প্লাস্টিক দূষণ হল পরিবেশ কর্তৃক প্লাস্টিক পদার্থের আহরণ যা পরবর্তীতে যে বন্যপ্রাণ, বন্যপ্রাণ আবাসস্থল, এমনকি মানবজাতীর ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে৷[১] আকারের উপর ভিত্তি করে, মাইক্রো-, মেসো-, অথবা ম্যাক্রোবর্জ্য এই তিনভাগে প্লাস্টিক দূষণকে শ্রেণীকরণ করা হয়।[২] নিয়মিত প্লাস্টিক পদার্থের ব্যবহার প্লাস্টিক দূষণের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। পলিথিন ব্যাগ, কসমেটিক প্লাস্টিক, গৃহস্থালির প্লাস্টিক, বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের বেশিরভাগই পুনঃচক্রায়ন হয় না। এগুলো পরিবেশে থেকে বর্জ্যের আকার নেয়৷ মানুষের অসচেতনতাই প্লাস্টিক দূষণের প্রধান কারণ। প্লাস্টিক এমন এক রাসায়নিক পদার্থ যা পরিবেশে বিয়োজন অথবা কারখানায় পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ করতে প্রচুর সময় লাগে। তাই একে "অবিয়োজনযোগ্য পদার্থ" হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।[৩][৪] তাই প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে। সাধারণত উদ্ভিদকূল, জলজ প্রাণী, দ্বীপ অঞ্চলের প্রাণীরা প্লাস্টিক বর্জ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্য ঐসকল প্রাণীর বাসস্থান, খাদ্য সংগ্রহের স্থান ও উদ্ভিদের খাদ্য গ্রহণের পথে বাধার সৃষ্টি করে।[২] শুধুমাত্র উদ্ভিদ বা জলজ প্রাণী নয়, মানুষ প্লাস্টিক দূষণের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণের জন্য প্লাস্টিক দূষণ পরোক্ষভাবে দায়ী। শুধুমাত্র আমেরিকাতে প্রতিবছর ৫০ লক্ষ টন প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহৃত হয়। এগুলোর মধ্যে মাত্র ২৪ শতাংশ পুনঃচক্রায়ন হয়ে থাকে। অন্য ৩৮ লক্ষ টন প্লাস্টিক বর্জ্যের আকারে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়।[৫]
সাধারণত প্লাস্টিক দূষণের জন্য দুই ধরনের প্লাস্টিক দায়ী: মাইক্রোপ্লাস্টিক (ক্ষুদ্রপ্লাস্টিক) যা সাধারণত মেগা বা বৃহৎ হিসেবে পরিগণিত এবং ম্যাক্রো-প্লাস্টিক। উত্তর গোলার্ধে শহুরে কেন্দ্র ও জল সম্মুখভাগে মেগা ও মাইক্রোপ্লাস্টিক সর্বোচ্চ ঘনত্বের মধ্যে প্রায় ঘনীভূত অবস্থায় সঞ্চিত রয়েছে।
প্লাস্টিক বর্জ্য প্রাথমিক বা মাধ্যমিক হিসাবেও শ্রেণীকরণ করা হয়ে থাকে। প্রাথমিক প্লাস্টিক সংগ্রহের সময় তাদের মূল গাঠনিক অবস্থায় বিদ্যমান থাকে। উদাহরণ সরূপ বোতলের ঢাকনা, সিগারেট বাট, এবং মাইক্রোবর্জ্য।[৬]
যেসকল প্লাস্টিক বর্জ্যের আকার ২ µm থেকে ৫ মিমি-এর মধ্যে, সেসকল প্লাস্টিক বর্জ্যকে মাইক্রোবর্জ্য বলা হয়৷ মেসো ও ম্যাক্রো বর্জ্যকে ভাঙন ও পেষণের মাধ্যমে মাইক্রোবর্জ্যে পরিণত করা যায় ৷[২] মাইক্রোবর্জ্য সাধারণত নারডল নামে পরিচিত৷[২] নারডল দ্বারা নতুন প্লাস্টিক পণ্য তৈরি করা হয়ে থাকে৷, কিন্তু ক্ষুদ্র আকারের কারণে এগুলো দ্রুত পরিবেশের সাথে মিশে যেতে পারে৷ মাইক্রোবর্জ্যের ক্ষুদ্র আকারের কারণে ফিল্টার ফিডিং জীব এগুলো গ্রহণ করে৷[২] ২০০৪ সালে যুক্তরাজ্যের প্লাইমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রিচার্ড থম্পসন গবেষণার মাধ্যমে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, এন্টার্কটিকা অঞ্চলের সাগরের জলে প্রচুর পরিমাণে মাইক্রোবর্জ্য খুঁজে পান।