পাসব্যান্ড মড্যুলেশন টেকনিক্স |
---|
অ্যানালগ মড্যুলেশন |
এএম · এসএসবি · কিউএএম · এফএম · পিএম · এসএম |
ডিজিটাল মড্যুলেশন |
এফএসকে · এমএফএসকে · এএসকে · ওওকে · পিএসকে · কিউএএম এমএসকে · সিপিএম · পিপিএম · টিসিএম ওএফডিএম · এসসি-এফডিই |
স্প্রেড স্পেকট্রাম |
সিএসএস · ডিএসএসএস · এফএইচএসএস · টিএইচএসএস |
আরও দেখুন: ডিমড্যুলেশন, মডেম, |
টেলিযোগাযোগ এবং সিগনাল প্রোসেসিং এ কোন তরঙ্গের তাৎক্ষণিক কম্পাঙ্কের পরিবর্তনের সাথে সাথে বাহক তরঙ্গের পরিবর্তনের মাধ্যমে তথ্য এনকোড করার প্রক্রিয়াকে ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশন(এফএম) বলে।
কন্ঠ বা সঙ্গীতের মত শ্রাব্য সিগনালকে এফএম রেডিওতে সম্প্রচারের সময় এনালগ ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশন ব্যবহৃত হয়। এসময় শ্রাব্য সিগনালের কম্পাঙ্ক বিচ্যুতি অর্থাৎ বাহক কম্পাঙ্ক এবং এর কেন্দ্রীয় কম্পাঙ্কের পার্থক্য মডুলেটিং সিগনালের সমানুপাতিক হয়।
ডিজিটাল ডাটাকেও এফএম এর মাধ্যমে এনকোড করা এবং পাঠানো যায়। এক্ষেত্রে আগে থেকে ডিজিটাল ডাটার ডিজিট গুলোকে আগে থেকে সেট করা কম্পাঙ্ক দিয়ে বাহক তরঙ্গের কম্পাঙ্ক নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। যেমন বাইনারি ১ এর জন্য একটি কম্পাঙ্ক এবং বাইনারি ০ এর জন্য আরেকটি কম্পাঙ্ক দিয়ে দেয়া হয়। এ ধরনের মডুলেশন কৌশলকে ফ্রিকোয়েন্সি শিফট কিয়িং(এফএসকে) বলে। মডেম এবং ফ্যাক্স মডেম এ = ফ্রিকোয়েন্সি শিফট কিয়িং বহুল ব্যবহৃত হয়। এছাড়া মোর্স কোড এ এর ব্যবহৃত হয়।[১]রেডিওটেলিটাইপ এ এর ব্যবহার আছে [২]
এফএম রেডিও সম্প্রচারে ফ্রিকোয়েন্সি মড্যুলেশন বহুল ব্যবহৃত হয়। এছাড়া টেলিমেট্রি, রাডার, সিজমিক অনুমান এবং ইইজি এর মাধ্যমে নবজাতক এর অবস্থা পর্যবেক্ষণের কাজেও এটি ব্যবহার করা হয়।[৩] দ্বি-পথ রেডিও সিস্টেমে, সংগীত সংশ্লেষণ, এবং কিছু ভিডিও আদান প্রদানেও এফএমের ব্যবহার আছে। বেতার আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে এর সুবিধা হল সিগনাল ও নয়েজের অনুপাত বেশি হওয়ায় সম-ক্ষমতার অ্যাম্প্লিচ্যুড মড্যুলেশন এর চেয়ে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ইন্টারফেয়ারেন্স উপেক্ষা করার ক্ষমতা বেশি হয়। এ কারণে সঙ্গীত সম্প্রচারে এফএম রেডিও ব্যবহৃত হয়।
