পত্তনমতিট্টা জেলা | |
---|---|
কেরলের জেলা | |
স্থানাঙ্ক: ৯°১৬′৫০″ উত্তর ৭৬°৫২′১১″ পূর্ব / ৯.২৮০৬৮° উত্তর ৭৬.৮৬৯৬৭° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | কেরল |
প্রতিষ্ঠাতা | কে কে নাইয়ার[১] |
সদর | পত্তনমতিট্টা |
আয়তন | |
• মোট | ২,৬৪২ বর্গকিমি (১,০২০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১১,৯৭,৪১২ |
• জনঘনত্ব | ৪৫০/বর্গকিমি (১,২০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | মালয়ালম, ইংরাজি |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
যানবাহন নিবন্ধন | পত্তনমতিট্টা: KL-03 (কেএল-০৩) আদূর উপ: KL-26 (কেএল-২৬) তিরুবল্ল উপ:KL-27 (কেএল-২৭) মল্লপল্লী:KL-28 (কেএল-২৮) রাণ্ণী উপ:KL-62 (কেএল-৬২) কোন্নি:KL-83 (কেএল-৮৩) |
ওয়েবসাইট | pathanamthitta |
পত্তনমতিট্টা জেলা হলো দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত কেরল রাজ্যের ১৪ টি জেলার একটি জেলা৷ জেলাটির জেলাসদর পত্তনমতিট্টা শহরে অবস্থিত৷
সারা ভারতে সর্বপ্রথম পত্তনমতিট্টা জেলাটিকে পোলিও মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। [২] জেলাটি ১০.০৩ শতাংশ নগরায়িত। [৩] ভারতের ধনী জেলা গুলির মধ্যে পত্তনমতিট্টা জেলা অন্যতম, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের পরিগণনা অনুসারে এই জেলাটির দারিদ্রতার হার ১.১৭ শতাংশ। সর্বনিম্ন দারিদ্রতার হারসহ জেলা হিসেবে এই জেলাটি পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। [৪]
এই জায়গাটির নাম দুটি মালয়ালম শব্দের সংযুক্তির ফলে তৈরি হয়েছে, শব্দদুটি হল পত্তনম এবং তিট্টা। শব্দ দুটি কে একত্রিত করলে অর্থ দাঁড়ায় 'তীরের বসতি' বা 'নদীর কুল বরাবর বসতভূমির বিন্যাস'।[৫] জেলাসদর পত্তনমতিট্টা অচাঙ্কোয়িল নদীর তীরে অবস্থিত।
অনুমান করা হয় বর্তমান পত্তনমতিট্টা জেলার সম্পূর্ণ ভূভাগই পূর্বে পন্দলম রাজ্যের শাসকবর্গের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত। অনেকে আবার এই পন্দলম রাজ্যের সাথে পাণ্ড্য রাজবংশের যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে থাকেন। [৬] ১৮২০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ পন্দলম ভারতের দেশীয় রাজ্য ত্রিবাঙ্কুরের সাথে একীভূত হলে, তৎপরবর্তী কাল থেকে এই অঞ্চল ত্রিবাঙ্কুর দেশীয় রাজ্যের প্রশাসনিক আওতায় আসে।
১৯৮২ খ্রিস্টাব্দের ১লা নভেম্বর তারিখে সর্বাঙ্গীণ উন্নতি এবং প্রশাসনিক সুবিধার স্বার্থে এই জেলাটি গঠন করা হয়। পূর্বতন কোল্লাম, আলেপ্পি এবং ইদুক্কি জেলার কিছু কিছু তালুক একত্রিত করে এই নতুন জেলা গঠন করা হয়। জেলাগঠন কালে পূর্বতন কোল্লাম জেলা থেকে পত্তনমতিট্টা ও আদূর তালুক, পূর্বতন ইদুক্কি জেলা রাণ্ণী, কোন্নি ও কোড়েনচেরি তালুক এবং পূর্বতন আলেপ্পি জেলা থেকে পন্দলম ও তিরুবল্ল তালুক গুলি নেওয়া হয়।[৫]
পত্তনমতিট্টা ছিলো সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বহু গুণীমহারথীদের বাসস্থল৷ বহু সাহিত্য ও কবিতা রচনা হয়েছে এই জেলাকে ভিত্তি করে৷ গত দুই শতাব্দী ধরে রচিত সাহিত্যিক নিদর্শন দেশঠুটি: পত্তনমতিট্টা কবিতাকল নামক গ্রন্থের একখণ্ডের একটি সংস্করণে একত্রিত করা ররছে৷ উণ্ণিকৃষ্ণণ পুলিঘাট এই গ্রন্থে আষ্টাদশ শতাব্দী থেকে একাধিক কবি ও লেখকের রচিত ১৮৪টি নির্বাচিত কবিতা সংগ্রহ করে রেখেছেন৷ [৭]
