স্থানীয় নাম | پاکستان ڈاک |
---|---|
প্রাক্তন নাম | ডাক ও টেলিগ্রাফ বিভাগ |
ধরন | রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগ |
শিল্প | ডাক, কুরিয়ার |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৪ আগস্ট ১৯৪৭ |
সদরদপ্তর |
|
অবস্থানের সংখ্যা | জিপিওস - ৮৫, সাব-অফিস - ৩১০৯, অতিরিক্ত বিভাগীয় পোস্ট অফিস - ৭১৪২ |
প্রধান ব্যক্তি |
|
পণ্যসমূহ | |
আয় | ২০২০-২১ অর্থবছর - ১৫.৬২ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি |
কর্মীসংখ্যা | অনুমোদিত পদ (স্থায়ী) - ২৮,৮৬৬ বহির্বিভাগীয় - ১০,২৫১ |
ওয়েবসাইট | pakpost |
পাকিস্তান ডাক (উর্দু: پاکستان ڈاک) একটি রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ যা পাকিস্তানের প্রাথমিক ও বৃহত্তম ডাক পরিচালনাকারী হিসেবে কাজ করে।[১] ৪৯,৫০২ জন কর্মী ৫,০০০ জনের একটি যানবাহন বহরের মাধ্যমে সারা দেশে ১৩,৪১৯ টিরও বেশি পোস্ট অফিস থেকে ঐতিহ্যগত "দ্বারে দ্বারে" পরিষেবা পরিচালনা করে, ৫ কোটিরও বেশি লোককে পরিষেবা দেয়। পাকিস্তান ডাক গ্রাহকদের সম্পূর্ণ পরিসরের বিলি, রসদ ও পরিপূর্ণতা পরিষেবা প্রদানের জন্য স্বায়ত্তশাসিত "ডাক সেবা ব্যবস্থাপনা বোর্ড"-এর অধীনে কাজ করে।
এর ঐতিহ্যগত ভূমিকার পাশাপাশি, পাকিস্তান ডাক ডাক জীবন বীমা এবং পাকিস্তান ডাক সঞ্চয় ব্যাঙ্ক-এর মতো পরিষেবাও প্রদান করে। এটি কর ও ইউটিলিটি বিলের জন্য একটি সংগ্রহের পয়েন্ট হিসাবে কাজ করে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে পরিষেবাগুলোও পরিচালনা করে।[২]
মুঘল সাম্রাজ্য ও সাম্মা রাজবংশের সময়, ১৩শ শতাব্দীর শুরুতে সিন্ধুতে সিন্ধু নদীর তীরে একটি প্রাথমিক ডাক ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এই ব্যবস্থায় বার্তাবহ বা "ডাক" (ڈاک) ছিলো যারা এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে চিঠি নিয়ে যেতেন ও তারপর পরবর্তী বার্তাবহের হাতে তুলে দিতেন যিনি আবার একই কাজ করতেন।[৩] দূরত্ব ভ্রমণ ও চিঠির ওজন অনুযায়ী দৌড়বিদদের অর্থ প্রদান করা হতো। এই ব্যবস্থা দক্ষিণে ঠাট্টা থেকে কোটরি ও হায়দ্রাবাদ হয়ে উত্তরে সুক্কুর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এই ব্যবস্থা পরবর্তীতে নিম্ন পাঞ্জাবে (মুলতান ও বাহাওয়ালপুর) প্রসারিত হয়। তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে দুই ডজনেরও বেশি বার্তাবহ চিঠি আদান-প্রদান করতে পারতো।
