নে উইন

নে উইন
နေဝင်း
বার্মা সোশ্যালিস্ট প্রোগ্রাম পার্টির ১ম সভাপতি
কাজের মেয়াদ
৪ জুলাই, ১৯৬২ – ২৩ জুলাই, ১৯৮৮
পূর্বসূরীদল প্রতিষ্ঠা
উত্তরসূরীসিন লিন
বার্মার ৪র্থ রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
২ মার্চ, ১৯৬২ - ৯ নভেম্বর, ১৯৮১
(ইউনিয়ন রিভল্যুশনারী কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে ২ মার্চ, ১৯৭৪ পর্যন্ত সভাপতির পদবী ধারণ)
পূর্বসূরীউইন মং (১৯৬২)
উত্তরসূরীসান উ
বার্মার তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৯ অক্টোবর, ১৯৫৮ – ৪ এপ্রিল, ১৯৬০
পূর্বসূরীইউ নু
উত্তরসূরীইউ নু
কাজের মেয়াদ
২ মার্চ, ১৯৬২ – ২ মার্চ, ১৯৭৪
পূর্বসূরীইউ নু
উত্তরসূরীব্রিগেডিয়ার জেনারেল সেন উইন
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মশু মং
(১৯১০-০৫-১৪)১৪ মে ১৯১০
পংদেল, পেগু প্রদেশ, নিম্ন বার্মা, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৫ ডিসেম্বর ২০০২(2002-12-05) (বয়স ৯২)
ইয়াংগুন, মায়ানমার
জাতীয়তাবর্মী
রাজনৈতিক দলবার্মা সোশ্যালিস্ট প্রোগ্রাম পার্টি
দাম্পত্য সঙ্গীথান নান্ট
টিন টিন
খিন মে থান
নি নি মিন্ট
ইয়াদানা নাট মেই
সন্তানকিয় থিন
নুই সো
আই অং
সান্দার উইন
ফিও ওয়াই উইন
কাইমন উইন
প্রাক্তন শিক্ষার্থীর‌্যাঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়
ধর্মথেরবাদ
স্বাক্ষর
সামরিক পরিষেবা
কাজের মেয়াদ১৯৩১-১৯৭৪
পদজেনারেল

নে উইন (বর্মী: နေဝင်း; জন্ম: ১৪ মে, ১৯১০ - মৃত্যু: ৫ ডিসেম্বর, ২০০২) পেগু প্রদেশের পংদেল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বার্মার (বর্তমান - মায়ানমার) বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সামরিক কমান্ডার ছিলেন। দুই মেয়াদে বার্মার প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, বার্মা সোশ্যালিস্ট প্রোগ্রাম পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন ও দলের সভাপতি ছিলেন। সুদীর্ঘ ২৬ বছর বার্মার নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

নে উইনের জন্ম তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। ১৯৬১ সালে র‌্যাঙ্গুনের পিপলস লিটারেচার হাউস থেকে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হু’জ হু-তে তাঁর জন্ম ১৪ মে, ১৯১১ লেখা হয়। বর্মী ও ইংরেজি ভাষায় ড. মং মং তাঁর ‘বার্মা এন্ড জেনারেল নে উইন’ শীর্ষক পুস্তকেও একই তারিখ তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে, কিয় নেইন তার ‘থার্টি কমরেডস’ গ্রন্থে ১০ জুলাই, ১৯১০ লিখেন।

‘শু মং’ নামে তার জন্ম হয়। র‌্যাঙ্গুনের প্রায় ২০০ মাইল দূরবর্তী পংডেল এলাকার কাছাকাছি ছোট্ট একটি গ্রামে মধ্যবিত্ত বর্মী চীনা পরিবারের সন্তান তিনি।[] ১৯২৯ সালে র‌্যাঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। দুই বছর জীববিদ্যা বিষয়ে পড়াশোনা করলেও ১৯৩১ সালে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন।[] এরপর ‘দোবামা এশিয়াওয়ান’ নামের জাতীয়তাবাদী সংগঠনে যোগ দেন। ঐ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে অং সান সু চি’র বাবা অং সান এবং ইউ নু ছিলেন।