[৪] থম্পসন ও তার সহযোগীরা ঐ অঞ্চলের পানিতে গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের ভাঙ্গা অংশ খুঁজে পান, যার কিছু মানুষের চুলের থেকেও ক্ষুদ্র৷[৪] থম্পসন সেখানকার সমুদ্র পৃষ্ঠের থেকে সম্ভবত ৩,০০,০০০ প্লাস্টিক উপাদান/কিমি২ এবং সমুদ্রতলদেশ থেকে ১০০,০০০ প্লাস্টিক কণা/কিমি২ মাইক্রো প্লাস্টিক বর্জ্য পান।[৪]
সাধারনত ২০ মিমি আকারের চেয়ে দীর্ঘ হলে তাদের ম্যাক্রোবর্জ্য বলা হয়। এগুলোর মধ্যে প্লাস্টিক মুদি থলে অন্যতম৷[২] ম্যাক্রোবর্জ্য প্রায়ই সমুদ্রের জলের মধ্যে পাওয়া যায় যা সামুদ্রিক জীবের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে৷ এতে প্রধানত মাছ ধরার জাল দূষণ হয়ে থাকে।
প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপত্তির স্থান থেকে বিভিন্ন উপায়ে ভিন্ন ভিন্ন আকারে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে ৷ সমুদ্র স্রোত, বাতাসের অসম গতি, ভৌগোলিক বৈচিত্রতার কারণে প্লাস্টিক বর্জ্য বিভিন্ন উপায়ে ছড়িয়ে পড়ছে ৷ ক্যারিবিয়ান সমুদ্র অঞ্চলে গেলে তা ভালভাবে উপলব্ধি করা যায় ৷ ঐসব অঞ্চলে সাধারণত মাইক্রো ও ম্যাক্রো আকারের প্লাস্টিক বর্জ্য পাওয়া যায় ৷ যেহেতু প্লাস্টিক অপচ্য পদার্থ , তাই সৃষ্টির পর পুনঃচক্রায়ন না হওয়া পর্যন্ত এটি পরিবেশে অবস্থান করে ৷ এটি নিয়মিত প্রাণীর খাদ্যচক্রে ঢুকে পড়ছে (মাইক্রো কণাসমূহ) ,যা প্রাণীর জন্য খুবই বিপদজনক ৷ বিভিন্ন উপায়ে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশের ভারসম্যকে নষ্ট করছে৷
ক্লোরিনযুক্ত প্লাস্টিক বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ নির্গত করে যা ভূগর্ভস্থ পানি ও ভূপৃষ্ঠীয় পানির সাথে মিশে যায়৷ অতঃপর ভূগর্ভস্থ ও ভূপৃষ্ঠীয় পানি গ্রহণের সাথে সাথে তা আমাদের খাদ্যচক্রে ঢুকে পড়ে ৷ কারণ এটির মাটিতে পচতে সময় লাগে ৪০০ বছর। আর এভাবেই পানি গ্রহণের সাথে সাথে প্রতিনিয়ত আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি ৷ [৭] মাটিতে বিভিন্ন ধরনের অনুজীব বাস করে যা প্লাস্টিক অণুর ভাঙনে সাহায্য করে ৷ এইসকল অণুজীবের মধ্য "সিউডোমোনাস( Pseudomonas)" , "নাইলন খাদক ব্যাকটেরিয়া (nylon-eating bacteria)" , " ফ্লাভো ব্যাকটেরিয়া ( Flavobacteria) অন্যতম ৷ এইসকল ব্যাকটেরিয়া "নাইলোনেজ" এনজাইম ক্ষরণের মাধ্যমে নাইলন অণুকে ভেঙ্গে ফেলে ৷ জীবাণুবিয়োজ্য প্লাস্টিক ভাঙনের মাধ্যমে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয় ৷ মিথেন এক প্রকার গ্রীণহাউজ গ্যাস ৷ এটি বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী ৷[৮]
