![]() | |
![]() বাংলাদেশ |
![]() নেপাল |
---|
নেপাল–বাংলাদেশ সম্পর্ক হচ্ছে নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপার্শিক সম্পর্ক।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বাংলাদেশ সরকার প্রেরিত কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের মধ্যে নেপালে প্রেরিত হন আবদুল মালেক উকিল, সুবোধচন্দ্র মিত্র ও আবদুল মোমিন তালুকদার। [১] যদিও নেপাল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে একটি নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেছিলো, তবুও যুদ্ধশেষে ১৬ই জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখে বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলো। এর ফলশ্রুতিতে পাকিস্তান সরকার নেপালের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়।[২] নেপাল সরকার বঙ্গোপসাগরের বন্দর ব্যবহার করার জন্য অনেক আগে থেকেই দাবি জানিয়ে আসছিলো। কিন্তু বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানের অংশ ছিলো, তখন তারা খুব বেশি সুবিধা আদায় করতে পারে নি। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ফলে তাদের জন্য ভালো একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়।[২] ১৯৭৫ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন সরকার ব্যবস্থা কায়েম হলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরো উন্নতি সাধিত হয়। উভয় দেশ তাদের শক্তিশালী প্রতিবেশীর প্রভাব মোকাবেলার পথ খুঁজছিলো।[২] ১৯৭৬ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ ও নেপাল পরস্পরের মধ্যে বাণিজ্য, ট্রানিজিট এবং বেসামরিক বিমান চলাচলের উন্নয়নের জন্য একটি দিপাক্ষিক চুক্তি করে। ট্রানজিট চুক্তির মাধ্যমে রুটের সমস্ত যানবহন বিভিন্ন দায়িত্ব ও মূল্য প্রদান করা থেকে অব্যাহতি পায়। নেপালি যানবহন প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য ৬টি স্থান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।[২] কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তে এসে নেপালি পণ্য ট্রাক থেকে নামানো হয়, কারণ সরাসরি নেপালি ট্রাক বন্দর পর্যন্ত যাওয়ার কথা চুক্তিতে ছিলো না।[৩] ১৯৮৬ সালে ভারতের সাথে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তিতে বাংলাদেশের সাথে শরীক হওয়ার জন্য নেপালের প্রতি দাবি জানায়।[২]
দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি সত্ত্বেও তাদের পারস্পরিক বিদ্যমান বাণিজ্যের পরিমাণ বছরে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চেয়েও কম।[৩] ২০০৮-০৯ অর্থ-বছরে বাংলাদেশ নেপালে প্রায় ৬.৭ মিলিয়ন ডলার রপ্তানী করে। রপ্তানী পণ্যের মধ্যে ছিলো ওষুধ, গার্মেন্টস, প্লাস্টিক, হস্তশিল্প ও অন্যান্য পণ্য।[৩] পক্ষান্তরে বাংলাদেশে নেপালে প্রায় ৫৩ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে, যা মূলত কৃষি উৎপাদিত, যেমন ডাল, চাল, গম ইত্যাদি।[৩]
১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ফুলবাড়ি চুক্তি হওয়ায় ভারতের একটি ট্রানজিট রুটের মাধ্যমে বাংলাদেশে নেপালি পণ্য প্রবেশাধিকার পায়।[৪] ২০১০ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি যৌথ ইশতেহার জারি করে নেপাল ও ভুটানকে বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহারের সুবিধা দেওয়া হয়।[৫] উভয় দেশের বাণিজ্য সচিবকে একটি বিস্তারিত ট্রানজিট চুক্তি অনুমোদনের জন্য পরস্পরের সাথে আলোচনা করার এবং চুক্তি বাস্তবায়নের সময় বেধে দেওয়া হয়। [৫]