নীল নির্মোচন বা নীল নিষ্কাশন বা ব্লু ডিসচার্জ (নীল টিকেট নামেও পরিচিত) হচ্ছে সামরিক চাকরি থেকে অব্যহতি দেওয়ার একটি প্রশাসনিক রূপ যা ১৯১৬ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত ছিলো। এটা সম্মানজনক বা অসম্মানজনক কোনটিই নয়। ব্লু টিকেট অচিরেই সামরিক সদস্যদের পদ থেকে অপসারণের জন্য কমান্ডারদের পছন্দের হয়ে ওঠে। এটা আফ্রো-আমেরিকানদের মধ্যে সামঞ্জস্যহীনতা তৈরী করে।
নীল নিষ্কাশনের শিকার হওয়া ব্যক্তিগণ বেসামরিক জীবনে বৈষম্যের শিকার হয়। ভেটেরান্স প্রশাসন তাদেরকে G. I. বিলের সুযোগ সুবিধা গুলো প্রদান করতে অস্বীকার করে। তাদের জন্য কর্মসংস্থানও খুব কঠিন হয়ে পড়ে কারণ নিয়োগকর্তারা নীল নিষ্কাশনের ঋণাত্মক দিক গুলো সম্পর্কে সচেতন ছিলো। এর বিপক্ষে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে ব্লাক প্রেস এই ব্যাপারে অধিক উচ্চকন্ঠ ছিলো কারণ মাত্রাতিরিক্ত আফ্রো-আমেরিকান সামরিক সদস্য এর শিকার হয়। কনগ্রেসে আলোচনা হয় এবং ১৯৪৭ সাল থেকে নীল নিষ্কাশন বাতিল করে নতুন দুটি শ্রেণী চালু করা হয়ঃ সাধারণ এবং অনাকাংক্ষিত।
পূর্বের দুটি অপসারণ নিয়মকে প্রতিস্থাপন করে ১৯১৬ সালে নীল নিষ্কাশন তৈরী হয়। আগের নিয়ম দুটি ছিলো অসম্মানজনক প্রশাসনিক চাকরিচ্যুতিকরণ এবং অশ্রেণীবিভক্ত চাকরিচ্যুতিকরণ[১]। নামের সাথে এর আক্ষরিক মিলও ছিলো কারণ অপসারণের কথা নীল কাগজে লেখা থাকতো। একে অনেকসময় নীল টিকেট বলেও উল্লেখ করা হয়।[২] প্রথমদিকে ১ম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন সৈন্যকে এই ধরনের অপসারণ করা হয়। পরবর্তীতে আইনের মাধ্যমে এই ধরনের অপসারণ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় এবং পূর্বে করা এই ধরনের সকল অপসারণকে সম্মানজনক অপসারণে উন্নীত করা হয়।[৩]
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ইতিহাসে সমকামিতার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে বিচার, কারারুদ্ধকরণ এবং অসম্মানজনক অপসারণের সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কিছু সৈনিক এই অভিযোগে অভিযুক্ত হলে তা সামরিক আদালতের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা সৃষ্টি করে এবং কিছু কমান্ডার এর বদলে প্রশাসনিক বরখাস্তের প্রচলন শুরু করেন। সামরিক বাহিনীতে সমকামীদের অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু সংস্কার আন্দোলন চলার ফলে ১৯৪৬ সালে নীতি নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয় যে সমকামীদের সামরিক হাসপাতালে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের অধীনে পরীক্ষা করতে হবে এবং ৬১৫-৩১৫ প্রবিধানের ৮ ধারা মোতাবেক চাকরির জন্য অনুপযোগী হিসেবে বরখাস্ত করা হবে।[৪] এই রেগুলেশনের অধীনে ঠিক কতজন সমকামী গে এবং লেসবিয়ানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে সে হিসাব অজানা কিন্তু ১৯৪৬ সালে সেনাবাহিনীর অনুমান ৪৯,০০০ থেকে ৬৮,০০০ জন সেনা সদস্যকে বরখাস্ত করে। অন্যদিকে নৌবাহিনী প্রায় ৪,০০০ জনকে নীল টিকেটে অপসারণ করে। তবে এই অপসারণের মোট সময়কাল স্পষ্ট নয়।[৫]
