পেড্রো লেমেবেল | |
---|---|
![]() ২০০৫ সালে পেড্রো লেমেবেল | |
জন্ম | পেড্রো লেমেবেল ২১ নভেম্বর ১৯৫২ |
মৃত্যু | ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ | (বয়স ৬২)
নাগরিকত্ব | চিলীয় ![]() |
পেশা | ঘটনাপঞ্জী লেখক ও ঔপন্যাসিক |
পরিচিতির কারণ | লেখক, চিত্রশিল্পী |
পুরস্কার | ২০০৬: আন্না সের্গার্স পুরস্কার ২০১৩: হোস দনোসো পুরস্কার |
পেড্রো সেগান্দু মার্দোনেস লেমেবেল (স্পেনীয়: Pedro Lemebel; জন্ম: ২১ নভেম্বর, ১৯৫২ - মৃত্যু: ২৩ জানুয়ারি, ২০১৫) সান্তিয়াগোয় জন্মগ্রহণকারী চিলির বিশিষ্ট সমকামী প্রাবন্ধিক, ঘটনাপঞ্জী লেখক ও ঔপন্যাসিক ছিলেন।[২][৩][৪] চিলির ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রবল সমর্থক ও সমকামী দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে প্রচলিত সংস্কৃতির রসাত্মক বর্ণনাকারী ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে চিলির জাতীয় সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন পেড্রো লেমেবেল।
তার লিখিত সাহিত্য কর্মগুলো চিলীয় বংশানুক্রমিক ধারায় আত্মজীবনীমূলক উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।[৫] সমকামী সাহিত্য চর্চা, বিদ্রোহাত্মক দৃষ্টিভঙ্গী ও সুন্দর শৈলী বিন্যাসের কারণে লাতিন আমেরিকায় বেশ পরিচিতি পান। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অন্যতম সেরা চিলীয় লেখকরূপে চিহ্নিত হয়ে আছেন। তার সাহিত্য কর্মগুলো ফরাসি, ইতালীয় ও ইংরেজি ইত্যাদি বিভিন্ন ভাষায় অনূদীত হয়েছে।[৫] সুচারু লেখনীর পাশাপাশি চিত্রশিল্পী হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। তার কাজগুলো ছিল উস্কানীমূলক ও রাজনৈতিক বিরক্তিভাবের পরিচয়জ্ঞাপক। অঙ্কনকে হাতিয়ার করে সামাজিক সমালোচনায় মুখর থাকতেন।[২][৬]
রুটি প্রস্তুতকারী পরিবারের সন্তান তিনি।[৭] পেড্রো মার্ডোনেস পারেদেস ও এলেনা লেমেবেল ভায়োলেট দম্পতির পুত্র পেড্রো লেমেবেল সান্তিয়াগোর এক বস্তিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বস্তির পাশ দিয়েই সেচ খালা জাঞ্জ দে লা আগুদা মাপোচো নদীতে গিয়ে মিশেছে।[২] পার্শ্ববর্তী দ্য লীগে তার শৈশবকাল অতিবাহিত হয়।[৮] ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে সামাজিক আবসনের আভেনিদা ডিপার্টমেন্টালে তার পরিবার স্থানান্তরিত হয়।[২]
লা লীগা ম্যান ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুলে অধ্যয়ন করেন।[৯] সেখানে তিনি ধাতব আসবাবপত্র বিষয় শিখতেন। এরফলে সহপাঠীদের কাছ থেকে টিটকারির শিকার হয়েছিলেন।[১০] মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে লাইসিও ম্যানুয়েল বারোস বর্গোনোতে অধ্যয়ন করেন।[৯] ১৯৭০-এর দশকে চিলি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে তিনি প্লাস্টিক আর্টসে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।[৭]
১৯৭৯ সালে স্নাতক ডিগ্রী লাভের পর সান্তিয়াগোর দুটি উচ্চ বিদ্যালয়ে কাজ করতে শুরু করেন। কিন্তু ১৯৮৩ সালে সমকামিতার অভিযোগে তাকে বহিস্কার করা হয়।[৭] এ অভিজ্ঞতা অর্জনের পর তিনি আর শিক্ষকতা পেশায় ফিরে যাননি। নিজেকে পুরোপুরি সাহিত্য কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে ফেলেন।[২]
