পশ্চিম তিমুর (ইন্দোনেশীয়: Timor Barat) হলো তিমুর দ্বীপের পশ্চিমাংশ যা ইন্দোনেশিয়ার নুসা তেংগারা (ইন্দোনেশীয়: Nusa Tenggara Timur) প্রদেশে পড়েছে।
ঔপনিবেশিক যুগে এটি ডাচ তিমুর নামে পরিচিত ছিল এবং ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় বিপ্লবের (১৯৪৫-১৯৪৯) সময় এটি ডাচদের প্রতি অনুগতদের একটি কেন্দ্র ছিল।[১][২]
১৯৪৯ সাল হতে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত এটিকে ইন্দোনেশীয় তিমুর নামে ডাকা হতো।[৩][৪]
১৫দশ শতাব্দীতে তিমুরে ইউরোপীয়দের উপনিবেশিক শাসন শুরু হয়েছিল। যদিও পর্তুগিজরা ১৫২০ সালে তিমুর দ্বীপটিকে নিজেদের বলে দাবি করে; কিন্তু, ডাচরা (ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী' নামে) ১৬৪০ সালে পশ্চিম তিমুরে বসতি স্থাপন করে এবং পর্তুগিজদের পূর্ব তিমুরে বিতাড়িত করে। ১৭৯৯ সালে এই এলাকায় কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে এবং এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ডাচ শাসনাধীনে যুক্ত হয়। অবশেষে, ১৯১৪ সালে পূর্ব ও পশ্চিম তিমুরের মধ্যে চূড়ান্তভাবে সীমানা সংক্রান্ত বিষয়টির মীমাংসা হয় পর্তুগাল ও নেদারল্যান্ডের মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তির মাধ্যমে, যা মূলত ১৮৫৯ সালে স্বাক্ষরিত হয় এবং ১৮৯৩ সালে পরিমার্জন করা হয়।
পশ্চিম তিমুর একটি রাজনৈতিক অঞ্চল যা তিমুর দ্বীপের পশ্চিমাঞ্চলে ওকেসে জেলা (যেটি রাজনৈতিক ভাবে পূর্ব তিমুরের অংশ) ব্যতীত অবশিষ্ট অর্ধাংশ নিয়ে গঠিত এবং ইন্দোনেশিয়ান প্রদেশ নুসা তেংগারা তিমুর (এনটিটি, বা পূর্ব নুসা তেনগারা)-এর অন্তর্ভুক্ত। পশ্চিম তিমুরের মোট ভূমি এলাকা ১৫,৮৫০ বর্গ কিলোমিটার (৬,১২০ বর্গ মাইল)। পশ্চিম তিমুরের সর্বোচ্চ বিন্দুটি মাউন্ট মুতিস, যা ২,৪২৭ মিটার (৭,৯৬৩ ফুট) উচ্চতা বিশিষ্ট।
পশ্চিম তিমুর একটি শহর প্রশাসন কুপাং এবং চারটি রিজেন্সীতে বিভক্ত।
২০০৮ সালের হিসাব অনুসারে এখানে প্রায় ১.৮ মিলিয়ন অধিবাসীর বাস রয়েছে, যাদের কিছু অংশ ১৯৯৯ সালে পূর্ব তিমুরে ঘটা সহিংসতার শিকার হয়ে উদ্বাস্তু হিসাবে আশ্রয় নিয়েছে।
এখানে জাতীয় ভাষা ইন্দোনেশীয় ছাড়াও তেতুম ভাষা ব্যবহৃত হয়, যেটি পূর্ববাংশে চালু আছে এবং অস্ট্রেনেশিয়ান ভাষা গোষ্ঠীর অংশ।
পশ্চিম তিমুরের প্রধান ধর্ম বিশ্বাসগুলি হলো ক্যাথলিক খ্রিস্টান (৫৬%), প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টান (৩৫%) এবং ইসলাম (৮%)।
পশ্চিম তিমুরে গড় বেকারত্বের হার ২.৩৯%। [8] ১৯৯৮ সালে এখানকার জনসংখ্যার ৩০% দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করতো; ২০১২ সালেও হিসাবেও এটি ৩০% এ রয়ে গিয়েছে। কৃষকরা ভুট্টা, চাল, কফি এবং ফল উৎপাদনের জন্য মূলতঃ স্ল্যাশ-এন্ড-বার্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে। কিছু কাঠ সংগ্রহ করা হয়; যেগুলি ইউক্যালিপটাস, স্যান্ডউইউড, বাঁশ ও রোসউড হতে উৎপাদিত হয়।