রাজনৈতিক জীবন

[সম্পাদনা]

২ মার্চ, ১৯৬২ তারিখে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। পরবর্তীকালে বার্মার রাষ্ট্রপ্রধানসহ প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেন। বিশ্বের গণমাধ্যমে এ অভ্যুত্থানকে রক্তপাতহীন হিসেবে চিত্রিত করা হয়। তিনি ঘোষণা করা হয় যে, সংসদীয় গণতন্ত্র বার্মার জন্য উপযুক্ত নয়। নতুন সরকার সাংবিধানিক কার্যক্রম স্থগিত করে ও আইনসভা ভেঙ্গে দেয়।

জুলাই, ১৯৬২ সালে র‌্যাঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঙ্গা শুরুর পরিপ্রেক্ষিতে সেনা মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। প্রতিবাদকারীদের প্রতি নির্বিচারে গোলাবর্ষিত হয় ও ছাত্র সংগঠনের ভবন গুড়িয়ে দেয়া হয়।[] পাঁচ মিনিটের বেতার ভাষণে নে উইন বলেন যে, ‘যদি প্রতিবাদকারীরা আমাদেরকে মুখোমুখি হতে বলে, তাহলে আমরা তরবারির বিপরীতে তরবারি দিয়ে মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।’[] ঐ ভাষণের এক সপ্তাহের মধ্যে ১৩ জুলাই, ১৯৬২ তারিখে নিজ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ডযুক্তরাজ্য সফরে যান।[] সেপ্টেম্বর, ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত দুই বছরেরও অধিক সময় দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছিল।

ক্ষমতায় আরোহণের পর বেশকিছু পুনর্গঠনে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৪ সালে বার্মা সোশ্যালিস্ট প্রোগ্রাম পার্টি (বিএসপিপি) প্রতিষ্ঠা করেন ও দেশের একমাত্র বৈধ দল হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন। ২ মার্চ, ১৯৭৪ তারিখে বিপ্লবী কাউন্সিল বিলুপ্ত করাসহ বার্মাকে বার্মা সমাজতন্ত্রী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করেন। নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করেন ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সিন উইনকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। ৯ নভেম্বর, ১৯৮১ তাহলে নে উইন পদত্যাগ করেন ও তার স্থলাভিষিক্ত হন জেনারেল সান উ। কিন্তু দলীয় প্রধান হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রভাববিস্তার করেন ও ২৩ জুলাই, ১৯৮৮ তারিখে দল থেকে বের হন।

প্রভাব বিস্তার

[সম্পাদনা]

বিএসপিপি দলীয় কংগ্রেসে বিদায়ী ভাষণে বলেন, ‘যদি নৈরাজ্য চলতে থাকে তাহলে সেনাবাহিনীকে ডাকা হবে এবং আমি এখান থেকে ঘোষণা করছি যে, সেনাদের শূন্যে গুলি ছোড়ার নিয়ম নেই। তাঁরা সরাসরি আঘাত করেন।’[] ৮ থেকে ১২ আগস্ট ও ১৮ সেপ্টেম্বর দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ চলতে থাকে। ফলশ্রুতিতে ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৮ তারিখে জেনারেল স মংয়ের নেতৃত্বে সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, অবসরে থাকলেও পর্দার অন্তরালে থেকে এ অভ্যুত্থানে তার ব্যাপক ভূমিকা ছিল।[]

প্রায় দশ বছর নে উইন সামরিক জান্তার উপর প্রভাব বিস্তার করেন।[] ১৯৯৮ সালের পর তার প্রভাব ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ৪ মার্চ, ২০০২ তারিখে জামাতা আই জ উইন ও কন্যা সান্দার উইনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়। নে উইন ও কন্যাকে গৃহে অন্তরীণ রাখা হয়। সেপ্টেম্বরে আই জ উইন ও তিন পুত্র আই নে উইন, কিয় নে উইন ও জি নে উইনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে।