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ যারা সমকামীতার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পরীক্ষা করে তারা প্রথমদিকে এর প্রমাণ পেলে অভিযুক্তকে চাকরিচ্যুত করার সুপারিশ করতো[৬]। কিন্তু পরবর্তীতে তারা যখন বুঝতে পারে নীল টিকেটধারীরা বেসামরিক জীবনে কি পরিমাণ নিগ্রহের শিকার হয় তখন তারা সেনাবাহিনীর প্রতি এই প্রথা বাতিলের আহবান জানায়। ১৯৪৪ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সার্জন জেনারেলের মনোরোগ পরামর্শক বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করা উইলিয়াম সি. মেনিঞ্জার চেষ্টা চালান যাতে সামরিক বাহিনী সামরিক পরিষেবাকালীন সময়ে কোন সমকামী সদস্য যদি কোন প্রকার অপরাধ না করে থাকেন তবে তাদেরকে সম্মানজনক অপসারণ ইস্যু করে।[৭]
একটি সংবাদ সুত্র বলে যে প্রশাসনিক নীল নিষ্কাশনের উদ্দেশ্য হচ্ছে 'বরখাস্ত যা অসম্মানজনক নয় কিন্তু ব্যক্তির স্বভাব বা আচরণ যা তাকে চাকরির জন্য অনুপযুক্ত করে যা অনিচ্ছাকৃত, ফেরত সৈন্যদের যতদ্রুত সম্ভব বেসামরিক জীবনে ফিরিয়ে নেওয়া যায়ঃ অ-প্রতিবন্ধী সৈনিককে দ্রুত দেশের অর্থনৈতিক জীবনে ফিরে পেতে এবং তার নিজের ব্যক্তিগত সমস্যা যেমন বেকারত্ব, শিক্ষা বা আর্থিক সুযোগ[৮]।
ভেটেরান্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ভিএ) নীল নিষ্কাশনের মাধ্যমে বরখাস্ত হওয়া ভেটেরানদের জি.আই. বিলের সুযোগ সুবিধা দিতে অস্বীকার করে[৯] কারণ এই বিলের নীতিমালায় অসম্মানজনক বরখাস্ত ব্যক্তিদের এই সুবিধা প্রদানের অনুমতি নেই।[১০] ১৯৪৫ সালে ভিএ সমকামিতার অভিযোগে বরখাস্তদের সুবিধা না দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশিক জারি করে।[১১] ২২ ডিসেম্বর ১৯৫৫ সালে ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া সার্কিট রেমন্ড ডব্লিউ লংগারনেকার এর আপীল অস্বীকার করে যিনি নীল অপসারণের কারণে ভিএ এর বিল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোর্ট অভ আপিল এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে। কোর্ট খুঁজে পায় যে ভিএ সুবিধা প্রধানে অসামঞ্জত্যা করছে। আদালত মন্তব্য করে যে সুবিধা প্রদান অস্বীকার করতে পারবে যদি লংগারনেকার শুধুমাত্র অসম্মানজনকভাবে বরখাস্ত হয়ে থাকে।[১২]
অধিকাংশ নিয়োগকর্তা সামরিক বাহিনীতে দ্বায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের আবেদন পত্রের সংগে অব্যহতি পত্র যুক্ত করতে বলে।[১৩] নীল নিষ্কাশনের শিকার ব্যক্তিগণ বেকারত্বের যন্ত্রণা ভোগ করছিলেন কারণ নিয়োগকর্তারা জানতেন যে নীল অপসারণ অর্থ এই ব্যক্তি অপ্রত্যাশিত। সেসকল নিয়োগকর্তারা সেপারেশন প্রোগ্রাম নাম্বার বা স্পিন নম্বর সম্পর্কে জানতেন না যা সামরিক বাহিনী অব্যহতি শ্রেণিবিভাগে ব্যবহার করতো। কমপক্ষে এরকম চারটি স্পিন নম্বর এ গে সম্পর্কিত অপসারণকে নির্দেশ করে।[১৪]
