শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যায় প্রতিশব্দ বলতে কোন নির্দিষ্ট ট্যাক্সন (বা শ্রেণীর) জন্য প্রচলিত নামের পাশাপাশি ঐ ট্যাক্সনের আরও এক বা একাধিক নামকে বোঝায়।[১] এমনও হতে দেখা যায় যে এসব প্রতিশব্দ একসময় বহুল ব্যবহৃত ছিল অথবা অনেকের কাছে বৈজ্ঞানিক নাম গৃহীত হয়েছিল কিন্তু বর্তমানে এসব নামের পরিবর্তে অন্য কোন নাম ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই বলে সেসব নামের গুরুত্ব হারিয়ে যায় না। কোন ট্যাক্সনের বৈজ্ঞানিক নামের সাথে সাথে তাদের প্রতিশব্দগুলোও অনেক সময় উল্লেখ করা হয়। যেমন- ১৭৫৮ সালে দ্বিপদ নামকরণের জনক ক্যারোলাস লিনিয়াস লাল বনমোরগের বৈজ্ঞানিক নাম রাখেন Phasianus Gallus। বর্তমানে এ নামটি আর ব্যবহার করা হয় না। লাল বনমোরগের বর্তমান বৈজ্ঞানিক নাম Gallus gallus, আর তার প্রতিশব্দ হল Phasianus Gallus।
ভাষার প্রতিশব্দ সমার্থক এবং একটা আরেকটার পরিপূরক, অর্থাৎ একটা শব্দের স্থলে তার প্রতিশব্দ অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। পানি যা জলও তা। কোন জায়গায় পানির স্থলে সহজেই জল ব্যবহার করা যায়। শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যায় প্রতিশব্দগুলো সমার্থক কিন্তু পরিপূরক নয়। সাধারণত কোন একটি শ্রেণীর জন্য একটিমাত্র বৈজ্ঞানিক নাম সঠিক হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। তবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির দেওয়া সেই শ্রেণীর নাম প্রতিশব্দ হিসেবে পরিগণিত হয়। সঠিক নামটি নির্ধারণ করা হয় কোড অব নোমেনক্লেচার অনুসারে। একজন শ্রেণীবিন্যাসবিদ প্রদত্ত কোন বৈজ্ঞানিক নাম তার মতে সঠিক আবার আরেকজনের মতে ভুল। একইভাবে সে শ্রেণীবিন্যাসবিদ অন্য শ্রেণীবিন্যাসবিদের দেওয়া নামকে ভুল মনে করতে পারেন। সেজন্য বৈজ্ঞানিক নামকরণের ক্ষেত্রে প্রতিশব্দগুলো উল্লেখ করতে হয়।
কোন একটি শ্রেণী স্বাধীনভাবে একাধিকবার বর্ণিত হলে অথবা তার একাধিক নামকরণ করা হলে প্রতিশব্দের সৃষ্টি হয়। এছাড়া কোন শ্রেণীর পরিবর্তন হলেও নতুন প্রতিশব্দের সৃষ্টি হয়। যেমন- কোন গোত্রকে বিভক্ত করে একাধিক গোত্রের সৃষ্টি করা হল অথবা উল্টোটা- একাধিক গোত্রকে একীকরণ করা হল। ফলে ঐ গোত্রগুলোর নতুন প্রতিশব্দের সৃষ্টি হয়।
সাধারণত কৃষিবিদ্যা, উদ্যানবিদ্যা, বাস্তুতন্ত্র, সাধারণ বিজ্ঞান প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রতিশব্দ বলতে এমন নামকে বোঝায় যা পূর্বে বিভিন্ন বই-পুস্তক ও অন্যান্য উৎসে সঠিক বৈজ্ঞানিক নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু বর্তমানে নামটি আর সঠিক বলে গণ্য করা হয় না এবং তার পরিবর্তে অন্য আরেকটি বৈজ্ঞানিক নাম সঠিক হিসেবে পরিগণিত হয়। বিশৃঙ্খলার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন বই-পুস্তক ও লেখালেখিতে বর্তমানে সঠিক বৈজ্ঞানিক নামের সাথে সাথে এর প্রতিশব্দগুলোও ব্যবহৃত হয়। যেমন- সম্বর হরিণের একাধিক বৈজ্ঞানিক নাম রয়েছে। এক্ষেত্রে সঠিক বৈজ্ঞানিক নামের সাথে প্রতিশব্দ লিখতে হয় এভাবেঃ Rusa unicolor "(syn. Cervus unicolor)"।
|part=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)