২০১২ সালে, গবেষণার মাধ্যেমে জানানো হয় যে, সমগ্র বিশ্বের সমুদ্রে আনুমানিক ১৬৫ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য আছে ৷ [৯] "নারডল" নামক এক প্রকার প্লাস্টিক যা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ৷ এটি এমনই এক শিল্পজাত প্লাস্টিক যা প্লাস্টিক পণ্য বা কার্গো শীপ তৈরীতে ব্যবহৃত হয় ৷ [১০] প্রচুর পরিমাণে নারডল সমুদ্রের পানিতে পতিত হয় ৷ বছর বছর এই প্লাস্টিক পদার্থের পরিমাণ বেড়েই চলেছে ৷ এর ফলে প্লাস্টিক থেকে প্রতিনিয়ত ক্ষতিকর রাষায়নিক পদার্থ যেমন: বায়োস ফেনল, পলিস্টিরিন ইত্যাদি পরিস্রুত হয় ৷ [৯][১১] এক পরিসংখ্যানে জানা যায় যে, সমুদ্রের পানিতে ৫ ট্রিলিয়নের বেশি প্লাস্টিক ভেসে থাকে ৷ [১২] আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে যে পরিমাণ তারা আছে, সুমুদ্রে তার থেকেও বেশি৷ [১৩] ১৪ মিলিয়ন টনের বেশি প্লাস্টিক প্রতিবছর সুমুদ্রে জমা হচ্ছে৷ [১৩]
প্লাস্টিক দূষণ প্রাণীকুলের খাদ্যচক্রের উপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে ৷ [১৪][১৫] এটি সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীর উপর বেশি বিরুপ ফেলে ৷ " Introduction to Marine Biology" বই অনুসারে প্লাস্টিক দূষণ সামুদ্রিক প্রাণীর জন্য "একক সর্বাধিক হুমকি" র মত ৷ [১৬] বেশকিছু সামুদ্রিক প্রজাতি, যেমন: সামুদ্রিক কচ্ছপের পাকস্থলীতে বিজ্ঞানিরা প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক বর্জ্য পেয়েছেন ৷ যখনই এমনটা ঘটে, তখন ঐসব প্রাণী ক্ষুধায় ভোগে কারণ প্লাস্টিক বর্জ্য তাদের পরিপাকতন্ত্রকে বন্ধ করে দেয় ৷ এতে প্রাণীর মৃত্যুও ঘটে ৷ অনেকক্ষেত্রে, সামুদ্রিক প্রাণী প্লাস্টিক পণ্য যেমন জাল দ্বারা বিজড়িত হয় ৷ যার কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও মৃত্যুও ঘটে থাকে ৷
সামুদ্রিক প্রাণীর উপর প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব সবচেয়ে বেশি ৷ সামুদ্রিক কচ্ছপের মৃত্যু প্লাস্টিক দূষণের কারণে ঘটছে ৷ সামুদ্রিক কচ্ছপ সাধারণত জেলিফিশ, সামুদ্রিক কীট খেয়ে জীবনধারণ করে ৷ জেলিফিসের আকার ও আকৃতি প্লাস্টিক ব্যাগের মত হওয়ায় কচ্ছপ ভুল করে প্লাস্টিক ব্যাগ ভক্ষণ করে ৷ এতে তাদের খাদ্য নালিকা বন্ধ হয়ে যায় এবং খাদ্য গ্রহণ করতে অক্ষম হওয়ায় ধীরে ধীরে মারা যায় ৷ এর চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সামুদ্রিক তিমি ৷ সামুদ্রিক তিমির পাকস্থলীতে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে ৷ [১৭] এছাড়াও সামুদ্রিক ছোট মাছের পাকস্থলীতে প্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে ৷ তাই প্লাস্টিক দূষণ সামুদ্রিক মৎস্য প্রজাতির জন্য হুমকিস্বরূপ।
প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব শুধুমাত্র সামুদ্রিক মাছের উপর নয় সামুদ্রিক পাখির উপরও রয়েছে ৷ বেশিরভাগ সামুদ্রিক পাখির পেটে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক পাওয়া যায় ৷ কারণ সমুদ্রে ভাসমান প্লাস্টিক ও মাছের মধ্য তুলনা না করতে পারায় পাখিরা প্লাস্টিক গ্রহণ করে ৷ ২০০৪ সালে এক গবেষণায় মাধ্যমে গবেষকরা জানান "সামুদ্রিক গিল" এর পেটে ৩০ খন্ডের সম পরিমাণ প্লাস্টিক পাওয়া যায় ৷ [১৮] প্লাস্টিক পদার্থ থেকে সাধারণত বিষাক্ত রাসায়নিক