ফ্রাঞ্চট টোন | |
---|---|
Franchot Tone | |
জন্ম | স্টেনিস্লাউস পাসকেল ফ্রাঞ্চট টোন ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯০৫ নায়াগ্রা ফলস, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
মৃত্যু | ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৮ নিউ ইয়র্ক সিটি, নিউ ইয়র্ক | (বয়স ৬৩)
মৃত্যুর কারণ | ফুসফুসের ক্যান্সার |
মাতৃশিক্ষায়তন | কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক |
কর্মজীবন | ১৯২৬-৬৮ |
দাম্পত্য সঙ্গী | জোন ক্রফোর্ড (বি. ১৯৩৫; বিচ্ছেদ. ১৯৩৯) জিন ওয়ালেস (বি. ১৯৪১; বিচ্ছেদ. ১৯৪৮) বারবারা পেটন (বি. ১৯৫১; বিচ্ছেদ. ১৯৫২) ডলোরেস ডর্ন (বি. ১৯৫৬; বিচ্ছেদ. ১৯৫৯) |
সন্তান | ২ |
স্টেনিস্লাউস পাসকেল ফ্রাঞ্চট টোন (ইংরেজি: Stanislaus Pascal Franchot Tone; জন্ম: ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯০৫ - ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৮)[১] ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক। তিনি মঞ্চ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন কাজ করেছেন। তিনি ক্লার্ক গেবল ও চার্লস লটনের সাথে মিউটিনি অন দ্য বাউন্টি (১৯৩৫) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল ড্যান্সিং লেডি (১৯৩৩), দ্য লাইভস্ অব আ বেঙ্গল ল্যান্সার (১৯৩৫), ডেঞ্জারাস (১৯৩৫), ফাইভ গ্রেভস টু কায়রো (১৯৪৩), অ্যাডভাইস অ্যান্ড কনসেন্ট (১৯৬২), ও ইন হার্ম্স ওয়ে (১৯৬৫)।
টোন কয়েকটি টেলিভিশন ধারাবাহিকের কিছু পর্বে অতিথি তারকা হিসেবে অভিনয় করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে দ্য টোয়ালাইট জোন এবং দ্য অ্যালফ্রেড হিচকক আওয়ার। চলচ্চিত্রের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬০ সালে হলিউড ওয়াক অব ফেমে তার নামাঙ্কিত একটি তারকা খচিত হয়।
টোন ১৯০৫ সালেরর ২৭শে ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্কের নায়াগ্রা ফলসে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ফ্র্যাংক জেরোম টোন কার্বোরান্ডাম কোম্পানির সভাপতি এবং তার মাতা গারট্রুড ভ্যান ভ্রাঙ্কেন ফ্রাঞ্চট। তার প্র-মাতামহ রিচার্ড ফ্রাঞ্চট ছিলেন একজন কংগ্রেসপন্থী। আইরিশ রিপাবলিকানবাদের জনক উল্ফ টোন তার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তার চতুর্থ প্র-পিতামহ জন টোন উল্ফের পিতা পিটার টোনের চাচাতো ভাই।[২] টোনের পূর্বপুরুষগণ ফরাসি-কানাডীয়, আইরিশ ও ইংরেজ ছিলেন।
মেট্রো-গোল্ডউইন-মেয়ার টোনের সাথে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের চুক্তি করে। এমজিএম তাকে কয়েকটি চিত্তাকর্ষক চরিত্রে কাজের সুযোগ দেয়, যার ছয়টি ১৯৩৩ সালে মুক্তি পায়। এমজিএমের সাথে তার প্রথম কাজ ছিল উইলিয়াম ফকনারের রচনায় হাওয়ার্ড হক্সের টুডে উই লিভ। এতে তিনি গ্যারি কুপার, জোন ক্রফোর্ড ও রবার্ট ইয়ং-এর সাথে অভিনয় করেন। তিনি ওয়াল্টার হিউস্টনের সাথে গ্যাব্রিয়েল অভার দ্য হোয়াইট হাউজ এবং লরেট্টা ইয়ং-এর বিপরীতে মিডনাইট ম্যারি চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি কিং ভিডরের দ্য স্ট্রেঞ্জার্স রিটার্ন-এ মিরিয়াম হপকিন্সের বিপরীতে এবং স্টেজ মাদার-এ, বোম্বশেল চলচ্চিত্রে জিন হার্লো ও লি ট্রেসির বিপরীতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। এই বছরে তার শেষ চলচ্চিত্র ছিল ফ্রেড অ্যাস্টেয়ারের ড্যান্সিং লেডি, এতে তিনি ক্রফোর্ড ও ক্লার্ক গেবলের সাথে অভিনয় করেন। ছবিটি হিট তকমা লাভ করে।[৩]
