পাউল ক্যোর্তজঁ | |
---|---|
জন্ম | পাউল ইয়োসেফ ক্যোর্তজঁ ৩ ডিসেম্বর ১৯৩৩ |
নাগরিকত্ব | ডাচ |
মাতৃশিক্ষায়তন | স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | ওজোন গহবরে অ্যানথ্রাসিন রাশি নিয়ে গবেষণা |
পুরস্কার |
|
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | University of Stockholm National Oceanic and Atmospheric Administration (NOAA) Colorado State University Max Planck Institute for Chemistry |
ওয়েবসাইট | www |
পাউল জে ক্যোর্তজঁ (৩ ডিসেম্বর ১৯৩৩-) একজন ডাচ নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বায়ুমণ্ডলীয় রসায়নবিদ। [১][২][৩]জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণার জন্য তিনি সুপরিচিত। মানবসৃষ্ট কর্মকাণ্ডের ফলে পৃথিবীতে যখন ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হবে, সে সময়টিকে " অ্যান্থ্রোপোসিন" যুগ নামে পরিচিত করে তোলার পেছনে তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।
পাউলের শৈশবের সূচনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কিছু পূর্বেই সংঘটিত হয়। ১৯৪০ সালের সেপ্টেম্বরে জার্মানি নেদারল্যান্ডকে আক্রমণ করে। সে বছর তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হন। নানা প্রকার বিলম্ব ও ঘনঘন বিদ্যালয় পরিবর্তনের কারণে পাউলকে একটি অস্থিতিশীল শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করতে হয়। এই অস্থিতিশীলতার মধ্যেই তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে ১৯৪৬ সালে উচ্চবিদ্যালয়ে (হোগেরে বার্জেনস্কুল) ভর্তি হন। সেখানে পড়াকালীন পাউল মাতৃভাষার পাশাপাশি ফ্রেঞ্চ, জার্মান ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হয়ে ওঠেন। ভাষাশিক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বিষয়েও তিনি সম্যক জ্ঞানার্জন করেন। ১৯৫১ সালে তিনি উচ্চবিদ্যালয় হতে স্নাতক হন। অতঃপর তিনি মধ্য কারিগরি বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পুরকৌশল বিষয়ে লেখাপড়া করেন। তবে এরই মাঝে তাকে ২১ মাস বাধ্যতামূলকভাবে নেদারল্যান্ডের সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হয়।
ক্যোর্তজঁ বায়ুমণ্ডলীয় রসায়ন নিয়ে গবেষণা করে জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় অতিবাহিত করেছেন। [৪] তিনি ওজোনস্তর ক্ষয় নিয়ে আলোচনার জন্য সুপরিচিত। ১৯৭০ সালে তিনি বলেন, মাটিস্থ ব্যাকটেরিয়া হতে উৎপন্ন স্থিতিশীল ও দীর্ঘস্থায়ী গ্যাস নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) বায়ুমণ্ডলের স্ট্রাটোস্ফিয়ারে নাইট্রিক অক্সাইডের (NO) পরিমাণ প্রভাবান্বিত করে। ক্যোর্তজঁ দেখান, নাইট্রাস অক্সাইড এতটাই দীর্ঘস্থায়ী, যে এটি বায়ুমণ্ডলীয় স্তরের অনেক উপরে ওঠতে পারে এবং একসময় নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়ে যায়। তিনি বলেন, রাসায়নিক সারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার প্রকৃতিতে নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলে স্ট্রাটোস্ফিয়ারে নাইট্রাস অক্সাইডের রূপান্তর নাইট্রিক অক্সাইডের হারও বেড়ে চলেছে। এছাড়াও তিনি ও হ্যারল্ড জনস্টন আলাদাভাবে প্রমাণ করেন যে, শব্দের গতির চেয়ে দ্রুতগামী যান (যেমন- বোয়িং ২৭০৭) নাইট্রিক অক্সাইড নিঃসরণ করে। তাই এ সকল বায়ুযান স্ট্রাটোমণ্ডল দিয়ে যাওয়ার সময় ওজোন স্তরে ফুটো সৃষ্টি করে। তবে সম্প্রতি গবেষকরা বলেছেন, বায়ুযানের নাইট্রিক অক্সাইড নিঃসরণের হার "তেমন চিন্তার কিছু নয়। "[৫]
ক্যোর্তজেঁর স্বীয় ভাষ্যমতে, তার প্রধান আগ্রহের বিষয় "ট্রপোমণ্ডলীয় ও স্ট্রাটোমণ্ডলীয় রসায়ন এবং জীব ভূূরাসায়নিক চক্র ও জলবায়ু পরিবর্তনে তাদের ভূমিকা।"[৬] ১৯৮০ সাল থেকে তিনি জার্মানির মেইঞ্জ শহরে অবস্থিত মাক্স প্লাংক রসায়ন ইনস্টিটিউটের বায়ুমণ্ডলীয় রসায়ন বিভাগ, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সান ডিয়েগো শাখার স্ক্রিপস সমুদ্রবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও সিউল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেছেন। [৭] এছাড়াও দীর্ঘকাল ধরে তিনি জর্জিয়া প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি সুইডেনের স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়েও আবহাওয়াবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। [৮]
তিনিসহ ৭০ জন নোবেল বিজয়ী লুইজিয়ানা বিধানসভা কর্তৃক পাসকৃত বিতর্কিত বিজ্ঞান শিক্ষা আইন বাতিলের আহবান জানান। [৯] ২০০৩ সালে পাউলসহ ২২ জন নোবেল বিজয়ী মানবতাবাদী সনদে স্বাক্ষর করেন।[১০]
১৯৫৬ সালে ক্যোর্তজঁ তারতু সোইনিনেনের সাথে দেখা করেন। ১৯৫৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সে বছরের ডিসেম্বরে তাদের ইলোনা নামে এক কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। ১৯৬৪ সালে সিলভিয়া নামে তাদের আরেক কন্যাসন্তান জন্ম নেয়।
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)