খাদ্য হচ্ছে সেই সব বস্তু যা আহার করা হয়। কিন্তু সব আহার্য সামগ্রীই খাদ্য নয়। যেমন, ঘাসসেলুলোজ দিয়ে গঠিত হওয়ায় আমাদের পরিপাক নালীতে পাচিত হয় না। ফলে পুষ্টি সহায়ক নয়। সেই সব আহার্য সামগ্রীকেই খাদ্য বলা যাবে, যা দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধি সহায়ক এবং তাপশক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।
জীবদেহে শক্তির উৎস হল খাদ্য। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াকালে সৌরশক্তি খাদ্যের মধ্যে স্থিতিশীল শক্তিরুপে আবদ্ধ হয়। জীবকোষে শ্বসনের সময় স্থৈতিক শক্তি তাপ শক্তি বা গতিশক্তি রুপে মুক্ত হয়, জীবদেহের যাবতীয় বিপাক ক্রিয়া, যেমন: শ্বসন, রেচন,পুষ্টি ইত্যাদি এবং শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ, যেমন-বৃদ্ধি, চলন-গমন, জনন ইত্যাদি নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতরাং প্রানধারনের জন্য প্রত্যেক জীবকেই খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। তাই, যে সব আহার্য সামগ্রী গ্রহন করলে জীবদেহের বৃদ্ধি, পুষ্টি, শক্তি উৎপাদন ও ক্ষয়পূরন হয়, তাকেই খাদ্য বলে।
গাম্বো একটি স্ট্যু জাতীয় খাবার যা ১৮ শতকে দক্ষিণ লুইজিয়ানায় উদ্ভুত হয়। প্রাথমিকভাবে এটা কড়া স্বাদের হয়। মাংস বা শেলফিস, একটি ঘনকারক এবং লুইজিয়ানিরা যাকে বলে সব্জির ট্রিনিটি সেলারি, বেল পিপার এবং পেঁয়াজ দিয়ে এটা তৈরী হয়। ব্যবহৃত থিকেনার বা ঘনকারকের উপর ভিত্তি করে গাম্বো বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। ঢেঁড়শ, চক্টো মসলা ফাইল গুঁড়া (শুকনো এবং গুড়ো করা সাসসাফ্রাস পাতা) বা রৌউক্স (ময়দা এবং চর্বি দিয়ে তৈরী ফরাসী বেস) ইত্যাদি ঘনকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। খাবারটি এর নাম সম্ভবত বান্টু ভাষায় ঢেঁড়স (ki ngombo) বা চক্টো শব্দ জন্য ফাইল (kombo) থেকে পেয়েছে।
গাম্বোর বেশকিছু বৈচিত্র্যের অস্তিত্ব আছে। ক্রিয়োলি গাম্বোতে সাধারণত শেলফিস, টমেটো, এবং গাঢ় রৌক্স, ফাইল বা উভয়ই থাকে। কাজুন গাম্বো গাঢ় রৌক্সের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয় এবং শেলফিস বা ফাউলের সাথে মিশিয়ে তৈরি করা হয়। বিভিন্ন প্রকার গাম্বোতে প্রায়শই সসেজ অথবা হ্যাম যোগ করা হয়। বেস বা ভিত্তি তৈরী করার পরে সবজি রান্না করে নিয়ে মাংস যোগ করা হয়। খাদ্যটি ঘন্টা তিনেক রান্না করা হয়, শেষের দিকে শেলফিস এবং কিছু মশলা যোগ করা হয়। ইচ্ছা করলে তাপ থেকে সরিয়ে নিয়ে কিছু ফিলি গুড়ো যোগ করা যায়। ঐতিহ্য অনুসারে গাম্বো ভাতের উপর পরিবেশন করা হয়। গাম্বো জ'হারবেস কম পরিচিত তৃতীয় একটি গাম্বো যেখানে মাংস ব্যবহার করা হয় না। সবুজ শাক ধীরে ধীরে রান্না করা হয়, রৌক্স দিয়ে গাঢ় করা হয় এবং ভাতের পাশে পরিবেশন করা হয়।
