ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | পার্সি হোমস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ওকস, হাডার্সফিল্ড, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | ২৫ নভেম্বর ১৮৮৬|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ হাডার্সফিল্ড, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স ৮৪)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক | ২৮ মে ১৯২১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৫ জুন ১৯৩২ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ |
পার্সি হোমস (ইংরেজি: Percy Holmes; জন্ম: ২৫ নভেম্বর, ১৮৮৬ - মৃত্যু: ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১) হাডার্সফিল্ডের ওকস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তিনি। চমৎকার ফিল্ডার হিসেবেও সুনাম ছিল তার।
প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে অল্প কয়েকটি খেলায় স্বীয় ক্রীড়া প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছেন। তবে, বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯১৯ সালে পাঁচ সেঞ্চুরি সহযোগে ১,৮৮৬ রান করে সকলের নজর কাড়েন। কাউন্টি ক্রিকেটে অসামান্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের কারণে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।
হোমসের টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন মাত্র সাত খেলায় অংশ নেয়ার পরপরই শেষ হয়ে যায়। ব্যাপক অর্থে জ্যাক হবস দলের প্রধান অনুষঙ্গ ছিলেন। চল্লিশ বছর বয়স হলে দল থেকে উপেক্ষিত হন তিনি। দলের প্রয়োজনে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ও বাদ দেয়া হতো। ১৯২১ সালে অনেকের মতো তাকেও বলির শিকার হতে হয়।
ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের নেতৃত্বাধীন সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে খেলার জন্য দলের একাদশে বেশ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ট্রেন্ট ব্রিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে স্বাগতিক দলের ১১২ রানের মধ্যে ত্রিশ রান তুলে শীর্ষে ছিলেন। তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি মাত্র আট রান তুলেন। ফলশ্রুতিতে মাত্র দুই দিনেই খেলাটি শেষ হয়ে যায়।
পরবর্তী টেস্টে অংশগ্রহণের জন্য তাকে প্রায় ছয় বছর অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়েছিল। ১৯২৭-২৮ মৌসুমে রনি স্ট্যানিফোর্থের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। পাঁচ টেস্টের সবকটিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। সাটক্লিফের সাথে ব্যাটিং উদ্বোধন করে ৩০২ রান তুলেন। চার ইনিংসে অর্ধ-শতক পান ও ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৮৮ রান তুলেন। তবে শেষ টেস্টে শূন্য রানে এ জুটি শেষ হয়। তার সপ্তম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশগ্রহণ ঘটে দশ দিন পর। পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সে মাঠে নেমে বিশ্বরেকর্ড গড়েন। ১৯৩২ সালে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে মাত্র ৬ ও ১১ রান তুলেন।
হার্বার্ট সাটক্লিফের সাথে স্মরণীয় জুটি গড়েন। পনেরো মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের উদ্বোধনী জুটিতে সেরা রান সংগ্রহকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। প্রথম উইকেটে তারা ৬৯বার শতাধিক রান তুলেছেন। ১৯৩২ সালে লেটনে এসেক্সের বিপক্ষে ৫৫৫ রান তুলে তৎকালীন বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করেন তারা। ১৮৯৮ সালে ইয়র্কশায়ারের ব্রাউন ও টানিক্লিফের গড়া রেকর্ডকে এক রানের ব্যবধানে ভেঙ্গে ফেলেন। হোমস অপরাজিত ছিলেন ২২৪ রানে। এ রেকর্ডটি ৪৪ বছর টিকে ছিল। অদ্যাবধি ইংরেজ ঘরোয়া ক্রিকেটে সর্বোচ্চ জুটির মর্যাদা লাভ করে আসছে। এছাড়াও এ জুটির সংগৃহীত রান যে-কোন উইকেটে বর্তমানে বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষস্থানীয়।
১৯২০ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে সাত মৌসুমে দুই সহস্রাধিক রান তুলেছেন। অন্যান্য মৌসুমে ছয়বার দেড় হাজারের অধিক রান তুলেন। ১৯২৫ সালের জুন মাসে ১,০২১ রান করেন ১০২ গড়ে। তন্মধ্যে, লর্ডসে মিডলসেক্সের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩১৫ রান করেন। ঐ সময়ে ঐ মাঠে এটিই ব্যক্তিগত সংগ্রহের কৃতিত্ব ছিল। সকল প্রথম-শ্রেণীর খেলায় তিনি ইনিংস প্রতি ৪২-এর অধিক গড়ে ৩০,৫৭৩ রান তুলেন। তন্মধ্যে ৬৭টি সেঞ্চুরি ছিল তার। এরফলে সর্বকালের সেরা রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তাকে ৫৮তম অবস্থানে রাখে।
১৯২৩ মৌসুমে ছয়জন ব্যাটসম্যানের একজন হিসেবে দলের পক্ষে সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর রান সংগ্রহ করেছিলেন। অন্যরা হচ্ছেন - মরিস লেল্যান্ড, হার্বার্ট সাটক্লিফ, রয় কিলনার, উইলফ্রেড রোডস ও এডগার ওল্ডরড।[২] ১৯২২ থেকে ১৯২৫ সময়কালে ইয়র্কশায়ার দল উপর্যুপরী চার মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয়ে সক্ষমতা দেখিয়েছিল।
ইয়র্কশায়ারের খেলোয়াড়ী জীবন বিচ্ছিন্ন হবার বিষয়টি ধূয়াশাপূর্ণ। ৪৬ বছর বয়সের পাশাপাশি কোমরের ব্যথায় ভোগার বিষয়টি ইয়র্কশায়ার কর্তৃপক্ষের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলশ্রুতিতে কর্তৃপক্ষ নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হয়নি। তবে, ইয়র্কশায়ারের শুভান্যুধায়ীরা এর বিপক্ষে অবস্থান করে। তাস্বত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে।
নেভিল কারদাসের মতে, হোমস ফূর্তিবাজ, অস্থিরচিত্তের অধিকারী ছিলেন।[৩] তিনি নিছক মজা করার উদ্দেশ্য নিয়ে ক্রিকেট খেলায় অগ্রসর হতেন। তিনি দ্রুতগতিতে রান সংগ্রহের জন্য কাট ও পুলের যথেচ্ছ ব্যবহারের মাধ্যমে শট খেলতেন। সে তুলনায় হার্বার্ট সাটক্লিফ সঠিক প্রকৃতির ব্যাটসম্যান হিসেবে এ ধরনের শট প্রয়োগ করতেন।
৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ তারিখে ৮৪ বছর বয়সে ইয়র্কশায়ারের হাডার্সফিল্ড এলাকায় তার দেহাবসান ঘটে।