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সর্বমোট ছয়বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। ২০০৮ সালে তার কন্যা সান্দার উইনকে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর জি নে উইন ও আই জ উইনকে ২০১১ সালে[] ও আই নে উইন এবং কিয় নে উইন ২০১৩ সালে মুক্তি পান।[১০]

দেহাবসান

[সম্পাদনা]

গৃহে অন্তরীণ অবস্থায় ইয়াঙ্গুনে ৫ ডিসেম্বর, ২০০২ তারিখে তার দেহাবসান ঘটে।[১১] রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বর্মী ভাষার কয়েকটি সংবাদপত্রে তার মৃত্যুর কথা তুলে ধরা হয়। তবে তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত হননি। মাত্র ত্রিশজন ব্যক্তি সমাধির সময় উপস্থিত ছিলেন। তার কন্যা সান্দার উইনকে সাময়িকভাবে গৃহ থেকে মুক্তি দেয়া হয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Smith, Martin (৬ ডিসেম্বর ২০০২)। "General Ne Win"। The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১২ 
  2. Shaw, Karl (২০০৫) [2004]। Power Mad! [Šílenství mocných] (Czech ভাষায়)। Praha: Metafora। পৃষ্ঠা 44। আইএসবিএন 80-7359-002-6 
  3. Boudreau, Vincent (2004) Resisting Dictatorship: Repression and Protest in Southeast Asia Cambridge University Press, Cambridge, U.K., pp. 37–39, 50-51 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ মে ২০১১ তারিখে, আইএসবিএন ০-৫২১-৮৩৯৮৯-০
  4. The Burmese phrase is "dah go dah gyin, hlan go hlan gyin". Two different English translations of the speech can be read on the front page of the Rangoon Nation and the Rangoon Guardian of 9 July 1962. Part of The Nation's headline of 9 July 1962 read 'General Ne Win States Give Us Time to Work: Obstructionists are Warned: Will Fight Sword with Sword').
  5. News items of Ne Win's trip to these countries for 'medical check up' can be found in The Guardian and The Nation of 14 July 1962
  6. The English translation of Ne Win's speech can be found in 24 July 1988 issues of the Rangoon Guardian and The Working People's Daily.
  7. Stewart, Whitney (১৯৯৭)। Aung San Suu Kyi: Fearless Voice of Burmaআইএসবিএন 0-8225-4931-X 
  8. Listopadov, Nikolai Aleksandrovich. "U NE VIN." Voprosy Istorii no. 11 (November 1997): 56–78.
  9. "Two grandsons of Ne Win included on remaining political prisoners list"Eleven। ১৩ নভেম্বর ২০১৩। ১৬ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  10. Ei Ei Toe Lwin (১৮ নভেম্বর ২০১৩)। "Prisoners freed, but 60 remain behind bars"The Myanmar Times। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  11. "Former Myanmar President U Ne Win Dies"। People's Daily China 5 December 2002। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]
রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
ইউ নু
বার্মার প্রধানমন্ত্রী
ভারপ্রাপ্ত

১৯৫৮-১৯৬০
উত্তরসূরী
ইউ নু
পূর্বসূরী
উইন মং
বার্মার রাষ্ট্রপতি হিসেবে
রিভল্যুশনারী কাউন্সিল অব বার্মার সভাপতি
১৯৬২-১৯৭৪
উত্তরসূরী
স্বয়ং রাষ্ট্রপতি
পূর্বসূরী
ইউ নু
বার্মার প্রধানমন্ত্রী
১৯৬২-১৯৬৪
উত্তরসূরী
শিন উইন
পূর্বসূরী
রিভল্যুশনারী কাউন্সিলের স্বয়ং সভাপতি
বার্মার রাষ্ট্রপতি
১৯৭৪-১৯৮১
উত্তরসূরী
সান উ
পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয়
পূর্বসূরী
নেই
বার্মা সোশ্যালিস্ট প্রোগ্রাম পার্টির সভাপতি
১৯৬২-১৯৮৮
উত্তরসূরী
শিন লিন
সামরিক দপ্তর
পূর্বসূরী
স্মিথ ডান
তাতমদয়ের চিফ অব জেনারেল স্টাফ
১৯৪৯-১৯৭২
উত্তরসূরী
সান উ