১৭ ফেব্রুয়ারি ১৮৪৩ সালে, মিয়ানির লড়াইয়ের পরে সিন্ধু ও পরে ১৮৪৫ সালে পাঞ্জাব ব্রিটিশদের হাতে চলে যায়। স্যার বার্টল ফ্রেয়ার ১৮৫০ সালে সিন্ধুর প্রধান কমিশনার হন ও ডাক ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করেন এবং ডাকের জন্য একটি সস্তা ও মানক হার প্রবর্তন করেন, যা দূরত্বের উপর অনির্ভরশীল ছিলো।[৪] ১৮৫১ সালে ঘোড়া ও উট দিয়ে বার্তাবহদের প্রতিস্থাপিত করা হয় যা উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছিল কারণ এটি দ্রুত ও দক্ষতার সাথে ডাক পরিবহন করে, সরকারি দপ্তর ও পোস্ট অফিসের সাথে সংযোগ স্থাপন করে। ১৮৫৫ সালে সিন্দে রেলওয়ে বেশিরভাগ ডাক রুটগুলো দখল করতে শুরু করে, তবে উট ও ঘোড়াগুলো তখনো সেই অঞ্চলগুলোয় ব্যবহৃত হতো যেখানে রেলপথ এখনও পৌঁছায়নি। ১৮৮৬ সালের মধ্যে উত্তর-পশ্চিম স্টেট রেলওয়ে দেশের উপরে ও নিচে বেশিরভাগ ডাক পরিবহনের জন্য দায়ী ছিলো। এখন পর্যন্ত ডাক ব্যবস্থা দক্ষিণে করাচি থেকে উত্তরে গিলগিত পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে।
পাকিস্তান ডাক ব্রিটেন থেকে দেশের স্বাধীনতার পর সংশোধিত ডাক দপ্তর আইন ৬, ১৮৯৮-এর[৫] অধীনে প্রতিষ্ঠিত ও ১৪ আগস্ট ১৯৪৭ সালে চালু হয়। পাকিস্তান ডাক যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিগ্রাফ বিভাগের অধীনে আসে। লাহোরে পোস্টমাস্টার জেনারেলের অফিস প্রতিষ্ঠিত হয়।[৫] ১০ই নভেম্বর ১৯৪৭ সালে, পাকিস্তান বিশ্ব ডাক ইউনিয়নের ৮৯ তম সদস্য হিসাবে যোগদান করে।[৬] ৯ জুলাই ১৯৪৮-এ পাকিস্তান ডাক নিজের প্রথম ডাকটিকিট জারি করে যা ছিলো দেশের স্বাধীনতার স্মরণে চারটি ডাকটিকিটের একটি সেট। ১৯৫৯ সালে একটি "অল-আপ-এয়ারমেইল" স্কিম চালু করা হয়েছিল যার মাধ্যমে সমস্ত চিঠিগুলো একটি এয়ার নেটওয়ার্কে স্টেশনগুলোর মধ্যে বিমানযোগে পাঠানো হয়। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের সিকোরস্কি হেলিকপ্টার পূর্ব পাকিস্তানে চিঠি পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হতো।[৭] জুলাই ১৯৬২ সালে, সরকার পুরানো বিভাগকে বিভক্ত করে[৮] ও স্বাধীনভাবে পাকিস্তান ডাককে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাখে। ১৯৮৭ সালের জানুয়ারিতে, দেশে "জরুরী ডাক সেবা" চালু করা হয়[৯] ও এপ্রিল ১৯৮৭ সালে "স্থানীয় প্যাকেট ও পার্সেল সার্ভিস" চালু করা হয়।[৯] ১ জানুয়ারি ১৯৮৮-এ পাঁচ অঙ্কের পোস্ট কোড দেশব্যাপী চালু করা হয়।[৯] ১ আগস্ট ১৯৯২ থেকে ৬ জুলাই ১৯৯৬ সালের মধ্যে, পোস্ট অফিসটি যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে একটি স্বাধীন কর্পোরেশন করা হয়েছিল।[১০] বিদেশী ডাককে প্রবাহিত করার জন্য ১ ডিসেম্বর ১৯৯২ থেকে ইসলামাবাদে সদর দপ্তর সহ একটি নতুন "বৈদেশিক ডাক সার্কেল" চালু করা হয়েছিল। ইসলামাবাদের পরিকাঠামোর পূর্বে, সমস্ত আন্তর্জাতিক চিঠি করাচির মাধ্যমে গৃহীত ও পাঠানো হত। ২০০৬ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে চিত্রাল, করাচি, লাহোর, মহেঞ্জোদাড়ো, মুলতান ও স্কার্দু সহ ১৯ অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ব্যবহার করে চিঠি পাঠানো হয়।