নির্মল ভার্মা | |
---|---|
জন্ম | সিমলা, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত | ৩ এপ্রিল ১৯২৯
মৃত্যু | ২৫ অক্টোবর ২০০৫ নতুন দিল্লি, ভারত | (বয়স ৭৬)
পেশা | ঔপন্যাসিক, লেখক, কর্মী, অনুবাদক |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | পদ্মভূষণ (২০০২) |
নির্মল ভার্মা (৩ এপ্রিল ১৯২৯ - ২৫ অক্টোবর ২০০৫) ছিলেন একজন হিন্দি লেখক, ঔপন্যাসিক, কর্মী এবং অনুবাদক। তাকে হিন্দি সাহিত্যের কথাসাহিত্য আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়ে থাকে।[১] তার প্রথম গল্প সংকলন পারিন্দে (পাখি) এই আন্দোলনের প্রথম স্বাক্ষর হিসেবে বিবেচিত হয়।[২]
নির্মল ভার্মা ৩ এপ্রিল ১৯২৯ সালে সিমলায় জন্মগ্রহণ করেন। সিমলায় তার বাবা ব্রিটিশ ভারত সরকারের সিভিল অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের একজন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতেন। আট ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সপ্তম সন্তান। তার এক ভাই ভারতের অন্যতম সেরা শিল্পী রাম কুমার।[৩] নির্মলের স্ত্রী গগন গিলও একজন লেখিকা।[৪][৫]
ছাত্রাবস্থায় ১৯৪৭-৪৮ সালে নির্মল দিল্লিতে মহাত্মা গান্ধীজির সকালের প্রার্থনা সভায় নিয়মিত যোগদান করতেন। যদিও তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন। ১৯৫৬ সালে হাঙ্গেরিতে সোভিয়েত আক্রমণের পর তিনি কমিউনিস্ট পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন।
১৯৫০ এর দশকের গোড়ার দিকে একটি ছাত্রদের পত্রিকার জন্য তিনি প্রথম গল্প লেখেন। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট স্টিফেন কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাশ করেন।
দিল্লিতে শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্মজীবনের শুরু। এই সময় থেকেই বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন।
তিনি ১০ বছর চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে ছিলেন। প্রাগে থাকাকালীন আধুনিক চেক লেখকদের যেমন কারেল ক্যাপেক, মিলান কুন্ডেরা এবং বোহুমিল হরবালের লেখা হিন্দিতে অনুবাদ করার জন্য তাকে ওরিয়েন্টাল ইনস্টিটিউট দ্বারা আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি চেক ভাষাও শিখেছিলেন। প্রাগ বসন্তের ফলস্বরূপ ১৯৬৮ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। আসার আগে হিন্দিতে নয়টি বিশ্ব ক্লাসিক অনুবাদ করেন।
প্রাগে থাকাকালীন তিনি ইউরোপের অনেক স্থান ভ্রমণ করেন। পরে তার ইউরোপ ভ্রমণের কথা সাতটি ভ্রমণকাহিনীতে লেখেন। যার মধ্যে রয়েছে চিঁড়িও পর চাঁদনী (১৯৬২), হার বারিশ মে (১৯৭০) এবং ধুন্ধ সে উঠতি ধুন উল্লেখযোগ্য। ১৯৬৪ সালে প্রাগে থাকাকালীন তার ছাত্রজীবনের উপর ভিত্তি করে তিনি প্রথম উপন্যাস ভে দিন (সেই দিনগুলি) লেখেন। প্রাগ থেকে ফিরে আসার পর তার কমিউনিজমের উপর মোহভঙ্গ হয়। তিনি ভারতীয় জরুরী অবস্থার বিরুদ্ধে উচ্চ সোচ্চার ছিলেন। তিব্বতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। নির্মল ভার্মার কাজের একটি সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন রাম প্রকাশ দ্বিবেদী।[৬]
১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ভোপালের ভারত ভবনে নিরালা সৃজনশীল লেখার চেয়ার-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮-৯০ সালে তিনি সিমলায় যশপাল ক্রিয়েটিভ রাইটিং চেয়ার-এর নির্দেশক ছিলেন। ১৯৭২ সালে তার গল্পের উপর ভিত্তি করে নির্মিত কুমার শাহানি পরিচালিত একটি চলচ্চিত্র মায়া দর্পণ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার পায়।[৭]
পাঁচ দশক ধরে সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় যেমন গল্প, ভ্রমণকাহিনী এবং প্রবন্ধ লেখার কর্মজীবনে তিনি পাঁচটি উপন্যাস, আটটি ছোটগল্পের সংকলন এবং প্রবন্ধ ও ভ্রমণকাহিনী সহ নয়টি নন-ফিকশন বই লিখেছেন।[৮]
২০০৫ সালের ২৫ অক্টোবর নতুন দিল্লিতে নির্মল ভার্মার জীবনাবসান হয়।