নোয়েল কেম্ফ মার্কাদো জাতীয় উদ্যান | |
---|---|
আইইউসিএন বিষয়শ্রেণী II (জাতীয় উদ্যান) | |
অবস্থান | সান্তা ক্রুজ ডিপার্টমেন্ট, বলিভিয়া |
স্থানাঙ্ক | ১৪°১৬′০″ দক্ষিণ ৬০°৫২′০″ পশ্চিম / ১৪.২৬৬৬৭° দক্ষিণ ৬০.৮৬৬৬৭° পশ্চিম |
আয়তন | ১৫,৮৩৮ কি.মি.২ |
স্থাপিত | ২৮ জুন, ১৯৭৯ |
ধরন | প্রাকৃতিক |
মানদণ্ড | ৯ম, ১০ম |
মনোনীত | ২০০০ (২৪শ অধিবেশন) |
সূত্র নং | ৯৬৭ |
রাষ্ট্রীয় অবস্থান | বলিভিয়া |
অঞ্চল | লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ |
নোয়েল কেম্ফ মার্কাদো জাতীয় উদ্যান (স্পেনীয়: Parque nacional Noel Kempff Mercado) বলিভিয়ার হোস মিগুয়েল দে ভেলাস্কো প্রদেশের সান্তা ক্রুজ ডিপার্টমেন্ট ও ব্রাজিল সীমান্তবর্তী জাতীয় উদ্যান।
নোয়েল কেম্ফ প্রায় ৭৫০,০০০ হেক্টর ভূমি নিয়ে গড়ে উঠেছে।[১] এর অধিকাংশই সেরানিয়া দে হুয়ানচাকা এলাকায়।[২] ব্রাজিলীয় শিল্ড ও বলিভিয়ার সান্তা ক্রুজ ডিপার্টমেন্টের উত্তর-পূর্বাংশে এর অবস্থান। এর পূর্বদিকে রিও ডি ইতেনেজ এবং উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী ব্রাজিল থেকে এটি পৃথক করেছে।[২] ১৯৯৭ সালে ব্রাজিলের মাতো গ্রোসো রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত সেরা রিকার্ডো ফ্রাঙ্ক স্টেট পার্কে এর ১৫৮,৬২১ হেক্টর (৩৯১,৯৬০ একর) জমি যুক্ত হয়েছে।[৩] আমাজনের বৃষ্টিপ্রবণ বনাঞ্চল ও সেরাদোর শুষ্ক বন ও সাভানা এখানে মিলিত হয়েছে। উদ্যানটিতে পাঁচ ধরনের ভিন্ন পরিবেশ বিরাজমান। উঁচুভূমিতে চিরসবুজ বন, পর্ণমোচী বন, উঁচুভূমির সেরাদো সাভানা, সাভানা জলাভূমি ও বনসমৃদ্ধ জলাভূমি।[৪] সামগ্রিকভাবে এ অঞ্চলটি শীতকালে শুষ্ক মৌসুম বিরাজমান এবং বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১,৫০০ মিলিমিটার।[২]
১৯০৮ সালে এ এলাকাটি প্রথম আবিষ্কার করেন পার্সি ফসেট যা বর্তমানের জাতীয় উদ্যান। প্রায় ৭০ বছর পর এ বিষয়ে পুনরায় নজরে আসে। ১৯৭০-এর দশকে ভূতত্ত্ববিদগণকে বলিভিয়ার প্রাক-কাম্ব্রিয়ান শিল্ড অঞ্চলের পার্বত্য এলাকা জরীপের জন্য প্রেরণ করা হয়। তারা এর ভূতত্ত্ব ও ভৌগোলিক গঠন এবং প্রথমবারের মতো মানচিত্র আকারে প্রকাশ করেন। এরফলে ঐ সময়ের প্রথিতযশা জীববিজ্ঞানী নোয়েল কেম্ফ মার্কাদো ভীষণভাবে আকৃষ্ট হন। মার্কাদো এর সংরক্ষণে বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রচারণা চালান। দূর্ভাগ্যবশতঃ মার্কাদো মাদক চোরাকারবারীদের হাতে মর্মান্তিকভাবে নিহত হন ও তাঁর স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হবার বিষয়টি দেখতে পারেননি। সরকার এ উদ্যানটি প্রতিষ্ঠা করেন ও তাঁর সম্মানার্থে এ উদ্যানের নামকরণ করেন। ১৯৮৮ সালে এ উদ্যানের প্রতিষ্ঠা করা হয় ও ৭৫০০০০ হেক্টর আয়তনের এ এলাকাটি অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিতি পায়।[৫]
এনকেএমএনপিতে অবস্থিত হায়াচাকা মালভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০০-৯০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত।
এ পর্যন্ত ২৭০৫টি বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ চিহ্নিত করা হয়েছে। তন্মধ্যে, ১৫০০ প্রজাতি আর্দ্রতাপূর্ণ বনে রয়েছে। ৮০০ সেরাদোয়, ৭০০ শুষ্ক বনে, ৫০০ সাভানা জলাভূমি ও অন্য ৫০০ জলে আছে। ১৩০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। দুষ্প্রাপ্য ভোঁদড়, ডলফিন, টাপির, মাকড়শা ও হোলার বানর, কিংবদন্তীতুল্য আরমাদিলো, অ্যানটিটার ও বিলুপ্তপ্রায় জাগুয়ার, কালো জাগুয়ারের আবাস এখানে। এছাড়াও ৬২০ প্রজাতির পাখি আছে। নয় প্রজাতির ম্যাকাও রয়েছে যা যে-কোন সংরক্ষিত অভয়ারণ্যের তুলনায় বেশি। মেলানোসাচাস নাইজারসহ ৭০-এর অধিক সরীসৃপ এখানে বাস করে।
বৈশ্বিক গুরুত্বতা বিচারপূর্বক ২০০০ সালে ইউনেস্কো এনকেএমএনপিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।