১৯৪৪ সালে জি.আই. বিলে কাজ করার সময়ে কংগ্রেস এটার অপব্যবহার সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে। আইনি আলোচনায় বলা হয় আমেরিকান সেনাবাহিনী শুধুমাত্র অসম্মানজনক অব্যহতি ব্যতীত অন্য সকল অব্যহতির কারণে সুবিধা পাবে[১৫]। সেনাবাহিনী বিশ্বাস করে একটি বড় সংখ্যার সেনাকে নীল অপসারণ দেওয়া হয়েছে অযৌক্তিক বা তুচ্ছ বিবেচনা করে দেওয়া হয়েছে[১৬]। রিয়ার এডমিরাল র্যান্ডাল জ্যাকব যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের সামনে শক্তভাবে এই বিধানের বিরোধিতা করেন যে এটা নৈতিকতাকে লঘু করবে এবং ভালো চাকরি রেকর্ড বজায় রাখতে অনুৎসাহিত করবে। বিলের একজন পৃষ্ঠপোষক সিনেটর বেনেট চ্যাম্প ক্লার্ক তার মত প্রকাশ করেন যে কিছু খুব বোকা এবং অদূরদর্শী আপত্তি তৈরী হবে। ক্লার্ক তার বক্তব্যে বলেন:
"সেনাবাহিনী নীল নিষ্কাশন করছে, অসম্মানজনক অপসারণ নামে করা হচ্ছে, তাদেরকে যাদের সামরিক সেবার প্রতি পর্যাপ্ত তৎপরতা প্রদর্শন ব্যতীত অন্য কোন অপরাধ নেই। আমি বলবো যখন সরকার একজন মানুষকে নাগরিক জীবন থেকে নিয়ে সামরিক সেবার নিয়োগ করে... এবং যথেষ্ট তৎপরতার অভাবে নীল নিষ্কাশন করে অথবা অসম্মানজনক অপসারণ করে এর অর্থ এই হতে পারেনা যে সেই লোকটি সৈন্যদের সাধারণ পাওয়া সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।[১৭] প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সব নীল নিষ্কাশনও পর্যালোচনা করা হয়েছে আপগ্রেড করার জন্য সম্মানিত।"[১৮]
জি আই বিল অপসারণ পর্যালোচনা বোর্ডকে অসম্মানজনক অপসারণ ব্যতীত সকল অপসারণের জন্য আপিল পর্যালোচনা করার সুযোগ রেখেছে। ১৯৪৫ থেকে ১৯৪৭ সালে এই বোর্ড নিয়মিতভাবে যেসকল সমকামী সৈন্য তাদের সামরিক জীবনে কোনপ্রকার জানা যৌন কর্ম করেনি তাদেরকে নীল নিষ্কাশন থেকে সম্মানজনক অপসারণে উন্নীত করছে। নীল নিষ্কাশনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ পর্যালোচিত অপসারণ সম্মানজনক অপসারণে উন্নীত করা হয়।
সামঞ্জস্যহীনভাবে সংখ্যালঘু আফ্রো-আমেরিকান গ্রুপ নীল নিষ্কাশনের শিকার হয়। ১ ডিসেম্বর ১৯৪১ সালের মধ্যে ৪৮,৬০৩ জন এবং ৩০ জুন ১৯৪৫ সালে ১০,৮০৬ জন আফ্রো আমেরিকান বা সকল নীল নিষ্কাশনের ২২.২৩% নীল অপসারণের শিকার হয়। সেই সময়ে সেনাবাহিনীর ৬.৫% সদস্য ছিলো আফ্রো-আমেরিকান সম্প্রদায় থেকে আগত[১৯]।
১৯৪৫ সালের অক্টোবরে নিগ্রোদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংবাদ পত্র পিটসবার্গ কুরিয়ার অপসারণ এবং এর অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ক্রুসেডের ডাক দেয়। অপসারণটিকে পঙ্কিল যন্ত্র যা আমেরিকান সৈন্যদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা উচিত নয় বলে উল্লেখ করে এবং সেনাবাহিনীকে যেসকল নিগ্রো সৈনিক অসহনীয় শর্ত মানতে পারে না তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট কর্মকর্তাগণ এটা ব্যবহার করে বলে ধমক দেয়। কুরিয়ার যে সকল সমকামী ব্যক্তি নীল টিকেটের শিকার হয়েছে তাদেরকে 'জাতির দুর্ভাগ্য হিসেবে' উল্লেখ করে... যারা নীল অপসারণের শিকার। তারা জানার দাবি জানায় যে কেন সেনাবাহিনী এই দুর্ভাগাদের দন্ড দিচ্ছে যাদের সেনা সুবিধা এবং জি আই বিল অধিকারের শিক্ষা সুবিধা নিয়ে ভালো নাগরিক হওয়ার সুযোগ রয়েছে[২০]।
