পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রশাসনিক ইউনিটসমূহ پاکستان کی سابقہ انتظامی اکائیاں | |
---|---|
পাকিস্তান প্রশাসনিক বিভাগ | |
১৪ আগস্ট ১৯৪৭–১৯৭১ ১৯৭৫ | |
পতাকা | |
প্রাক্তন প্রশাসনিক ইউনিটসমূহকে চিহ্নিত করা পাকিস্তানের মানচিত্র | |
রাজধানী | করাচি (১৯৪৭-১৯৬০) ইসলামাবাদ ঢাকা |
আয়তন | |
• | ৯,৪৭,৯৪০ বর্গকিলোমিটার (৩,৬৬,০০০ বর্গমাইল) |
ইতিহাস | |
• প্রতিষ্ঠিত | ১৪ আগস্ট ১৯৪৭ |
• বিলুপ্ত | ১৯৭১ ১৯৭৫ |
পাকিস্তানের সাবেক প্রশাসনিক ইউনিট |
---|
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রশাসনিক ইউনিট বলতে প্রধানত ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৭৫ সালে বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো গঠনের মধ্যবর্তী সময়ে বিদ্যমান রাজ্য, প্রদেশ কিংবা অঞ্চলগুলোকে বুঝায়। প্রাক্তন অঞ্চল গুলোর বর্তমানে কোনও প্রশাসনিক কার্যক্রম নেই তবে কিছু-কিছু অঞ্চল এখনো ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার হিসাবে রয়ে গেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে বর্তমান প্রদেশ ও অঞ্চলগুলো পূর্ববর্তী অঞ্চলের সাথে মিলে যায়। উদাহরণস্বরূপ পাঞ্জাব প্রদেশটিতে পূর্বতন পশ্চিম পাঞ্জাব প্রদেশের প্রায় সকল অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
নাম | উর্দু নাম | রাজধানী | প্রতীক | পতাকা | মানচিত্র |
---|---|---|---|---|---|
পূর্ব বাংলা | مشرقی بنگال | ঢাকা | |||
পশ্চিম পাঞ্জাব | مغربی پنجاب | লাহোর | |||
সিন্ধু | سندھ | করাচি | |||
উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ | شمال مغربی سرحدی صوبہ | পেশাওয়ার | |||
বেলুচিস্তান | بلوچستان | কোয়েটা |
নাম | উর্দু নাম | রাজধানী | প্রতীক | পতাকা | মানচিত্র |
---|---|---|---|---|---|
ফেডারেল রাজধানী এলাকা | وفاقی دارالحکومت | করাচি |
১৯৪৭ সালের আগস্ট থেকে ১৯৪৮ সালের মার্চের মধ্যবর্তী সময়ে নিম্নলিখিত দেশীয় রাজ্যের শাসকগণ পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে রাজ্যগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখলেও বাহ্যিক বিষয়গুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ চলে যায় পাকিস্তান সরকারের হাতে। তবে ধাপে ধাপে দেশীয় রাজ্যগুলি নিজ কর্তৃত্ব হারিয়ে পাকিস্তানের পরিপূর্ণভাবে অন্তর্ভুক্ত হতে থাকে এবং ১৯৭৪ সালের মধ্যে সবগুলো রাজ্য পুরোপুরি পাকিস্তানের সাথে একীভূত হয়ে যায়।
পাকিস্তানের প্রশাসনিক ইউনিটগুলোর বেশির ভাগই ব্রিটিশ ভারত থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত। ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সদ্য স্বাধীন পাকিস্তানের দুটি বিচ্ছিন্ন অংশ ছিল। পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মাঝে ছিল প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড। পাকিস্তানের পশ্চিমাংশে একাধিক প্রদেশ, রাজ্য এবং অঞ্চল থাকলেও পূর্ব অংশে পূর্ব বাংলা নামক একক প্রদেশ ছিল। র্যাডক্লিফ রেখা অনুযায়ী এর মধ্যে ব্রিটিশ ভারতীয় প্রদেশ আসামের সিলেট জেলা এবং বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্বত্য চট্টগ্রামও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
অন্যদিকে পশ্চিম অংশে তিনটি গভর্নরের নিয়ন্ত্রাধীন তিনটি প্রদেশ (উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পশ্চিম পাঞ্জাব এবং সিন্ধু প্রদেশ), একটি প্রধান কমিশনারের নিয়ন্ত্রিত প্রদেশ (বেলুচিস্তান) ১৩টি দেশীয় রাজ্য এবং কাশ্মীরের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
১৯৪৮ সালে করাচির সোহম এর আশেপাশের অঞ্চলটি সিন্ধু প্রদেশ থেকে পৃথক করে ফেডারেল রাজধানী অঞ্চল গঠন করা হয়। ১৯৫০ সালে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে অম্ব এবং ফুলরা নামক দুটি ছোট রাজ্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর পশ্চিম পাঞ্জাব প্রদেশের নাম পরিবর্তন পাঞ্জাব করা হয়। ১৯৫২ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের ১৯৫২ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের (বর্তমান বেলুচিস্তান প্রদেশ) চারটি রাজ্য নিয়ে বেলুচিস্তান স্টেটস ইউনিয়ন গঠিত হয়েছিল। সুতরাং ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৫৫ সালের মধ্যবর্তী সময়ে পাকিস্তান পাঁচটি প্রদেশ এবং একটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল।