পলিক্লোরিনেটেড বায়োফেনল নির্গত হয় ৷ এই বিষাক্ত রাষায়নিক দেহের বিভিন্ন টিস্যুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ৷ পাখিরা যখন প্লাস্টিক পদার্থ গ্রহণ করে তখন তাদের পেটেও বিষাক্ত রাষায়নিক পলিক্লোরিনেটেড বায়োফেনল নির্গত হয় ৷ এর জন্য তাদের দেহের টিস্যু ধ্বংস হয়, তাদের দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ৷ ধীরে ধীরে পাখির মৃত্যু হয় ৷ এক পরিসংখ্যানের মাধ্যমে জানা যায় যে, ১.৫ মিলিয়ন লাইসন অ্যালবাট্রস যারা উত্তর ক্যরোলাইনে বাস করে তাদের পাকস্থলিতে প্লাস্টিক পদার্থ পাওয়া যায় এবং তাদের মৃত্যু ঘটে ৷
প্লাস্টিক দূষণ মানুষের স্বাস্থ্যের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। সাধারনত প্লাস্টিক পদার্থে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক রঞ্জক মেশানো হয়। এসকল রঞ্জক কারসিনজেন হিসেবে কাজ করে ও এন্ডোক্রিনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।[১৯] ২০২২ সালের মার্চে প্রকাশিত এক গবেষণা ফলাফলে প্রথমবারের মতো মানুষের রক্তে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ শনাক্ত হয়। এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষের রক্তে এই ক্ষুদ্র কণা পায় বিজ্ঞানীরা। গবেষণা প্রতিবেদনটি এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত হয়।[২০]
প্লাস্টিক দূষণ কমানোর জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে । আরও প্লাস্টিক পুনপ্রস্তু্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে । কিছু কিছু সুপার মার্কেট এ প্লাস্টিক ব্যাগ এর মাধ্যমে আদানপ্রদান কমিয়েছে এবং বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থ ব্যবহার করছে । কিছু কিছু সম্প্রদায় এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিক পণ্য যেমন ; প্লাস্টিক ব্যাগ, বোতলজাত জল ইত্যাদি ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ৷[২১]
বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিকের ব্যবহারের অনেক উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। বায়োডিগ্রেডেবলগুলো হচ্ছে একরকম বায়োপলিমার যাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পোস্টারের মধ্যে পচন ঘটে। গৃহের কম্পোস্টার দ্বারা বায়োডিগ্রেডেবলসমূহের কার্যকরীভাবে পচন ঘটে না, এবং এর ধীর গতির কারণে মিথেন গ্যাস নির্গত হতে পারে।[২২]
আরেক রকমের ডিগ্রেডেবল বস্তি দেখা যায় যা বায়োপলিমার দ্বারা প্রস্তুত নয়, কারণ এগুলো তেল ভিত্তিক, এবং অন্যান্য চিরাচরিত প্লাস্টিকের মতই আচরণ করে। এই প্লাস্তিকগুলোকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে বিভিন্ন এডিটিভের সহায়তায় এগুলোর আরও সহজে ক্ষয় হয়। সূর্যের অতিবেগুণী রশ্মি বা অন্যান্য ভৌত নিয়ামকের সহায়তায় এই এডিটিভগুলো এগুলোর দ্রুত ক্ষয়ে সহায়তা করে।[২২] যদিও পলিমারদের এই পচন উন্নীতকারী এডিটিভগুলো উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পচন বাড়ায় না বলে দেখা গিয়েছে।
