* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১৭:৪৫, ২৭ আগস্ট ২০২২ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। ‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ১৭:৪৫, ২৭ আগস্ট ২০২২ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সঠিক।
১৯৯৯–০০ মৌসুমে, মাত্র ৭ বছর বয়সে, ব্রাজিলীয় ফুটবল ক্লাব ভাস্কো দা গামার যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে কুতিনিয়ো ফুটবল জগতে প্রবেশ করেছেন এবং এই দলের হয়ে খেলার মাধ্যমেই তিনি ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছেন। ২০০৮–০৯ মৌসুমে, ইতালীয় ক্লাব ইন্টার মিলানের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছেন;[৫] তবে উক্ত মৌসুমে তিনি পুনরায় ভাস্কো দা গামার মূল দলের হয়ে অভিষেক করেছেন। ইন্টার মিলানের হয়ে তিন মৌসুমে ২৮ ম্যাচে ৩টি গোল করার পর ২০১২–১৩ মৌসুমে তিনি প্রায় ৯ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ইংরেজ ক্লাব লিভারপুলে যোগদান করেছেন।[৬] লিভারপুলে ছয় মৌসুম অতিবাহিত করার পর প্রায় ১৬০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে স্পেনীয় ক্লাব বার্সেলোনার সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন,[৭][৮][৯][১০] যেখানে তিনি সকল প্রতিযোগিতায় ১০৬ ম্যাচে ২৬টি গোল করেছেন। অতঃপর তিনি এক মৌসুমের জন্য ধারে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে খেলেছেন, ক্লাবটির হয়ে তিনি একটি লিগ শিরোপাসহ সর্বমোট তিনটি শিরোপা জয়লাভ করেছেন। ২০২২–২৩ মৌসুমে, তিনি প্রায় ১৭ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে বার্সেলোনা হতে ইংরেজ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলায় যোগদান করেছেন।[১১][১২]
২০০৯ সালে, কুতিনিয়ো ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে ব্রাজিলের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। প্রায় ২ বছর যাবত ব্রাজিলের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার পর, তিনি ২০১০ সালে ব্রাজিলের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন; ব্রাজিলের জার্সি গায়ে তিনি এপর্যন্ত ৬৮ ম্যাচে ২১টি গোল করেছেন। তিনি ব্রাজিলের হয়ে এপর্যন্ত ১টি ফিফা বিশ্বকাপ (২০১৮) এবং ৩টি কোপা আমেরিকায় (২০১৫, ২০১৬ এবং ২০১৯) অংশগ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে ২০১৯ সালে তিতের অধীনে কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়লাভ করেছেন।
ফিলিপে কুতিনিয়ো কোরেইয়া ১৯৯২ সালের ১২ই জুন তারিখে ব্রাজিলেররিউ দি জানেইরুতে জন্মগ্রহণ করেছেন।[১৩] তিনি রিউর উত্তরে অবস্থিত রোশা জেলায় একটি পুরানো বস্তি শহর এবং শিল্প গুদামের মধ্যে তার শৈশব অতিবাহিত করেছেন।[১৪][১৫] তার বাবার নাম জোসে কার্লোস কোরেয়া, যিনি একজন স্থপতি ছিলেন এবং তার মায়ের নাম এসমেরেলদো কুতিনিয়ো। তিনি তার বাবা-মায়ের তৃতীয় ও কনিষ্ঠ পুত্র ছিলেন।
শৈশবে তিনি খুব লাজুক ছিলেন এবং একা থাকতে পছন্দ করতেন; তিনি তার বড় ভাই ক্রিস্তিয়ানো এবং লিয়ান্দ্রোকে স্থানীয় কংক্রিটের ফুটবল পিচে তাদের বন্ধুদের সাথে খেলতে দেখার পর তিনি ফুটবল খেলতে শুরু করেছিলেন। তিনি প্রথমে ফুটসাল খেলতে শুরু করেন এবং তিনি বলেছেন যে, এটি তাকে একজন ফুটবলার হিসেবে তার দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করেছিল।[১৫] কুতিনিয়ো রাস্তার পরিবেশে খেলে তার দক্ষতার বিকাশ করেছিলেন। কুতিনিয়ো তার বন্ধুর দাদীর অনুরোধে একটি স্থানীয় ফুটবল অ্যাকাডেমিতে যোগদান করার পরে, তার বাবার সাথে ভাস্কো দা গামার যুব প্রশিক্ষকের দ্বারা আয়োজিত একটি প্রতিযোগিতায় তাকে অংশগ্রহণ করার জন্য যোগাযোগ করা হয়েছিল, যেখানে কুতিনিয়ো একটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তাদের যুব দলে যোগ দিয়েছিলেন।[১৬][১৭]
কুতিনিয়ো ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-১৭ এবং ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে ব্রাজিলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[১৭] ২০০৯ সালের ১৭ই এপ্রিল তারিখে তিনি ২০০৯ দক্ষিণ আমেরিকা অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপেপ্যারাগুয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের বিরুদ্ধে ম্যাচে ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন।[১৮] ব্রাজিলের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে তিনি প্রায় ২ বছরে ১৪ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ৬টি গোল এবং দুইটি শিরোপা জয়লাভ করেছেন। তিনি অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে অভিষেক ম্যাচেই ব্রাজিলের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে প্রথমবারের মতো গোল করেছেন।[১৮]
২০১০ সালের ৭ই অক্টোবর তারিখে, ১৮ বছর, ৩ মাস ও ২৫ দিন বয়সে, ডান পায়ে ফুটবল খেলায় পারদর্শী কুতিনিয়ো ইরানের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ব্রাজিলের হয়ে অভিষেক করেছেন।[১৯][২০] তিনি উক্ত ম্যাচের মূল একাদশে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন;[২১] ম্যাচে তিনি ১১ নম্বর জার্সি পরিধান করে ডান পার্শ্বীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছিলেন।[২২] ম্যাচটি ব্রাজিল ৩–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল।[২৩] ব্রাজিলের হয়ে অভিষেকের বছরে কুতিনিয়ো সর্বমোট ১ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন। জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের ৪ বছর ও ৮ মাস পর, ব্রাজিলের জার্সি গায়ে প্রথম গোলটি করেছেন;[২৪] ২০১৫ সালের ৭ই জুন তারিখে, মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ম্যাচের ২৮তম মিনিটে ফিলিপে লুইসের অ্যাসিস্ট হতে ব্রাজিলের হয়ে গোলটি করার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম গোলটি করেছেন।[২৫][২৬] অন্যদিকে, অভিষেকের প্রায় ৫ বছর পর, ২০১৬ সালের ৮ই জুন তারিখে, হাইতির বিরুদ্ধে ম্যাচে আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম হ্যাট্রিকটি করেছেন;[২৭][২৮] তিনি উক্ত ম্যাচে ব্রাজিলের হয়ে প্রথম, দ্বিতীয় এবং সপ্তম গোল করেছেন।[২৯]
১৮ বছর বয়সে কুতিনিয়ো তার বাবা-মা এবং তার বান্ধবী আইনের সাথে ইন্টার মিলানে যোগডান করার জন্য ইতালিতে যান; আইনের সাথে তিনি প্রথম এক বন্ধুর অনুষ্ঠানে দেখা করেছিলেন। এস্পানিওলে স্থানান্তর হওয়ার পর তার বাবা-মা ব্রাজিলে ফিরে যান। ২০১২ সালের গ্রীষ্মে, কুতিনিয়ো আইনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।.[১৭] তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।[৩০][৩১] তার বাহুতে তাদের একটি ট্যাটু রয়েছে, যা তার পরিবার এবং তার স্ত্রীর প্রতি তার শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।[১৭] তিনি একজন ধর্মপ্রাণ খ্রিষ্টান।[৩২]
২০১৮ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি তারিখে সকালের দিকে, কুতিনিয়োর বার্সেলোনার বাড়িতে চুরি হয়েছে। তিনি তার পরিবারের সাথে রাতের খাবার খেতে বেরিয়েছিলেন এবং তিনি তার বাড়িতে নির্মাণ কাজ করছিলেন, যা চোরদের পক্ষে ঘরে প্রবেশ করা সহজ করে তোলে।[৩৩]
২০১৮ সালের আগস্ট মাসে, কুতিনিয়ো তার স্ত্রীর মাধ্যমে একটি পর্তুগিজ পাসপোর্ট অর্জন করেছিলেন, যা তাকে ইইউভুক্ত খেলোয়াড় হিসেবে নিবন্ধ করতে সহায়তা করে।[৩৪]