পুনীত রাজকুমার | |
---|---|
ಪುನೀತ್ ರಾಜ್ಕುಮಾರ್ | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৯ অক্টোবর ২০২১ বেঙ্গালুরু, কর্ণাটক, ভারত | (বয়স ৪৬)
অন্যান্য নাম | পাওয়ার স্টার, আপ্পু, লোহিত |
পেশা | অভিনেতা, গায়ক |
কর্মজীবন | ১৯৭৫–২০২১ |
দাম্পত্য সঙ্গী | অশ্বিনি রেভানাথ (বি. ১৯৯৯) |
সন্তান | দ্রিতি বন্দিতা |
পিতা-মাতা | ডা. রাজকুমার, পার্বতাম্মা রাজকুমার |
পুনীত রাজকুমার (কন্নড়: ಪುನೀತ್ ರಾಜ್ಕುಮಾರ್; ১৭ মার্চ ১৯৭৫ – ২৯ অক্টোবর ২০২১) ছিলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা যিনি কন্নড় ভাষার ছবিতে অভিনয় করেছেন। তিনি কন্নড় চলচ্চিত্রের সুপারস্টার ডা. রাজকুমারের কনিষ্ঠ পুত্র এবং কন্নড় চলচ্চিত্রের অগ্রগামী স্টার শিবরাজ কুমারের কনিষ্ঠ ভ্রাতা। তিনি ১২টি ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৮৬ সালে তিনি কন্নড় ছবি বেত্তাদা হুভু-র জন্য শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পীর জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হন।[১][২]
আশির দশকে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করার পর আপ্পু নামক একটি কন্নড় ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করার মধ্যে দিয়ে পুনীত রাজকুমারের কন্নড় চলচ্চিত্র জগতে অভিষেক হয়। ছবিটি সুপারহিট হয়েছিল। এছাড়াও তার অভিনীত আরও কতগুলি কন্নড় ছবি, যথা, আভি (২০০৩), আকাশ (২০০৫), আরাসু (২০০৭), মিলনা (২০০৭), ভামসি (২০০৮), রাম (২০০৯), জ্যাকি (২০১০) এবং পরমাত্মা (২০১১) - র জন্য তিনি সুখ্যাতি লাভ করেন, এবং তার ওই ছবিগুলি বাণিজ্যিকভাবে সাফল্যও পেয়েছিল।[৩][৪][৫]
২০০৭ সালে তিনি "আরাসু" ছবির জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান এবং ২০০৮ সালে "মিলনা" ছবির জন্য কর্ণাটক স্টেট বেস্ট অ্যাক্টর পুরস্কারে ভুষিত হন।
তিনি কন্নড় চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে দামি অভিনেতা ছিলেন।[৬][৭] তার কাছে সবথেকে বাণিজ্যিকভাবে সফল ছবির হিট রেট আছে যার মধ্যে প্রত্যেকটি ছবিই লাভের মুখ দেখেছে। তিনি একনাগাড়ে ১৭টি ছবিতে অভিনয় করেছেন যেগুলি কমপক্ষে ১০০ দিনের জন্য সিনেমা হলে চলেছে এবং এটি ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে একটি বিরলতম উপলব্ধি।[৮] তিনি সুবর্ণা টিভিতে "কন্নড়দা কোটিয়াধিপতি" নামক একটি কুইজ শো-র সঞ্চালনা করেছেন, যেটি কিনা অমিতাভ বচ্চন দ্বারা সঞ্চালিত বিখ্যাত কুইজ শো "কৌন বনেগা ক্রোড়পতি"-র কন্নড় সংস্করণ।[৩]
পুনীত রাজকুমার লোহিত নামে কন্নড় চলচ্চিত্রের ম্যাটিনি আইডল ডা. রাজকুমার এবং প্রযোজিকা পার্বতাম্মা রাজকুমারের কাছে জন্ম নেন। তিনি তাদের পঞ্চম এবং সবচেয়ে কনিষ্ঠ পুত্র।
তিনি ছ'মাসের বয়স থেকেই "প্রেমদা কণিকে"[৯] ছবিটি দিয়ে নিজের অভিনয় জীবন শুরু করেন, এবং তিনি "সানাদি আপন্না"-তেও কাজ করেছেন যখন তার বয়স ছিল মাত্র ১ বৎসর। তিনি "ইয়ারিভান্নু", "বসন্তা গীতা" ইত্যাদি ছবিতে তার আসল পিতার পুত্র হিসেবে অভিনয় করেছিলেন। তিনি অল্প বয়সেই স্কুল ছেড়ে দেন এবং ছবিতে অভিনয় করা শুরু করেন। তিনি নিজের বাড়িতেই একটি প্রাইভেট শিক্ষকের সাহায্যে লেখাপড়া চালিয়ে যান এবং পরে তিনি কম্পিউটার সায়েন্সে একটি ডিপ্লোমা হাসিল করেন। তারপর তিনি ছায়াছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করার আগে একটি খনন ব্যবসায়ের সঙ্গেও যুক্ত হন। তিনি তার প্রথম ছবিতে নায়ক হিসেবে কাজ করার আগে নৃত্যকলা এবং যুদ্ধকলার প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। পুনীত ভারতের সবচেয়ে পুরোনো মার্শাল আর্ট "কালারিপায়াত্তু"-রও প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
তার অভিনয় জীবন বাস্তবতঃ শুরু হয়েছিল "বসন্তা গীতা" ছবির মাধ্যমে যেখানে তিনি ভাল অভিনয় করেছিলেন। এই ছবিটির পর তিনি ১৯৮০ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত অনেকগুলি বিখ্যাত ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৮৫ সালে তিনি "বেত্তাদা হুভু"-তে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন।[১০]
গোড়ার দিকে তার নাম ছিল লোহিত। পরে নাম পরিবর্তন করে পুনীত রাজকুমার করা হয়। তবুও কর্ণাটকের অনেক লোক তাকে লোহিত নামেই চেনেন।[১১] শিশুশিল্পী হিসেবে তিনি ১২টি ছবিতে কাজ করেন - "প্রেমদা কণিকে" (৬ মাসের শিশু), "সানাদি আপ্পান্না" (১ বৎসরের শিশু), "বসন্তা গীতা", "ভাগ্যবন্তা", "হোসা বেলাকু", "চালিসুভা মদাগাল্লু", "ভক্ত প্রহ্লাদ", "এরাডু নক্ষত্রাগলু", "বেত্তাদা হুভু", "ইয়ারিভানু", "শিবা মেচ্চিদা কান্নাপ্পা" এবং "পরশুরাম"। তিনি তার পিতার সহিত ১২টির মধ্যে ১১টি ছবিতে কাজ করেছেন।
শিশুশিল্পী হিসেবে তার অভিনয় প্রশংসিত হওয়ার পর, তিনি পুনরায় ২০০২ সালে চলচ্চিত্র জগতে আসেন "আপ্পু" ছবির মুখ্য চরিত্র হিসেবে। এই ছবিটি পরপর ২০০২ সালে তেলুগু ভাষায় "ইডিয়েট" নামে এবং ২০০৩ সালে তামিল ভাষায় "দম" নামে পুনর্নির্মিত হয় এবং এই তিনটি ছবিই পরিচালনা করেছিলেন পরিচালক পুরী জগন্নাথ, যিনি পুনীতের ভ্রাতা শিবরাজ কুমারকে "যুবরাজ" ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন। তিনি "আরাসু" এবং "মিলনা" ছবির জন্য পুরস্কার পেয়েছিলেন। "আরাসু" এবং "রাজ - দ্য শোম্যান" ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন এবং "মিলনা" ছবির জন্য তিনি কর্ণাটক রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার সমারোহে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন। "মিলনা" ছবিটি কর্ণাটকে ৫০ দিনের জন্য ১৩৭টি কেন্দ্রে চলেছিল এবং ১০০ দিনের জন্য ৫০টি কেন্দ্রে চলেছিল।[১২] ছবিটি বেঙ্গালুরুর পিভিআর সিনেমা হলে সেপ্টেম্বর ২০০৮-এ ১ বছরের জন্য চলেছিল যেটা একটা নজিরবিহীন রেকর্ড।
২০০৯ সালে তিনি "রাজ-দ্য শোম্যান" ছবিতে অভিনয় করেন, যেটার জন্য তিনি সমালোচকদের কাছ থেকে মিশ্র সমালোচনা পান। ওই বছরই তার অন্য একটি ছবি "রাম" বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ দেখে।[১৩] ২০১০ সালে তার "পৃথ্বী" ছবিটি মুক্তি পায় এবং ৭৫ দিন ধরে চলে। ওই সালে তার আরও একটি ছবি "জ্যাকি" মুক্তি পায়, এবং এই দুটি ছবির জন্য তিনি যথেষ্ট প্রশংসাও কুড়োন।[১৪]
২০১১ সালে তিনি তিনটি ছবিতে অভিনয় করেন যেগুলি হল "হুডুগারু"[১৫], যোগরাজ ভাট পরিচালিত "পরমাত্মা"[১৬] এবং দুনিয়া সুরি পরিচালিত "আন্না বন্ড"[১৭] যেটা ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছে।
অভিনয় ছাড়াও পুনীত প্রচুর গান গেয়েছেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই তার অভিনয় করা সবকটি ছবিতে গান গেয়েছেন। এমনকি মুখ্য অভিনেতা হিসেবে যে ছবিগুলিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন, সেগুলিতে তিনি একটা করে গান অন্তত গেয়েছিলেন। যে ছবিগুলিতে তিনি গান গেয়েছিলেন, তার মধ্যে "আপ্পু" এবং "বংশী" ছবিগুলি উল্লেখযোগ্য।[১৮] তিনি তার ভ্রাতা শিবরাজ কুমারের একটি ছবি "মাইলারি"তেও গান গেয়েছেন।[১৯]
তিনি বজ্রেশ্বরী কম্বাইন্স নামক একটি ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানির সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি তাঁর দুই ভ্রাতা শিবরাজ কুমার এবং রাঘবেন্দ্র রাজকুমার অভিনীত ছবিগুলির সহ-প্রযোজক ছিলেন। তিনি দুটি টিভি ধারাবাহিকেরও প্রযোজনা করেছিলেন।
