পম্পেঁউ ফাব্রা | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৫ ডিসেম্বর ১৯৪৮ | (বয়স ৮০)
জাতীয়তা | কাতালীয় |
পেশা | অধ্যাপক, প্রকৌশলী এবং ভাষাতত্ত্ববিদ |
পম্পেঁউ ফাব্রা আই পোচ (কাতালান উচ্চারণ: [pumˈpɛw ˈfaβɾə]) (গ্রাসিয়া, বার্সেলোনা, ফেব্রুয়ারি ২০, ১৮৬৮ - প্রাডা দ্য কনফ্লেন্ট, ডিসেম্বর ২৫, ১৯৪৮) একজন কাতালীয় প্রকৌশলী এবং ভাষাতত্ত্ববিদ ছিলেন। তিনি কাতালান ভাষার সমকালীন আইন সংশোধনকারীদের মধ্যে প্রধান ছিলেন।[১]
১৮৬৮ সালে যখন গ্রাসিয়াতে পম্পেঁউ ফাব্রা জন্মগ্রহণ করেন[১]। তখনও অঞ্চলটি বার্সেলোনা থেকে পৃথক ছিল। তিনি জোসেপ ফাব্রা আই রোকা ও তার স্ত্রী ক্যারোলিনা পোচ আই মার্টির বার সন্তানের মধ্যে দ্বাদশ ছিলেন। যখন পম্পেঁউর বয়স ছয়, তার পরিবার বার্সেলোনায় চলে যায়।
শৈশব থেকেই ফাব্রা কাতালান ভাষা শেখায় নিজেকে নিয়োজিত করেন।[২] ১৮৮০-৯২ সালের দিকে জার্নাল এবং প্রকাশনা সংস্থা এল' অ্যাভেন্থ-এর মাধ্যমে সে কাতালান শব্দপ্রকরণ সংশোধন কর্মসূচীতে যোগ দেয়। ১৯০৪ সালে সে ট্রাকটাক দ্য অর্থোগ্রাফিয়া কাতালানা নামক একটি বই প্রকাশ করে যার লেখক এবং প্রকাশক ছিলেন জ্যাকিউম মাঁসে আই তরেন্তস ও জোয়াকুইম কাসাস আই কার্বো, বিখ্যাত আইনজীবী এবং লেখক।
ভাষাবিদ্যায় তার ব্যক্তিগত আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও সে বার্সেলোনায় শিল্প প্রকৌশল-এর উপর পড়াশোনা করে এবং ১৯০২ সালে বিলবাওয়ের প্রকৌশল বিদ্যালয়ে রসায়নের একটি পদে যোগদান করেন।[২] বিলবাওয়ে থাকাকালীন সময় ১৯০৬ সালে ফাব্রা প্রথম কাতালান ভাষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেন। এই ঘটনা কাতালান ভাষাতত্ত্ববিদ্যায় তাকে এক সম্মানজনক অবস্থায় উপনীত করে। ১৯১১ সালে সে বার্সেলোনার স্থানীয় সরকার (diputació) — কর্তৃক সৃষ্ট পদে কাতালানের অধ্যাপক (Catedrático) হিসেবে বার্সেলোনায় ফিরে আসে — এবং স্থানীয় নবসৃষ্ট ইনস্টিটিউট দ্য এস্টুদিস কাতালানস-এর ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের সদস্যও হন। পরবর্তীতে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হন। ১৯১২ সালে তিনি কাতালান ব্যাকরণ (Gramática de la lengua catalana) (স্প্যানিশ) প্রকাশ করেন।
প্রতিষ্ঠানটি উচ্চারণবিধি (নরমেস অর্তোগ্রাফিক্স) (১৯১৩), ডিকশিওনারি অর্তোগ্রাফিক (১৯১৭) এবং অফিশিয়াল কাতালান ব্যাকরণ (গ্রামাতিকা কাতালানা) (১৯১৮) প্রভৃতি প্রকাশ করেন।[২] একই বছরে ফাব্রা এল' এসসিয়াসিয়ো কর্তৃক প্রকাশিত কুর্স মিৎজা দ্য গ্রামাতিকা কাতালানা বইটি সম্পাদনা করেন। তার কনভার্সেস ফিলোলোগিগস সর্বপ্রথম লা পাবলিসিতাত-এ প্রকাশিত হত। এরপর একত্রে পপুলার বার্সিনো হিসেবে প্রকাশিত হয়। সম্ভবত তার প্রথম বিখ্যাত কাজ ছিল কাতালান ভাষার সাধারণ অভিধান (ডিকশিওনারি জেনারেল দ্য লাঁ লিএঙ্গা কাতালানা) (১৯৩২)[১]। এই বইয়ের প্রথম সংস্করণটি পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল অভিধান হয়।
১৯৩২ সালে বৈজ্ঞানিক সম্মানের কারণে প্রজাতন্ত্রী ইউনিভার্সিতাত অটোনোমা দ্য বার্সেলোনার (১৯৬০ সালে সৃষ্ট স্পেনের ইউনিভার্সিতাত অটোনোমা দ্য বার্সেলোনা নয়) অধ্যাপক হিসেবে তার নাম করে হয়। পরের বছরই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা সংস্থার সভাপতি হন তিনি। এর ফলেই ১৯৩৪ সালে "৬ই অক্টোবরের ঘটনা"র আসামী হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, যখন দ্বিতীয় স্প্যানিশ প্রজাতন্ত্রকে লুইস কোম্পানিস নেতৃত্বাধীন কাতালান সরকার-এর নিকট পরাজিত হতে হয়।[২]
১৯৩৬ সালের নির্বাচনের পর ফাব্রাকে তার বিভাগের আগের স্থানে পুনর্বহাল করা হয়। কিন্তু ঐ বছরেরই জুলাইয়ে স্প্যানিশ বেসামরিক যুদ্ধ শুরু হয় এবং তিনি বার্সেলোনা থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন কারণ ফ্রানকয়েস্ট সেনাবাহিনী কর্তৃক বার্সেলোনা আক্রান্ত হয়। ১৯৩৯ সালে তিনি ফ্রান্সে আশ্রয় নেন যেখানে তাকে নানা দুর্দশা ভোগ করতে হয়। তিনি প্যারিস এবং মন্টেপিলার-এও বসবাস করেন। এরপর তিনি প্রাডা দ্য কনফ্লেন্ট, ফ্রান্সে কাতালান-অঞ্চলে সরে যানে। সেখানেই ২৫শে ডিসেম্বর, ১৯৪৮ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন[১]। অ্যান্ডোরায় তিনি তার ইচ্ছা প্রকাশ করেন যেন এমন একটি দেশ হয় যেখানকার মূল ভাষা হবে কাতালান।[২]
প্রতিবছর সেন্ট মিশেল দ্য কুঁইয়েতে তার সমাধি দেখতে হাজারো কাতালান ভিড় করে।
তার নামানুসারে বার্সেলোনায় ইউনিভার্সিতাত পম্পেঁউ ফাব্রা নামক একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩]