পুষ্টি

পুষ্টি সম্পর্কিত তথ্য

পুষ্টি


যে সব জটিল রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জীবদেহের অভ্যন্তরে খাদ্যবস্তু থেকে উপাদান সংগ্রহের মাধ্যমে জীবের দেহ গঠনের কাজ চলে তাকে বলা হয় পুষ্টি। পুষ্টি হল খাদ্য গ্রহণ, পরিপাক, শোষণ, আত্তীকরণ, এবং বহিষ্করণ প্রক্রিয়ায় দেহের বৃদ্ধি ঘটানো, ক্ষয় পূরণ করা, এবং উদ্বৃত্ত খাদ্যবস্তু সঞ্চয় করে স্থিতি-শক্তি অর্জন করা।

পুষ্টির ফলেই জীবের দেহ বৃদ্ধি পায়। জড়বস্তুর মতো তা অপরিবর্তিত থাকে না। এককথায় পুষ্টি জীবের সজীবতার অন্যতম প্রধান লক্ষণ। পুষ্টিতে সরল যৌগ থেকে জটিল যৌগ উৎপন্ন হয়। তাই বিজ্ঞানের ভাষায় একে গঠনাত্মক বিপাক বা উপচিতি (Anabolism) বলে।[]

পুষ্টির গুরুত্ব

[সম্পাদনা]

পরিবেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের উপাদান সংগ্রহ করে তা জীবদেহে কাজে লাগানোই পুষ্টির প্রধান উদ্দেশ্য। উদ্ভিদ পরিবেশ থেকে বিভিন্ন গ্যাস, জল ও খনিজ পদার্থ সংগ্রহ করে নিজের পুষ্টি ঘটায়। প্রাণিদেহে খাদ্যগুলিও বিভিন্নভাবে কাজে লাগে।

প্রথমত, প্রোটিন-খাদ্য জীর্ণ হওয়ার ফলে যে বিভিন্ন রকম অ্যামিনো-অ্যাসিডে পরিণত হয় সর্বক্ষেত্রেই সেগুলি সংশ্লেষিত হয়ে পুনরায় প্রোটিন গঠন করে। এই প্রোটিন সংশ্লেষণের কাজে যেসব এনজাইম বা উৎসেচক প্রয়োজন হয় সেগুলিও প্রোটিন উপাদানে গঠিত। তাই অ্যামিনো-অ্যাসিড এনজাইম গঠনেও অংশ নেয়। অবশ্য মনে রাখা প্রয়োজন যে, অ্যামিনো- অ্যাসিড থেকে যখন প্রোটিন সংশ্লেষিত হয় তখন তা হয় সেই বিশেষ প্রাণীর প্রোটিন। যেমন, আমরা মাছ, মাংস, ডিম প্রভৃতি যাই খাই না কেন তা থেকে সর্বদাই উৎপন্ন হয় মনুষ্য- প্রোটিন। এই প্রোটিন বলতে সজীব কোষ-পদার্থ বা প্রোটোপ্লাজমকে বোঝায়। কাজেই পুষ্টিসাধনের কাজ প্রধানত নির্ভর করে প্রোটিন সংশ্লেষণের উপর।

দ্বিতীয়ত, কার্বোহাইড্রেট-খাদ্য জীর্ণ হওয়ার ফলে সরল শর্করায় পরিণত হয়। এই সরল শর্করা দেহের বিশেষ বিশেষ অংশে (যেমন, যকৃত বা মাংসপেশী) গ্লাইকোজেনের (যাকে প্রাণিশ্বেতসার বলা হয়) আকারে ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের জন্যে সঞ্চিত থাকে, অথবা কোষমধ্যে ঐ শর্করা জারিত হয়ে শক্তি উৎপাদনের কাজে লাগে।

তৃতীয়ত, চর্বি-খাদ্য পাচনের ফলে ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লিসারলে পরিণত হয়। এই উপাদান থেকে কোষের বাইরে বা ভিতরে পুনরায় ফ্যাট সংশ্লেষিত হয়, যা সঞ্চিত খাদ্যের কাজ করে, অথবা তা জারিত হয়ে শক্তি উৎপাদন করে।

সবশেষে বলা প্রয়োজন যে, পুষ্টিসাধনের জন্যে ঐ তিনরকম খাদ্য উপাদানই যথেষ্ট নয়, বিভিন্ন খনিজ লবণ ও ভিটামিনও অতীব প্রয়োজনীয়। এছাড়া আছে, জল, যা জীবনধারণ তথা পুষ্টিসাধনের পক্ষে অপরিহার্য। জল সর্বোৎকৃষ্ট দ্রাবক। তাই বিভিন্ন খাদ্য উপাদান জলেই দ্রবীভূত হয়ে কোষের গ্রহণোপযোগী হয়। সজীব প্রোটোপ্লাজমের ৭৫% জল বলেই পুষ্টিসাধন প্রক্রিয়া সবসময়ই জল নির্ভর।

১। পুষ্টির প্রধান গুরুত্ব হল দেহের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ এবং বিভিন্ন বিপাকীয় কার্য নিয়ন্ত্রণের জন্য শক্তি সংগ্রহ করা।


২। পুষ্টির মাধ্যমে খাদ্যস্থ স্থিতি-শক্তি ব্যবহারোপযোগী শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। ফলে জীবদের চলন, গমন, বেচন, জনন ইত্যাদি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলি নিয়ন্ত্রিত হয়।

৩।পৃষ্টির মাধ্যমে জীবের দেহে রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা গড়ে ওঠে।

৪। পুষ্টির মাধ্যমে জীবদেহে ভবিষ্যতের জন্য খাদ্য সঞ্চিত থাকে, যা থেকে ভবিষ্যতে খাদ্যের অভাবের সময় শক্তি উৎপন্ন করা সম্ভব হয়। উদ্ভিদদেহে প্রধানত স্টার্চ বা শ্বেতসাররূপে এবং প্রাণিদেহে গ্লাইকোজেন ও মেদরূপে (বা স্নেহ পদার্থরূপে) খাদ্য সঞ্চিত থাকে।

৫। প্রাণিদেহে তাপ উৎপাদন এবং সংরক্ষণেও পুষ্টির বিশেষ ভূমিকা আছে।

    খাদ্য

যে সকল বস্তু জীবদেহের দেহগঠন, ক্ষয় নিবারণ ও শক্তি উৎপাদনের পক্ষে অপরিহার্য ডাকেই খাদ্য বলে। খাদ্যের মধ্যে নিহিত রাসায়নিক শক্তি জীবকে শক্তি যোগায়, এই শক্তি দিয়ে জীব সবরকম জৈবনিক ক্রিয়া পরিচালনা করে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, প্রাণিদেহ যা গ্রহণ করে তার সমস্তটাই খাদ্য নয়। যেমন, কেঁচো যখন মাটি খায় তখন মাটির জৈব পদার্থই শুধু খাদ্যের কাজ করে। মলখাদক শুকরের কাছে মলের মধ্যস্থিত খাদ্যের অজীর্ণ অংশই প্রয়োজনীয়। আবার, একটি প্রাণীর কাছে যা খাদ্য, অপরের কাছে তা অখাদ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। যেমন, গরু, ছাগল,সেলুলোজ হজম করতে পারে (অবশ্য তাদের অন্ত্রবাসী ব্যাকটিরিয়াই এই কাজের জন্যে দায়ী) ও তা দেহ-গঠনের কাজেও লাগে। তাই তাদের কাছে এই সেলুলোজ খাদাবস্তু। কিন্তু প্রচুর খাদ্য গুণ থাকা সত্ত্বেও সেলুলোজ আমাদের খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয় না। কারণ, আমরা সেলুলোজ হজম করতে পারি না।

উদ্ভিদের পুষ্টি

[সম্পাদনা]

উদ্ভিদের পুষ্টি-পদ্ধতিকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়, যথা- স্বভোজী পুষ্টি ও পরভোজী পুষ্টি। এগুলি নীচে বর্ণনা করা হলো:

(ক) স্বভোজী পুষ্টি (Holophytic Nutrition): অধিকাংশ সবুজ উদ্ভিদ নিজের দেহে সালোকসংশ্লেষ-প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদন করে। সেইজন্য এদের স্বভোজী উদ্ভিদ (Autotropic Plants Or Autophytes) বলে। স্বভোজী উদ্ভিদের পুষ্টি-প্রক্রিয়ার নাম স্বভোজী পুষ্টি বা হলোফাইটিক পুষ্টি।

স্বভোজী পুষ্টিতে উদ্ভিদ পরিবেশ থেকে জল, কার্বন ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি সংগ্রহ করে সূর্যালোকের উপস্থিতিতে দেহে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা-জাতীয় খাদ্য উৎপন্ন করে। সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন গ্লুকোজ থেকে উদ্ভিদের দেহে লিপিড বা স্নেহদ্রব্য সংশ্লেষ হতে পারে। উদ্ভিদ মূল দিয়ে বিভিন্ন খনিজ পদার্থের সঙ্গে নাইট্রেট (Nitrate) লবণ গ্রহণ করে। এই লবণ প্রোটিন খাদ্য সংশ্লেষে সাহায্য করে। আম, জাম, কাঁঠাল, জবা, মটর ইত্যাদি সবুজ উদ্ভিদ স্বভোজী।

কয়েক রকম মস, ফার্ন ও রাস্না স্বভোজী হলেও কেবলমাত্র আশ্রয়ের জন্য বড় বড় উদ্ভিদের শাখায় অবস্থান করে। এই ধরনের স্বভোজী উদ্ভিদকে পরাশ্রয়ী (Epiphytes) উদ্ভিদ বলে। (খ) পরভোজী পৃষ্টি (Heterotropic Nutrition): বেশ কিছু উদ্ভিদের দেহে ক্লোরোফিল না থাকায় তারা নিজেরা সালোকসংশ্লেষে খাদ্য উৎপন্ন করতে পারে না। খাদ্যের ব্যাপারে এরা সম্পূর্ণভাবে বা আংশিকভাবে অন্য উৎসের ওপর নির্ভর করে। এই ধরনের উদ্ভিদকে পরভোজী উদ্ভিদ (Heterotropic Plants or Heterophytes) এবং এই পৃষ্টি পদ্ধতিকে পরভোজী পুষ্টি বলে। এখানে খাদ্যের উৎস অনুযায়ী পরভোজী উদ্ভিদগুলি বর্ণনা করা হলো:

(১) পরজীবী উদ্ভিদ (Parasitic Plants): এই ধরনের উদ্ভিদে ক্লোরোফিল না থাকায় খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য অন্য কোন উদ্ভিদ বা প্রাণীর দেহে অবস্থান করে। পরজীবী উদ্ভিদের আশ্রয়দাতা অন্য উদ্ভিদ বা প্রাণীকে পোষক (Host) বলে। পরজীবী উদ্ভিদ পোষকের দেহ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে জীবনধারণ করে। ফলে পোষক উদ্ভিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা কোন কোন সময় মারা যায়।

যে সমস্ত পরজীবী উদ্ভিদ পোষকের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল তাদের পূর্ণ পরজীবী উদ্ভিদ (Total Parasitic Plants) বলে, যেমন- স্বর্ণলতা, বেনেবউ (সপুষ্পক উদ্ভিদ), পাকসিনিয়া (অপুষ্পক উদ্ভিদ) ইত্যাদি।

যে সমস্ত পরজীবী অন্য উদ্ভিদ বা প্রাণীর উপর আংশিকভাবে নির্ভরশীল তাদের আংশিক পরজীবী (Partial Parasitic Plants) বলে, যেমন বান্দা, চন্দন ইত্যাদি। পরজীবী উদ্ভিদগুলির পুষ্টির নাম পরজীবীয় পুষ্টি (Parasitic Nutrition)

(২) মৃতজীবী উদ্ভিদ (Saprophytic Plants): যে সমস্ত উদ্ভিদ মৃত, গলিত বা পচা জৈবপদার্থের ওপর জন্মায় তাদের মৃতজীবী উদ্ভিদ বলে। মৃতজীবী উদ্ভিদ দুরকমের-

পূর্ণ মৃতজীবী উদ্ভিদ ও আংশিক মৃতজীবী উদ্ভিদ। পূর্ণ মৃতজীবী উদ্ভিদের দেহে ক্লোরোফিল না থাকায় এরা পচা গলা বস্তু থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য সংগ্রহ করে জীবনধারণ করে। পেনিসিলিয়াম, মিউকর, ব্যাঙের ছাতা (অপুষ্পক উদ্ভিদ), মনোট্রোপা (সপুষ্পক উদ্ভিদ) ইত্যাদি পূর্ণ মৃতজীবী উদ্ভিদ।

পাইন গাছের মূলে বসবাসকারী একরকম ছত্রাকের সাহায্যে গাছটি পরোক্ষভাবে গলিত, পচা জৈব পদার্থ থেকে প্রয়োজনীয় রস শোষণ করে। এই গাছ অবশ্য সালোক- সংশ্লেষে খাদ্য উৎপাদনে সক্ষম। তাই একে আংশিক মৃতজীবী উদ্ভিদ বলে। মৃতজীবী উদ্ভিদের পুষ্টি-পদ্ধতিকে মৃতজীবীয় পুষ্টি (Saprophytic Nutrition) বলা হয়।

(৩) মিথোজীবী উদ্ভিদ (Symbiotic Plants): যখন দুটি উদ্ভিদ পরস্পরের উপর নির্ভর করে জীবনধারণ করে তখন তাদের মিথোজীবী বা অনোন্যজীবী উদ্ভিদ বলে। মিথোজীবী উদ্ভিদের পুষ্টি পদ্ধতিকে মিথোজীবীয় পুষ্টি (Symbiotic Nutrition) বলে। মিথোজীবী উদ্ভিদের বিশিষ্ট উদাহরণ, লাইকেন (Lichens)। এই উদ্ভিদের দেহ শেওলা এবং ছত্রাক দ্বারা গঠিত। সালোকসংশ্লেষে শেওলা খাদ্য উৎপন্ন করে তা ছত্রাককে দেয় এবং ছত্রাক শেওলাকে জল, লবণ ইত্যাদি সরবরাহ করে। শিম্ব-গোত্রীয় উদ্ভিদের মূলে বসবাসকারী একরকম ব্যাকটিরিয়া (রাইজোবিয়াম) বাতাসের নাইট্রোজেন আবদ্ধ করে উদ্ভিদের পুষ্টি ঘটাতে সাহায্য করে, অন্যদিকে রাইজোবিয়াম উদ্ভিদের রস শোষণ করে জীবনধারণ করে। এইভাবে মিথোজীবী উদ্ভিদেরা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে জীবনধারণে সক্ষম হয়।

(৪) পতঙ্গভুক উদ্ভিদ (Insectivorous Plants): কয়েক প্রকার উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষে বিভিন্ন খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হলেও দেহে প্রোটিন-জাতীয় খাদ্য উৎপন্ন করতে পারে না। প্রোটিন-জাতীয় খাদ্য বা অ্যামিনো-অ্যাসিড সংগ্রহের জন্য উদ্ভিদ গুলিকে ছোট ছোট কীট-পতঙ্গ বা প্রাণীর ওপর নির্ভর করতে হয়। কীট-পতঙ্গ ধরা এবং তার দেহ থেকে বস শোষণ করার ব্যবস্থা এই উদ্ভিদ গুলিতে থাকে। তাই যে সমস্ত উদ্ভিদ কীট-পতঙ্গ ধরে তার দেহের রস শোষণ করে তাদের পতঙ্গভূক উদ্ভিদ বলে। ঘটপত্রী সূর্যশিশির, পাতাঝাঝি ইত্যাদি পতঙ্গভুক উদ্ভিদের উদাহরণ। -তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী []

ম্যাক্রো-এলিমেন্টস,মাইক্রো-এলিমেন্টস

[সম্পাদনা]

স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য উদ্ভিদ যে সব মৌলিক পদার্থ বেশি পরিমাণে গ্রহণ করে তাদের ম্যাক্রো-এলিমেন্টস বলে। উদ্ভিদদেহে কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H), অক্সিজেন (০) নাইট্রোজেন (N), সালফার (S), ফসফরাস (P), পটাসিয়াম (K), ম্যাগনেসিয়াম(M) ক্যালসিয়াম (Ca), এবং আয়রন বা লোহা (Fe) মোট এই দশটি মৌলিক পদার্থ যেশি পরিমাণে গৃহীত হয়। এগুলিই উদ্ভিদের ম্যাক্রো-এলিমেন্টস্ (Macro-elements) বা অতিমাত্রিক মৌল উপাদান।

উদ্ভিদদেহে যে সব মৌলিক পদার্থ খুব কম পরিমাণে প্রয়োজন হয় তাদের মাইক্রো এলিমেন্টস বা ট্রেস এলিমেন্টস (Micro-elements or Trace elements) স্বপ্নমাত্রিক মৌল উপাদান বলে। উদ্ভিদের মাইক্রো-এলিমেন্টস্ হল। কপার বা তামা (Cu). জিঙ্ক বা দস্তা (Zn), কোবাল্ট (Co), মলিবডেনাম (Mo), বোরন (Bo), ম্যাঙ্গানিজ (Mo) এবং ক্লোরিন (CI)।

ম্যাক্রো-এলিমেন্টস-এর মধ্যে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন বা লোহা ধাতু, অন্যগুলি সবই অধাতু। মাইক্রো-এলিমেন্টস্-এর মধ্যে কপার বা তামা, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক বা দস্তা, কোবাল্ট ও মলিবডেনাম ধাতু, কিন্তু বোরন এবং ক্লোরিন অধাতু। সর্বমোট 17টি মৌলিক পদার্থ উদ্ভিদের পুষ্টি, বৃদ্ধি ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রার জন্য অপরিহার্য। সেইজন্য এই মৌলিক পদার্থগুলিকে অপরিহার্য মৌলিক পদার্থ (Essential Elements) বলা হয়। উদ্ভিদ-কোষের প্রোটোপ্লাজম বিশ্লেষণে মৌলিক পদার্থগুলির অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়। এখানে মৌলিক পদার্থগুলির কার্যকারিতা বর্ণনা করা হল:

ম্যাক্রো-এলিমেন্টস্-এর কার্যকারিতা

[সম্পাদনা]

[১] কার্বন: কার্বন বাদ দিয়ে জীবদেহ গঠিত হয় না। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, হরমোন, উৎসেচক ইত্যাদির গঠনে কার্বন থাকে। উদ্ভিদেরা প্রধানত বায়ুমন্ডলের CO₂ থেকে কার্বন সংগ্রহ করে। কার্বন ছাড়া সালোকসংশ্লেষ সম্ভব হয় না।

[২] হাইড্রোজেন: জীবকোষের অন্যতম প্রধান উপাদান হাইড্রোজেন। উদ্ভিদ জল থেকে হাইড্রোজেন সংগ্রহ করে। এটিও খাদ্যের অন্যতম উপাদান। হাইড্রোজেন ছাড়া সালোকসংশ্লেষ সম্ভব হয় না।

[৩] অক্সিজেন: বিভিন্ন খাদ্য উপাদানে অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। অক্সিজেন সবাত শ্বসনে সাহায্য করে জীবদেহে শক্তি জোগায়। [৪] নাইট্রোজেন: উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে নাইট্রোজেন সাহায্য করে। প্রোটিন-জাতীয় খাদ্যে প্রায় ১৬% নাইট্রোজেন থাকে। উদ্ভিদ নাইট্রেট লবণ থেকে এই মৌলিক পদার্থ সংগ্রহ করে।

[৫] সালফার: কয়েকরকম প্রোটিন গঠনে সালফার সাহায্য করে। উদ্ভিদের শ্বসন উৎসেচকও সালফার দিয়ে গঠিত হয়। সালফেট লবণ থেকে উদ্ভিদ সালফার সংগ্রহ করে।

[৬] ফসফরাস: মাটির ফসফরাস ঘটিত লবণ থেকে উদ্ভিদ ফসফরাস পায়। এটি শক্তি যৌগ ATP গঠনে সাহায্য করে। ফসফরাসের অভাবে উদ্ভিদ বেঁটে হয়।

[৭] পটাসিয়াম: মাটির পটাসিয়াম ঘটিত লবণ থেকে উদ্ভিদ পটাসিয়াম পায়। এই মৌলটি শর্করা ও প্রোটিন বিপাকে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। এর অভাবে গাছের পাতা হলুদ হয়।

[৮] ম্যাগনেসিয়াম: মাটির ম্যাগনেসিয়াম ঘটিত লবণ থেকে উদ্ভিদ ম্যাগনেসিয়াম পায়। উদ্ভিদ দেহের বিভিন্ন উৎসেচক এবং ক্লোরোফিল গঠনে ম্যাগনেসিয়াম দরকার। এর অভাবে পাতায় হলদে রঙের ছোপ পড়ে।

[৯] ক্যালসিয়াম: মাটির ক্যালসিয়াম খনিজ লবণ থেকে উদ্ভিদ এটি সংগ্রহ করে। উদ্ভিদের কোষ এবং মধ্যচ্ছদা গঠনে ক্যালসিয়াম সাহায্য করে। ক্যালসিয়ামের অভাবে মূলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।

[১০] আয়রন বা লোহা: মাটির অজৈব লবণ থেকে উদ্ভিদ আয়রন বা লোহা পায়। লোহা উদ্ভিদে ক্লোরোফিল সংশ্লেষে সাহায্য করে। এটি সাইটোক্রোম (cytochrome) নামে শ্বাস-উৎসেচকের অন্যতম উপাদান। লোহার অভাব হলে উদ্ভিদে ক্লোরোসিস (chlorosis) হতে পারে।

মাইক্রো-এলিমেন্টস্-এর কার্যকারিতা

[সম্পাদনা]

[১] কপার বা তামা: কয়েকটি জারক উৎসেচকের উপাদানে তামা থাকে। তামার অভাবে উদ্ভিদের কান্ড দুর্বল ও শুকনো হয়।

[২] জিঙ্ক বা দস্তা: অক্সিন হরমোন উৎপাদনে দস্তা সাহায্য করে। কয়েকটি উৎসেচকের কাজ ত্বরান্বিত করতে এর প্রয়োজন হয়। দস্তার অভাবে গাছের পাতা পচে যায়।

[৩] কোবাল্ট: উদ্ভিদদেহে ভিটামিন B12 সংশ্লেষে কোবাল্ট সাহায্য করে।

[৪] মলিবডেনাম: বিভিন্ন উৎসেচককে সক্রিয় করতে মলিবডেনাম সাহায্য করে। এর অভাবে গাছের পাতা ঠিকমতো বৃদ্ধি পায় না। [৫] বোরন: উদ্ভিদে শর্করা সংবহনে এটি সাহায্য করে। এর অভাবে গাছের বৃদ্ধি অসম হয়। অনেক সময় পর্বমধ্য ছোট হয়।

[৬] ম্যাঙ্গানিজ: নিউক্লিক অ্যাসিড তৈরিতে ম্যাঙ্গানিজ সাহায্য করে। এই মৌলিক পদার্থটি কয়েকটি উৎসেচকের কাজকে ত্বরান্বিত করতে সক্ষম। ম্যাঙ্গানিজ সালোকসংশ্লেষে এবং শ্বসন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। এর অভাবে গাছের পাতায় হলদে দাগ হয়।

[৭] ক্লোরিন: ক্লোরিন উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।(তথ্য সূত্র: মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান- তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী, শ্রীভূমি পাবলিশিং কোম্পানি, এপ্রিল ১৯৮৬, পৃঃ ৫৮,৫৯,৬০)[]


  • ম্যাক্রোউপাদান :- ১০টি ৷ যথা :- N , K, P, Ca, Mg, C, H, O, Fe এবং S
  • মাইক্রোউপাদান :- ৭ টি ৷ যথা :- Zn, Mn, Mo, B, Cu,Co এবং Cl

এর অভাবজনিত রোগগুলো হলো: ক্লোরোসিস, পাতার শীর্ষ ও কিনারা হলুদ রং ধারণ, ডাইব্যাক, পাতা বিবর্ণ হওয়া, কচি পাতায় ক্লোরোসিস, পাতা বিকৃতি হয়।

প্রাণীর পুষ্টি

[সম্পাদনা]

প্রাণীদের দেহে ক্লোরোফিল না থাকার জন্য তারা সালোকসংশ্লেষে খাদ্য উৎপন্ন করতে পারে না। অধিকাংশ প্রাণী পুষ্টির ব্যাপারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উদ্ভিদের উপর নির্ভর করে। তাই প্রাণীদের পুষ্টি-পদ্ধতি পরভোজী পুষ্টি (Heterotropic Nutrition) নামে পরিচিত। খাদ্যাভ্যাসের ভিত্তিতে পরভোজী প্রাণীরা নিম্নলিখিত পাঁচ রকমের হয়:

[১] শাকাশী (Herbivorous): যে-সব প্রাণী কেবলমাত্র উদ্ভিদদেহ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে তাদের শাকাশী বা তৃণভোজী প্রাণী বলে। যেমন- গরু, মোষ, ছাগল, ভেড়া, হরিণ ইত্যাদি।

[২] মাংসাশী (Carnivorous): এইসব প্রাণী শিকার করে অন্য প্রাণীর মাংস খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। যেমন- বাঘ, সিংহ ইত্যাদি।

[৩] শবাহারী (Carrionfeeder): যে-সব প্রাণী মৃত, পচা প্রাণীর দেহ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে তাদের শবাহারী বলে। শবাহারী প্রাণীরাও প্রকৃতপক্ষে মাংসাশী। শকুন, কাক ইত্যাদি শবাহারী প্রাণীর উদাহরণ।

[৪] পতঙ্গভুক (Insectivorous): পতঙ্গভুক প্রাণীরা কীট-পতঙ্গ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। যেমন টিকটিকি, গিরগিটি, পাখী ইত্যাদি।

[৫] সর্বভুক (Omnivorous): যে-সব প্রাণী উদ্ভিদদেহ এবং প্রাণীদেহ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে তাদের সর্বভুক প্রাণী বলে। মানুষ প্রকৃতপক্ষে সর্বভুক প্রাণী। আমরা উদ্ভিদ এবং প্রাণী উভয় উৎস থেকেই আমাদের খাদ্য গ্রহণ করি।

পরভোজী প্রাণীদের পুষ্টি পদ্ধতি প্রধানত দু'রকমের: (ক) স্যাপ্রোজোয়িক পুষ্টি (Saprozoic Nutrition) এবং (খ) হলোজোয়িক পুষ্টি (Holozoic Nutrition)। (ক) স্যাপ্রোজোয়িক পুষ্টি: এই পুষ্টি-পদ্ধতিতে প্রাণীরা সাধারণত তরল খাদ্যই গ্রহণ করে। এই পদ্ধতিটি আবার তিন রকমের [১] পরজীবীয় পুষ্টি (Parasitic Nutrition), [২] মৃতজীবীয় পুষ্টি (Saprophytic Nutrition), [৩] মিথোজীবীয় পুষ্টি (Symbiotic Nutrition)।

[১] পরজীবীয় পুষ্টি: : এই ধরনের পুষ্টির জন্য প্রাণীরা পোষকের উপর নির্ভরশীল। পোষকের দেহে অবস্থান করে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাদ্যরস প্রাণীরা শোষণ করে, ফলে আশ্রয়দাতা বা পোষকের ক্ষতি হয়। যখন পরজীবী প্রাণীরা পোষকের দেহের মধ্যে অবস্থান করে তখন তাকে অন্তঃপরজীবী (Endoparasite) এবং বাইরে অবস্থান করলে তাকে বহিঃপরজীবী (Ectoparasite) বলে। ফিতাকৃমি, গোলকৃমি, এন্টামিবা ইত্যাদি প্রাণী আমাদের পৌষ্টিক নালীতে অবস্থান করে বলে এগুলি অন্তঃপরজীবী। পৌষ্টিক তন্ত্রের সরল খাদ্য গ্রহণ করে আমাদের শরীরের পুষ্টিতে এরা ব্যাঘাত ঘটায়। মাথার চুলের মধ্যে থাকা উকুন শরীরের বাইরে থেকে রক্ত শোষণ করে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে, তাই উকুন বহিঃপরজীবী। যে-সব প্রাণী পোষকের উপর আংশিকভাবে নির্ভর করে তাদের আংশিক পরজীবী (Partialparasite) বলা হয়। যেমন, মশা, ছারপোকা ইত্যাদি। এরা খাদ্যের জন্য পোষকের উপর নির্ভর করে, কিন্তু বাসস্থানের জন্য নয়। [২]মৃতজীবীয় পুষ্টি: এই পুষ্টি পদ্ধতিতে প্রাণীরা মৃত, গলিত, পচনশীল জৈব পদার্থ থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য রস গ্রহণ করে। [৩] মিথোজীবীয় পুষ্টি: দুটি আলাদা প্রাণী পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে পুষ্টি প্রক্রিয়া চালালে তাকে প্রাণীদের মিথোজীবীয় পুষ্টি বলা হয়। এই পুষ্টি-পদ্ধতিতে দুটি প্রাণীই পরস্পর উপকৃত হয়। উই পোকার অন্ত্রে একপ্রকার এককোষী প্রাণী বাস করে যার নাম ট্রাইকোনিম্ফ (Triconymph)। এর দেহ থেকে একরকম উৎসেচক (সেলুলেজ) নিঃসৃত হয়ে কাঠ বা সেলুলোজের পাচনে সাহায্য করে। বিনিময়ে প্রাণীটি উই পোকার দেহ থেকেই খাদ্য ও আশ্রয় পায়।

(খ) হলোজোয়িক পুষ্টি: প্রাণীরা যে পুষ্টি পদ্ধতিতে কঠিন অদ্রবণীয় খাদ্য গ্রহণ করে উৎসেচকের মাধ্যমে খাদ্যকে পাচিত, সরল ও দ্রবণীয় করে তার শোষণ ও আত্মীকরণ করে তাকে হলোজয়িক পুষ্টি বলে। হলোজোয়িক পুষ্টি মোট পাঁচটি পর্যায়ে বিভক্ত। যথা; (১) খাদ্যগ্রহণ (Ingestion), (২)খাদ্য পরিপাক (Digestion), (৩)খাদ্যরস শোষণ (Absorption), (৪) আত্তীকরণ (Assimilation) (৫) অপাচ্য অংশের বহিষ্করণ(Egestion)।

(১) খাদ্য গ্ৰহণ: এই পদ্ধতির মাধ্যমে পরিবেশ থেকে প্রাণীরা খাদ্যবস্তু গ্রহণ করে। বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে খাদ্য গ্রহণের বৈচিত্র দেখা যায়। মনোসিস্টিস ব্যাপন প্রক্রিয়ায়, অ্যামিবা ক্ষণপদের সহায্যে,পেরামিসিয়াম সিলিয়ার সাহায্যে, হাইড্রা কর্ষিকা দিয়ে, ফিতাকৃমি চোষক দিয়ে এবং মানুষ হাত দিয়ে মুখে খাদ্য গ্ৰহণ করে। (২) খাদ্য পরিপাক:যে পদ্ধতিতে জটিল কঠিন অদ্রবণীয় খাদ্য বিভিন্ন উৎসেচকের প্রভাবে সরল দ্রবণীয় ও কোষের গ্রহণের উপযোগী হয় তাকে পরিপাক(Digestion)বলে। পরিপাকের ফলেই কঠিন কার্বোহাইড্রেট সরল শর্করা বা গ্লুকোজে, প্রোটিন জাতীয় খাদ্য অ্যামিনো অ্যাসিড এবং চর্বিজাতীয় খাদ্য ফ্যাটি অ্যাসিড এবং গ্লিসারলে পরিণত হয়। খাদ্য পরিপাক পদ্ধতি দু'রকমের;

(ক) অন্তঃকোষীয় পরিপাক (Intracellular Digestion): এই পদ্ধতিতে খাদ্যের পরিপাক কোষের মধ্যে ঘটে। অ্যামিবাতে অন্তকোষীয় পরিপাক হয়।

(খ) বহিঃকোষীয় পরিপাক (Extracellular Digestion): এই পরিপাক পদ্ধতি দেহের মধ্যে পৌষ্টিক নালীতে অর্থাৎ কোষের বাইরে সম্পন্ন হয়। কেঁচো, গিনিপিগ, মানুষ ইত্যাদি প্রাণীতে বহিঃকোষীয় পরিপাক হয়। হাইড্রার ক্ষেত্রে উভয়প্রকার পরিপাক পদ্ধতি দেখা যায়।

(৩) খাদ্যরস শোষণ: এই প্রক্রিয়ায় পাচিত সরল খাদ্য যথা গ্লুকোজ, ফ্যাটি অ্যাসিড,গ্লিসারল, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং জল, ভিটামিন, খনিজ লবণ রক্তজালক বা লসিকা বাহ দিয়ে শোষিত হয়। তারপর সরল-খাদ্য দ্রব্য গুলি প্রধানত রক্ত দিয়ে বাহিত হয়ে শরীরের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে যায়।

(৪) আত্তীকরণ: দেহকোষে খাদ্য পৌঁছানোর পর খাদ্যবস্তু বিভিন্ন ধরনের বিপাকীয় কাজে অংশ নেয় এবং তা প্রোটোপ্লাজমের অঙ্গীভূত হয়। খাদ্যবস্তুর প্রোটোপ্লাজমে অঙ্গীভূত হওয়ার নামই আত্তীকরণ।

(৫) অপাচ্য অংশের বহিষ্করণ:খাদ্য পরিপাক ও শোষণের পর খাদ্যের অপাচ্য অংশ দেহ থেকে ত্যাগ করাকে বহিষ্করণ বলে। এককোষী প্রাণীদের খাদ্যের অপাচ্য অংশ সরাসরি দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। মেরুদণ্ডী প্রাণীরা খাদ্যের অপাচ্য অংশ মল হিসেবে অবসারণী ছিদ্র (ব্যাঙের ক্ষেত্রে) অথবা পায়ু ছিদ্র দিয়ে ত্যাগ করে।-তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী []

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান, লেখক: তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী, শিরোনাম=জীবের পুষ্টি, প্রকাশক=শ্রীভূমি পাবলিশিং কোম্পানি, কলকাতা, বছর=১৯৮৬, পাতা=৪০
  2. বই উদ্ধৃতি:মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান, লেখক- তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী, শিরোনাম=জীবের পুষ্টি, প্রকাশক=শ্রীভূমি পাবলিশিং কোম্পানি,কলকাতা,বছর=১৯৮৬,পাতা=৫৬,৫৭
  3. বই উদ্ধৃতি=মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান| লেখক=তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী| শিরোনাম=জীবের পুষ্টি | প্রকাশক=শ্রীভূমি পাবলিশিং কোম্পানি, কলকাতা বছর=১৯৮৬ | পাতা=৫৮-৬০
  4. বই উদ্ধৃতি= মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান, লেখক=তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী, শিরোনাম=জীবের পুষ্টি, প্রকাশক=শ্রীভূমি পাবলিশিং কোম্পানি, কলকাতা ,বছর=১৯৮৬ | পাতা=৬০,৬১

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]