কুরিয়ার কীভাবে নীল অপসারণের বিরুদ্ধে আপীল করতে হয় তা মুদ্রণ করে এবং পাঠকদের নীল টিকেট ধারীদের চাকরিতে নিতে সতর্ক করে কারণ নেতিবাচক প্রভাব তাদের জীবনেও চলে আসতে পারে[২১]।
কুরিয়ার এর পাশাপাশি যেসকল দল এবং প্রতিষ্ঠান শাস্তিমূলক নীল অপসারণের নিন্দা করে তাদের মধ্যে আছে আমেরিকান সেনাবাহিনী (আমেরিকান লিজিয়ন), দ্যা ন্যাশনাল এসোসিয়েশন ফর দ্যা এডভ্যান্সমেন্ট অভ কালারড পিউপল, দ্যা কনগ্রেস অভ ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্গানাইজেশন এবং ভেটেরান্স বেনেভোলেন্ট এসোসিয়েশন উল্লেখযোগ্য। মার্কিন সিনেটে সেনেট ভেটেরান কমিটির সভাপতি এডুইন সি জনসন (ডি-কলোরাডো) রেকর্ডে কুরিয়ার এর সম্পাদকীয় পাঠ করেন। ১৯৪৫ সালের ২৯ অক্টোবর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সামরিক বাহিণী থেকে আলাদা করা হয় এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকে না। তিনি বলেনঃ "অপরাধ এবং নিরপরাধের মধ্যে কোন টুইলাইট জোন থাকা উচিত নয়। এখন থেকে নীল অপসারণ কনগ্রেসের জন্য মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠবে।"
নীল ভেটের্যান্সদের নিগ্রহের প্রতিবেদনের জবাবে সামরিক বিষয়ে নিযুক্ত হাউজ কমিটি ভেটেরান প্রশাসনের পদ্ধতি পর্যালোচনার জন্য একটি বিশেষ কমিটি নিয়োগ করে। ৩০ জানুয়ারি ১৯৪৫ কমিটি প্রধান কার্ল টি. ডুরহাম (D-NC) "ইনভেস্টিগেশন অফ দ্যা ন্যাশনাল ওয়ার রিপোর্ট " নামে প্রতিবেদন দাখিল করে যা সাধারণ ভাবে ব্লু ডিসচার্জ নামে পরিচিত।[২২] কমিটি তার বিস্ময় প্রকাশ করে যে নীল নিষ্কাশনের শিকার কোন ব্যক্তি বৈষম্যের বিরুদ্ধে মুখ খুললে আরো ঝুঁকি বেড়ে যাবে:
এটা অবশ্যই মনে রাখা উচিত যে কোন বিষয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক অভিযোগ উল্লেখযোগ্য। কোন ব্যক্তি তার নিজের ক্ষেত্রে এরকম অভিযোগ তোলার অর্থ সে নিজের প্রতি এতটাই অন্যায় বোধ করেছে যে সে জনসমক্ষে সেনাবাহিনী থেকে অপসারণের কথা প্রকাশ করতে ইচ্ছুক যা তার জন্য অসম্মানের। এরকম অভিযোগ আরো অনেকের আছে যারা যারা নিজেদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে বলে মনে করে কিন্তু কষ্টগুলো নিজের গভীরে চাপা দিয়ে রাখে।
নীল নিষ্কাশনের মামলার ইতিহাস পরীক্ষা করে কমিটি দেখতে পায় যে "পদ্ধতিটি ধারণা এবং বিরোধের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে"।[২৩] কমিটি আরো দেখতে পায় যে "নীল নিষ্কাশন থেকে অপমানজনক অপসারণের মধ্যে খুবই সামান্য পার্থক্য আছে... অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে চাকরি পাওয়া এবং ধরে রাখা খুবই কষ্টকর। সমাজে তার বিরুদ্ধে সন্দেহের সৃষ্টি হয়, সবথেকে খারাপ যে তাকে ঘিরে একটা রহস্যময় পরিবেশ তৈরি হয়।" প্রতিবেদনে আরো বলা হয় এটা পরিষ্কারভাবে প্রমাণ করে দিয়েছে যে নীল নিষ্কাশনের তুলনায় ভেটেরান্স প্রশাসনের নীতি অযৌক্তিক এবং কপট প্রকৃতির[২৪] এবং সংস্থাকে "ছাগল থেকে ভেড়া আলাদা করতে" এবং "যে কোন সৈন্যের ইতিহাসে নৈতিক রায় প্রদান করতে" পদক্ষেপ নিতে হবে।
