পামির ভাষাসমূহ | |
---|---|
(জাতিগতভাবে সংজ্ঞায়িত) | |
ভৌগোলিক বিস্তার | পামির পর্বতমালা |
ভাষাগত শ্রেণীবিভাগ | ইন্দো-ইউরোপীয়
|
গ্লটোলগ | shug1237 (Shughni-Yazgulami)[১] yidg1239 (Munji-Yidgha)[২] sang1316 (Sanglechi-Ishkashimi)[৩] wakh1245 (Wakhi)[৪] |
পামির ভাষাসমূহ পূর্ব ইরানীয় ভাষাপরিবারের একটি ভৌম ভাষাগোষ্ঠী, যেগুলো পামির পর্বতমালা অঞ্চলে, মূলত পাঞ্জ নদী এবং এর উপনদীগুলোর তীরে, অসংখ্য লোকের দ্বারা ব্যবহৃত হয়।
১৯শ এবং ২০শ শতকের গোড়ার দিকে, পামির ভাষা পরিবারকে কখনও কখনও পশ্চিমা বিদ্বানরা গালচাহ ভাষা পরিবার হিসাবে উল্লেখ করতেন।[৫] গালচাহ শব্দটি বর্তমানে আর পামির ভাষা বা এই ভাষার স্থানীয় ভাষাভাষীদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয় না।
পামির ভাষাগুলোর অন্যতম বিস্তৃত গবেষক ছিলেন সোভিয়েত ভাষাতত্ত্ববিদ ইভান ইভানোভিচ জারুবিন।
পামিরীয় ভাষাগুলো মূলত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আফগানিস্তানের বাদাখশন প্রদেশ এবং পূর্ব তাজিকিস্তানের গর্নো-বাদাখশন স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়।
পামিরীয় ভাষাগুলো শিনচিয়াঙেও ব্যবহৃত হয় এবং পামির ভাষা সরিকোলি ভাষা সরিকোলি পর্বতমালা পেরিয়ে আফগানিস্তান-চীন সীমান্তাঞ্চল অবধি ব্যবহৃত হয় এবং এই কারণে বর্তমান ইরানি ভাষাগুলোর মধ্যে পূর্বতম হিসাবে যোগ্যতা অর্জন করে।
ওয়াখি সম্প্রদায়গুলো সংলগ্ন চিত্রল জেলা, খাইবার পাখতুনখোয়া এবং পাকিস্তানের গিলগিত বালতিস্তানের গোজালেও পাওয়া যায়।
দক্ষিণ-পূর্ব ইরানীয় গোষ্ঠীর একমাত্র জীবিত সদস্য হলো পশতু।
পামির ভাষাগুলোকে ইরানীয় ভাষাসমূহের একক উপগোষ্ঠী হিসাবে প্রদর্শিত করার মতো কোনও বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়নি।[৬] এথ্নোলগ পামিরীয় ভাষাগুলোকে পশতু ভাষার সাথে দক্ষিণ-পূর্ব ইরানীয় ভাষাপরিবারে তালিকাভুক্ত করেছে।[৭] তবে এনসাইক্লোপিডিয়া ইরানিকা অনুসারে পামিরীয় ভাষাগুলো এবং পশতু উত্তর-পূর্ব ইরানীয় শাখার অন্তর্ভুক্ত।[৮]
পামিরীয় ভাষা এলাকার সদস্যদের চারটি নির্ভরযোগ্য গোষ্ঠীতে বিভক্ত করা যায়: শুঘনি-ইয়াজঘুলামি গোষ্ঠী (শুঘনি, সরিকোলি এবং ইয়াজঘুলামি); মুঞ্জি ও ইদঘা; ইশকাশিমি এবং সম্পর্কিত উপভাষা; এবং ওয়াখি। এই ভাষাগুলোর বাক্যে পদক্রম কর্তা-কর্ম-ক্রিয়া।
এই শাখার অন্তর্গত ভাষাগুলো হলো শুঘনি, সরিকোলি এবং ইয়াজঘুলামি। আফগানিস্তান এবং তাজিকস্থানে এই ভাষাগুলো (এবং বারতাঙ্গি, রুশানি, খুফি উপভাষাগুলোসহ) প্রায় ৭৫,০০০ ভাষিক আছে। ১৯৮২ সালে, চিনের শিনচিয়াং প্রদেশের তাশকুরগান তাজিক স্বায়ত্তশাসিত কাউন্টিতে অবস্থিত সরিকোল উপত্যকায় সরিকোলির প্রায় ২০,০০০ ভাষিক ছিল। ১৯৯৪ সালে, তাজিকিস্তানের ইয়াজগুলোয়াম নদীর তীরে ইয়াজঘুলামির প্রায় ৪,০০০ ভাষিক ছিল।
ভাঞ্জি ভাষা তাজিকিস্তানের গর্নো-বাদাখশন স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ভাঞ্জ নদীর উপত্যকায় ব্যবহৃত হতো এবং ইয়াজঘুলামির সাথে সম্পর্কিত ছিল। উনিশ শতকে এই অঞ্চলটি বলপ্রয়োগে বুখারা আমিরাতে সংযুক্ত করা হয়েছিল। উনিশ শতকের শেষে ভাঞ্জি ভাষাটি তাজিক ফার্সি দ্বারা স্থানচ্যুত হয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়।
তাজিকিস্তানের অধিকাংশ ভাষাভাষী এবং অন্যান্যরা এই গোষ্ঠীর ভাষাগুলোকে 'পামিরস্কি' বা 'পামির' বলে উল্লেখ করেন।
মুঞ্জি এবং ইদঘা ভাষাগুলো একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। পাকিস্তানের চিত্রল জেলার ঊর্ধ্ব লোতকোহ উপত্যকায় প্রায় ৬,০০০ ইদঘা ভাষী বসবাস করেন। ১৯৯২ সালে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানের বাদাখশন প্রদেশের মুঞ্জান এবং মামালঘা উপত্যকাগুলোতে প্রায় ২,৫০০ মুঞ্জিভাষী বসবাস করতেন। মুঞ্জি-ইদঘাতে ব্যাকট্রীয় ভাষার *ð > /l/ ধ্বনিপরিবর্তনের বৈশিষ্ট্য আছে, যেটি অন্য তিনটি পামির গোষ্ঠীতে অনুপস্থিত।
আফগানিস্তান এবং তাজিকিস্তানে সাঙলেচি, ইশকাশিমি এবং জেবাকির প্রায় ২,৫০০ ভাষিক রয়েছে। এগুলোর কোনটিরই লিখিত রূপ নেই।
আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান, চীন, পাকিস্তান এবং রাশিয়ায় প্রায় ৫,০০,০০০ ওয়াখি ভাষাভাষির মানুষ বাস করে।
তাজিকিস্তান এবং আফগানিস্তানের পামিরভাষিদের অধিকাংশ তাজিক ভাষাকে সাহিত্যের ভাষা হিসাবে ব্যবহার করেন। তাজিক ভাষা একটি দক্ষিণ-পশ্চিম ইরানীয় ভাষা, যেখানে পামির গোষ্ঠীর ভাষাগুলো দক্ষিণ-পূর্ব ইরানীয়। পামির ভাষাগোষ্ঠীটি বিপন্ন, এবং ১৯৯০ সালে মোট ভাষাভাষীর সংখ্যা প্রায় ১,০০,০০০ ছিল।