পিটার সুন্দ | |
---|---|
জন্ম | পিটার সুন্দ কলমিসপ্পি ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ |
অন্যান্য নাম | ব্রকেপ |
পেশা | রাজনীতিবিদ, বক্তা |
পরিচিতির কারণ | সহ-প্রতিষ্ঠাতা দ্য পাইরেট বে প্রতিষ্ঠাতা ফ্ল্যাটার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ভিটার সহ-প্রতিষ্ঠাতা আইপিআরইডেটর প্রতিষ্ঠাতা এনজাল্লা |
পিটার সুন্দ কলমিসপ্পি (জন্ম ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮), ওরফে ব্রকেপ, একজন সুইডিশ উদ্যোক্তা এবং রাজনীতিবিদ। সুন্দ নরওয়েয়িয়ান এবং ফিনিশ বংশউদ্ভুদ।[১][২] তিনি দ্য পাইরেট বে, বিটটরেন্ট সার্চ ইঞ্জিন এর সহ প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রাক্তন মুখপাত্র হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত।[৩] তিনি সমতাকরনের পক্ষবাদী এবং তাঁর ব্লগে ইউরোপীয় ইউনিয়নএর ক্ষমতা কেন্দ্রিয়করন বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।[৪] সুন্দ ফিনল্যান্ডে পাইরেট পার্টি তে যোগদান করেন এবং সেখানে নিজেকে সমাজতন্ত্রবাদী দাবি করেন।[৫] ২০১৭ এর এপ্রিল পর্যন্ত সুন্দ এনজাল্লা নামক একটি গোপনীয়তা ভিত্তিক ডোমেইন নাম নিবন্ধন প্রকল্পে কাজ করেছেন।[৬]
দ্য পাইরেট বে প্রতিষ্ঠার পূর্বে সুন্দ সিমেন্স কর্মরত ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি সুইডেনের পাইরাটবিরনের (পাইরেট ব্যুরো) সদস্য হন এবং এর কিছুমাস পর ফ্রেডরিক নেজ এবং গটফ্রিড স্বার্থলম কে সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন দ্য পাইরেট বে।[৭] ২০০৯ এর শেষ অবধি তিনি পাইরেট বে'র মুখপাত্র ছিলেন (সাইটের মালিকানা রিজারভেল্লায় স্থানান্তরিত হওয়ার তিন বছর পরে)। আগস্ট ২০১১-এ সুন্দ এবং তাঁর সহকর্মী পাইরেট বে-সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফ্রেডরিক নীজ ফাইল-শেয়ারিং সাইট বে ফাইলেস চালু করেন, যার লক্ষ্য বৈধ উপায়ে ফাইল আদান-প্রদান করা।[৮] সুন্দ নিরামিষভোজী[৯] এবং সুইডিশ, ফিনিশ, নরওয়েয়িয়ান, ইংরেজি এবং জার্মান ভাষায় কথা বলতে পারেন। তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনে ফিনল্যান্ডের পাইরেট পার্টির পক্ষে ইউরোপীয় সংসদে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[১০] ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচনের ঠিক কয়েকদিন পরে এবং পাইরেট বে সার্ভারগুলিতে অভিযান চালানোর ঠিক আট বছর পরে, ৩১ মে পুলিশ পাইরেট বে মামলার জন্য তাকে গ্রেফতার করে কারাবাসে পাঠায়।[১১] আট মাসের কারাদণ্ডের দ্বি-তৃতীয়াংশ কাটানোর পর পাঁচ মাস পরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।[১২]
৩১ শে জানুয়ারী ২০০৮-এ পাইরেট বে অপারেটর-সুন্দ, ফ্রেড্রিক নেজ, গটফ্রিড স্বার্থলম এবং কার্ল লুন্ডস্ট্রম (পাইরেট বেয়ের প্রাক্তন আইএসপি-র প্রধান নির্বাহী) - "কপিরাইট লঙ্ঘন করে অন্যদের সহায়তা করার" অভিযোগ আনা হয়।[১৩] ১৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে বিচারকার্য শুরু হয়। ১৭ এপ্রিল ২০০৯-এ, সুন্দ এবং তার সহ-বিবাদীরা স্টকহোম জেলা আদালতে "কপিরাইট সামগ্রী সরবরাহে সহায়তা করার" জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়। আদালাত প্রত্যেক আসামীকে এক বছরের কারাদন্ডে দণ্ডিত করে এবং চার আসামীর মধ্যে ৩০ মিলিয়ন এসইকে (আনুমানিক € ২,৭৪০,৯০০ বা মার্কিন $ ৩,৬২০,০০০) ভাগ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দেয়।