নিবেদিতা সেতু | |
---|---|
স্থানাঙ্ক | ২২°৩৯′০৮″ উত্তর ৮৮°২১′১২″ পূর্ব / ২২.৬৫২২৮৬° উত্তর ৮৮.৩৫৩২৫৮° পূর্ব |
অতিক্রম করে | হুগলি নদী |
স্থান | বালি-দক্ষিণেশ্বর |
বৈশিষ্ট্য | |
মোট দৈর্ঘ্য | ৮৮০ মিটার (২,৮৯০ ফু) |
প্রস্থ | ২৯ মিটার (৯৫ ফু) |
স্প্যানের সংখ্যা | ৭ |
ইতিহাস | |
নির্মাণ শুরু | এপ্রিল, ২০০৪ |
চালু | জুলাই, ২০০৭ |
অবস্থান | |
নিবেদিতা সেতু হল কলকাতা শহরের কাছে অবস্থিত একটি কেবল-স্টেয়ড সেতু। এটির আগেকার নাম ছিল দ্বিতীয় বিবেকানন্দ সেতু। সেতুটি বিবেকানন্দ সেতুর সমান্তরালে এবং ৫০ মিটার ভাটিতে অবস্থিত। সেতুটির নামকরণ করা হয়েছে স্বামী বিবেকানন্দের শিষ্যা ও সমাজকর্মী ভগিনী নিবেদিতার নাম অনুসারে। জাতীয় সড়ক ২ ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে এই সেতুর উপর দিয়ে গিয়েছে। এই সেতুটি জাতীয় সড়ক ২-এর সঙ্গে কলকাতা শহরেরও যোগাযোগ রক্ষা করছে। এই সেতুর উপর দিয়ে দৈনিক গড়ে ৪৮,০০০ গাড়ি যাতায়াত করে।[১][২]
বিবেকানন্দ সেতু চালু হয়েছিল ১৯৩২ সালে। পুরনো হয়ে যাওয়ার দরুন এই সেতুতে ভারি যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই একটি দ্বিতীয় সেতুর প্রয়োজন অনুভূত হয়।[২]
বিবেকানন্দ সেতু একটি ঐতিহাসিক সেতু। তাই এই সেতুটিকে যাতে দেখা যায় এমনভাবে নতুন সেতুটি তৈরি করতে হয়েছে। তাছাড়া সেতু নির্মাণের সময় আরও একটি জিনিস মনে রাখতে হয়েছে, ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িকে যেন সেতুটির চেয়ে ছোটো না দেখায়। আবার সেতুটি যাতে পঞ্চাশ বছর ভারি যানবাহন চলার যোগ্য থাকে, সেদিকেও নজর দিতে হয়েছে।
সেতুটি নদীতলের সমান্তরালে অবস্থিত ডিপ-ওয়েল ফাউন্ডেশনের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। এতে ছয়টি লেন আছে, যাতে দ্রুতগামী যানবাহন চলাচল করতে পারে। ২৫৪টি প্রি-স্ট্রেসড কনক্রিট গার্ডার এই ক্যারেজওয়েটিকে ধারণ করে আছে। ১৪ মিটার উঁচু পাইলন থেকে কেবল নেমেও সেতুটিকে অতিরিক্ত ধারণক্ষমতা দিয়েছে।
নিবেদিতা সেতুই ভারতের প্রথম সেতু যেটি একটি সিঙ্গল প্রোফাইল কেবল-স্টেয়ড সেতু। নকশা অনুযায়ী, সেতুর স্তম্ভগুলির উচ্চতা দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের তুলনায় কম রাখা হয়েছে।
এই সেতুটি তৈরি করতে ৬৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে। নির্মাণের দায়িত্বে ছিল লারসেন অ্যান্ড টার্বো কোম্পানি। ২০০৭ সালের জুলাই মাসে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
সেতুটি দেশের প্রথম মাল্টি-স্প্যান, সিঙ্গল-স্প্যান কেবল-সাপোর্টেড এক্সট্রা-ডোজড সেতু। ছোটো পাইলন ও ১১০ মিটারের সাতটি অবিচ্ছেদ্য স্প্যান সহ সেতুর দৈর্ঘ্য ৮৮০ মিটার বা ২,৮৮৭ ফুট। এটি ২৯ মিটার চওড়া ও ছয় লেন যানবাহন বহনে সক্ষম।[২]
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান সেগমেন্টাল ব্রিজ ইনস্টিটিউটের একটি পুরস্কার পেয়েছে নিবেদিতা সেতু।[৩]
২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী, নিবেদিতা সেতুতে টোল বাবদ হালকা যাত্রীবাহী গাড়িগুলিকে ৩৩ টাকা, বাসকে ৬৫টাকা এবং ট্রাক ও মাল্টি-অ্যাক্সেল যানবাহনগুলিকে ৯৯ টাকা থেকে ১৮৩ টাকা দিতে হয়।[৪]