১৯৩৪ সালে টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি পিকচার্স তাকে মুলাঁ রুজ চলচ্চিত্রে কনস্ট্যান্স বেনেটের বিপরীতে কাজের জন্য ধার করে। তিনি এমজিএমে ফিরে এসে ক্রফোর্ডের বিপরীতে স্যাডি ম্যাকি (১৯৩৪) চলচ্চিত্রে এবং পুনরায় ধারে দ্য ওয়ার্ল্ড মুভস অন (১৯৩৪) চলচ্চিত্রে ম্যাডেলিন ক্যারলের বিপরীতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। একই বছর তিনি হার্লোর বিপরীতে দ্য গার্ল ফ্রম মিজুরি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং এমজিএম তাকে স্ট্রেইট ইজ দ্য ওয়ে (১৯৩৪) চলচ্চিত্রে শীর্ষ পারিশ্রমিক প্রদান করেন, যদিও এটি "বি" রেটিঙের চলচ্চিত্র ছিল। এই বছর ওয়ার্নার ব্রস. তাকে জেন্টলমেন আর বর্ন চলচ্চিত্রে কাজের জন্য ধার করেন।
ওয়ার্নার ব্রস. তাকে ডেঞ্জারাস (১৯৩৫) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ধার করেন। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়কালে তার সহশিল্পী বেটি ডেভিস তার প্রতি আকৃষ্ট হন। কিন্তু টোন ততদিনে জোন ক্রফোর্ডের সাথে প্রেমের সম্পর্কে লিপ্ত হন এবং একই বছর ক্রফোর্ডকে বিয়ে করেন।[৪] বিবাহ পরবর্তী তিনি ক্রফোর্ডের সাথে নো মোর লেডিজ (১৯৩৫), দ্য গর্জিয়াস হাসি (১৯৩৬), লাভ অন দ্য রান (১৯৩৬) ও দ্য ব্রাইড ওর রেড (১৯৩৭) ছবিতে অভিনয় করেন। টোন ক্রফোর্ডের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন এবং প্রচুর মদ্যপান করে তাকে শারীরিক আঘাত করতেন। ফলে মাত্র চার বছর পরে ১৯৩৯ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। টোন পরবর্তী কালে ১৯৬৪ সালে ক্রফোর্ডকে পুনরায় বিয়ের প্রস্তাব দেন কিন্তু ক্রফোর্ড এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।[৩]
তিনি ধারে প্যারামাউন্ট পিকচার্সের দ্য লাইভস্ অব আ বেঙ্গল ল্যান্সার (১৯৩৫) চলচ্চিত্র অভিনয় করেন। গ্যারি কুপারের সাথে তার অভিনীত এই ছবিটি হিট হয়। একই বছর তিনি ওয়ান নিউ ইয়র্ক নাইট ছবিতে শীর্ষ পারিশ্রমিক গ্রহীতা হিসেবে এবং রেকলেস ছবিতে জিন হার্লো ও উইলিয়াম পাওয়েলের পর শীর্ষ পারিশ্রমিক গ্রহীতা হিসেবে কাজ করেন। তিনি বক্স-অফিসে সফল চলচ্চিত্র মিউটিনি অন দ্য বাউন্টি (১৯৩৫) ছবিতে এনসাইন বায়াম চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবিতে ক্লার্ক গেবল ও চার্লস লটনের সাথে পার্শ্ব ভূমিকায় অভিনয় করলেও তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। গেবল ও লটনও এই চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে অস্কারের মনোনয়ন পান।[৫]
তিনি এক্সক্লুসিভ স্টোরি (১৯৩৫) ছবিতে মেজ ইভান্সের বিপরীতে, ইয় আনগার্ডেড আওয়ার (১৯৩৬) ছবিতে লরেট্টা ইয়ঙের বিপরীতে এবং কলাম্বিয়া পিকচার্সের দ্য কিং স্টেপস আউট (১৯৩৬) ছবিতে গ্রেস মুরের বিপরীতে প্রধান চরিত্রে এবং সুজি (১৯৩৬) ছবিতে হার্লো ও ক্যারি গ্র্যান্টের সাথে তৃতীয় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন।
টোন ধূমপায়ী ছিলেন, তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৬৮ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক সিটিতে মৃত্যুবরণ করেন।[৬] জোন ক্রফোর্ড তার মরদেহ দাহের ব্যবস্থা করেন এবং তার ছাই কানাডার মুসকোকা হৃদে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬০ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি হলিউড ওয়াক অব ফেমে তার নামাঙ্কিত একটি তারকা খচিত হয়।[৭] তারকাটি হলিউড বলেভার্ডের ৬৫০০ ব্লকের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত।[৮]