নোয়াখালী সদর উপজেলা

নোয়াখালী সদর
উপজেলা
মানচিত্রে নোয়াখালী সদর উপজেলা
মানচিত্রে নোয়াখালী সদর উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২২°৪৯′৪৮″ উত্তর ৯১°৬′০″ পূর্ব / ২২.৮৩০০০° উত্তর ৯১.১০০০০° পূর্ব / 22.83000; 91.10000 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
জেলানোয়াখালী জেলা
সরকার
 • উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানএ কে এম শামছুদ্দিন জেহান (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ)
আয়তন
 • মোট৩৩৬.২১ বর্গকিমি (১২৯.৮১ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[]
 • মোট৪,০৭,৪৪৯
 • জনঘনত্ব১,২০০/বর্গকিমি (৩,১০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৪৮.৩৮%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৩৮০০–৩৮১২ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
২০ ৭৫ ৮৭
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

নোয়াখালী সদর উপজেলা বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা; যা মাইজদী নামেই অধিক পরিচিত।

নোয়াখালী সদরের আদি নাম হচ্ছে সুধারাম। সুধারাম মজুমদার নামে এক জনহিতৈষী ব্যবসায়ীর নামানুসারে ১৮৬১ সালে সুধারাম থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে যখন উপজেলা সদরদপ্তর মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়ে যায়, তখন তা ৮ কিলোমিটার উত্তরে সরিয়ে বর্তমান মাইজদিতে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৮৩ সালে সুধারাম থানাকে নোয়াখালী সদর থানা হিসেবে নামকরণ করা হয়, যা বর্তমানের নোয়াখালী সদর উপজেলা।

অবস্থান ও আয়তন

[সম্পাদনা]

২২°৩৮´ থেকে ২২°৫৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৪´ থেকে ৯১°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে নোয়াখালী সদর উপজেলার অবস্থান। এ উপজেলার উত্তরে বেগমগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে সুবর্ণচর উপজেলা, পূর্বে কবিরহাট উপজেলাকোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলালক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ

[সম্পাদনা]

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি

[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল পাকবাহিনী এ উপজেলায় প্রবেশ করে। ১৮ জুন সোনাপুর এলাকার শ্রীপুর গ্রামে পাকসেনারা ৭০ জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ৭ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

[সম্পাদনা]

১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর প্রলঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় এলাকার বহুসংখ্যক লোকের প্রাণহানি ঘটে।


প্রশাসনিক এলাকা

[সম্পাদনা]

নোয়াখালী সদর উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম সুধারাম মডেল থানার আওতাধীন।

পৌরসভা:
ইউনিয়নসমূহ:

জনসংখ্যার উপাত্ত

[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারী অনুসারে জনসংখ্যা এখানকার লোকসংখ্যা ৩,৩১,৪৯৩ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১,৬৪,১০৯ জন এবং মহিলা ১,৬৭,৩৮৪ জন। এখানে মুসলিম ৩,২৩,৬৬১ জন, হিন্দু ৭,৩০১ জন, বৌদ্ধ ৫১৫ এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ১৬ জন বসবাস করেন।

এর সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন; তবে ১৮.৬১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

স্বাস্থ্য

[সম্পাদনা]
  • স্বাস্থ্যকেন্দ্র - হাসপাতাল ৬, টিবি ক্লিনিক ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৫, পৌর চিকিৎসাকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১৮, ক্লিনিক ৬, পশুচিকিৎসালয় ১।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৬৯.৩২%, ট্যাপ ১০.২০%, পুকুর ১৫.০৩% এবং অন্যান্য ৫.৪৫%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৩.৪১% (গ্রামে ২৭.৪৮% ও শহরে ৬৯.৬২%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৩.২১% (গ্রামে ৫৭.৯৫% ও শহরে ২৪.২৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৩.৩৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

শিক্ষা

[সম্পাদনা]

এখানে শিক্ষার হার: ৫৯.৯০%; যার মধ্যে পুরুষ ৬২.৭৯% এবং মহিলা ৫৭%। এখানে রয়েছে:

  • কলেজ - ১১টি,
  • আইন কলেজ - ১টি,
  • মেডিকেল এসিস্টেন্ট ট্রেনিং স্কুল - ১টি,
  • প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট - ২টি,
  • পুলিশ ট্রেনিং ইনস্টিটিউিট - ১টি,
  • মাধ্যমিক বিদ্যালয় - ৩৮টি,
  • প্রাথমিক বিদ্যালয় - ১৯৫টি,
  • মাদ্রাসা - ৩২টি।

উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নোয়াখালী সরকারি কলেজ (১৯৬৩), ব্রাদার আন্দ্রে উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৭), আহমদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৬), অরুণচন্দ্র আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৪), পৌরকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), নোয়াখালী জিলা স্কুল (১৮৫৩), ওবায়েদ উল্লাহ্‌ মেমোরিয়াল হাই স্কুল (১৯৭১)। আল কুরআন একাডেমী (২০০০), বায়তুল উলুম কারিমিয়া মাদ্রাসা (২০০২), মারকাযুল কুরআন ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদরাসা(২০১৬), নোয়াখালী কারামাতিয়া কামিল মাদ্রাসা(১৮৫০), নোয়াখালী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯১৩)[]

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আখ, ডাল, চীনাবাদাম, সয়াবিন, শাকসবজি। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, পাট। প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, নারিকেল, পেঁপে, সুপারি।

  • মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার গবাদিপশু ৩৭, হাঁস-মুরগি ৬৬।
  • কৃষিভূমির মালিকানাঃ ভূমিমালিক ৫৬.৩০%, ভূমিহীন ৪৩.৭০%। শহরে ৪১.২৫% এবং গ্রামে ৫৮.৭৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

অর্থনীতি

[সম্পাদনা]

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৯.১৫%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৫৯%, শিল্প ০.৯৭%, ব্যবসা ১৩.৪৪%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৩.৬৭%, চাকরি ১৪.৪৬%, নির্মাণ ১.৬২%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৭৯% এবং অন্যান্য ৯.৪৫%। প্রধান রপ্তানিদ্রব্য নারিকেল, সুপারি, ধান, মাদুর, শুটকিমাছ।

শিল্প কারখানা
  • শিল্প ও কলকারখানা - সুয়েটার কারখানা, ব্রেড ও বিষ্কুট কারখানা, কোমলপানীয় প্রস্ত্তত কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা, চালকল, আটাকল, বরফকল, তেলকল।
  • কুটিরশিল্প - স্বর্ণশিল্প, তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।
হাট-বাজার
  • সদর উপজেলায় প্রায় - ৫৫ টি হাটবাজার রয়েছে।
মেলা ও পার্বণ
  • উপজেলায় বছরের বিভিন্ন সময় মোট তিনটি মেলা আয়োজিত হয়; যার মধ্যে লক্ষ্মী নারায়নপুর গ্রামের মেলা (পহেলা মাঘ) উল্লেখযোগ্য।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি

[সম্পাদনা]

বিবিধ

[সম্পাদনা]
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী
  • দৈনিক - নোয়াখালী বার্তা;
  • সাপ্তাহিক - আজকের উপমা, নোয়াখালীর কথা, অবয়ব, নয়াবার্তা, জাতীয় নূর, দিশারী;
  • অবলুপ্ত - নোয়াখালী হিতৈষী, ছোলতান, তানজিন, উপকূল বার্তা, পূর্ব বাঙ্গালী।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান
  • লাইব্রেরি - ৪টি,
  • টাউন হল - ১টি,
  • ক্লাব - ৫টি,
  • সিনেমা হল - ২টি।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

[সম্পাদনা]

পাকারাস্তা ১৯৪ কিমি; নৌপথ ৩০ নটিক্যাল মাইল; রেলপথ ১০ কিমি। রেলস্টেশন ৪।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি, মহিষের গাড়ি।

জনপ্রতিনিধি

[সম্পাদনা]
সংসদীয় আসন জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[] সংসদ সদস্য[][][][][] রাজনৈতিক দল
২৭১ নোয়াখালী-৪ নোয়াখালী সদর উপজেলা এবং সুবর্ণচর উপজেলা মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
ক্রম নং. পদবী নাম রাজনৈতিক দল
০১ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন কার্যক্রম চলমান
০২ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন কার্যক্রম চলমান
০৩ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন কার্যক্রম চলমান

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে নোয়খালী সদর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. বাংলাপিডিয়া
  3. "Election Commission Bangladesh - Home page"www.ecs.org.bd 
  4. "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯ 
  5. "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  6. "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  7. "জয় পেলেন যারা"দৈনিক আমাদের সময়। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  8. "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"সমকাল। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]