[১১] একই সময়ে, চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও ব্যবহার করা হয়েছিল: ইসলামাবাদ, করাচি, লাহোর ও পেশোয়ার।[১১] ২০০৭ সালে পাকিস্তান ডাক একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা করে যার মধ্যে একটি প্রতীক পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত ছিল। ৩ নভেম্বর ২০০৮-এ বিভাগটিকে নতুন তৈরি করা ডাক পরিষেবা মন্ত্রণালয়ের ডাক বিভাগের অধীনে রাখা হয়েছিল।[১২] সিনেটর ইসরার উল্লাহ জেহরি এর প্রথম মন্ত্রী নিযুক্ত হন।
পাকিস্তান ডাক শুধুমাত্র কিছু ডাক পরিষেবার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর কার্যক্রমের ক্ষেত্রগুলো বৃহত্তর পরিসরে বিস্তৃত। জাতীয় বৈশিষ্ট্য, শক্তিশালী মার্কার স্বীকৃতি ও পোস্ট অফিসের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে পাকিস্তান ডাককে একটি অনন্য অবস্থান প্রদান করে। এটি মূল নীতি বাস্তবায়নে সরকারের প্রধান সংস্থা হিসেবে কাজ করে। পাকিস্তান ডাক অনেক কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করছে। ডিসেম্বর ২০১৮ সালে, যোগাযোগ ও ডাক পরিষেবার ফেডারেল মন্ত্রী মুরাদ সাইদ পাকিস্তান ডাক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন চালু করেন।[১৩]
নিম্নলিখিতগুলি দেশের মধ্যে দেওয়া ডাক পরিষেবা।
বিশেষ সেবা[১৪]
নিম্নলিখিত বিশেষ সেবাগুলো বন্ধনীতে দেওয়া শুরু হওয়ার তারিখ সহ। প্রতিটি পোস্ট অফিসে সমস্ত পরিষেবা দেওয়া হয় না।
নিম্নলিখিত পরিষেবাগুলি ব্যক্তিগত উদ্যোগের সাথে অংশীদারিত্বে প্রদত্ত।
১৯৮৭ সালে, পোস্ট অফিস তার কর্মচারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ইসলামাবাদে একটি ডাক কর্মচারী কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। বছরের পর বছর ধরে এটি আলবেনিয়া, কম্বোডিয়া, ফিজি, কেনিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ও জাম্বিয়া সহ ৫৭টি অন্যান্য ডাক পরিষেবার কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।[১৯] ইসলামাবাদ, করাচি, লাহোর, নওশেরা এবং কোয়েটায় এর ৫টি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে।
২৬ অক্টোবর ২০১৫-এ গণমাধ্যমের কাছে একটি সাক্ষাৎকারে, "একজন পাকিস্তান ডাক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেছিলেন যে বিভাগটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য একটি নতুন ব্যাপক পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কর্মীদের প্রশিক্ষণ, ইলেকট্রনিক অর্থ স্থানান্তর ও ট্র্যাকিং সুবিধা ইত্যাদি। এর উদ্দেশ্য হল সত্তাকে গ্রাহক সন্তুষ্টির আন্তর্জাতিক মানের উপরে নিয়ে আসা।"[২০][২১]