পশ্চিম অংশে শেষ পর্যন্ত মোট তেরোটি রাজ্য, একটি রাজ্য ইউনিয়ন, গওয়াদার ছিটমহল, গিলগিট এজেন্সি এবং কাশ্মীরের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরমধ্যে বিশেষায়িত অঞ্চলগুলো হলো:
পাকিস্তানের পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ আলী বগুড়ার ঘোষিত এক ইউনিট ব্যবস্থার দিকে পরিচালিত করেছিল। ১৯৫৫ সালে পশ্চিম কংসের রাজ্য এবং প্রদেশগুলোকে একীভূত করে পশ্চিম পাকিস্তান নামক একটি নতুন প্রদেশ গঠন করা হয়। এই প্রদেশের রাজধানী ছিল পাঞ্জাবের বর্তমান রাজধানী লাহোর। একই সময়ে পূর্ব অংশে ঢাকাকে প্রাদেশিক রাজধানী করে পূর্ব বাংলা প্রদেশেকে নতুন পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশে পরিণত করা হয়। ১৯৫৮ সালে পশ্চিম পাকিস্তান বেলুচিস্তান উপকূলে অবস্থিত সাবেক ওমানি ছিটমহল গওয়াদারকে (বেলুচিস্তানের উপকূলে) কালাত বিভাগের অংশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে।
ইসলামাবাদকে জাতীয় রাজধানী হিসেবে গঠনের পরিকল্পনার পর ১৯৬০ সালে ফেডারেল সরকার করাচি থেকে অস্থায়ীভাবে রাওয়ালপিন্ডিতে এবং ফেডারেল আইনসভা ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়। রাজধানী হিসেবে ইসলামাবাদের গঠনকার্য পুরোপুরি সমাপ্ত না হওয়ায় রাওয়ালপিন্ডি অস্থায়ী রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। আর পূর্ব বাংলা তথা পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকাকে সমগ্র দেশের বিধানিক বা আইন বিভাগীয় রাজধানী করা হয়। অন্যদিকে করাচির নতুন বিভাগ গঠনের জন্য ১৯৬১ সালে ফেডারেল রাজধানী অঞ্চলটি পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে একীভূত হয়ে যায়।
১৯৬৩ সালে একটি চুক্তির মাধ্যমে ট্রান্স-কারাকোরাম ট্র্যাক্টকে গিলগিট এজেন্সি থেকে পৃথক করে চীনের কাছে হস্তান্তরিত করা হয়। এই বন্দোবস্ত চীনের সমর্থনে কাশ্মীর বিরোধের চূড়ান্ত সমাধানের অধীন ছিল।
১৯৫৫ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান মাত্র দুটি প্রদেশ নিয়ে গঠিত ছিল। সেগুলো হলো:
রাষ্ট্রীয় ব্যয় হ্রাস এবং প্রাদেশিক পক্ষপাত ও বিদ্বেষ বিদ্বেষ দূর করার জন্য এক ইউনিট ব্যবস্থা একটি যৌক্তিক প্রশাসনিক সংস্কার হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। তবে ১৯৫৮ সালের সামরিক অভ্যুত্থান এই দ্বি-প্রদেশের ব্যবস্থার জন্য সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। কারণ পাকিস্তানের সামরিক রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান পশ্চিম পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত করে প্রদেশের শাসনভার গভর্নরের হাতে ন্যস্ত করেন।
অবশেষে ১৯৭০ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খান সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে পশ্চিম পাকিস্তান প্রদেশটিকে ভেঙে দিয়ে এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে কিছু প্রশাসনিক সংস্কারসহ চারটি নতুন প্রদেশ গঠন করে। এই চারটি প্রদেশ বেশিরভাগ প্রাক্তন প্রদেশ এবং রাজ্যগুলোকে একত্রিত করে। এর তালিকা নিম্নরূপ:
নতুন প্রদেশ | অন্তর্ভুক্ত প্রাক্তন প্রশাসনিক এককসমূহ |
---|---|
বেলুচিস্তান প্রদেশ | |
খাইবার পাখতুনখোয়া | |
পাঞ্জাব প্রদেশ |
|
সিন্ধু প্রদেশ |
|
গিলগিত-বালতিস্তান ক |
|
আজাদ জম্মু কাশ্মীর ক |
|
কস্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং ভারতের সাথে বিতর্কিত
খ১৯৭৪ সালে যুক্ত করা হয়
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যুদ্ধে পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করার পর তা কার্যকর হয়। ফলে পাকিস্তানের পূর্ব অংশটি পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।