পত্তনমতিট্টা একটি স্থলবেষ্টিত জেলা৷ এটি ৯°১৬′ উত্তর ৭৬°৪৭′ পূর্ব / ৯.২৭° উত্তর ৭৬.৭৮° পূর্ব স্থানাঙ্কে ২,৬৩৭ বর্গকিলোমিটার (১,০১৮.১৫ মা২) ক্ষেত্রফল জুড়ে বিস্তৃত৷ [৮] জেলাটির উত্তর-পূর্ব দিকে রয়েছে ইদুক্কি জেলা, উত্তর দিকে রয়েছে কোট্টায়ম জেলা, পশ্চিম দিকে রয়েছে আলেপ্পি জেলা, দক্ষিণ দিকে রয়েছে কোল্লাম জেলা এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রয়েছে তামিলনাড়ু রাজ্যের তেনকাশী জেলা৷[৯] পত্তনমতিট্টা জেলার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হলো দেবরমালা৷ [১০]
জেলাটিকে প্রাকৃতিকভাবে তিনটি ভৌগোলিক বিভাগে ভাগ করা যায়, যথা: উচ্চভূমি, মধ্যভূমি এবং নিম্নভূমি অঞ্চল৷ পশ্চিমঘাট পর্বতমালা বরাবর রয়েছে উচ্চভূমি অঞ্চল, এই অঞ্চল পাথুরে ও ঘন জঙ্গলে আবৃত৷ এই জেলায় অবস্থিত পশশ্চিমঘাট পর্বতমালার বিস্তারের গড় উচ্চতা ৮০০ মিটার৷ পর্বতের পাদদেশ বরাবর রয়েছে টিলাযুক্ত মধ্যভূমি অঞ্চল, এই অঞ্চলের উচ্চতা তুলনামূলক কম৷ ঢাল বরাবর পশ্চিম দিকে রয়েছে সমতল ও নিম্নভূমি অঞ্চল৷ আলেপ্পি জেলার দিকে অবস্থিত নিম্নভূমি অঞ্চলে নারিকেল গাছ ভালো জন্মে।[১১] (তিরুবল্ল তালুকের পশ্চিমাংশ)
পত্তনমতিট্টা জেলায় রয়েছে ১,৩৮৫.২৭ বর্গকিলোমিটার (৫৩৪.৮৬ মা২) ক্ষেত্রফলের বিস্তৃত সংরক্ষিত বনাঞ্চল,[১২] যা সমগ্র জেলার প্রায় ৫০ শতাংশ অঞ্চল আবৃত করে রয়েছে। এই বৃহত্তর বনাঞ্চলকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় যথা, চিরহরিৎ, আংশিক চিরহরিৎ এবং আর্দ্র পর্ণমোচী বনাঞ্চল। এই বনাঞ্চল থেকে প্রাপ্ত গাছের গুঁড়ির ওপর ভিত্তি করে জেলাটিতে গড়ে উঠেছে একাধিক আসবাব তৈরীর কারখানা।
এই জেলার উপর দিয়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ নদী প্রবাহিত হয়েছে। প্রতিটি নদীই পশ্চিমঘাট পর্বতমালার একাধিক পর্বত থেকে সৃষ্ট। কেরালার তৃতীয় দীর্ঘতম নদী পম্পা (১৭৬ কিমি অথবা ১০৯ মা), পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পুলচিমালা পর্বত থেকে সৃষ্ট। আচনকোয়িল নদীটি (১২৮ কিমি অথবা ৮০ মা) পশুকীটামেট্টু থেকে এবং মণিমালা নদীটি (৯০ কিমি অথবা ৫৬ মা) তট্টমালা পর্বত থেকে উৎপত্তি হয়েছে। কল্লড়া নদীর সামান্য অংশ এই জেলার দক্ষিণ দিকের সীমানা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পম্পা এবং আচনকোয়িল নদী দুটিই পত্তনমতিট্টা জেলার ৭০% ভূমির জল নিকাশিত করে। [১৩][১৪]
জেলা সদর পত্তনমতিট্টা শহরে অবস্থিত এবং এখানে একজন জেলাশাসকের দপ্তর রয়েছে। তিনি 5 জন সহকারী জেলা সমাহর্তা দ্বারা সাহায্য প্রাপ্ত হন এবং তারা সাধারন বিষয়ে রাজস্ব বিভাগ ভূমি অধিগ্রহণ এবং ভূমি ও নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় গুলি পর্যালোচনা করেন। ত্রিস্তরীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থার সর্বনিম্ন রয়েছে গ্রামীণ পঞ্চায়েত ব্যবস্থা। পত্তনমতিট্টা জেলায় একটি জেলা পঞ্চায়েত দপ্তর নয়টি ব্লক পঞ্চায়েত এবং ৫৭ টি গ্রাম পঞ্চায়েত দপ্তর রয়েছে। শহরাঞ্চলে অ্যাপস তৈরি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় রয়েছে চারটি পৌরসভা এবং একটি জনগণনা নগর, কোড়েনচেরি।
