প্রতিমা বেদী | |
---|---|
জন্ম | প্রতিমা গুপ্ত [১] ১২ অক্টোবর ১৯৪৮ দিল্লি, ভারত অধিরাজ্য |
মৃত্যু | ১৮ আগস্ট ১৯৯৮ মালপা, পিঠোরাগড়, ভারত | (বয়স ৪৯)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | |
দাম্পত্য সঙ্গী | কবির বেদী (বি. ১৯৬৯; বিচ্ছেদ. ১৯৭৪) |
সন্তান | পূজা বেদী ও সিদ্ধার্থ বেদী |
ওয়েবসাইট | www |
প্রতিমা গৌরী বেদী [২][৩] (১২ই অক্টোবর, ১৯৪৮ – ১৮ই আগস্ট, ১৯৯৮) [৪] ছিলেন একজন ভারতীয় মডেল, পরবর্তীতে তিনি ওড়িশি নৃত্যের একজন প্রকাশক হয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে, তিনি বেঙ্গালুরুর নিকটবর্তী একটি নাচের গ্রাম, "নৃত্যগ্রাম" প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
প্রতিমার জন্ম দিল্লিতে।[৫] চার ভাইবোনের, অর্থাৎ বাবা-মায়ের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর বাবা লক্ষ্মীচাঁদ গুপ্তা হরিয়ানার কর্ণাল জেলার আগরওয়াল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং পেশায় তিনি ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তাঁর মা রেবা ছিলেন একজন বাঙালি মহিলা। নিজের বিবাহ সংক্রান্ত বিরোধিতার কারণে তাঁর পিতাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। পরে তিনি দিল্লিতে কাজ করা শুরু করেছিলেন।১৯৫৩ সালে তাঁর পরিবার গোয়াতে এবং ১৯৫৭ সালে তৎকালীন বোম্বেতে চলে আসে। নয় বছর বয়সে, তাঁকে কিছুদিনের জন্য কর্নাল জেলার একটি গ্রামে তাঁর খালার কাছে থাকতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তিনি একটি স্থানীয় স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি সেখান থেকে ফিরে আসার পর তাঁকে পঞ্চগণিতে অবস্থিত কিমিন্স উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তিনি বোম্বাইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন (১৯৬৫–৬৭)।[৫]
১৯৬০ এর দশকের শেষদিকে তিনি বিশিষ্ট মডেল ছিলেন। ১৯৭৪ সালে বোম্বের জুহু বিচে লাঞ্চের (দুপুরের খাবার) সময় তিনি প্রদর্শন বাতিকের (লোকারণ্য স্থানে নগ্নতা প্রদর্শন করা) জন্য সিনেব্লিটজ নামক বলিউড পত্রিকার সংবাদে চলে আসেন। [৬]
যেকোন সম্ভাব্য ঘটনা ঘটতে চলেছে, এমন সময়ে তোমাকে কেবল নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। সবচেয়ে বড় অনুগ্রহ যা তুমি নিজের উপর করতে পার তা হল ' নিজের রাস্তা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া'.
- প্রতিমা বেদী, টাইমপাস: প্রতিমা বেদীর স্মৃতিকথা[৫]
১৯৭৫ সালের আগস্টে, ২৬ বছর বয়সে, ওড়িশি নৃত্যের প্রদর্শন[৭] পুরোপুরিভাবে তাঁর জীবনকে বদলে দেয় যখন তিনি ভাগ্যক্রমে ভুলাভাই মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটে প্রবেশ করেন এবং দুজন নৃত্যশিল্পীকে ওড়িশির পরিবেশনা করতে দেখেন। এটিতে অত্যন্ত জটিল ছন্দ, প্যাটার্ন এবং অত্যাধুনিক হাত-চোখের ইঙ্গিত থাকা সত্ত্বেও তাঁর মনকে এমন এক ধরনের আবেগে ভরিয়ে তুলল যা তিনি আগে কখনও অনুভব করেননি। পরে তিনি গুরু কেলুচরণ মহাপাত্রের ছাত্রী হন। তাঁর কাছ থেকে তিনি প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা নাচ শিখতেন। একজন শিক্ষানবিশ হিসেবে তিনি অনেক কষ্টের মুখোমুখি হন। তিনি আঁটসাঁট পায়জামা, হাল্টার নেক, অফ-শোল্ডার পোশাক পরিহিত সোনালি রঙের প্রসারিত চুলওয়ালা মেয়ে থেকে নিজেকে প্রতিমা গৌরী, পরবর্তীতে গৌরী আম্মা বা গৌরী মা তে রূপান্তরিত করেছিলেন, যেহেতু তিনি তাঁর ছাত্রদের মধ্যে স্নেহশীলা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। [৮]
নাচ তাঁর কাছে জীবিকা নির্বাহের একটি পথ ছিল। তিনি একজন দুর্দান্ত শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। তাঁর নৃত্যকে নিখুঁত করতে তিনি মাদ্রাজের গুরু কল্যাণিধি নারায়ণের কাছ থেকে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করেছিলেন। তার পর থেকে তিনি সারা দেশে নৃত্য পরিবেশন শুরু করেন। প্রায় একই সময়ে, মুম্বাইয়ের জুহুতে অবস্থিত পৃথ্বী থিয়েটারে প্রতিমা তার নিজস্ব নাচের স্কুল শুরু করেছিলেন। এটি পরে ''ওড়িশি ডান্স সেন্টারে'' পরিণত হয়। ১৯৭৮ সালে কবির বেদীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পরে, তিনি একটি ভরসাস্থলের সন্ধান করছিলেন এবং তাঁর নৃত্যের মাঝে তিনি সেটি পেয়েছিলেন।
প্রতিমা বেদী তার মডেলিংয়ের দিনগুলিতে কবির বেদীর সাথে পরিচিত হন। এবং কয়েক মাস পরে, তিনি তার সাথে থাকার জন্য পিতৃগৃহ ত্যাগ করেন। এটি তাঁর ব্যক্তিত্ব প্রকাশের আর একটি ইঙ্গিত ছিল, যা তাঁর সারাজীবনেই অব্যাহত ছিল। তিনি কবিরকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাঁদের দুটি সন্তান আছে। তারা হলেন - পূজা বেদী এবং সিদ্ধার্থ বেদী।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]