ফ্রান্সিস্কো দে মিরান্ডা | |
---|---|
![]() মার্টিন তোভার ওয়াই তোভার কর্তৃক অঙ্কিত প্রতিকৃতি | |
ভেনেজুয়েলার সুপ্রিম চিফ | |
কাজের মেয়াদ ২৫ এপ্রিল, ১৮১২ – ২৬ জুন, ১৮১৩ | |
পূর্বসূরী | ফ্রান্সিস্কো এস্পেজো |
উত্তরসূরী | সিমন বলিভার (ভেনেজুয়েলা দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি) |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | সেবাস্তিয়ান ফ্রান্সিস্কো দে মিরান্ডা ওয়াই রড্রিগুয়েজ দ্য এস্পিনোজা ২৮ মার্চ ১৭৫০ কারাকাস, ভেনেজুয়েলা |
মৃত্যু | ১৪ জুলাই ১৮১৬ কাদিজ, স্পেন | (বয়স ৬৬)
জাতীয়তা | ভেনেজুয়েলীয় |
জীবিকা | সামরিকবাহিনী |
সামরিক পরিষেবা | |
ডাকনাম | দ্য প্রিকারসর দ্য ফার্স্ট ভেনেজুয়েলিয়ান ইউনিভার্সাল দ্য গ্রেট আমেরিকান ইউনিভার্সাল |
আনুগত্য | টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত Kingdom of Spain![]() ![]() ![]() ![]() |
কাজের মেয়াদ | ১৭৭১-১৮১২ |
পদ | জেনারেলিসিমস |
যুদ্ধ | আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ ফরাসি বিপ্লব মেলিলা অবরোধ ভেনেজুয়েলার স্বাধীনতার যুদ্ধ |
সেবাস্তিয়ান ফ্রান্সিস্কো দে মিরান্ডা ওয়াই রড্রিগুয়েজ দ্য এস্পিনোজা (স্পেনীয়: Francisco de Miranda; জন্ম: ২৮ মার্চ, ১৭৫০ - মৃত্যু: ১৪ জুলাই, ১৮১৬) ভেনেজুয়েলীয় প্রদেশের কারাকাসে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ভেনেজুয়েলীয় বিপ্লবী ছিলেন। সচরাচর তিনি ফ্রান্সিস্কো দে মিরান্ডা (স্পেনীয় উচ্চারণ: [fɾanˈsisko ðe miˈɾanda]) নামে পরিচিতি পেয়ে আসছেন। যদিও তার নিজস্ব পরিকল্পনায় স্পেনীয় আমেরিকান উপনিবেশের স্বাধীনতা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল, তবুও তিনি স্পেনীয় আমেরিকান যুদ্ধে দক্ষিণ আমেরিকার বিস্তৃত অঞ্চল অধিকারে সফলকাম সিমন বলিভারের সহযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত হয়ে আছেন।
মিরান্ডা আবেগঘন ও রোমাঞ্চকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। আদর্শবাদী হিসেবে তিনি সকল স্পেনীয় আমেরিকাকে স্বাধীন ও একীভূত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার নিজস্ব সেনাবাহিনী বিশ্বাসঘাতকতা করলে ১৮১২ সালে স্বাধীন স্পেনীয় আমেরিকান রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। তিনি তার শত্রুদের কাছে ধৃত হন। চার বছর পর ১৮১৬ সালে স্পেনের কারাগারে তার দেহাবসান ঘটে। স্মরণীয় যে, তার মৃত্যুর চৌদ্দ বছরের মধ্যে অধিকাংশ স্পেনীয় আমেরিকান উপনিবেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিল।
৫ এপ্রিল, ১৭৫০ তারিখে তার বাপ্তিস্মা ঘটে। বাবা সেবাস্তিয়ান দ্য মিরান্ডা রাভেলো কানারি দ্বীপপুঞ্জ থেকে অভিবাসিত হয়ে এখানে নিবাস গড়ে সফলকাম হন ও ধনী ব্যবসায়ীতে পরিণত হন। এছাড়াও তার মা ফ্রান্সিস্কা অ্যান্টোনিয়া রড্রিগুয়েজ দে এস্পিনোজা সম্পদশালীনী ভেনেজুয়েলীয় ছিলেন।[১]