[১৪] রায় ঘোষণার পরে একটি সংবাদ সম্মেলন করা হয় যেখানে সুন্দের হস্তাক্ষরযুক্ত আইইউ-র বিবৃতিতে উল্লখ করা হয় যে তিনি সমস্ত ক্ষতিপূরণ বহন করবেন এবং তার ভাষ্য মতে, "আমি পারলে আমার নিজের সমস্ত জিনিস পুড়িয়ে ফেলতাম এবং তাদেরকে এমনকি ছাইও দিতাম না। আমি মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিকে এতটাই ঘৃণা করি"।[১৫] আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বিচারক টমাস নুরস্ট্রিমের পক্ষপাতিেত্বর দাবি তুলে জেলা আদালতে এবং একই সাথে সুভে কোর্টে পুনরায় বিচারের আবেদন করেন।[১৬] জেলা আদালত আপিলের বিপক্ষে রায় দেয় যে সেখানে কোনও পক্ষপাত ছিল না। আপিল করার কারণে, কারাগারের সাজা কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তবে ক্ষতিপুরনের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে সুইডেনের সর্বোচ্চ আদালত আর কোনও আপিল শুনানি করতে অস্বীকৃতি জানায়। ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতও পরে একটি আবেদন নাকচ করে দেয়। ২০০৭ সালের প্রামাণ্যচিত্র স্টিল দিস ফিল্ম এবং ২০১৯ এর ডকুমেন্টারি টিপিবি এএফকেতে সুন্দির দেয়া সাক্ষাত্কারে কপিরাইট, ইন্টারনেট এবং সংস্কৃতি বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
ফ্ল্যাটর হ'ল একটি মাইক্রো পেমেন্ট সিস্টেম যা সুন্দ এবং লিনাস ওলসন শুরু করেছিলেন,যা ওয়েবসাইটগুলির দর্শকদের "ফ্ল্যাটার করুন" বোতামটি ক্লিকের মাধ্যমে ডেভেলপারদের ছোট অনুদান প্রদানে সক্ষম ছিল। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকল্পটি ঘোষণার সময় সুন্দ ব্যাখ্যা করেন যে, "আপনি প্রতি মাসে যে অর্থ প্রদান করেন তা আপনি এক মাসে ক্লিক করা বোতামগুলির মধ্যে সমানভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। আমরা মানুষকে অর্থের পাশাপাশি কন্টেন্ট ভাগ করতে উত্সাহিত করতে চাই"।[১৭] ফ্ল্যাটার নিজেই ১০% প্রশাসনিক ফি নিয়ে থাকে। মার্কিন ডিপ্লোম্যাটিক ক্যাবল উইকিলিক্সের ঘটনার পর, ভিসা, মাস্টারকার্ড, পেপাল এবং মানিবুকার্স সহ অন্যান্য সংস্থাগুলির অনুদান এবং অর্থের স্থানান্তর নিষিদ্ধ করে দেয়। ফ্ল্যাটার তখনও উইকিলিক্সকে অনুদান দিয়ে চলছিল। এ ব্যাপারে সুন্দ মন্তব্য করেন, "আমরা [ফ্ল্যাটর] তাদের কাজটি অত্যন্ত সঠিক এবং প্রয়োজনীয় বলে মনে করি এবং আমরা যতটুকু সম্ভব তাদেরকে সাহায্য করে যাব।[১৮] ৫ এপ্রিল ২০১৭, অ্যাডব্লক প্লাস প্রকাশক আইও জিএমবিএইচ ঘোষণা করেছে যে তারা অঘোষিত পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে ফ্ল্যাটার কিনে নিয়েছেন।[১৯]
৯ জুলাই ২০১৩-তে, পিটার সুন্দ, লিফ হাগবার্গ এবং লিনাস ওলসন একসাথে হেমলিসের জন্য তহবিল সংগ্রহের প্রচারণা শুরু করেন।[২০] তাদের উদ্দেশ্য ছিল এমন একটি বৃহৎ নিরাপদ, গোপনীয় এবং চমৎকার তথ্য বাজার যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি করা।[২০] ২২ এপ্রিল ২০১৫ হেমলিস টিম ঘোষণা করে যে তারা হেমলিস ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্মটির উন্নয়ন বন্ধ করে দিচ্ছে।[২০]