এই নিবন্ধটিকে উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্পন্ন অবস্থায় আনতে এর বিষয়বস্তু পুনর্বিন্যস্ত করা প্রয়োজন। (মার্চ ২০১৬) |
ভালোবাসা |
---|
সম্পর্কিত ধারাবাহিকের অংশ |
প্লেটোনিক ভালোবাসা বা আত্মিক ভালোবাসা (Unification of souls) (ইংরেজি: Platonic love) হ'ল সেই শুদ্ধতম ভালোবাসা যাতে কামনা বাসনার কোনও স্থান নেই। এটি সাধারণ বন্ধুত্বের থেকে বেশি কিছু কিন্তু রোমান্টিক ভালোবাসার মতো নয়। প্লেটো নিজে এ জাতীয় কোনো শব্দবন্ধ ব্যবহার করেননি। তাঁর দর্শনকে ভিত্তি করে শব্দবন্ধটি উৎপন্ন হয়েছে। প্লেটৌর দর্শনে বলা হয় এমন ভালোবাসা যা দুটি প্রেমাসক্ত মানুষকে দৈহিক আকর্ষণ থেকে আত্মিক বন্ধনে উন্নীত করে সর্ব্বোচ পর্যায়ে প্রবেশ করবে। সেই পর্যায়ের প্রেমে শরীর বিষয়টি অনুপস্থিত, অথচ পরিপূর্ণ ভালোবাসা বিরাজ করবে। প্লেটোর এই দর্শনকে তাঁর এককালীন ছাত্র অ্যারিস্টটল সামান্য ভিন্নতর রূপ দান করেন। তাঁর তত্ত্ব অনুযায়ী সর্বোৎকৃষ্ট সেই প্রেম যেখানে যৌনতা আগাগোড়াই অনুপস্থিত। কেবলই হৃদয়ের বন্ধন। একে Friendly love-ও বলা হয়। এ ভালোবাসা আগাগোড়া সম্পূর্ণ কামগন্ধহীন, কেবলই নিজেকে বিলিয়ে দেয় পরিবর্তে নেয় না কিছুই। এমন নিষ্কাম প্রেম, যে প্রেম রাজাধিরাজের মতো দু’হাত ভ'রে শুধু দিয়ে যায়, নেয় না কিছুই। যাকে লাভ করার জন্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর দুঃসহ যন্ত্রণাসমূহও সহ্য করতে হয় মুখ বুজে। এরূপ ভালবাসায় থাকে না কোনও চাহিদা, থাকে কেবল অনন্ত ভালোবাসা। যৌনতার কোনও স্থান নেই প্লেটোনিক ভালোবাসায়। এ প্রেম ভালোবাসার সর্ব্বোচ্চ পর্যায়। এ এক প্রচণ্ড ভালোবাসা যখন প্রেমকে মনে হয় স্বর্গ সুখ।
গ্রীক দার্শনিক প্লেটোর নাম হতে প্লেটোনীয় ভালোবাসা ধারণাটি এসেছে, যদিও প্লেটো নিজে কখনো এই শব্দটি ব্যবহার করেননি। প্লেটোর মতানুযায়ী প্লেটোনীয় ভালোবাসা প্রকৃত সৌন্দর্য ও নৈকট্যের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে দৈহিক আকর্ষণ অতিক্রম করে আত্মার আকর্ষণে আকৃষ্ট হওয়ার মাধ্যমে এবং সর্বশেষে, সত্যের সাথে একাত্মতা প্রকাশের দ্বারা। [১][স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] প্লেটোনীয় ভালোবাসা হলো রোমান্টিক ভালোবাসার বিপরীত।
প্লেটোনীয় ভালোবাসার ধারণা সর্বপ্রথম খুঁজে পাওয়া যায় প্লেটোর সিম্পোজিয়াম পাঠ্যে৷ সেখানে ভালোবাসার বিষয়বস্তু, আরো পরিষ্কারভাবে ইরোস(eros) এর বিষয়বস্তুতে এ নিয়ে লেখা ছিল। পাঠ্যে কীভাবে ভালোবাসার সূচনা হয়, তার অনুভূতি কেমন থাকে এবং কীভাবে তা বিবর্তন হয় এবং কীভাবে অকৃত্তিম প্লেটোনীয় ভালোবাসা একজন ব্যক্তির মন ও আত্মাকে আত্মিক ভালোবাসায় অনুপ্রাণিত করে তার সম্ভাব্যতা ব্যাখ্যা করা আছে৷ সক্রেটিস নিজের বক্তব্যেও প্লেটোনীয় ভালোবাসাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি প্রোফেট ডিওটিমাকে প্লেটোনীয় ভালোবাসার ধারণাকে আখ্যায়িত করেছিলেন ঐশ্বরিকতা (Divine) মননের সিঁড়ি হিসেবে। এখানে সিঁড়ি বলতে বোঝানো হয় "ভালোবাসার মই।" প্লেটো এবং ডিওটিমা উভয়ের মতে ভালোবাসার সবচেয়ে সুন্দর ব্যবহার তখন করা হবে যখন একজন আরেকজনের আত্মাকে সরাসরি ঐশ্বরিকতা ভালোবাসতে শেখাবে। সক্রেটিস ভালোবাসাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন গর্ভাবস্থার কিছু শ্রেণিবিভাগের উপর ভিত্তি করে; শরীরের গর্ভাবস্থা, আত্মার গর্ভাবস্থা এবং অস্তিত্বের সাথে সরাসরি সম্পর্ক। শরীরের গর্ভাবস্থা মানবশিশুর জন্ম দেয় এবং এর পরবর্তী ধাপ, আত্মার গর্ভাবস্থা জন্ম দেয় গুণের- যা হলো একটি আত্মার বস্তুবাচক গঠনে রূপান্তর৷ [২]