১৫ অক্টোবর ২০১৩-এ এশিয়া ও ইউরোপের ১০টি সদস্য দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা (ইসিও), আজারবাইজানের বাকুতে নিজেদের ২০ তম বৈঠকে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে "ইসিও ডাক কর্মচারী কলেজ" প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয় যাতে ১০টি সদস্য দেশের জন্য ডাক পরিষেবার কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়। ১০টি সদস্য দেশ ছিল আফগানিস্তান, আজারবাইজান, ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুরস্ক, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান।
২০১৬ সালে "পাকিস্তান বিশ্ব ডাক ইউনিয়নের (ইউপিইউ) প্রশাসন পরিষদে (সিএ) পুনঃনির্বাচিত হয়, যা আন্তর্জাতিক ডাক পরিষেবার উন্নয়ন ও সহযোগিতার জন্য দায়ী জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থার প্রধান সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা"।[২২]
অর্থবছর (জুলাই থেকে জুন) অনুযায়ী পাকিস্তানে ডাকঘরের সংখ্যা:[২৩]
অর্থবছর | শহুরে | গ্রামীণ | মোট |
---|---|---|---|
১৯৯০-১৯৯১ | ১,৮৬৭ | ১১,৫৪৬ | ১৩,৪১৩ |
১৯৯১-১৯৯২ | ১,৯০৯ | ১১,৪৭১ | ১৩,৩৮০ |
১৯৯২-১৯৯৩ | ১,৯৮৩ | ১১,২১৩ | ১৩,১৯৬ |
১৯৯৩-১৯৯৪ | ১,৯৭০ | ১১,৩১৫ | ১৩,২৮৫ |
১৯৯৪-১৯৯৫ | ২,০২৬ | ১১,২৯৪ | ১৩,৩২০ |
১৯৯৫-১৯৯৬ | ২,০৯২ | ১১,৩২৭ | ১৩,৪১৯ |
১৯৯৬-১৯৯৭ | ২,০২৪ | ১১,১৯২ | ১৩,২১৬ |
১৯৯৭-১৯৯ই | ২,০৪৪ | ১১,২৫০ | ১৩,২৯৪ |
১৯৯৮-১৯৯৯ | ২,১০৩ | ১০,৭৫১ | ১২,৮৫৪ |
১৯৯৯-২০০০ | ২,১০৩ | ১০,৭৫১ | ১২,৮৫৪ |
২০০০-২০০১ | ২,৩০২ | ৯,৯৩২ | ১২,২৬৭ |
২০০১-২০০২ | ১,৯৮৩ | ১০,২৮৪ | ১২,২৬৭ |
২০০২-২০০৩ | ১,৮০৮ | ১০,৪৪৬ | ১২,২৫৪ |
২০০৩-২০০৪ | ২,২৬৭ | ৯,৮৪০ | ১২,১০৭ |
২০০৪-২০০৫ | ১,৮৩১ | ১০,৪৯৯ | ১২,৩৩০ |
২০০৫-২০০৬ | ১,৮৪৫ | ১০,৪৯৪ | ১২,৩৩৯ |
২০০৬-২০০৭ | ১,৮৪৫ | ১০,৪৯৪ | ১২,৩৩৯[১৬] |
এটি পাকিস্তান ডাকের লাখের হিসাবে পাকিস্তানি রুপির পরিসংখ্যান সহ পোস্ট, পার্সেল, ব্যাংকিং, বীমার মতো বৈচিত্র্যময় জনসেবা থেকে আয়ের প্রবণতার একটি তালিকা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
বছর | আয়(মিলিয়নে) | লাভ/(ক্ষতি) |
---|---|---|
১৯৪৭ | ১০ | (৪) |
১৯৫০ | ৩২ | (৩) |
১৯৫৫ | ৪০ | (৩) |
১৯৬০ | ৬৫ | ৬ |
১৯৬৫ | ৯৮ | ১ |
১৯৭০ | ৯১ | (১২) |
১৯৭৫ | ১৯৭ | (২৮) |
১৯৮০ | ৩৬১ | (৬৯) |
১৯৮৫ | ৬৩০ | (১৫১) |
১৯৯০ | ১,২১৪ | (১৭৬) |
১৯৯৫ | ২,০৪৫ | (৪৭১) |
২০০০ | ৩,২৮১ | ২৭০ |
২০০৫ | ৪,৮৩০ | ২০ |
২০১৭ | ৮,০০০ | - |
২০১৮ | ১৪,০০০ | - |
২০১৯ | - | (১০,০০০) |
২০২০ | - | - |
২০২১ | - | - |