২০০৮ খ্রিস্টাব্দের বিধানসভা এবং লোকসভার সীমানা নির্দেশক ফরমান অনুসারে, পত্তনমতিট্টা জেলায় পূর্বের আটটি বিধানসভা কেন্দ্রকে কমিয়ে পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্র করা হয়। তবে এই জেলাটিতে একটি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে সেটি হল পত্তনমতিট্টা লোকসভা কেন্দ্র। এই লোকসভা কেন্দ্রে পত্তনমতিট্টা জেলার পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্র ছাড়াও পার্শ্ববর্তী কোট্টায়ম জেলার আরও দুটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। [১৫][১৬]
তিরুবনন্তপুরম শহরে অবস্থিত তিরুবনন্তপুরম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি (টিআরভি) পত্তনমতিট্টা থেকে (১১৯ কিমি অথবা ৭৪ মা) দূরে অবস্থিত। আরণ্মুলাতে পরিকল্পিত আরণ্মুলাতে বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে বাতিল করা হয়। [১৭] এই জেলার কোন্নিতে শবরীমালা বিমানবন্দর নামে একটি বিমানবন্দর চালু হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।[১৮]
২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনগণনা অনুসারে পত্তনমতিট্টা জেলার জনসংখ্যা ছিল ১১,৯৭,৪১২ জন,[১২][১৯] যা পূর্ব তিমুর রাষ্ট্র [২০] অথবা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড রাজ্যের জনসংখ্যার সমতুল্য। [২১] ওই বছর ভারতের মোট ৬৪০ টি জেলার মধ্যে জনসংখ্যার বিচারে এই জেলার ৩৯৯তম স্থান অধিকার করেছে। [১৯] জেলাটির জনঘনত্ব৪৫৩ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (১,১৭০ জন/বর্গমাইল)।[১৯] ২০০১ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পত্তনমতিট্টা জেলার জনসংখ্যা ২.৯৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। [১৯] জেলাটিতে প্রতি হাজার পুরুষে ১১২৯ জন মহিলা বাস করেন।[১৯] জেলাটির সর্বমোট সাক্ষরতার হার ৯৬.৫৫ শতাংশ যেখানে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৯৭.৩৬ শতাংশ এবং নারী সাক্ষরতার হার ৯৫.৮৩ শতাংশ। [১৯] ২০১১ খ্রিস্টাব্দে জনসংখ্যা হ্রাসপ্রাপ্ত ভারতের পাঁচটি জেলার মধ্যে এটি অন্যতম। ২০০১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে এই জেলার জনসংখ্যা ছিল ১২,৩৪,০১৬ জন এবং প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনঘনত্ব ছিল ৪৬৭ জন।[২২] জনঘনত্বের বিচারে ইদুক্কি এবং বয়নাড় জেলার পর এই জেলাটি স্থান।[২৩] জেলাটির ১৩ শতাংশ জনসংখ্যা তপশিলি জাতি এবং উপজাতি সংরক্ষণভুক্ত, যা কেরালার অন্যান্য জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ। [২৪]
বছর | জন. | ব.প্র. ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ২,৭৬,২৫১ | — |
১৯১১ | ৩,১৭,০৭২ | +১.৩৯% |
১৯২১ | ৩,৭৫,৯৩৫ | +১.৭২% |
১৯৩১ | ৪,৭৮,৩৪৫ | +২.৪৪% |
১৯৪১ | ৫,৭৬,৪৩৬ | +১.৮৮% |
১৯৫১ | ৭,১৯,২৭২ | +২.২৪% |
১৯৬১ | ৮,৮৮,২৭২ | +২.১৩% |
১৯৭১ | ১০,২৮,২০৮ | +১.৪৭% |
১৯৮১ | ১১,২৫,৩৪৫ | +০.৯১% |
১৯৯১ | ১১,৮৮,৩৩২ | +০.৫৫% |
২০০১ | ১২,৩৪,০১৬ | +০.৩৮% |
২০১১ | ১১,৯৭,৪১২ | −০.৩% |
উৎস:[২৫] |
পত্তনমতিট্টা জেলার সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মাবলম্বী হলো হিন্দুরা, যারা জেলার জনসংখ্যার প্রায় ৫৭ শতাংশ এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মাবলম্বী হলো খ্রিস্টানরা, যারা জেলার জনসংখ্যার প্রায় ৩৮ শতাংশ৷ [২৬]
Timor-Leste 1,177,834 July 2011 est.
Rhode Island 1,052,567