরকারের কাছে। পিকাসো ছাড়াও চার্লি চ্যাপলিন, জঁ-পল সার্ত্র্, পল এলুয়ার, নাজিম হিকমত প্রমুখেরা তার মুক্তির দাবী জানান। ৩০ মার্চ, ১৯৫২ সালে সকালবেলায় তাকে গউডি বন্দীশালায় হত্যা করা হয়। অন্যান্য বন্দীদের যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল।
মৃত্যুর আগে তার লেখা শেষ চিঠিতে দুটি বই এর কথা জানা যায়। গ্রীস সাহিত্যের ইতিহাস ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে লেখা ছিল এই বই দুটি। ১৯৯৮ সালে পাণ্ডুলিপি টি উদ্ধার ও ছাপানো হয়।[২]
|প্রথমাংশ1=
এর |শেষাংশ1=
নেই (সাহায্য)