যদিও বায়োডিগ্রেডেবল ও ডিগ্রেডেবল প্লাস্টিকগুলো প্লাস্টিক দূষণ রোধে সহায়তা করে, এর কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। একটি সমস্যা হচ্ছে এরা প্রাকৃতিক পরিবেশে খুব একটা কার্যকরীভাবে ক্ষয় হয় না। তেল ভিত্তিক প্লাস্টিকগুলো একটি ক্ষুদ্রতর অংশে বিভাজিত হয়, কিন্তু এরপরে তারা আর ক্ষয়ীভূত হয় না।[২২]
ব্যবহৃত প্লাস্টিক মেডিকেল সামগ্রী এর মধ্যে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ল্যান্ডফিলের বদলে চুল্লিতে ভস্মীভূত করা হয়, যাতে রোগের ব্যাপ্তি কমে আসে। এর ফলে মেডিকেল সামগ্রী থেকে আসা প্লাস্টিক বর্জের পরিমাণ প্রচুর পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। যদি প্লাস্টিক বর্জকে ভস্মীকরণের মাধ্যমে সঠিকভাবে মীমাংসা না করা হত, তাহলে এখান থেকে ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থ নির্গত হয়ে বাতাসে গ্যাস হিসেবে বা জল ও বাতাসে ছাই হিসেবে ছড়িয়ে যেতে পারত।[২৩] অবশ্য অনেক গবেষণাতেই ইনসিনারেশনের ফলে যে বায়বীয় পদার্থ নির্গত হয় সেই ব্যাপারে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি এবং ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন প্রায়ই নেতিবাচক দিক না ধরা পড়া অবধি নতুন রাসায়নিক দ্রব্যের নিরাপত্তা নিয়ে মূল্যায়ন করেন না। একবার সেই রাসায়নিক দ্রব্যকে বিষাক্ত হিসেবে সন্দেহ করা হলে, মানব আদর্শ ডোজ এর প্রেক্ষিতে একে গবেষণা করা হয়, এই মানব আদর্শ ডোজ হচ্ছে মানুষের জন্য সবচেয়ে কম ক্ষতিকর প্রভাবের মাত্রা। এই গবেষণার সময় উচ্চ ডোজকে পরীক্ষা করে দেখা হয় যদি এটা স্বাস্থ্যে কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। আর যদি তা না হয়, তাহলে কম ডোজকে এমনিতেই নিরাপদ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এই হিসাবে এটাকে বিবেচনা করা হয় না যে, প্লাস্টিকে পাওয়া কিছু কেমিকেল, যেমন বিপিএ নিম্নমাত্রার ডোজে উপস্থিত থাকলেও তা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ক্ষতি করতে পারে।তবুও এরকম জটিল মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সত্ত্বেও প্লাস্টিক দূষণ ও এর কারণে হওয়া ক্ষতি কমানোর জন্য বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করা হয়ে থাকে। সরকারের বিভিন্ন নীতিকে প্রয়োগ করা হয়েছে যাতে নির্দিষ্ট কিছু প্লাস্টিক সামগ্রীতে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যকে ব্যবহার করা না হয়।
কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বাচ্চাদের বোতল এবং কাপে বিপিএ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর কারণ ছিল স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা এবং শিশুদের উপর বিপিএ এর অধিক ক্ষতিকর প্রভাব।[২৩] প্লাস্টিক বর্জকে নির্দিষ্ট কিছু উপায়ে ব্যবস্থাপনাকে নিরুৎসাহিত করার জন্য কর আরোপ করা হয়। যেমন ল্যান্ডফিল ট্যাক্স এর ফলে ল্যান্ডফিলের মাধ্যমে প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যায়, আর তাও ল্যান্ডফিলের বদলে প্লাস্টিকের রিসাইকেল করার উদ্যোগ তৈরি হয়।