পোতালা প্রাসাদ (তিব্বতি: པོ་ཏ་ལ།་ བོ་ཁ་ལོད།, চীনা: 布达拉宫) তিব্বতের লাসা শহরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রাসাদ। এটি তিব্বতের ধর্মীয় নেতা, দলাই লামার বাসস্থান হিসেবে পরিচিত এবং তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।[১]
পোতালা প্রাসাদটি ৭ম শতাব্দীতে তৈরী হয়েছিল, কিন্তু ১৭শ শতাব্দীতে সপ্তম দলাই লামা লোজাং গ্রুবের অধীনে এই প্রাসাদটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। এই প্রাসাদটি তিব্বতের প্রধান ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক কেন্দ্র ছিল। প্রাসাদটির দুটি প্রধান অংশ রয়েছে: উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত বাইরের প্রাসাদ এবং নীচে অবস্থিত মূল প্রাসাদ, যা 'লাল পোতালা' নামে পরিচিত।
১৯৫৯ সালে তিব্বত চীন দ্বারা অধিগৃহীত হলে, চতুর্দশ দলাই লামা তেনজ়িন গিয়াৎসো এই প্রাসাদ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। তার তিব্বত ত্যাগের ঘটনা তিব্বতীয় জনগণের জন্য একটি গভীর শোকের সময় ছিল।[২]
পোতালা প্রাসাদ তিব্বতি স্থাপত্যের একটি অনন্য উদাহরণ এবং তিব্বতের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় স্থাপনা। এটি প্রায় ৩,৭০০ মিটার (১২,১৪০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত। প্রাসাদটির নির্মাণে শত শত বছর সময় এবং প্রচুর পরিমাণে উপকরণ ব্যবহৃত হয়েছে। এটি ছয়টি তলা বিশিষ্ট এবং এতে রয়েছে বিভিন্ন মন্দির, ধর্মীয় চিত্রকলা এবং থাংকা (বৌদ্ধ ধর্মীয় চিত্র)।[৩]
পোতালা প্রাসাদ তিব্বতের আধ্যাত্মিক এবং সাংস্কৃতিক ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দু। এটি ধর্মীয় ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি তিব্বতী জনগণের জন্য ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক গৌরবের প্রতীক। প্রাসাদটি তিব্বতি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের অনুশীলন ও অধ্যয়নের কেন্দ্রস্থল।[৪]
আজকাল পোতালা প্রাসাদ তিব্বতের একটি প্রধান পর্যটনস্থল এবং ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত। প্রাসাদটি তিব্বতি জনগণের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভ এবং তাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে পরিগণিত হয়।[৫]