পলল শাখা একটি অগভীর শঙ্কু আকৃতির ভূমিভাগ,যা তৈরী হয় পলল বা পলি জমে, এবং যার [১] শীর্ষটি থাকে পলি যেখান থেকে উৎপত্তি হচ্ছে। যেন একটি গিরিখাত, পাহাড়ের উঁচু অংশ থেকে নির্গত হচ্ছে।[২] পলল শাখা সাধারণত শুষ্ক থেকে প্রায় শুষ্ক পার্বত্য অঞ্চলে তৈরী হয়, তবে [৩][৪] বৃষ্টিবহুল আর্দ্র অঞ্চলে ও যেখানে নবীন হিমবাহ তৈরী হচ্ছে, এমন অঞ্চলেও পলল শাখা গড়ে ওঠে। [১][৪] পলল শাখার বিস্তৃতি কমপক্ষে ১ বর্গকিলোমিটার (০.৩৯ মা২)[৪][৫] থেকে প্রায় ২০,০০০ বর্গকিলোমিটার (৭,৭০০ মা২) পর্যন্ত হতে পারে।[৬]
জলস্রোত যখন কোনো আবদ্ধ সরু খাতের মতো স্থান থেকে নির্গত হয়ে অনেকটা স্থান জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে প্রবাহিত হতে থাকে এবং ভূমিতলে অনুপ্রবেশ ঘটতে থাকে,সেই জায়গায় সাধারণত পলল শাখা গড়ে ওঠে। তখন ধীরে ধীরে জলস্রোতের বহন ক্ষমতা কমতে থাকে আর ভূমিতলে পলল বা পলি জমতে থাকে। [১] এতে অনেক সময় কাদা পাথরের স্রোতের সৃষ্টি হয় অথবা এক বা একাধিক ক্ষণস্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী জলস্রোতের সৃষ্টি হয়।[৬]
ভূতাত্বিক তথ্যাবলীতে দেখা যায় যে, পলল শাখার গঠন একটি অতি সাধারণ প্রাকৃতিক বিষয়, যেমন, উত্তর আমেরিকার পূর্বাঞ্চলে ট্রায়াসিক অববাহিকা এবং ইংল্যান্ডের ডেভনের দক্ষিণাঞ্চলের নবীন লাল বেলেপাথরের স্তর। [৭] ভূতাত্বিক তথ্য অনুযায়ী, প্রচুর পরিমাণে নুড়ি পাথর এসে জমে, এই ধরনের পললে। [৮]
হিমালয় পর্বতমালা সংলগ্ন সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে বেশ কিছু বৃহৎ পলল শাখা দেখা যায়। [৬] কোনো শাখানদীর ধারা সরে গেলে ( সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ) অনেক সময়ে ধ্বংসাত্মক বন্যা হতে পারে এসব স্থানে, তার উদাহরণ ২০০৮ সালে কোশী নদীর পলল শাখায় মারাত্মক বন্যা।[৯]
বিস্তৃতির নিরিখে, পলল শাখার বিস্তার শুরুতে মাত্র কয়েক মিটার থেকে শুরু করে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে এবং ১.৫° থেকে ২৫° পর্যন্ত ঢালু হতে পারে। [৫] এই পরিমাপ সাধারণত পলল শাখার শীর্ষ থেকে নেওয়া হয়, যেখানে ঢাল সর্বাধিক এবং অবতল (অগ্র শাখা[১০] বা শাখামুখ[১১]), যত নীচের দিকে নামা যায় তত ঢাল কমে আসে ( মধ্যশাখা ) এবং নীচের অংশে শাখার প্রান্তভাগ অঞ্চলে তা একেবারেই কমে যায় (দূরবর্তী শাখা বা বহিঃ শাখা)। অগ্র শাখা অংশে জমা পলল সাধারণত কর্কশ নুড়ি পাথর। একটি পলল শাখায় যে পলল জমা হয় তা কর্কশ ছোটো বড় নুড়ির মিশ্রণ। কিন্তু বহিঃ শাখায় পলল অনেক মসৃণ হয়ে আসে। [১][৪]
যখন পাললিক সমতলে কোনো নদী বা উপত্যকার বাধা থাকে না,তখন উন্মুক্ত পলল শাখা গড়ে উঠতে দেখা যায়। অন্যান্য ভূ-গঠন সংক্রান্ত কোনো বাধা বা প্রভাব না থাকায় এক্ষেত্রে পলল, শাখা প্রান্ত ধরে ছড়িয়ে যেতে থাকে ও বিস্তৃত ভূমিভাগে জমতে থাকে। [১২] যে ক্ষেত্রে পাললিক সমতল সঙ্কীর্ণ ও পলল ধারার প্রায় সমান্তরাল, তখন পলল শাখার আকৃতিও খনিকটা অন্যরকম হয়।[১৩] তরঙ্গ বা শাখার প্রান্তভাগ, খাতে ক্ষয় জনিত কারণে "পায়ের আঙ্গুলের আকারের" পলল শাখা গড়ে ওঠে।[১৪]
পর্বত থেকে যখন অনেক নদী বা ঝর্ণা নির্গত হয়ে সমতলে নেমে আসে, তখন পলল শাখাগুলি মিলিত হয়ে প্রায় একটি আলখাল্লা ধরনের আকৃতি নেয়। শুষ্ক থেকে প্রায় শুষ্ক আবহাওয়াযুক্ত অঞ্চলে এই মিলিত পলল শাখাকে বাজাডা পলল বলে;[৩] এবং আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে একে "পাইডমন্ট" পলল শাখা বলা হয়। .[১২]
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; :1
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; blatt-etal-1980-631
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; :3
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি