প্রেমলতা আগরওয়াল | |
---|---|
![]() রাষ্ট্রপতি, শ্রী রাম নাথ কোবিন্দ, তেনজিং নর্গে জাতীয় সাহসিক পুরস্কার-২০১৭ দিচ্ছেন প্রেমলতা আগরওয়ালকে ২৯ আগস্ট, ২০১৭ তে নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে। | |
জন্ম | প্রেমলতা গর্গ ১৯৬৩ (বয়স ৬১–৬২) |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | পর্বতারোহী |
পরিচিতির কারণ | শীর্ষারোহণ মাউন্ট এভারেস্ট (২০১১) প্রথম ভারতীয় মহিলা - পর্বতারোহী ৪৮ বছর বয়সে সাত শীর্ষারোহণ সম্পূর্ণ এবং প্রবীণতম ভারতীয় মহিলা যিনি মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণ করেছেন। |
দাম্পত্য সঙ্গী | বিমল আগরওয়াল |
প্রেমলতা আগরওয়াল (জন্ম ১৯৬৩) হলেন সাতটি সর্বোচ্চ মহাদেশীয় শিখরে আরোহণ করা প্রথম ভারতীয় নারী।[১][২] ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারত সরকার দ্বারা পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন এবং ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে পর্বতারোহণের ক্ষেত্রে তার কৃতিত্বের জন্যে তেনজিং নোরগে ন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।[৩] ২০ মে ২০১১ তারিখে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু শিখর মাউন্ট এভারেস্টে (২৯,০২৯ ফুট) সেই সময় ৪৮ বছর বয়সে আরোহণ করেন, অন্যদিকে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে আসা সঙ্গীতা সিন্ধি বহল ১৯ মে ২০১৮ তারিখে তার রেকর্ড ভেঙে দেন এবং ৫৩ বছর বয়সে প্রবীণতম ভারতীয় মহিলা হিসেবে মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণ করেন।[৪] তিনি হলেন মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণ করা ঝাড়খণ্ড রাজ্যের প্রথম ব্যক্তি।[৫][৬]
ইতিপূর্বে ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নেপালে একটা দ্বীপ শীর্ষ অভিযানে (২০,৬০০ ফুট) অংশগ্রহণ করেছিলেন; কারাকোরাম পাস (১৮,৩০০ ফুট) এবং ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে মাউন্ট সালতোরো কাংরি (২০১৫০ ফুট)। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দ এবং আবার ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম ভারতীয় নারীদের থর মরুভূমি অভিযানে অংশ নেন; গুজরাটের ভূজ থেকে একটা ৪০ দিনের উটের সাফারি পাঞ্জাবের ওয়াঘা সীমান্তে (ইন্দো-পাক সীমানা) গিয়েছিল। তার কৃতিত্ব লিমকা বুক অফ রেকর্ডসে একটি তালিকাভুক্তি অর্জন করেছিল।[৫][৭][৮]
জামশেদপুরে পাহাড়ে আরোহণ করার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পর ৩৬ বছর বয়সে তিনি পর্বতারোহণ শুরু করেন। শীঘ্রই তিনি পর্বত আরোহণ করার জন্যে তার আবেগ খুঁজে পান। পরবর্তীকালে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণকারী প্রথম ভারতীয় মহিলা বাচন্দ্রী পাল তাকে প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ দিয়েছিলেন। [৯][১০]
তিনি বর্তমানে টাটা স্টিল কোম্পানিতে তাদের দুঃসাহসিক বিভাগে একজন আধিকারিক হিসেবে কাজ করেন।
তিনি ২২ সদস্যের ইকো-এভারেস্ট অভিযান দলের অংশ ছিলেন, ভারতীয় দলেও সুনীতা সিং, নরেন্দর সিং, পবন গ্রেওয়াল, সুষমা ও বিকাশ কৌশিক, ব্রাজিলের রড্রিগো রেইনেরি এবং মেক্সিকোর ডেভিড লিয়ানোও ছিলেন। তিনি এভারেস্ট বেস ক্যাম্পগুলোর চারপাশে আরোহণ অভ্যাস করার জন্য এক মাসের বেশি সময় কাটিয়েছিলেন এবং হিমালয়ের ২০,৩০০ ফুট উচ্চ দ্বীপ শীর্ষে আরোহণ করেছিলেন।[৮] ৬ মে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প ১৮,০০০ ফুট থেকে ২ নম্বর ক্যাম্প ২২,০০০ ফুট পর্যন্ত চড়ে প্রধান পর্বতারোহণ শুরু করেন। যাইহোক, তখন তিনি সম্পূরক অক্সিজেন ব্যবহার করেছিলেন এবং ২৩,০০০ ফুট ৩ নম্বর ক্যাম্প এবং ২৬,০০০ ফুট ৪ নম্বর ক্যাম্পে পৌঁছেছিলেন। দাওয়া স্টিভেন শেরপার নেতৃত্বে বহুজাতিক ট্রেকিং টিম সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করতে রাতারাতি যাত্রা করে। তারা দক্ষিণ ক্ষেত্র দিয়ে রাত ১১টায় (৪ নম্বর ক্যাম্প ২৬০০০ ফুট) নেপালের দিকে রুট থেকে শুরু করে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে শীর্ষ শিখর স্পর্শ করেছিলেন, যার উচ্চতা ২৯,০২৯ ফুট।[৫] শীর্ষ শিখরে পৌঁছানোর এক ঘণ্টা আগে তিনি তার গ্লাভস জোড়ার একটা হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং যেহেতু একটা গ্লাভস ছাড়াই অত উঁচুতে চলা সম্ভব ছিলনা, সেজন্যে তিনি আবার ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন, আর ঠিক তখনই তিনি বরফের ওপর এক জোড়া গ্লাভস পড়ে থাকতে দেখেছিলেন, যেটা অন্য কেউ ছেড়ে চলে গিয়েছিল।[১০]
প্রেমলতা আগরওয়াল পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের অধিবাসী, তার পিতা রামাবতার গর্গ একজন ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পূর্ব সিংভূম জেলার জামশেদপুরের যুগসালাই শহরে বাস করছেন এবং টাটা স্টিলে একজন আধিকারিক হিসেবে কাজ করছেন।[৬] একজন প্রবীণ সাংবাদিক বিমল আগরওয়াল-এর সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এই দম্পতির দুই কন্যা বর্তমান, তদের মধ্যে একজন বিবাহিত।[৬]
ইন্ডিয়াটাইমস.কম ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে প্রেমলতা আগরওয়ালকে শীর্ষ ভারতীয় নারী অর্জনকারী হিসেবে ঘোষণা করেছিল।[১১]
সম্প্রতি টাটা সল্টের একটি ভিডিও, ভারতের লৌহ দৃঢ় নারীদের অভিবাদনে তিনি অভিনয় করেছিলেন।[১২]