ফ্রাঙ্ক ওলি

ফ্রাঙ্ক ওলি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ফ্রাঙ্ক এডওয়ার্ড ওলি
জন্ম(১৯৮৭-০৫-২৭)২৭ মে ১৯৮৭
টনব্রিজ, কেন্ট
মৃত্যু১৮ অক্টোবর ১৯৭৮(1978-10-18) (বয়স ৯১)
চেস্টার, নোভা স্কটিয়া, কানাডা
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি মিডিয়াম
স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৬৩)
৯ আগস্ট ১৯০৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২২ আগস্ট ১৯৩৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯০৬-১৯৩৮কেন্ট
১৯০৯-১৯৩০এমসিসি
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৬৪ ৯৭৮
রানের সংখ্যা ৩,২৮৩ ৫৮,৯৫৯
ব্যাটিং গড় ৩৬.০৭ ৪০.৭৭
১০০/৫০ ৫/২৩ ১৪৫/২৯৫
সর্বোচ্চ রান ১৫৪ ৩০৫*
বল করেছে ৬,৪৯৫ ৯৪,৯৪৯
উইকেট ৮৩ ২,০৬৬
বোলিং গড় ৩৩.৯১ ১৯.৮৭
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৩২
ম্যাচে ১০ উইকেট ২৮
সেরা বোলিং ৭/৭৬ ৮/২২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৬৪/– ১০১৮/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

ফ্রাঙ্ক এডওয়ার্ড ওলি (ইংরেজি: Frank Woolley; জন্ম: ২৭ মে, ১৮৮৭ - মৃত্যু: ১৮ অক্টোবর, ১৯৭৮) কেন্টের টনব্রিজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত পেশাদার ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন।[] বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে মিডিয়াম কিংবা স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন তিনি। ফ্রাঙ্ক ওলি কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯০৬ সালে কেন্ট ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে কাউন্টি ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। কেন্ট কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে ১৯০৬ থেকে ১৯৩৮ পর্যন্ত পুরো ক্রিকেট জীবন অতিবাহিত করেন। তন্মধ্যে, নিজস্ব তৃতীয় খেলায় ৯৫ রানসহ ৮/১১৯ লাভ করেন। এরফলে দল এক উইকেটের ব্যবধানে নাটকীয়ভাবে জয়লাভ করে। এরপর থেকেই নিজেকে সর্বকালের সেরা অল-রাউন্ডার হিসেবে পরিচিতি ঘটাতে সচেষ্ট হন। তার তুলনায় কেবলমাত্র ডব্লিউ. জি. গ্রেস প্রায়শঃই সেঞ্চুরি ও খেলায় ১০ উইকেট পেতেন। বিশেষ করে কাউন্টি ক্রিকেটে কোন ক্রিকেটারই এক মৌসুমে ২,০০০ রান ও ১০০ উইকেট নেয়ার গৌরবের অধিকারী না হলেও ১৯১৪ ও ১৯২১-২৩ মেয়াদে একাধিকবার অর্জনে নিজেকে শামিল করেছেন স্বীয় মহিমায়।[] প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪০.৭৫ গড়সহ ২৮ মৌসুমে হাজার রান তুলেছেন তিনি।

২৪ আগস্ট, ১৯৩৮ তারিখে ওয়েলসে অনুষ্ঠিত খেলায় সমারসেটের অল-রাউন্ডার আর্থার ওয়েলার্ডের ব্যাটিং তাণ্ডবের শিকারে পরিণত হন ফ্রাঙ্ক ওলি। তার এক ওভার থেকে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন ওয়েলার্ড। পরবর্তীকালে ১৯৬৮ সালে ম্যালকম ন্যাশের এক ওভারে ছয় ছক্কা হাঁকিয়ে গ্যারি সোবার্স বিশ্বরেকর্ড নিজের করে নেন।

অ্যাম্বলকোটে অনুষ্ঠিত খেলায় ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে দশম উইকেট জুটিতে বিখ্যাত ক্রিকেটার ও নিচেরসারির ব্যাটসম্যান আর্থার ফিল্ডারের সাথে জুটি গড়ে ২৩৫ রান সংগ্রহ করেন। তন্মধ্যে, ওলি করেন ১৮৫ ও ফিল্ডার করেন অপরাজিত ১১২ রান।[] তাদের সংগৃহীত শেষ উইকেট জুটিতে এ রানটি অদ্যাবধি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় সর্বোচ্চ সংগ্রহ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।[] এ জুটি যখন মাঠে নামে তখনো প্রথম ইনিংসে ওরচেস্টারশায়ারের ৩৬০ রানের বিপরীতে কেন্ট দল ৩০ রানে পিছিয়ে ছিল। আউট হবার পর কেন্টের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৫৫। কেন্ট ইনিংস ব্যবধানে জয় পায়। টেড আর্নল্ডের বলে ওলি মুখে আঘাত পেলে রিটায়ার্ড হার্ট হতে বাধ্য হয়েছিলেন।[]

