পিত্তরস (ইংরেজি: Bile) এক প্রকার দেহাভ্যন্তরীণ ক্ষরণ যা তৈল বা স্নেহ জাতীয় খাদ্যের পরিপাকে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এর বর্ণ পীতাভ-সবুজ এবং স্বাদ তিক্ত। পিত্ত দেহের একটি প্রধান অঙ্গ যকৃতে উৎপন্ন হয়, অতঃপর পিত্তথলীতে ঘনীভূত হয় ও সঞ্চিত থাকে। পিত্তথলি থেকে এটি পিত্তনালীর মধ্য দিয়ে পরিপাকতন্ত্রের ক্ষুদ্রান্তে প্রবেশ করে এবং খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে।
পিত্তের উপাদান হলো (৯৭-৯৮) % জল, ০.৭ % পিত্ত লবণ, ০.২ % বিলিরুবিন, ০.৫১ % চর্বি (কোলেস্টেরল, ফ্যাটি এসিড এবং লেসিথিন),[১] এবং লিটার প্রতি ২০০ মিলি ইকুইভ্যালেন্ট অজৈব লবণ[২]
আয়ুর্বেদে অগ্নির রূপকে পিত্ত সম্ভবতঃ দেহ প্রতিরক্ষা (immune) ব্যবস্হাকে বর্ণনা করে (বায়ু=air/?nervous system,পিত্ত=fire/?immune system, কফ=humor/?endocrine system)। ক্ষুদ্রান্ত্র-তে চর্বি জাতীয় খাদ্যের পরিপাক করতে এটি সাহায্য করে। মানব দেহের যকৃতে অনবরত তৈরি পিত্ত পিত্তথলি নামক অঙ্গে জমা থাকে এবং ঘন হতে থাকে। খাদ্য গ্রহণের পর এটি ক্ষুদ্রান্ত্রের ডিওডেনাম নামক অংশে চলে যায়। পিত্তের শতকরা ৯৭ ভাগ পানি,০.৭ ভাগ[১]
আরসো-ডিঅক্সি-কোলিক অ্যাসিড (UDCA/urso deoxy cholic acid), ursa=ভালুক
যকৃত পিত্তরস তৈরি করে। পিত্তরসের মধ্যে পানি, পিত্তলবণ এবং কোলেস্টেরল ও খনিজ লবণ প্রধান। যকৃতের নিচের অংশে পিত্তথলি সংযুক্ত থাকে। এখানে পিত্তরস জমা হয়। পিত্তরস গাঢ় সবুজ বর্ণের এবং তিক্ত স্বাদ বিশিষ্ট।পিত্তরস প্রয়োজনে ডিউডেনামে এসে পরোক্ষভাবে পরিপাকে অংশ নেয়। পিত্তরসে কোন উৎসেচক বা এনজাইম থাকে না। পিত্তরস খাদ্যের অম্লভাব প্রশমিত করে এবং ক্ষারীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে। এই পরিবেশ খাদ্য পরিপাকের অনুকূল। পিত্তরস চর্বি জাতীয় খাদ্যকে ক্ষুদ্র দানায় পরিণত করে যা লাইপেজ সহযোগে পরিপাকে সহায়তা করে।
রক্তে অত্যধিক বিলিরুবিনের কারণে জন্ডিস হয়। পিত্তলবণ রক্তের মাধ্যমে চামড়ায় প্রবেশ করলে ভয়ঙ্কর চুলকানি হয়।