ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান | |
---|---|
![]() | |
মানদণ্ড | মিশ্রিত: iii, iv, vii |
সূত্র | 485 |
তালিকাভুক্তকরণ | ১৯৮৮ (12th সভা) |
পামুক্কালে (তুর্কি ভাষায় "তুলার প্রাসাদ") তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্ছলীয় দেনিজলি প্রদেশের অন্তর্গত একটি প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান। এখানে প্রাকৃতিক উষ্ণ জলধারা ও ট্র্যাভারটাইন, বিভিন্ন কার্বনেট মিনারেল উৎপাদিত বিস্তির্ন ভূমি রয়েছে। পামুক্কালে মেন্দেরেস নদীর উপত্যকায় অবস্থিত। এখানে বছরের অধিকাংশ সময় নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করে।
পামুক্কালে পর্যটন প্রধান নগর। হাজার বছর ধরে পামুক্কালের জলে মানুষ স্নান করে আসছে। বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত নগরীর হিয়েরাপোলিসের ধ্বংসাবশেষের উপরে বিভিন্ন হোটেল নির্মিত হয়েছে। এসব স্থাপনা পামুক্কালের প্রাকৃতিক ভূদৃশ্যের ক্ষতিসাধন করেছে। উপত্যকা থেকে পামুক্কালের সমতল ভূমি পর্যন্ত একটি রাস্তা নির্মিত হয়েছে এবং মোটরগাড়ি যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যখন একে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়, তখন পামুক্কালেতে নির্মিত হোটেলগুলো ভেঙে ফেলা হয় এবং রাস্তাটির জায়গায় কৃত্রিম জলধারা নির্মিত হয়। পানির নিচের জমা হওয়া পলিকে ক্ষতিসাধনের হাত থেকে রক্ষার জন্যে পামুক্কালের জলধারায় জুতা পরে নামা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পামুক্কালের বিস্তীর্ণ ভূমি ট্র্যাভারটাইন দ্বারা নির্মিত। ট্র্যাভারটাইন একটি পাললিক শিলা যা উষ্ণ জলধারার পানি জমা হয়ে তৈরি করে। পামুক্কালেতে ১৭টি উষ্ণ জলধারা রয়েছে যেগুলোতে তাপমাত্রা ৩৫°সে. থেকে ১০০°সে. পর্যন্ত বিরাজ করে। এসব জলধারা থেকে আগত জল ট্র্যাভারটাইন ভূমির ৩২০ মিটার অবধি প্রবাহিত হয় এবং ৬০ থেকে ৭০ মিটার প্রস্থ ও ২৪০ দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট এলাকায় ক্যালসিয়াম কার্বনেটের স্তর জমা করে। যখন সর্বোচ্চ পরিমাণ ক্যালসিয়াম কার্বনেট ধারণ করে ভূপৃষ্ঠে পৌছায়, তখন কার্বন ডাইঅক্সাইড এ থেকে নির্গত হয় এবং ক্যালসিয়াম কার্বনেট জমা পড়ে থাকে। এই জমা হওয়ার প্রক্রিয়া ততক্ষণই চলতে থাকে, যতক্ষণ না পর্যন্ত পানিতে বিদ্যমান কার্বন ডাইঅক্সাইড বায়ুর কার্বন ডাইঅক্সাইডের সাথে সাম্যাবস্থায় পৌঁছায়। এই জমা হওয়া ক্যালসিয়াম কার্বনেট ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে ট্র্যাভারটাইনে পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়া আবহাওয়ার অবস্থা, পরিবেষ্টনকারী তাপমাত্রা, জলধারার প্রকৃতির উপর নির্ভর করে।
পামুক্কালে একটি দর্শনীয় স্থান। এটি একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৮৮ সালে একে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ইউনেস্কো ঘোষণা করে।