ফ্রিকোয়েন্সি মড্যুলেশন ও দশা মড্যুলেশন, কৌণিক মড্যুলেশন এর দুইটি পরিপূরক উপায়। ফ্রিকোয়েন্সি মড্যুলেশন তৈরির ক্ষেত্রে অনেক সময় দশা মড্যুলেশন ব্যবহার করা হয়। অ্যাম্প্লিচ্যুড মড্যুলেশনের সাথে এদের পার্থক্য হল অ্যাম্প্লিচ্যুড মড্যুলেশনে বাহক তরঙ্গের বিস্তার সিগনালের বিস্তারের সাথে উঠানামা করে এবং কম্পাঙ্ক ও দশা স্থির থাকে।
ধরা যাক, হল তথ্যবিশিষ্ট সিগনাল এবং হল সাইন আকারের বাহক তরঙ্গ যেখানে fc বাহক তরঙ্গের কম্পাঙ্ক এবং Ac হল বাহক তরঙ্গের বিস্তার। মড্যুলেটর বেসব্যান্ড সিগনালটিকে বাহক তরঙ্গের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে।
যেখানে = , হল মড্যুলেটরেসংবেদনশীলতা এবং র হল মড্যুলেটিং বা বেসব্যান্ড সিগনালের বিস্তার।
এই সমীকরণে, হল তাৎক্ষনিক কম্পাঙ্ক এবং হল কম্পাঙ্ক বিচ্যুতি , যা fc থেকে xm(t) এর স্রবোচ্চ সরণ নির্দেশ করে এবং এর মান ±১ এর মধ্যেই থাকে।
fc ± fΔ এর মধ্যেই বেশিরভাগ শক্তি থাকলেও ফুরিয়ার বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, সিগনালকে পুরোপুরি উপস্থাপন করতে আরো বেশি পরিমাণে কম্পাঙ্ক দরকার হয়। বাস্তব এফএম সিগনালের মধ্যে অসীম সংখ্যক কম্পাঙ্ক থাকলেও , কম্পাঙ্ক বাড়ার সাথে সাথে এদের বিস্তার কমে আসে এবং বেশি উচ্চতর কম্পাঙ্ককে ডিজাইনের সময় উপেক্ষা করা হয়। [৪]
গাণিতিক ভাবে সাইনুসোইডাল অবিচ্ছিন্ন সিগনালকে একটি মাত্র কম্পাঙ্ক fm দিয়ে প্রকাশ করা যায়। এ ধরনের সিগনালকে একক সুর মড্যুলেশন বলে। এর সমাকলন করলে,
এক্ষেত্রে, y(t) হবে,
যেখানে কে কম্পাঙ্ক বিচ্যুতি , দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
সাইন তরঙ্গের এ ধরনের হারমোণিক বণ্টনকে বেসেল ফাংশনের রূপে প্রকাশ করা যায়। এটিই ফ্রিকোয়েন্সি ডোমেইনে ফ্রিকোয়েন্সি মড্যুলেশনের গাণিতিক ভিত্তি।
মড্যুলেশন করার পর চলকটি অ-মড্যুলেটেড লেভেলের সাথে কেমনভাবে পরিবর্তিত হয় তা প্রকাশ করা হয় মড্যুলেশন সূচক দিয়ে। এটি বাহক কম্পাঙ্কের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
এখানে, হল মড্যুলেটিং সিগনাল,xm(t) সর্বোচ্চ কম্পাঙ্ক এবং হল সর্বোচ্চ কম্পাঙ্ক বিচ্যুতি। কম্পাঙ্ক বিচ্যুতি, তাৎক্ষণিক কম্পাঙ্ক বাহক কম্পাঙ্ক থেকে কতখানি বেশি বা কম তা নির্দেশ করে। সাইন তরঙ্গ মড্যুলেশনের ক্ষেত্রে সরবোচ্চ কম্পাঙ্ক বিচ্যুতি এবং মড্যুলেটিং সাইন তরঙ্গের কম্পাঙ্কের অনুপাতই হল মড্যুলেশন সূচক।
হলে, একে সরুব্যান্ড এফএম বলা হয় এবং এর ব্যান্ডউইথ হয় । অনেক সময়,   হলে একে সরুব্যান্ড এফএম, অন্যথায় তাকে প্রশস্তব্যান্ড এফএম বলা হয়।
ডিজিটাল মড্যুলেশন সিস্টেম, যেমন- বাইনারি ফ্রিকোয়েন্সি শিফট কিয়িং এ যখন বাইনারি সিগনালকে বাহক দ্বারা মড্যুলেট করা হয় তখন এর মড্যুলেশন সূচক হয়,
যেখানে, হল বাইনারি অঙ্কের পর্যায়কাল এবং রীতি অনুযায়ী, কে মড্যুলেটিং সিগনালের সর্বোচ্চ কম্পাঙ্ক ধরা হয় । ডিজিটাল মড্যুলেশনের ক্ষেত্রে কে প্রেরণ করা হয় না। এর বদলে বা এর মধ্যে যেকোন একটি কম্পাঙ্ককে পাঠানো হয়, তবে তা বাইনারি অবস্থা ০ না ১ তার উপর নির্ভর করে।
হলে এই মড্যুলেশন কে প্রশস্তব্যান্ড এফএম বলে এবং এর ব্যান্ডউইথ হয় । যেহেতু প্রশস্তব্যান্ড এফএম বেশি ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে তাই এর সিগনাল ও নয়েজের অনুপাত বেশি হয়। যেমন- ধ্রুব রেখে দ্বিগুণ করললে সিগনাল ও নয়েজের অনুপাত আটগুণ বেশি হয়। [৫] (এটাকে চারপ স্প্রেড স্পেকট্রাম এর সাথে তুলনে করা যায়, যেটাতে অনেক বেশি কম্পাঙ্ক বিচ্যুতি ব্যবহৃত হয় এবং স্প্রেড স্পেক্ট্রাম নামেই বেশি পরিচিত।)
টোন মড্যুলেটেড এফএম তরঙ্গে, মডুলেশন কম্পাঙ্ক ধ্রুব রেখে মড্যুলেশন সূচক বাড়ানো হলে, ব্যান্ডউইথ বেড়ে যায়, কিন্তু স্পেক্ট্রা এর মধ্যকার পার্থক্য ঠিক থাকে। স্পেকট্রা উপাদান গুলোর বিস্তারের পরিবর্তন ঘটে। কম্পাঙ্ক বিচ্যুতি ঠিক রেখে মড্যুলেশন সূচক বাড়ালে স্পেকট্রা এর মধ্যকার পার্থক্যও বেড়ে যায়।
সিগনাল কম্পাঙ্কের চেয়ে বাহক কম্পাঙ্কের মত একই রকম বিচ্যুতি ঘটলে তা সরুব্যান্ড এবং বেশি বিচ্যুতি ঘটলে তা প্রশস্তব্যান্ড।[৬] দ্বি-পথ রেডিও সিস্টেমে সরুব্যান্ড এফএম ব্যবহার করা হয়। এতে বাহককে ২.৫ কিলোহার্জ পর্যন্ত বিচ্যুত হতে দেয়া হয়, এ কারণে যে সাধারণ কথ্য সিগনালের কেন্দ্রীয় কম্পাঙ্ক এর আশেপাশে ৩.৫ কিলোহার্জ পর্যন্ত বিচ্যুত হয়। এফএম সম্প্রচারে প্রশস্তব্যান্ড এফএম ব্যবহার করা হয়, যেখানে সংগীত ও কথা ৭৫ কিলোহার্জ পর্যন্ত বিচ্যুত হয় এবং এর মাঝে ২০ কিলোহার্জ ব্যান্ডউইথ এর অডিও থাকে এবং ৯২ কিলোহার্জ পর্যন্ত উপবাহক থাকে।
একক-সুর তরঙ্গের বাহক মড্যুলেশনের সময়, প্রথম প্রকারের বেসেল ফাংশন দিয়ে পার্শ্বব্যান্ড সংখ্যা এবং মড্যুলেশন সূচক এর ফাংশন রূপে ফ্রিকোয়েন্সি স্পেকট্রাম হিসাব করা যায়। মড্যুলেশন সুচকের মধ্যে বাহক ও পার্শ্বব্যান্ড এর সম্পর্ক সূচিত থাকে। মড্যুলেশন সূচকের বিশেষ মানের জন্য, বাহক বিস্তার শূন্য হয়ে যায় এবং সমস্ত পাওয়ার পার্শ্বব্যান্ডে অবস্থান করে।[৪]