১৯৮০-এর দশকের শুরুতে লেমেবেল সাহিত্যকর্মে যোগ দেন। সাহিত্যিক কর্মশালায় গল্প লেখেন। এরপর ১৯৮৩ সালে তিনি ছোট্ট সাহিত্যিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। কম্পেনসেশন ফান্ড জাভেইরা কারেরা'র পরিচালনায় তিনি প্রথম পুরস্কার লাভ করেন। ফর দ্য টাইম ইজ নিয়ার শীর্ষক ছোটগল্পটি ঐ বছরই ফান্ডের অর্থায়নে সংকলন গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।[২] ঐ সঙ্কলনে লেখক তার ছবি, বাবা ও উভয়ের বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেন। গল্পে লেখকের কাঁচা হাতের ও বিষয়ভিত্তিক লেখা উপস্থাপিত হয়েছে। এতে তার বংশানুক্রমিক সম্পর্কিত ছিল ও সমকামী বিশ্বের প্রতিকূলতাসহ চিলীয় অবহেলিতশ্রেণীর পরিবেশকে তুলে ধরা হয়েছে। গল্পে এক তরুণের জীবনযাত্রায় মা কর্তৃক পরিত্যক্ত এবং পিতা কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার বিষয় এসেছে। ফলশ্রুতিতে পার্শ্ববর্তী প্রভিডেন্সিয়ার উন্নততর জীবন উপভোগের জন্য পতিতাবৃত্তিতে জড়ানোর বিষয় উল্লেখ রয়েছে।
বিভিন্ন কর্মশালায় নারীবাদী লেখকসহ বামপন্থী পিয়া বারোস, র্যাকুয়েল ওলেয়া, এলতিত ও নেলি রিচার্ডের সাথে স্বাক্ষাৎ ঘটে। তারা একনায়কতন্ত্র ও সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিকল্পধারা রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠায় তাকে তাগিদ দেন। কিন্তু সমকামিতার কারণে তার বামপন্থী রাজনীতির সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়।
১৯৮৬ সালে মাপোচো স্টেশনে বামপন্থী রাজনৈতিক শোভাযাত্রায় প্রথমবারের মতো উঁচু জুতা পড়েন ও হাতুড়ি এবং কাস্তে নিয়ে হাজির হন যা তার মুখমণ্ডলের বাদিকে অবস্থান করছিল। সেখানে তিনি তার ইশতেহার পড়েন শোনান যে, আমি আমার ভিন্নতার স্বপক্ষে কথা বলতে চাই। এ লেখাটি গল্প, ঘটনাপঞ্জি ও কবিতার সংমিশ্রণে রচনা করা হয়েছিল।[১১]
২০০২ সালে জুয়ান পাবলো সাদারল্যান্ড 'এ কোরাজন আর্বেয়র্তো: লিটারেরি জিওগ্রাফি অব হোমোসেক্সুয়ালিটি ইন চিলি' শীর্ষক তার এক সংকলনে প্রকাশ করেন।[১২] ঐ বছরই তার সাতটি গল্প নিয়ে পিয়া বারোস কর্মশালায় কাউন্টলেস শীর্ষক সংকলনে প্রকাশ করেন।[২] চিলির কমিউনিস্ট পার্টি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখলেও দলীয় নেতা গ্ল্যাদিস মারিনের সাথে ২০০৫ সালে তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান ছিল।[৮]
৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে প্রাইজ হোস দনোসো লাভ করেন।[১৩] তার এ পুরস্কারটি মাকে উৎসর্গ করেন।
২০১১ সালে কণ্ঠনালীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা হয় ও কণ্ঠস্বরের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[১০][১৪] পরের বছর লোপেজ পেরেজ দ্য চিলি ফাউন্ডেশন পরিচালনা করেন। অসুস্থতাকালীন তিনি মন্তব্য করেন যে,[১০] এই কি জীবন, এইডসের মাধ্যমে আমার যাত্রা শুরু এবং শেষ হয়েছে ক্যান্সারের মাধ্যমে। শেষটির মাধ্যমে আমাকে পুনরায় চলতে শুরু করতে হবে।[৮]
২৩ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখ শুক্রবার স্থানীয় সময় দুইটায় আর্তুরো লোপেজ পেরেজ প্রভিডেন্সিয়া ফাউন্ডেশনে তার দেহাবসান ঘটে।[১৫][১৬] ২০১১ সাল থেকে ভোগা কণ্ঠনালীর ক্যান্সারে তিনি বেশ কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন।[১৭] দুই দিন পর সান্তিয়াগো সিমেট্রি মেট্রোপলিটনে সমাহিত করা হয়।
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; Mon01
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১২, ২০১৩।
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৫।
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মে ২০১৩।
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মে ২০১৩।
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৩।
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। Editorial Sudamericana। পৃষ্ঠা 302। আইএসবিএন 956-262-165-0। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৩।