ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনায় পারস্পরিক বোধগম্যতা বলতে একাধিক ভাষা বা উপভাষার মধ্যে এমন একটি সম্পর্ককে বোঝায় যাতে এগুলির ভিন্ন ও কিন্তু পরস্পর-সম্পর্কিত প্রকারভেদের বক্তারা পূর্বপরিচয় বা বিশেষ প্রচেষ্টা ছাড়াই একে অপরের কথা তাৎক্ষণিকভাবে বুঝতে পারে। এই ঘটনাটিকে ভাষা থেকে উপভাষাকে পৃথক করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হিসেবে কদাচিৎ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে সেক্ষেত্রে সমাজভাষাবৈজ্ঞানিক উপাদানগুলিও প্রায়শই ব্যবহৃত হয়।
একাধিক ভাষার মধ্যে বোধগম্যতা অপ্রতিসম হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রথম ভাষার বক্তা দ্বিতীয় ভাষার বক্তার কথা যতটুকু বুঝতে পারে, দ্বিতীয় ভাষার বক্তা প্রথম ভাষার বক্তার কথা ততটুকু বুঝতে পারে না। যখন এই বোধগম্যতা আপেক্ষিকভাবে প্রতিসম হয়, তখন সেটিকে পারস্পরিক বোধগম্যতা নামকরণ করা হয়। বিশ্বের বহুসংখ্যক সম্পর্কযুক্ত ভাষা বা ভৌগোলিকভাবে নিকটবর্তী ভাষাসমূহের মধ্যে (প্রায়শই একটি ঔপভাষিক ধারাবাহিকতা-র প্রেক্ষাপটে) এরূপ পারস্পরিক বোধগম্যতা বিভিন্ন মাত্রায় বিরাজ করতে পারে।
দুইটি ভাষা একে অপরের থেকে কতখানি বিসদৃশ, তা পরিমাপ করার ধারণাটির নাম দেওয়া হয়েছে ভাষিক দূরত্ব। ভাষিক দূরত্ব যত বেশি হবে, পারস্পরিক বোধগম্যতা ততোই কম হবে।