তিনি এফ স্কয়্যার, মালাবার গোল্ড, মনপ্পুরম[২০] ইত্যাদি ব্রান্ডের ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে কাজ করেছেন।
বছর | ছবি | ভূমিকা | টীকা |
---|---|---|---|
১৯৭৬ | প্রেমাদা কণিকে | প্রথম ছবি | |
১৯৭৭ | সানাদি আপ্পান্না | ||
১৯৮০ | বসন্তা গীতা | শ্যাম | |
১৯৮১ | ভাগ্যবন্তা | কৃষ্ণ | |
তায়িগে তাক্কা মাগা | |||
ভুমিগে বান্দা ভগবন্তা | |||
১৯৮২ | হসা বেলাকু | পুট্টু | |
চালিসুভা মদাগাল্লু | রামু | ||
১৯৮৩ | ভক্ত প্রহ্লাদ | প্রহ্লাদ | |
এরাদু নক্ষত্রাগলু | রাজা | ||
১৯৮৪ | ইয়ারিভানু | শ্যাম | |
১৯৮৫ | বেত্তাদা হুভু | রামু | বিজয়ী, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী) |
১৯৮৮ | শিবা মেচ্চিদা কান্নাপ্পা | ||
১৯৮৯ | পরশুরাম | আপ্পু |
ক্রমিক | বছর | ছবি | ভূমিকা | পরিচালক | টীকা |
---|---|---|---|---|---|
১ | ২০০২ | আপ্পু | আপ্পু | পুরী জগন্নাথ | অভিনেতা হিসেবে প্রথম ছবি |
২ | ২০০৩ | আভি | অভি | দীনেশ বাবু | |
৩ | ২০০৪ | বীরা কান্নাডিগা | মুন্না | মেহের রমেশ | |
৪ | মৌর্য | মনু | এস. নারায়ণ | ||
৫ | ২০০৫ | আকাশ | আকাশ | মহেশ বাবু | |
৬ | নাম্মা বাসাভা | বাসাভা | বীরা শঙ্ক্র | ||
৭ | ২০০৬ | অজয়" | অজয় | মেহের রমেশ | |
৮ | ২০০৭ | আরাসু | শিবরাজ উরস | মহেশ বাবু | বিজয়ী, ফিল্মফেয়ার পুরস্কার - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা |
৯ | মিলনা | আকাশ | প্রকাশ | বিজয়ী, কর্ণাটক রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার - সেরা অভিনেতা মালয়ালম ভাষায় অনূদিত | |
১০ | ২০০৮ | বিন্দাস | শিবু | ডি.রাজেন্দ্র বাবু | |
১১ | বংশী | বংশী | প্রকাশ | ||
১২ | ২০০৯ | রাজ - দ্য শোম্যান | মুত্তুরাজা | প্রেম | |
১৩ | "রাম | রাম | কে. মদেশ | ||
১৪ | ২০১০ | পৃথ্বী | পৃথ্বী কুমার | জেকব ভারগিস | বিজয়ী, কর্ণাটক রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার - সেরা অভিনেতা |
১৫ | জ্যাকি | জানকিরাম ওরফে "জ্যাকি" | দুনিয়া সুরি | তেলুগু ভাষায় অনূদিত | |
১৬ | ২০১১ | হুডুগারু | প্রভু | কে. মদেশ | |
১৭ | পরমাত্মা | পরমাত্মা | যোগরাজ ভাট[১৬] | ||
১৮ | ২০১২ | আন্না বন্ড | বন্ড রবি ওরফে আন্না বন্ড | দুনিয়া সুরি | শুভমুক্তি ২৬ এপ্রিল ২০১২[১৭] |
ক্রমিক | বছর | অনুষ্ঠান | ভূমিকা | চ্যানেল | টীকা |
---|---|---|---|---|---|
১ | ২০১০ | ধী | সঞ্চালক | ইটিভি কন্নড় | |
২ | ২০১২ | কন্নড়দা কোটিয়াধিপতি[২১] | সঞ্চালক | সুবর্ণা টিভি |
তিনি ২৮ বছর বয়সে অশ্বিনী রেভানিথকে বিয়ে করেন এবং তাদের দ্রিতি এবং বন্দিতা নামের দুটি কন্যাসন্তান আছে।[২২]
২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর ৪৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বেঙ্গালুরুতে মারা যান পুনীত।[২][২৩]
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার - শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী - বেত্তাদা হুভু - ১৯৮৬
কর্ণাটক রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - মিলনা - ২০০৮ কর্ণাটক রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - পৃথ্বী - ২০১০
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - আরাসু - ২০০৬
একেকেএ অ্যাওয়ার্ড - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - রাম সুবর্ণা টিভি অ্যাওয়ার্ড - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - জ্যাকি - ২০১০ ভিভেল উদয়া টিভি অ্যাওয়ার্ড - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - জ্যাকি - ২০১০