নিনা সিব্বল | |
---|---|
জন্ম | ১৯৪৮ পুনে |
মৃত্যু | ২০০০ |
পেশা | ভারতীয় বিদেশ পরিষেবা |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় |
ধরনসমূহ | ছোট গল্প, উপন্যাস |
দাম্পত্যসঙ্গী | কপিল সিব্বল |
নিনা সিব্বল (১৯৪৮ – ২০০০) ছিলেন একজন ভারতীয় কূটনীতিক এবং লেখক। পুরস্কার বিজয়ী উপন্যাস যাত্রা এবং ইংরেজি ভাষায় অন্যান্য কথাসাহিত্য রচনা ছাড়াও ভারতীয় বিদেশ সেবায় তার কাজের জন্য তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন।
নিনা জন্মগ্রহণ করেন পুনেতে।[১] তার বাবা ছিলেন ভারতীয় এবং মা গ্রিক।[২] তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় (মিরান্ডা হাউস) থেকে ইংরাজিতে এমএ করার পর, তিন বছর ধরে সেখানে শিক্ষকতা করেন। তিনি আইন বিষয়েও যোগ্যতা অর্জন করেন এবং ফরাসি ভাষা অধ্যয়ন করেন। ১৯৭২ সালে সিব্বল ভারতীয় বিদেশী সেবায় যোগ দেন এবং নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘে কাজ শুরু করেন। পরে তিনি এক সাংবাদিককে বলেন যে এটি তাকে "গভীরতম সাংস্কৃতিক আঘাত" দিয়েছে।[২] তার আর কাজের জায়গা ছিল কায়রো এবং তিন বছরের জন্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনের উপ-মহাপরিচালকের পদ। ১৯৯২ সালে তিনি প্যারিসে জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থায় ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি হয়েছিলেন, এবং ১৯৯৫ সালে এদের নিউইয়র্কের যোগাযোগ অফিসের পরিচালক হওয়ার জন্য যান।[৩]
তিনি আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ কপিল সিব্বলকে বিবাহ করেন। তাদের দুই ছেলে রয়েছে। যদিও স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই ব্যস্ততম চাকুরিজীবন ছিল, তবুও তারা এক "আন্তর্মহাদেশীয়" বিবাহবন্ধন বজায় রেখেছিলেন; বলেছেন রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক এবং লেখক শশী থারুর।[৪] তিনি ২০০০ সালের জুন মাসে স্তন ক্যান্সারে[৪] মারা যান।[৫] তার স্বামী তার স্মরণে নিনা সিব্বল মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড চালু করেন। যিনি, অক্ষম এবং অসুবিধাগ্রস্ত শিশুদের সাহায্য করার জন্য উদ্ভাবনী পদ্ধতি ব্যবহার করে কোন সংস্থার হয়ে একটি নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন, তার জন্য অল ইন্ডিয়া উইমেনস এডুকেশন ফান্ড এসোসিয়েশন বাৎসরিকভাবে এই পুরস্কারটি প্রদান করে।[৬]
শ্রীমতি সিব্বল ছোট গল্পকার হিসাবে নজর কাড়েন ১৯৮৫ সালে, যখন তার ছোট গল্প কি জ্বলজ্বলে মহিমা, এশিয়াউইক ছোট গল্প প্রতিযোগিতায় জেতে।[১] এটি পরে ১৯৯১ সালে পুরস্কার বিজয়ী এশিয়ান কথাসাহিত্য নামক একটি সংহিতার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। [৭]
১৯৮৭ সালে প্রকাশিত যাত্রা উপন্যাসটি, এক শিখ পরিবার একশো বছরেরও বেশি সময়ের জীবনযাত্রার গল্প। সময়ের সাথে সাথে তাদের চলা থেকেই এই শিরোনামটি এসেছে: "যাত্রা" যার অর্থ যাত্রা বা তীর্থযাত্রা।[১] বইটির জাদুকরি উপলব্ধি, বিশেষতঃ একটি চরিত্রের চামড়ার রং পরিবর্তনের সাপেক্ষে, সালমান রুশদির মিডনাইটস চিল্ড্রেন এর সঙ্গে তুলনা করা, নিয়ে সমালোচকেরা মন্তব্য করেন।[১] লেখক তার গল্পে পুরাণের উপাদান ব্যবহার করেন।[৮] গল্পের বিষয়বস্তুতে ছিল চিপকো (অরণ্য বাঁচাও) আন্দোলন, পাঞ্জাবের ইতিহাস, বাংলাদেশের উৎপত্তি, এবং বাবার জন্য নায়িকার অনুসন্ধান।[৯] একাধিক বিষয়বস্তু ব্যবহার করে জনাকীর্ণ করে ফেলার জন্য উপন্যাসটির সমালোচনা করা যেতেই পারে [১] কিন্তু সামগ্রিকভাবে এটিকে সবাই বেশ পছন্দ করেছিল। এটি ১৯৮৭ সালে আলজিয়ার্সে সাহিত্যের জন্য আন্তর্জাতিক গ্রাঁ প্রি পুরস্কার জেতে।[১]
১৯৯১ সালে, শ্রীমতি সিব্বলের ছোট গল্প সংগ্রহ, গুজ্জর মাল এর গুপ্ত জীবন, প্রকাশিত হয়।। গল্পগুলি বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে লেখা, তাদের মধ্যে কিছু কিছু কাল্পনিক নাম নিয়ে ছদ্মবেশ ধরে আছে, যেমন : মুলগারি ইকোস বুলগেরিয়া স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার। [২] এই প্রেক্ষিত কেবলমাত্র রাজনৈতিক বা বর্ণময় পশ্চাদপট হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে তা নয়, তা চরিত্রের জীবন এবং আবেগের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে।[২] শিরোনামের গল্পটি ছাড়াও এই সংগ্রহে ছয়টি অন্য গল্প আছে : তার মৃত্যু দিয়ে, সাঁতার, দাদারাও এর মুখ, পশম বুট, আশ্রয়স্থল এবং যে মানুষটি জ্ঞানালোক খুঁজছিলেন।[১০]
১৯৯৮ সালে লিখিত তার উপন্যাস, ন্যায়বিচারকারী কুকুর, কাশ্মীর নিয়ে লেখা, এবং একটি ধনী মুসলিম মেয়ের গল্প। শ্রীমতি সিব্বলের আগের দুটি বই সকলে যত পছন্দ করেছিল, এই বইটি তত জনপ্রিয় হয়নি। এক সমালোচক বলছেন যে, পূর্বের লেখার প্রতিশ্রুতি এই লেখাতে পাওয়া যায়নি।[১]