[২২] এছাড়া প্লাস্টিকের কিছু আদর্শ ধরন আছে যেগুলোকে পচনযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।[২২] যেমন ইউরোপীয় রীতিতে এই আদর্শ হচ্ছে EN 13432, যা ইউরোপিয়ান কমিটি ফর স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন (CEN) নির্ধারিত করে দিয়েছে। কোন প্লাস্টিকের পচনযোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাবার জন্য এর যথেষ্ট পরিমাণে পচনশীলতা ও ক্ষয়যোগ্যতা থাকতে হয়।[২২][২৪]
কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে যা সামুদ্রিক অঞ্চলগুলোকে রক্ষা করার কাজে নিয়োজিত। প্লাস্টিক দূষণের উপশম করা এর একটি অন্যতম কাজ। ১৯৯৭ সালে, কানাডা মহাসাগর ব্যবস্থাপনার জন্য আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা করে এবং মহাসাগর আইন (Oceans Act) পাস করে।[২৫] কেন্দ্রীয় সরকার, আঞ্চলিক সরকার ও আদিবাসী জনগণ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নের সাথে জড়িত ছিল। কেন্দ্রীয়, প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক পরিচালনা সংস্থাসমূহ সামুদ্রিক পরিবেশের দায় গ্রহণ করে। মহাসাগরীয় কার্যক্রম বিষয়ে কানাডার আদিবাসীদের চুক্তিবদ্ধ ও অ-চুক্তিবদ্ধ অধিকার রয়েছে। কানাডার সরকার কারের মতে, তারা আদিবাসীদের এই অধিকারকে সম্মান করে এবং এই মহাসাগরীয় ব্যবস্থাপনা নিয়ে আদিবাসী গোষ্ঠীদের সাথে মিলে কাজ করতে ইচ্ছুক।[২৫]
মহাসাগরীয় আইন প্রণয়নের সাথে সাথে কানাডা মহাসাগর রক্ষার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। এই মহাসাগর আইনের মূলে ছিল টেকসই উন্নয়নের (sustainable development) নীতি এবং সতর্কতামূলক ও সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা যাতে সামুদ্রিক অঞ্চল রক্ষা নিয়ে একটি সমন্বিত ও সহজবোধ্য ধারণা তৈরি হয়। সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে, মহাসাগর আইন এর বিষয়াবলি কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের মৎস্য ও মহাসাগর মন্ত্রণালয়ে অন্তর্ভূক্ত হয়। আগামী যেকোন মহাসাগর বিষয়ক কার্যক্রম এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে যায়।[২৫] এই আইনটি সরকারের বিভিন্ন আগ্রহী অংশীদারদের মধ্যে সাহায্য ও সহযোগিতাকে উৎসাহিত করে। অধিকন্তু, এই আইন মহাসাগরীয় পরিবেশ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে আগ্রহী যেকোন কানাডীয়কেই অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়।
২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কেন্দ্রীয় সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চল কৌশল (Federal Marine Protected Areas Strategy) প্রস্তুত করেন।[২৫] এই কৌশল হচ্ছে কেন্দ্রীয় সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চল বিষয়ে পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপন করার জন্য ফিশারিস এন্ড ওশিনস কানাডা, পার্কস কানাডা এবং এনভায়রনমেন্ট কানাডা এর একটি সহযোগিতামূলক উদ্যোগ। এই কেন্দ্রীয় সামুদ্রিক সুরক্ষা অঞ্চল আদিবাসী গোষ্ঠী, শিল্প কারখানা, একাডেমিয়া, পরিবেশ সংক্রান্ত গোষ্ঠী ও এনজিওদের সাথে কাজ করে যাতে এই অঞ্চলটিকে আরও শক্তিশালী করা যায়। এই নেটওয়ার্কটি নিয়ে তিনটি প্রধান কর্মসূচী রয়েছে: সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চলসমূহ, সামুদ্রিক বন্যপ্রাণ অঞ্চলসমূহ, এবং জাতীয় সামুদ্রিক সংরক্ষণ অঞ্চল।[২৫] এখানে এমপিএ নামক একটি প্রোগ্রাম উল্লেখযোগ্য, এটি বাস্তুসংস্থানকে শিল্পকারখানার কার্যক্রমের প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এমপিএ এর পরিচালনা নীতি হচ্ছে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা (Integrated Management), বাস্তুসংস্থান ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা কৌশল (ecosystem-based management approach), অভিযোজনমূলক ব্যবস্থাপনা কৌশল (Adaptive Management Approach), সতর্কতামূলক নীতি (Precautionary Principle), এবং নমনীয় ব্যবস্থাপনা কৌশল (Flexible Management Approach)।[২৫] সহযোগিতার সাথে এবং প্রতিটি বিভাগের আইনগত নির্দেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কাজ করার জন্য, মানব কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনার জন্য বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও গতানুগতিক বাস্তুসংস্থানিক জ্ঞান (TEK - traditional ecological knowledge) ব্যবহারের জন্য, এমপিএ এর সংরক্ষণমূলক উদ্দেশ্যগুলো পূরণ করার জন্য পালিত কর্মসূচীসমূহের পর্যবেক্ষণ করা ও সেম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য, বৈজ্ঞানিক নিশ্চয়তার অভাবে প্রাপ্তিসাধ্য সর্বোত্তম তথ্যকে ব্যবহার করার জন্য, এবং টেকশই উন্নয়নের লক্ষ্যসমূহ ও সংরক্ষণমূলক প্রয়োজনীয়তাগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য এই পাঁচটি পরিচালনা নীতিকে একত্রে ও একইসাথে ব্যবহার করা হয়।[২৫]
বর্জ্যপদার্থ সংগ্রহের দুটো পরিচিত রীতি হচ্ছে কার্বসাইড সংগ্রহ এবং ড্রপ-অফ পুনপ্রস্তুত কেন্দ্র ( drop-off recycling centers)। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮৭ শতাংশ জনগণের (২৭৩ মিলিয়ন লোক ) এই দুই রকম সংগ্রহ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকার আছে। কার্বসাইড সংগ্রহে প্রবেশাধিকার আছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৬৩ শতাংশ ব্যক্তির (১৯৩ মিলিয়ন লোক)। কার্বসাইট সংগ্রহের ক্ষেত্রে মানুষ প্লাস্টিককে একটি বিশেষ পাত্রে রাখা হয়, এবং এরপর কোন সরকারী বা ব্যক্তিমালিকানাধীন বর্জ্য সংগ্রাহক কোম্পানি একে তুলে নিয়ে যায়।[২৬] বেশিরভাগ কার্বসাইড কর্মসূচীতে একাধিক প্রকরণের প্লাস্টিক রেসিন সংগ্রহ করা হয়, যেখানে পিইটিই এবং এইচডিপিই উভয়ই থাকে।[২৭] ড্রপ অফ পুনপ্রস্তুত কেন্দ্রে প্রবেশাধিকার আছে যুক্তরাষ্ট্রের ৬৮ শতাংশ নাগরিকের (২১৩ মিলিয়ন ব্যক্তি)। এক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রে অবস্থিত ব্যবস্থায় ব্যক্তি তার পুনপ্রস্তুতযোগ্য বর্জ্যকে নিয়ে যান। সংগ্রহ হয়ে যাবার পর এই প্লাস্টিকগুলোকে সিংগল রেসিন এর প্লাস্টিক বাছাইকরণের একটি বস্তু পুনরুদ্ধার ব্যবস্থায় (MRF - materials recovery facility ) বা হ্যান্ডলারের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়, কারণ এগুলোর উৎপাদন মূল্য অধিক। এরপর বাছাইকৃত প্লাস্টিকগুলোকে সংকোচন করা হয় যাতে পুনরুদ্ধারকারীদের কাছে এগুলো পৌঁছানোর জন্য এর পরিবহন ব্যয় কম হয়।[২৭]
একেক রকম প্লাস্টিকের পুনপ্রস্তুতির হার একেক রকম। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সব মিলে প্লাস্টিক পুনপ্রস্তুতির হার ছিল ৮%।[২৮] ২০১১ সাল থেকে প্রায় ২.৭ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক পুনপ্রস্তুত হয়েছে।[২৮] কোন কোন প্লাস্টিক অন্য প্লাস্টিকগুলোর তুলনায় অধিক পরিমাণে পুনপ্রস্তুত হয়। ২০১১ সালে ২৯% HDPE বোতল এবং ২৯% PET বোতল ও জারকে পুনপ্রস্তুত করা হয়েছে।[২৮]
ভারত সরকারের খাবার জল ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা মন্ত্রণালয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগকে খাবার জল প্রদানের জন্য প্লাস্টিক বোতলের ব্যবহার বন্ধ করে বরং প্লাস্টিক বর্জ্য বৃদ্ধি করে না এমন উপায়ে খাবার জল প্রদান করতে অনুরোধ করেছেন।[২৯][৩০] সিকিম রাজ্য সরকারী অনুষ্ঠান ও সভায় প্লাস্টিক বোতল ও স্টাইরোফোম দ্রব্যাদির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।[৩১] বিহার রাজ্যে সরকারী সভায় প্লাস্টিক বোতল এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[৩২]
থিরুভানান্তাপুরামে অনুষ্ঠিত ভারতের ২০১৫ জাতীয় ক্রীড়ায় সবুজ চুক্তি গ্রহণ করা হয়।[৩৩] সুচিত্ব মিশন দ্বারা এটির উদ্বোধন হয়, এবং এটি "শূন্য বর্জ্য" ক্রীড়াস্থান এর লক্ষ্যে কাজ করে। সেই অনুষ্ঠানটিকে বর্জ্যবিহীন করার জন্য সেখানে প্লাস্টিক বোতল ব্যবহারকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।[৩৪] এই অনুষ্ঠানে পুনব্যবহারযোগ্য খাবার থালা-বাসন এবং স্টেইনলেস স্টিলের পানপাত্র ব্যবহার করা হয়।[৩৫] ক্রীড়াবিদদেরকে পুনরায় ভর্তি করা যায় এমন স্টিলের ফ্লাস্ক দেয়া হয়েছিল।[৩৬] পরিমাপ করে দেখা গেছে, এই সবুজ চর্চার ফলে ১২০ মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন বন্ধ হয়েছে।[৩৭]
২০১৩ সালের ১১ এপ্রিলে সচেতনতা তৈরির জন্য শিল্পী মারিয়া ক্রিস্টিনা ফিনুচ্চি প্যারিসে অবস্থিত ইউনেস্কোতে ডিরেক্টর জেনারেল ইরিনা বোকোভার সামনে গারবেজ প্যাচ স্কেল এর উদ্বোধন করেন।[৩৮] এটা ছিল ইউনেস্কো এবং ইতালির পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় হওয়া কয়েকটি ঘটনার মধ্যে প্রথম।[৩৯] আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ প্লাস্টিক দূষণের ব্যাপারেও সচেতনতা তৈরি করছে। তাছাড়া অনেক ছোট ছোট দল সারা বিশ্বে স্থানীয় ভাবে প্লাস্টিক দূষণ সম্মর্কে মানুষদের সচেতন করে যাচ্ছে ।
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; Barnes
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি