এই নিবন্ধের যাচাইযোগ্যতার জন্য অতিরিক্ত তথ্যসূত্র প্রয়োজন। |
পাইরোবাদ বা পাইরোনীয় সংশয়বাদ দর্শনে সংশয়বাদের একটি ধারা। পিলোপনিসাসের অন্তর্গত এলিস নগরের অধিবাসী পাইরো (খ্রিস্টপূর্ব ৩৬৫-২৭০) এ মতবাদের প্রবক্তা।[১] আরেক গ্রিক সংশয়বাদী দার্শনিক এনিসিডেমাস পাইরোর মতবাদগুলো একটি নির্দিষ্ট ধারা হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করেন। অনেকসময় পাইরোবাদকে সংশয়বাদের প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
পাইরো জ্ঞান ও সত্তার ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, বাস্তবসত্তা বলে কিছু থাকলেও থাকতে পারে; কিন্তু একে জানা যায় না, জানার কোন উপায় নেই। মানুষের ইন্দ্রিয় বা বুদ্ধির পক্ষে সত্য জ্ঞান প্রকাশ বা অনুধাবন করা সম্ভব নয়। কোন একটি ব্যাপারে আমরা যে সিদ্ধান্তেই উপনীত হই না কেন, তার বিপরীত সিদ্ধান্তেও উপনীত হওয়া সম্ভব। অতএব অনিশ্চিত ব্যাপারে কোন দৃঢ়মত পোষণ না করাই বাঞ্ছনীয়।
পাইরোর মতে, জোর দিয়ে কোন কিছু বলার চেয়ে অস্বীকার করা অনেক ভাল। কোন জটিল দার্শনিক সমস্যার ব্যাপারে দ্রুত কোন সিদ্ধান্তে উপনীত না হয়ে বিষয়টির বিভিন্ন দিক ভালভাবে তলিয়ে দেখা আবশ্যক। বস্তুত, পাইরো বিশ্বাস করতেন যে, কোন বিষয়ে নিশ্চিত মত প্রকাশ না করার ফলে মানুষের পক্ষে অবিচলিত থাকা ও সুখ লাভ করা সম্ভব।
পাইরোবাদ অনুসারে সুখই জীবনের লক্ষ্য ও কাম্য। দর্শন চর্চার ফলে সুনিশ্চিত জ্ঞান পাওয়া যায় না। ফলে দর্শন মানুষকে সুখ শান্তি না দিয়ে কেবল অনিশ্চয়তা আর সন্দেহ দেয়। সুতরাং দর্শনচর্চা আর তত্ত্বানুসন্ধান শুধু অনাবশ্যকই নয়, অবাঞ্ছিতও বটে। প্রকৃত পক্ষে বস্তুতত্ত্ব বা আধ্যাত্মশাস্ত্র অনধিগম্য। বস্তুর প্রকৃত সত্তা বা রূপ আমরা জানতে পারি না। আমরা যা জানি তা বস্তুর আসল রূপ নয়, প্রতিভাস মাত্র।
নৈতিকতার বিষয়েও পাইরো সংশয় প্রকাশ করেন । তার মতে, একটি বিশেষ নৈতিক আচরণকে অন্য একটি আচরণের চেয়ে ভাল বলার কোন যুক্তি নেই। তবে এক্ষেত্রে নৈতিক উচ্ছৃঙ্খলতায় গা ভাসিয়ে দেওয়ার পক্ষে তিনি মত দেননি। কোন আচরণটি ভাল আর কোন আচরণটি মন্দ, তা যখন সুনিশ্চিতভাবে জানার উপায় নেই, তখন সমাজের প্রচলিত প্রথা বা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানকে মন্দ বলে অভিহিত করাও সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সামাজিক ও ধর্মীয় প্রথা বা আচার-অনুষ্ঠানকে মেনে চলা উচিত।
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)