খাবারটিতে ফরাসি, স্প্যানিশ, জার্মান, পশ্চিম আফ্রিকান, এবং চক্টোসহ বিভিন্ন সংস্কৃতির রন্ধনশৈলী এবং উপাদানের সমন্বয় ঘটেছে। পশ্চিম আফ্রিকার বা স্থানীয় খাবারের ঐতিহ্য অনুসারে অথবা ফরাসি খাবার বুইল্লাবেইসসের উপজাত হিসেবে গাম্বো তৈরী হতে পারে। ১৮০২ সালে সর্বপ্রথম গাম্বো সম্পর্কে বর্ণনা করা হয় এবং ১৯ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বিভিন্ন রান্নার বইয়ে গাম্বো সংযুক্ত হয়। ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট লুইজিয়ানার সিনেটর এলেন এলেন্ডারের সম্মানে সিনেট ক্যাফেটেরিয়ার খাদ্যতালিকায় গাম্বো যুক্ত করলে এটা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৮০ দশকে শেফ পাউল প্রুধোমের জনপ্রিয়তা গাম্বো সম্পর্কে জনমানসের আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। গাম্বো লুইজিয়ানার জাতীয় খাবার।
হট চকলেট গরম কোকো নামেও পরিচিত শক্ত চকলেট, গলানো চকলেট বা কোকো, উত্তপ্ত দুধ বা পানি এবং চিনির সমন্বয়ে তৈরি এক ধরনের উত্তপ্ত পানীয়। গলানো চকলেট দিয়ে তৈরি এই হট চকলেটকে কখনও কখনও বেভারেজ চকলেট বা পানীয় চকোলেটও বলা হয়। এটি কম মিষ্টি জাতীয় এবং ইহা কম ঘন চকলেট দ্বারা তৈরি করা হয়। প্রথম চকলেটের পানীয় আনুমানিক প্রায় ২,০০০ বছর আগে তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করা হয় এবং কোকোয়া দ্বারা তৈরি পানীয় ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে অ্যাজটেক সংস্কৃতির অপরিহার্য অংশ ছিল। এ পানীয় নিউ ওয়ার্ল্ড মেক্সিকো থেকে চালু হওয়ার পর ইউরোপে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং তারপর থেকে এর একাধিক পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে।
পায়েস (কোথাও কোথাও পায়িস বা খির নামেও পরিচিত) হল দুধ ও চাল দিয়ে তৈরি এক ধরনের মিষ্টি খাবার। চালকে দুধে সিদ্ধ করে তার ভিতর প্রচুর চিনি বা গুড় দিয়ে পায়েস বানানো হয় । বাঙালি সমাজে অন্নপ্রাশনে ও জন্মদিনে পায়েস অবশম্ভাবী একটি রান্না । চাল ছাড়া অন্য কিছু দুধে সিদ্ধ করেও পায়েস বানানো যায় ।
আলু বহুল প্রচলিত উদ্ভিজ্জ্জ খাদ্য। এটি কন্দজাতীয় (tuber) এক প্রকারের সবজি, যা মাটির নিচে জন্মে। এর আদি উৎস ভারত, এশিয়া মহাদেশ, সেখান থেকে ১৬শ শতকে এটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। উচ্চ পুষ্টিমান এবং সহজে ফলানো ও সংরক্ষণ করা যায় বলে এটি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রচলিত সবজিগুলো মধ্যে অন্যতম। এটি পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম খাদ্যশস্য, এর আগে রয়েছে যথাক্রমে ভুট্টা, গম এবং চাল।
পৃথিবীর খাদ্য হিসেবে সর্বপ্রথম আলুর নির্দশন ভারতের বাংলায় দেখা যায়।
পালযুগের কবি সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিতে বারাহী কন্দের উল্লেখ আছে। এই বারাহী কন্দ হল উচ্চমানের আলু, রতিকান্ত্র ত্রিপাঠী জানাচ্ছেন "প্রাচীন বাংলার শিলা ও তাম্রলিপিতে সমাজ ও সংস্কৃতি" বইটিতে।