নির্ভয়া তহবিল (ইংরেজি: Nirbhaya Fund) হল ২০১৩ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে ভারত সরকারের ঘোষণা করা ১০০০ কোটি ভারতীয় টাকার একটি আর্থিক তহবিল। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম আশা করেছিলেন যে এই তহবিল ভারতীয় মহিলাদের সম্মান ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার কার্যসূচীকে সহায়তা করবে। নির্ভয়া নামটি ছিল ২০১২ সালের দিল্লীতে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার এক ভুক্তভোগীর ছদ্মনাম। মহিলা ও শিশু বিকাশ মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই তহবিলের অর্থ কোথায় খরচ হবে। এই তহবিলের একটি প্রয়োগ হল হিংসার বলি হওয়া মহিলাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য 'ওয়ান স্টপ সেন্টার' স্থাপন করা।
মহিলা ও কন্যা সন্তানদের সশক্তিকরণ, সম্মান ও সুরক্ষার জন্য ১০০০ কোটি টাকার সরকারি অবদানের সঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তাঁর ২০১৩ সালের বাজেট ভাষণে নির্ভয়া তহবিল গঠনের ঘোষণা করেছিলেন।[১] এই তহবিলটি সরকারের অর্থ মন্ত্রক কর্তৃক পরিচালিত হয়।[২][৩]
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় মহিলাদের সম্মান ও সুরক্ষা বৃদ্ধি করার জন্য এই তহবিল ব্যবহার করার জন্য প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছিল। প্রস্তাব দাখিল করা মন্ত্রণালয়সমূহ ছিল তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয়, রেল মন্ত্রণালয় ও গৃহ মন্ত্রণালয়। গৃহ মন্ত্রণালয় নির্ভয়া তহবিলের অধীনে মোট ১৯৪.৪৪ কোটি টকা ব্যয়পূর্বক লক্ষ্ণৌর জন্য একটি সুরক্ষিত শহর প্রকল্প অনুমোদন করে।[৪]
২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয় রাজ্যসমূহকে নির্ভয়া তহবিলের তত্ত্বাবধানে নতুন পরিকল্পনার প্রস্তাব ও রূপায়ণ করার জন্য বলেছিল।[৫][৬][৭]
এই তহবিল সমগ্র দেশে 'ওয়ান স্টপ সেন্টার' বা 'সখী' সৃষ্টি করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। এই সেন্টারে হিংসার বলি হওয়া মহিলাদের আর্থিক, সামাজিক ও আইনগত সেবা প্রদান করা হয়।[৮] ২০১৩ সালের এক পরামর্শ অনুসারে প্রথমে প্রতিটি ভারতীয় রাজ্যে কমপক্ষে একটি করে ওয়ান স্টপ সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছিল।[৯] নির্ভয়া তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত রায়পুর ও লক্ষ্ণৌ ওয়ান স্টপ সেন্টারকে মহিলা সশক্তিকরণের জন্য অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপে যথাক্রমে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নারী শক্তি পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল।[১০]