প্রত্যেকবুদ্ধ (সংস্কৃত: प्रत्येकबुद्ध; পালি: पच्चेकबुद्ध) বা একলা বোধি তিন ধরনের বোধিপ্রাপ্তদের মধ্যে একটি।
বৌদ্ধমতে প্রত্যেকবুদ্ধ নিজে থেকে কোন শিক্ষক বা পথপ্রদর্শকের সাহায্য ছাড়াই বোধিলাভ করে থাকেন। যে বৌদ্ধ যানের মাধ্যমে প্রত্যেকবুদ্ধরা বোধিপ্রাপ্ত হন, সেই যান হল প্রত্যেকবুদ্ধযান। যে সময়কালে বৌদ্ধ শিক্ষা বা ধর্মের কোন অস্তিত্ব থাকে না, সেই সময়কালেও প্রত্যকবুদ্ধদের আবির্ভাব ঘটতে পারে বলে বৌদ্ধদের মধ্যে ধারণা প্রচলিত আছে।[n ১]
মহাযানপন্থীরা প্রত্যেকবুদ্ধদের আত্মমগ্ন হিসেবে বর্ণনা করে বোধিসত্ত্বের সাথে তুলনায় তাদের বিপক্ষে মত দিয়েছেন।[২] থেরবাদ বৌদ্ধধর্মে বলা হয়েছে, বুদ্ধত্বলাভের পরও প্রত্যেকবুদ্ধরা সর্বজ্ঞতা ও সর্বোচ্চ করুণার অভাবে মানুষকে ধর্মের শিক্ষাদান করতে পারেন না।[২][৩]
খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতকে অভিধর্ম নিয়ে রচিত অভিধর্মসমুচ্চয় গ্রন্থে অসঙ্গ প্রত্যেকবুদ্ধযানপন্থীদের বর্ণনা দিয়েছেন। এই পন্থীদের ইন্দ্রিয় মধ্যমমানের বলে বর্ণনা করে বলা হয়েছে যে তারা প্রত্যেকবুদ্ধযানের চর্চা করে নিজেদের মুক্তিতে সচেষ্ট। [৪] এর বিপরীতে শ্রবকযানপন্থীদের দুর্বল ইন্দ্রিয়[৪] এবং মহাযানপন্থীদের উন্নত ইন্দ্রিয়ের কথা বলা হয়েছে। যেখানে শ্রবকযানপন্থী ও প্রত্যেকবুদ্ধযানপন্থীরা শুধুমাত্র নিজেদের মুক্তির চিন্তা করে থাকেন, সেখানে মহাযানপন্থীরা তাদের বিপরীতে নিজেদের মুক্তির পাশাপাশি সমস্ত জীবজগতের মুক্তির চিন্তা করে থাকেন।[৪] এই গ্রন্থে বলা হয়েছে যে প্রত্যেকবুদ্ধযানপন্থীরা গন্ডারের শৃঙ্গের মত বা একলা বিজয়ীর মত একা বা ছোট দলে বসবাস করে থাকেন।[৪]
খড়্গভীষণ সূত্রে প্রত্যেকবুদ্ধদের অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধত্বের বাণী লিপিবদ্ধ রয়েছে।[৫]:১০, ১৩ জাতকের গল্পগুলিতে বৌদ্ধ শিক্ষক হিসেবে প্রত্যেকবুদ্ধদের উল্লেখ রয়েছে।