ফিলিপ্পো প্যাচিনি | |
---|---|
জন্ম | ২৫ মে ১৮১২ পিস্তোজা, তুসকেনি |
মৃত্যু | টেমপ্লেট:D-da |
জাতীয়তা | ইতালীয় |
নাগরিকত্ব | ইতালীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | পিস্তোজা |
পরিচিতির কারণ | প্প্যাচিনিয়ান দেহকোষ ভিব্রিও কলেরা |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | শারীরস্থান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান অ্যানাটমি ফ্লোরেন্স লাইসিয়াম ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয় ইস্টিটুটো দি স্টাডি সুপিরিয়ি |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | পাওলো সাবি |
ফিলিপ্পো প্যাচিনি (২৫ মে ১৮১২ - ৯ জুলাই ১৮৮৩) হলেন একজন ইতালীয় শারীরস্থানবিদ, ১৮৫৪ সালে কলেরার ব্যাকটেরিয়া ভিব্রিও কলেরা আলাদা করার জন্য মৃত্যুর পর তিনি খ্যাতি পান, এর ৩০ বছর পর রবার্ট কোচ আরও ব্যাপকভাবে এটি আবিষ্কার করেন।[১]
প্যাচিনি তুসকেনির পিস্তোজার ফ্রান্সেস্কো নামের এক নগণ্য মুচি এবং উমিল্তা ডলফির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি এই আশায় ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেছিলেন যে ভবিষ্যতে তিনি বিশপ হবেন। যাইহোক ১৮৩০ সালে তিনি পিস্তোজার সবচেয়ে নামী মেডিকেল বিদ্যালয়ে বৃত্তি লাভ করেন। তিনি একজন চিকিৎসক হিসাবে এবং মাইক্রোস্কোপের নীচে কীভাবে মৃতদেহ পরীক্ষা ও ব্যবচ্ছেদ করতে হয় তা শিখেন। তিনি ১৮৩৩ সাল থেকে তাদের খুব কাছ থেকে অধ্যয়ন করেন এবং ১৮৩৫ সালে ফ্লোরেন্সের সোসিয়েতা মেডিকো-ফিসিকায় প্রথম আলোচনা করেন, তবে ১৮৪০ সাল পর্যন্ত তাঁর গবেষণা (নুওভি অর্গানি স্কোপার্তি নেল কর্পো ইউমানো) প্রকাশ করেননি। ১৮৩১ সালে ব্যবচ্ছেদ ক্লাসে প্যাচিনি স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে ছোট সংবেদনশীল অঙ্গ আবিষ্কার করেছিলেন যেটি চাপ এবং কম্পন শনাক্ত করতে পারে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে কাজটি ইউরোপে ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করে এবং অঙ্গটি প্যাচিনিয়ান দেহকোষ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে।
তিনি ১৮৪০ থেকে ১৮৪৩ সাল পর্যন্ত পিসায় পাওলো সাবির সহকারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন, এরপর ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান অ্যানাটমিতে কাজ শুরু করেন। তিনি ১৮৪৪ থেকে ১৮৪৬ সাল পর্যন্ত পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ১৮৪৭ সালে প্যাচিনি ফ্লোরেন্সের লাইসিয়ামে অধ্যাপনা শুরু করেন এবং তারপরে ১৮৪৯ সালে ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে "ইস্টিটুটো ডি স্টাডি সুপেরিওরি" -এ সাধারণ এবং ভূসংস্থানিক এনাটমির সভাপতির দায়িত্ব পান, সেখানে তিনি তাঁর কর্মজীবনের শেষ অবধি ছিলেন।
১৮৪৬-৬৩ এর এশিয়ার কলেরা মহামারীর সময় কালে প্যাচিনি কলেরা ব্যাসিলাস আবিষ্কার করেন। ১৮৪৬-৬৩ এর এশিয়ার কলেরা মহামারী চলাকালে ১৮৫৪ সালে ফ্লোরেন্সে কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। প্যাচিনি এই রোগ সম্পর্কে খুব আগ্রহী হয়ে উঠেন। কলেরা রোগীর মৃত্যুর পরপরই তিনি একটি ময়নাতদন্ত করেন এবং তার অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে অন্ত্রের শ্লেষ্মা সম্পর্কিত হিস্টোলজিক্যাল পরীক্ষা করেন। এই ধরনের গবেষণার সময় প্যাচিনি একটি কমা-আকৃতির ব্যাসিলাস আবিষ্কার করেন যাকে তিনি ভিব্রিও হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি ১৮৫৪ সালে "কলেরা সম্পর্কিত আণুবীক্ষণিক পর্যবেক্ষণ এবং রোগবিদ্যাগত সিদ্ধান্তগ্রহণ" শিরোনামে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন যাতে তিনি জীব এবং এর সাথে রোগের সম্পর্ক বর্ণনা করেন। তার জীবের আণুবীক্ষণিক স্লাইডগুলি স্পষ্টভাবে লেবেলযুক্ত ছিল, তার অনুসন্ধানের তারিখ এবং প্রকৃতি শনাক্ত করা ছিল (চিত্র দেখুন)। তবে ইতালীয় বিজ্ঞানীদের প্রচলিত বিশ্বাসের কারণে, রোগের মিয়াসমা তত্ত্ব যাতে রোগের মারাত্মকতার কারণ চিহ্নিত করেছিল এবং কিছু কার্যকর চিকিৎসার প্রস্তাবও ছিল সে সম্পর্কে ১৮৬৫, ১৮৬৬, ১৮৭১, ১৮৭৬ এবং ১৮৮০ সালে অতিরিক্ত প্রকাশনা সত্ত্বেও তার মৃত্যুর অনেক বছর পরেও অন্যরা এই কাজটি লক্ষ্য করেনি। জন স্নো মিয়াসমা তত্ত্বকে অস্বীকার করেছিলেন এবং ৩০ বছর পরে রবার্ট কোচ ব্যসিলিয়াম আবিষ্কারের জন্য ব্যাপকভাবে এবং ভ্রান্তভাবে কৃতিত্ব পান। প্যাচিনির কাজটি বারবার প্রকাশিত হয়েছিল এবং দ্য ব্রিটিশ অ্যান্ড ফরেন মেডিকো-চিরুর্গিক্যাল রিভিউ, খণ্ড ৩৮, জুলাই ১৮৬৬-এ ইংরেজি অনুবাদে প্রকাশিত হলে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের কাছে সহজেই উপলব্ধ হয়।[২] এছাড়াও ১৮৫৪ সালে কাতালান জোয়াকিম বালসেলস আই প্যাসকুয়াল কলেরার ব্যাকটিরিয়া আবিষ্কার করেন।[৩][৪]
এর আগে কোচ যক্ষ্মার ব্যাসিলাস চিহ্নিত করায় অনেক সম্মানিত বিজ্ঞানী, তিনি বার্লিনের ইম্পেরিয়াল হেলথ অফিসের কলেরা কমিশনের কাছে তার গবেষণা উপস্থাপন করেন, কমিশন তাকে অভিনন্দন জানালেও প্যাচিনির ব্যাকটিরিয়া আবিষ্কারকে পূর্বতন হিসাবে স্বীকৃতি দেয়।[৫] ১৯৬৫ সালে নামকরণ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কমিটি তার কাজের প্রতি সম্মান জানাতে আনুষ্ঠানিক নাম ভিব্রিও কলেরা প্যাচিনি প্যাচিনি ১৮৫৪ নাম গ্রহণ করে।[৬]
কর্মজীবনে প্যাচিনি মানব চোখের রেটিনা, বৈদ্যুতিক মাছের বৈদ্যুতিক অঙ্গ, হাড়ের গঠন এবং শ্বসনের কলাকৌশল বিষয়েও বিভিন্ন গবেষণা প্রকাশ করেছিলেন।
প্যাচিনি বিয়ে করেননি এবং তাঁর বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে প্রাপ্ত অবশিষ্ট অর্থ তার দুই অসুস্থ বোন আসুন্তা এবং মারিয়া গিউস্তিনার দীর্ঘকালীন যত্ন নিতে ব্যয় করেন। ১৮৮৩ সালের ৯ জুলাই তিনি ফ্লোরেন্সে প্রায় কপর্দকশূন্য অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন এবং তাকে মিসেরিকর্ডিয়ার কবরস্থানে কবরস্থ করা হয়। ১৯৩৫ সালে আরও দুজন উল্লেখযোগ্য শারীরস্থানবিদ অ্যাতো তাইগ্রি এবং ফিলিপ্পো সিভিনিনির দেহাবশেষের সাথে তাঁর দেহাবশেষও সান্তা মারিয়া দেলে গ্রাজির গির্জায় স্থানান্তর করা হয়।