টেস্ট ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তাকে সর্বকালের সেরা অল-রাউন্ডারদের অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[] ১৯০৯ থেকে ১৯৩৪ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে ৬৪ টেস্টে অংশ নেন। কি শীর্ষ, কি নিচেরসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে সফল ছিলেন তিনি, যার সূচনা ঘটে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অংশগ্রহণের মাধ্যমে। এ সময়ে তিনি চৌদ্দজন অধিনায়কের অধীনে খেলেন, যা টেস্ট ক্রিকেটে অনন্য রেকর্ড হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।[]

১৯১৩-১৪ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করে। দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় সর্বাধিক সফলতম বোলার ক্লদ নিউবেরি’র[] বলে পুরো সিরিজে চারবার আউট হয়েছিলেন তিনি।[]

মূল্যায়ন

[সম্পাদনা]

ত্রিশ বছরের অধিককাল ক্রিকেট খেলার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী স্যার জ্যাক হবসের পরেই তার অবস্থান। এছাড়াও, ২০-এর নিচে গড় রান দিয়ে ২০০০-এর অধিক উইকেট সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে উইকেট-সংরক্ষণে অংশ না নিয়েও ১০০০-এরও অধিক ক্যাচ নিয়েছিলেন।[] চমৎকার ক্রীড়াশৈলী ও ব্যাপকতর রান সংগ্রহের কারণে তার ব্যাটিং স্মরণীয় হয়ে আছে।[] কেন্টের ইতিহাসের দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১০০০০ রান ও ১০০০ উইকেট পেয়েছেন। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে অ্যালেক হার্ন এ নজির স্থাপন করেছিলেন।[১০]

অর্জনসমূহ

[সম্পাদনা]

১৯১১ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।[১১] জুলাই, ২০০০ সালে ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনস হল অব ফেম[১২] ও ২০০৯ সালে রিচি বেনো, গ্রাহাম গুচ, ডেনিস কম্পটন, হ্যারল্ড লারউডের সাথে তাকেও আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১৩]

কেন্টের সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী তিনি। এছাড়াও, ৭৬৪টি খেলায় অংশ নিয়ে কাউন্টির ইতিহাসে সর্বাধিকসংখ্যক খেলায় অংশ নিয়েছেন।[১৪][১৫] উভয়ক্ষেত্রেই তার পিছনে অবস্থান করছেন ওয়ালি হার্ডিঞ্জ

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Player Profile"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  2. Frindall, Bill (২০০৯)। Ask BeardersBBC Books। পৃষ্ঠা 154আইএসবিএন 978-1-84607-880-4। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১১ 
  3. Obituary – Arthur Fielder, Wisden Cricketers' Almanack, 1949. Retrieved 2106-02-19.
  4. Highest partnership for each wicket in County Championship, CricketArchive. Retrieved 2016-02-20.
  5. Lynch, Steven (১ ডিসেম্বর ২০০৩)। "The biggest six-hitters, and the man with most captains"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  6. "Test Bowling for South Africa"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  7. Jones, Michael। "The tragic story of Claude Newberry"Cricket Country। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  8. "Records – First-class matches – Most catches in career"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  9. Williamson, Martin; Miller, Andrew (২০ ফেব্রুয়ারি ২০০৮)। "More hitting out of the park"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  10. Moseling M, Quarrington T (2013) A Half-Forgotten Triumph, p.5. Cheltenham: Sportsbooks.
  11. Full List on Cricinfo, Retrieved 11 July, 2017.
  12. "Cricket's Hall of Fame welcomes five new members"। Cricinfo। ৩ জুলাই ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  13. "Benaud, Gooch, Compton, Larwood and Woolley inducted into ICC Cricket Hall of Fame"। ICC। ১৮ জুলাই ২০০৯। ৭ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  14. 'Players records' in Kent County Cricket Club Annual 2017, pp.212–216. Canterbury: Kent County Cricket Club.
  15. 'Batting records' in Kent County Cricket Club Annual 2017, pp.183–196. Canterbury: Kent County Cricket Club.

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]