প্রাচুর্যময় পরিবেশে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন ও সর্বাপেক্ষা সেরা ব্যক্তিমালিকানাধীন বিদ্যালয়গুলোয় অধ্যয়ন করেন। তাস্বত্ত্বেও মিরান্ডা অভিজাত সমাজের সদস্য হতে পারেননি। কানারীয় বংশোদ্ভূত হবার ফলে তিনি বেশ বর্ণবৈষম্যের শিকার হন। বংশধারা নিয়ে ক্রাইলিও অভিজাত সমাজে তার অন্তর্ভূক্তি ক্রমাগত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। মিরান্ডার বাবা সেবাস্তিয়ান সর্বদাই পরিবারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছিলেন। পাশাপাশি সম্পদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
জেসুইটস, জর্জ লিন্দো ও জুয়ান সান্তায়েলার কাছ থেকে শিক্ষালাভ করেন। পরবর্তীতে সান্তা রোজা একাডেমিতে ভর্তি হন।[১] ১০ জানুয়ারি, ১৭৬২ তারিখে কারাকাসের রয়্যাল এন্ড পন্টিফিকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে শুরু করেন। সেখানে তিনি লাতিন, নেব্রিজার প্রারম্ভিক ব্যাকরণ ও রিপাল্দার কেটিবাদ বিষয়ে দুই বছর অধ্যয়ন করেন। সেপ্টেম্বর, ১৭৬৪ সালে মিরান্ডা তার প্রিলিমিনারী কোর্স সম্পন্ন করেন ও উপরের শ্রেণীতে অধ্যয়নের সুযোগ লাভে সক্ষম হন। ১৭৬৪ থেকে ১৭৬৬ পর্যন্ত মিরান্ডা পড়াশোনা চালিয়ে যান। সিসারো ও ভার্জিলের লেখার ধরন, ব্যাকরণ, ইতিহাস, ধর্ম, ভূগোল এবং গণিত বিষয়ে অধ্যয়ন করেন তিনি।[১]
জুন, ১৭৬৭ সালে মিরান্ডা মানবিক বিভাগে ব্যাকালরেট ডিগ্রী লাভ করেন।[১] এটি অজানাই রয়েছে যে, যদি মিরান্ডা ডক্টর উপাধি পান তাহলে এর স্বপক্ষে একমাত্র প্রামাণ্য দলিল হচ্ছে তার ব্যক্তিগত সনদ যা তিনি ১৭৬৭ সালে লাভ করেছিলেন। সে হিসেবে তার বয়স ছিল ১৭ বছর।
১৭৬৭ সালের শুরুতে কারাকাস সমাজে পিতার প্রাধান্যতার কারণে মিরান্ডার পড়াশোনায় ব্যাঘাতের সৃষ্টি করে। ১৭৬৪ সালে সেবাস্তিয়ান দ্য মিরান্ডা গভর্নর হোস দ্য সোলানো ওয়াই বোতে কর্তৃক স্থানীয় আধা-সামরিক বাহিনী হিসেবে পরিচিত হোয়াইট ক্যানারি কোম্পানির ক্যাপ্টেন মনোনীত হন।
১৭৭০ সালে সেবাস্তিয়ানের পদবী ও সামাজিক মর্যাদা তৃতীয় চার্লস কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হয়।[২] পিতার আইনি বিজয়ে র পর স্পেনে নতুন জীবন আস্বাদনকল্পে মিরান্ডা কারাকাস ত্যাগ করেন। ২৫ জানুয়ারি, ১৭৭১ তারিখে লা গুয়াইরা বন্দর থেকে সুইডীয় ফ্রিগেট প্রিন্স ফ্রেদেরিকে চড়ে স্পেনের কাদিজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।[১]
১৭৭১ সালে মিরান্ডা বৈশ্বিক ভ্রমণে বের হন যা তার জীবনের অধিকাংশ সময়েই জড়িত ছিল। তার অভিজ্ঞতালব্ধ ঐ সময়কার জ্ঞান নিজ সংবাদপত্রে তুলে ধরতেন যা ৬৩ খণ্ডে বিভক্ত ছিল। আমেরিকান, ফরাসি বিপ্লব ও স্পেনীয় আমেরিকান - এ তিনটি বৃহৎ, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন।
১ মার্চ, ১৭৭১ তারিখে কাদিজ বন্দরে অবতরণ করেন ও দূর সম্পর্কের আত্মীয় হোস ডআনিনোর কাছে অল্পকিছু দিন অতিবাহিত করেন।[১] দুই সপ্তাহ পরই কাদিজ ছেড়ে মাদ্রিদের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান মিরান্ডা।[২] মাদ্রিদে মিরান্ডা তার অর্জিত শিক্ষাকে কাজে লাগান বিশেষ করে আধুনিক ভাষাকে। ফলশ্রুতিতে কর্তৃপক্ষ তাকে ইউরোপের সর্বত্র ভ্রমণের অনুমতি প্রদান করে।[১] লাতিন আমেরিকানদের একতা ধারণা পোষন করে ভ্রমণ করতে থাকেন। আমেরিকা, ইউরোপ ও আফ্রিকায় সাহসের সাথে যুদ্ধ করেন। এ সময়ে তিনি বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের সাথে পরিচিত হন।