অপসারণ পদ্ধতি সংস্কারে কমিটির সুপারিশ :
কমিটি অপসারণ পদ্ধতিকে চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত করার সুপারিশ করে: সম্মানজনক এবং অসম্মানজনক, তাদের সংগায় কোন পরিবর্তন না এনে, নীল অপসারণের বদলে সম্মানজনক শর্তে এবং সাধারণ অসদাচারণের জন্য।
কমিটির প্রতিবেদন সত্ত্বেও ভিএ সমকামী নীল টিকেটধারীদের বিরুদ্ধে তাদের বৈষম্য অব্যহত রাখে, ১৯৪৫ সালের নির্দেশিকা ১৯৪৬ সালে নবায়ন করে এবং পূনরায় ১৯৪৯ সালে। ১ জুলাই ১৯৪৭ নীল নিষ্কাশনে বিরতি দিয়ে সাধারণ ও অবাঞ্ছিত এই দুই শ্রেণীতে অপসারণ করা হতে থাকে।[২৫] সাধারণ অপসারণ সম্মানজনক শর্তে কিন্তু সম্মানজনক অপসারণ থেকে আলাদা এবং অবাঞ্ছিত অপসারণ নির্দিষ্ট শর্তে সম্মানজনক কিন্তু সম্মানজনক অপসারণ থেকে আলাদা। একই সময়ে সেনাবাহিনী তাদের প্রবিধানে পরিবর্তন এনে নিশ্চিত করে যে গে এবং লেসবিয়ান সৈন্য সাধারণ অপসারণ শ্রেণীভুক্ত হবেনা।[২৬] যারা সমকামী আচরণে অংশ নেওয়ার অপরাধে অভিযুক্ত তাদেরকে এই অপমানজনক অপসারণ দেওয়া হবে কিন্তু যারা সমকামী কিন্তু কোনপ্রকার সমকামী কাজে লিপ্ত হয়নি তাদেরকে অবাঞ্ছিত অপসারণ দেওয়া হবে।[২৭] ১৯৭০ এর দদশকে যে সকল সমকামী সদস্য কোন প্রকার সমকামী আচরণে জড়িয়ে না পড়তো তাদেরকে সাধারণ অপসারণ দেওয়া হতো কিন্তু যারা জড়িয়ে পড়তো তাদেরকে অবাঞ্ছিত অপসারণ করা হতো।[২৮] গে সদস্যেরা অসামঞ্জস্যপূর্ণ শতাংশে অবাঞ্ছিত অপসারণের শিকার হতে থাকে।[২৯] ১৯৯৩ সালের নীতিমালা, যা সাধারণভাবে "ডোন্ট আস্ক, ডোন্ট টেল" নামে পরিচিত, বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত এই ব্যবস্থা অব্যহত ছিলো।[৩০]
দেখা যায় যে নীল নিষ্কাশনের শিকার অধিকাংশ গে জনগোষ্ঠী বন্দর নগরের যেমন সান ফ্রান্সিসকো, শিকাগো এবং নিউ ইয়র্ক সিটি। এটা প্রস্তাব করা হয়েছে যে, গে বড় জনগোষ্ঠী পোর্ট মত শহর মধ্যে আছে, পার্ট ফলাফল নীল স্রাব. এই তত্ত্ব দাবি করে যে, অনেক, গে, নীল-টিকেট ভেটেরান্স থেকে ছোট শহুরে বা গ্রামীণ এলাকায় অনুভূত যারা ছিল তারা আসতে পারেননি তাদের বাড়ি সম্প্রদায়ের কারণ লজ্জা সঙ্গে যুক্ত তাদের নিষ্কাশনও স্থানান্তর করতে বৃহত্তর এলাকায় প্রতিষ্ঠিত সমকামী নয় বা কেবল থাকুন শহর, যার মাধ্যমে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে আসেন.[৩১] ধারণা করা হয় ক্ষুদ্র গ্রাম বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের অধিবাসী সৈনিকেরা তাদের নিজ এলাকায় ফিরে যায়নি এইভেবে যে স্থানীয় সমাজ তাদেরকে গ্রহণ করবেনা। তাই সমকামী সংস্কৃতি ঘেঁষা অঞ্চলে তারা বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে চায়।
|কর্ম=
এবং |সংবাদপত্র=
উল্লেখ করা হয়েছে (সাহায্য)