ল্যাটিয়ামের প্রথম রাজা, পিকাস, রোমান পুরাণের একজন ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন শনির পুত্র। তিনি স্টেরকুটাস নামেও পরিচিত। তিনি লরেন্টাম নামক প্রথম ল্যাটিন উপজাতি ও উপনিবেশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, যা রোম শহরের কিছু মাইল দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত।[১] তিনি ভবিষ্যদ্বাণী প্রদান ও অশ্বারোহীতায় তার দক্ষতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ফেস্টুস এর মতে, তার এই নাম পাওয়ার কারণ হলো, তিনি অলৌকিকভাবে ভবিষ্যৎ বলে দেয়ার জন্য একটি কাঠঠোকরার উপর নির্ভর করতেন। পিকাস একজন সুদর্শন পুরুষ হিসেবেও বর্ণিত ও রোমান পুরাণের জলপরীরা তার প্রতি খুবই আকর্ষিত হতো। তিনি এক শিকার অভিযানে থাকার সময় জাদুকরী সারসি তার কবজ ও নানা বনজ লতার সাহায্যে তাকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল। তবে তিনি তাকে নির্মমভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। তার প্রেমকে ঘৃণায় পরিহার করায় সে তাকে একটি কাঠঠোকরায় রূপান্তরিত করে ফেলে। যখন পিকাসের সঙ্গীরা সারসিকে তার অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করে ও পিকাসকে মুক্ত করে দিতে বলে, তখন সে তাদেরকেও নানা রকম জন্তুতে রূপান্তরিত করে দেয়। পিকাসের স্ত্রী ( যার প্রতি তিনি সম্পূর্ণ নিবেদিত ছিলেন) একজন জলপরী ছিলেন, যার নাম ছিল কানেন্স। পিকাসের রূপান্তরের পরে তিনি ৬ দিন বনের মধ্যে পাগল হয়ে ঘুরে বেড়ালেন এবং অবশেষে তিনি টিবারের তীরে শুয়ে মারা গেলেন। তাদের ফনাস নামক একটি ছেলে ছিল।
ব্যাকরণবিদ সারভিয়াস এর মতে, পোমোনার প্রতি পিকাসের ভালবাসা পোমোনা কর্তৃক ঘৃণিত ছিল। তবে অন্যত্র তিনি উল্লেখ করেন যে, পোমোনা বিয়েতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু সারসি পিকাসকে একটি কাঠঠোকরায় এবং পোমোনাকে পাইকা নামক একটি পাখিতে রুপান্তরিত করে ফেলে, যা সম্ভবত একটি নীলকণ্ঠ পাখি বা পেঁচা ছিল।[২] ওভিড কর্তৃক রচিত মেটামরফসেস এর মধ্যে তিনি ছিলেন। ভারজিল বলেছেন যে, তিনি স্যাটারনাসের পুত্র ও ল্যাটিনাসের পিতামহ। ল্যাটিনাস লরেন্টাইনদের রাজা ছিলেন যার সাথে এনিয়াস ও ট্রয়ের লোকেরা ইতালিতে পৌঁছে যুদ্ধ করেছিল।
ইটালিক লোকেরা বিশ্বাস করত যে, পিকাস, যুদ্ধের দেবতা মার্সের পুত্র ছিলেন ও তিনি তার অভিনব রূপান্তরকে পাখির সাথে সম্পর্কিত শুভ ও অশুভ সংকেত অনুবাদ করতে ব্যবহার করতেন।
তার কার্যাবলীর মধ্যে অন্যতম কাজ ছিল যে, তিনি বসন্তে তার উড়নের মাধ্যমে বিশেষ কলোনীসমূহকে (তরুণ প্রজন্মের সদস্যদের দ্বারা গঠিত) নেতৃত্ব দিতেন। এটি ভার সেক্রুম নামক একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে অনুসরণ করে করা হত। পিসেনির লোকেরা এই অনুষ্ঠানের স্মৃতি হতে তাদের নাম পেয়েছিল।