নৈতিক বাস্তববাদ (moral realism, এছাড়াও নীতিশাস্ত্রীয় বাস্তববাদ (ethical realism) বা নৈতিক প্লেটোবাদ (moral Platonism)) হচ্ছে একটি অবস্থান যা অনুসারে, নৈতিক বাক্য এমন প্রস্তাব প্রকাশ করে থাকে যা জগতের বস্তুবাচক বৈশিষ্ট্যকে (অর্থাৎ, ব্যক্তিবাচক মতের উপর নির্ভরশীল নয় এরকম বৈশিষ্ট্য) নির্দেশ করে, যেগুলোর কোন কোনটা এমন মাত্রার সত্য হতে পারে, যে সেগুলো সেই বৈশিষ্ট্যগুলোকে সঠিকভাবে নির্দেশ করতে পারে। এটি নৈতিক বাস্তববাদকে নৈতিক জ্ঞানবাদের (ethical cognitivism) একটি অ-শূন্যতাবাদী (non-nihilist) প্রকরণ তৈরি করে যার একই সাথে একটি সত্তাতাত্ত্বিক অভিমুখিতাও (ontological orientation) পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে এটি সকল প্রকার নৈতিক প্রতিবাস্তববাদ (moral anti-realism), নৈতিক সন্দেহবাদ (moral skepticism), নৈতিক ব্যক্তিবাচকতাবাদ (ethical subjectivism - যা নৈতিক প্রস্তাবের বস্তুবাচক বিষয় নির্দেশ করাকে অস্বীকার করে), ভ্রান্তি তত্ত্ব (error theory - যা সকল নৈতিক প্রস্তাবের সত্য হওয়াকে অস্বীকার করে) এবং অ-জ্ঞানবাদের (non-cognitivism - যা নৈতিক বাক্যের দ্বারা কোন প্রস্তাব এর প্রকাশিত হওয়াকে অস্বীকার করে) বিরুদ্ধে যায়। নৈতিক বাস্তববাদের প্রধান দুটি শ্রেণী হচ্ছে নৈতিক প্রকৃতিবাদ (ethical naturalism) এবং নৈতিক অ-প্রকৃতিবাদ (ethical non-naturalism)।
অনেক দার্শনিক দাবি করেন যে, একটি দার্শনিক নীতি হিসেবে নৈতিক বাস্তববাদের ধারণার উৎপত্তি প্লেটোর সময়ে,[১] এবং নৈতিক নীতি থেকে এটি সম্পূর্ণভাবে সমর্থনযোগ্য।[২] ৩,২২৬ জন অংশগ্রহণকারী নিয়ে করা ২০০৯ সালের একটি জরিপে[৩] উঠে আসে ৫৬% দার্শনিক নৈতিক বাস্তববাদ স্বীকার করেন, অথবা নৈতিক বাস্তববাদের দিকে ঝুঁকে থাকেন (২৮% প্রতিবাস্তববাদ, ১৬% অন্যান্য)।[৪] কিছু বলিষ্ঠ নৈতিক বাস্তববাদীর উদাহরণ হল ডেভিড ব্রিংক,[৫] জন ম্যাকডোয়েল, পিটার রেইল্টন,[৬] জিওফ্রে সায়ার ম্যাককর্ড,[৭] মাইকেল স্মিথ, টেরেন্স কুনিও,[৮] রাস শেফার ল্যান্ডু,[৯] জি. ই. মুর,[১০] জন ফিনিস, রিচার্ড বয়েড, নিকোলাস স্টারজন,[১১] থমাস নাগেল, ড্যারেক পারফিট। নরমান গেরাস বলেন কার্ল মার্ক্স একজন নৈতিক বাস্তববাদী ছিলেন।[১২] অনেক দার্শনিক ও বাস্তব প্রয়োগে নৈতিক বাস্তববাদ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।[১৩]