বাহকের দুইপাশেই পার্শ্বব্যান্ড থাকায় তাদের সংখ্যাকে দ্বিগুণ করে মড্যুলেশন কম্পাঙ্ক দিয়ে গুণ দিয়ে ব্যান্ডউইথ হিসাব করা হয়। যেমন- ৩ কিলোহার্জের বিচ্যুতিকে ২ কিলোহার্জের বাহক দিয়ে মড্যুলেট করলে মড্যুলেশন সূচক হয় ১.৩৬। আমরা যদি ০.০১গুণ বিস্তার যুক্ত পার্শ্বব্যান্ডকে উপযোগী ধরি, তাহলে তালিকা থেকে দেখতে পাই যে মড্যুলেশন সূচক তিনটি পার্শ্বব্যান্ড তৈরি করবে। এগুলোকে দ্বিগুণ করে (৬ * ২.২ কিলোহার্জ ) বা ১৩.২ কিলোহার্জের প্রয়োজনীয় ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায়।
মড্যুলেশন সূচক |
পার্শ্বব্যান্ড বিস্তার | ||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
বাহক | ১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | |
০.০০ | ১.০০ | ||||||||||||||||
০.২৫ | ০.৯৮ | ০.১২ | |||||||||||||||
০.৫ | ০.৯৪ | ০.২৪ | ০.০৩ | ||||||||||||||
১.০০ | ০.৭৭ | ০.৪৪ | ০.১১ | ০.০২ | |||||||||||||
১.৫ | ০.৫১ | ০.৫৬ | ০.২৩ | ০.০৬ | ০.০১ | ||||||||||||
২.০০ | ০.২২ | ০.৫৮ | ০.৩৫ | ০.১৩ | ০.০৩ | ||||||||||||
২.৪১ | ০ | ০.৫২ | ০.৪৩ | ০.২০ | ০.০৬ | ০.০২ | |||||||||||
২.৫ | −০.০৫ | ০.৫০ | ০.৪৫ | ০.২২ | ০.০৭ | ০.০২ | ০.০১ | ||||||||||
৩.০ | −০.২৬ | ০.৩৪ | ০.৪৯ | ০.৩১ | ০.১৩ | ০.০৪ | ০.০১ | ||||||||||
৪.০ | −০.৪০ | −০.০৭ | ০.৩৬ | ০.৪৩ | ০.২৮ | ০.১৩ | ০.০৫ | ০.০২ | |||||||||
৫.০ | −০.১৮ | −০.৩৩ | ০.০৫ | ০.৩৬ | ০.৩৯ | ০.২৬ | ০.১৩ | ০.০৫ | ০.০২ | ||||||||
৫.৫৬ | ০ | −০.৩৪ | −০.১৩ | ০.২৫ | ০.৪০ | ০.৩২ | ০.১৯ | ০.০৯ | ০.০৩ | ০.০১ | |||||||
৬.০ | ০.১৫ | −০.২৮ | −০.২৪ | ০.১১ | ০.৩৬ | ০.৩৬ | ০.২৫ | ০.১৩ | ০.০৬ | ০.০২ | |||||||
৭.০ | ০.৩০ | ০.০০ | −০.৩০ | −০.১৭ | ০.১৬ | ০.৩৫ | ০.৩৪ | ০.২৩ | ০.১৩ | ০.০৬ | ০.০২ | ||||||
৮.০ | ০.১৭ | ০.২৩ | −০.১১ | −০.২৯ | −০.১০ | ০.১৯ | ০.৩৪ | ০.৩২ | ০.২২ | ০.১৩ | ০.০৬ | ০.০৩ | |||||
৮.৬৫ | ০ | ০.২৭ | ০.০৬ | −০.২৪ | −০.২৩ | ০.০৩ | ০.২৬ | ০.৩৪ | ০.২৮ | ০.১৮ | ০.১০ | ০.০৫ | ০.০২ | ||||
৯.০ | −০.০৯ | ০.২৫ | ০.১৪ | −০.১৮ | −০.২৭ | −০.০৬ | ০.২০ | ০.৩৩ | ০.৩১ | ০.২১ | ০.১২ | ০.০৬ | ০.০৩ | ০.০১ | |||
১০.০ | −০.২৫ | ০.০৪ | ০.২৫ | ০.০৬ | −০.২২ | −০.২৩ | −০.০১ | ০.২২ | ০.৩২ | ০.২৯ | ০.২১ | ০.১২ | ০.০৬ | ০.০৩ | ০.০১ | ||
১২.০ | ০.০৫ | −০.২২ | −০.০৪ | ০.২০ | ০.১৮ | −০.০৭ | −০.২৪ | −০.১৭ | ০.০৫ | ০.২৩ | ০.৩০ | ০.২৭ | ০.২০ | ০.১২ | ০.০৭ | ০.০৩ | ০.০১ |
কার্সনের সূত্র একটি থাম্ব রুল। এ সূত্রানুযায়ী, প্রায় সকল(~৯৮ শতাংশ) পাওয়ার ব্যান্ডউইথ এর মধ্যে থাকে, যেখানে,
এখানে, হল কেন্দ্রীয় কম্পাংক, থেকে তাৎক্ষণিক কম্পাঙ্ক, এর সরবোচ্চ বিচ্যুতি। হল মড্যুলেশন সূচক যা মড্যুলেটিং সিগনালের কম্পাঙ্ক বিচ্যুতি এবং সরবোচ্চ কম্পাঙ্কের অনুপাত প্রকাশ করে। কার্সনের সূত্র শুধুমাত্র সাইনুসোইডাল সিগনালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়।
যেখানে, W হল অ-সাইনুসোইডাল সিগনালের সরবোচ্চ কম্পাঙ্ক এবং D হল বিচ্যুতি অনুপাত যা মড্যুলেটিং অ-সাইনুসোইডাল সিগনালের কম্পাঙ্ক বিচ্যুতির সাথে সরবোচ্চ কম্পাঙ্কের অনুপাত প্রকাশ করে।
এফএম এএম এর তুলনায় ভাল সিগনাল ও নয়েজের অনুপাত(SNR) দেয়। একটা নির্দিষ্ট সিগনাল লেভেলের চেয়ে কম হ্লে এফএম খারাপ SNR দেয়, কিন্তু এই লেভেলের উপরে এএমের তুলনায় এফএম এর SNR অনেক ভাল হয়। এটি কতখানি ভালো হবে তা নির্ভর করবে মড্যুলেশন লেভেল ও বিচ্যুতির উপর। সাধারণ ভয়েস যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই উন্নতি 5-15 dB এর মত হয়। প্রশস্ত এফএম সম্প্রচারের ক্ষেত্রে এটি আরো ভালো হয়। অনেক সময় আরো ভালো ফলের জন্য অডিও সিগনালের উপর বাড়তি কিছু বৈশিষ্ট্য যেমন- প্রি-এমফাসিস ও ডি-এমফাসিস যুক্ত করা হয়। এফএম সিগনালের ধ্রুব বিস্তার থাকায়, এএম জাতীয় নয়েজ দূর করতে লিমিটার ব্যবহার করা হয়। [৭][৮]
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ এই দুইভাবেই এফএম তৈরি করা যায়।
অনেক ধরনের এফএম ডিটেক্টর পাওয়া যায়। ফোস্টার-সিলি ডিস্ক্রিমিনেটর একটি বহুল ব্যাবহ্রিত পদ্ধতি। ফেজ-লকড লুপ ব্যবহার করেও এফএম ডিমড্যুলেশন করা যায়। ঢাল ডিটেকশনে]] এফএম সিগনালকে বাহক কম্পাঙ্ক থেকে সামান্য ভিন্ন একটি রেজোন্যান্স কম্পাঙ্ক ব্যবহার করে ডিমড্যুলেট করা হয়। কম্পাঙ্ক বাড়া ও কমার সাথে সাথে বিস্তার পরিবর্তন করে এফএম কে এএম এ পরিণত করা হয়। এরপর এএম রিসিভার দিয়ে এটিকে ডিটেক্ট করা যায় যদিও এটা অত ভালো পদ্ধতি নয়।
অ্যানালগ ভিডিও ক্যাসেট রেকর্ডার এ মধ্যক ফ্রিকোয়েন্সি হিসেবে এফএম ব্যবহার করা হয়। এছারা ভিএইচএস এও লুমিনাস(সাদা-কালো) অংশ সংরক্ষণের জন্যও এফএম ব্যবহার করা হয়। আর রঙিন অংশ প্রচলিত এএম সিগনাল আকারে ধরে রাখা হয়। সাদা-কালো অংশকে বিচ্যুতি ছাড়া ধরে রাখার জন্য এফএম সবচেয়ে উপযোগী যেখানে ভিডিও সিগনাল কয়েক হার্জ থেকে কয়েক মেগাহার্জ পর্যন্ত থাকে এবং −60 dB পর্যন্ত নয়েজ লেভেল নিয়ে ইকুইলিজারে কাজ করতে হয়। টেপকে সম্পৃক্তি অবস্থায় রেখে এফএম নয়েজ হ্রাসকরণের কাজও করে। এছাড়া লিমিটার হিসেবে মাস্ক ভ্যারিয়েশনের কাজও করে থাকে সাথে প্রিন্ট থ্রু ও প্রি-ইকো সরিয়ে ফেলতেও এফএম কাজ করে।
এ ধরনের এফএম সিস্টেম কম ব্যবহৃত হয় এবং এক্ষেত্রে বাহক ও সর্বোচ্চ মড্যুলেশন কম্পাঙ্কের অনুপাত হয় দুই এর কম, যেখানে এফএম সম্প্রচারে এ অনুপাতের মান হয় ১০,০০০ এর কাছাকাছি। উদাহরণ হিসেবে ধরলে, একটি ৬ মেগাহার্জ বাহক্কে ৩.৫ মেগাহার্জ রেটে মড্যুলেট করলে বেসেল ফাংশন বিশ্লেষন থেকে দেখা যায় যে প্রথম পার্শ্বব্যান্ড হয় ৯.৫ ও ২.৫ মেগাহার্জ এবং দ্বিতীয় পার্শ্বব্যান্ড হয় ১৩ ও -১ মেগাহার্জ। ডিমড্যুলেশনের ক্ষেত্রে এ রিভার্স পার্শ্বব্যান্ড হয় +১ মেগাহার্জ এবং তা পুরোপুরি অবাঞ্ছনীয় ৬-১ = ৫ মেগাহার্জের একটি আউটপুট দেয়। এ ধরনের আউটপুট গুলোকে হ্রাস করার মত করে সিস্টেম ডিজাইন করতে হয়।[১০]
অডিও কম্পাঙ্ক সংশ্লেষণের জন্যও এফএম ব্যবহার করা হয়। প্রথম দিকের ডিজিটাল সংশ্লেষক এ এই কৌশল ব্যবহৃত হয় এবং ব্যক্তিগত কম্পিউটারে সাউন্ড কার্ডে এটি কয়েক প্রজন্ম পর্যন্ত আদর্শ বৈশিষ্ট্য হিসেবে ধরা হয়।
এডুইন হুয়ারড আর্মস্ট্রং(১৮৯০-১৯৫৪) নামক এক আমেরিকান তড়িৎ প্রকৌশলী প্রশস্তব্যান্ড এমএম রেডিও আবিষ্কার করেন।[১১] তিনি ১৯১৪ সালে রিজেনারেটিভ বর্তনী, ১৯১৮ সালে সুপারহেটেরোডাইন রিসিভার এবং ১৯২২ সালে সুপার-রিজেনারেটিভ বর্তনী আবিষ্কার করেন।[১২] আর্মস্ট্রং ১৯৩৫ সালের ৬ নভেম্বরে ইন্সটিটিউট অব রেডিও ইঞ্জিনিয়ার এর নিউইয়র্ক শাখায় তার পেপার "ফ্রিকোয়েন্সি মড্যুলেশনের মাধ্যমে রেডিও সিগনালিং এ ডিস্টারবেন্স কমানোর কৌশল" উপস্থাপন করেন যেটিতে প্রথম এফএম রেডিও এর বর্ণনা দেয়া হয়েছিল।[১৩]
এএম সিগনালের তুলনায় প্রশস্ত-ব্যান্ড এফএম এ প্রশস্ত সিগনাল ব্যান্ডউইথ লাগে যেটি এ সিস্টেমকে নয়েজ ও ইন্টারফেয়ারেন্স এর প্রভাবমুক্ত করে তোলে। সিগনাল-এমপ্লিটিউড-ফেডিং থেকেও ফ্রিকোয়েন্সি মড্যুলেশন প্রভাবমুক্ত। উচ্চ কম্পাঙ্কের রেডিও ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্র এফএম তাই আদর্শ হয়ে যায় এবং এ কারণে একে এফএম রেডিও বলা হয় ( যদিও বিবিসি অনেকদিন এতিকে "ভিএইচএফ রেডিও" বলত কারণ এফএম সম্প্রচারে এফএম সম্প্রচার ব্যান্ডের ভিএইচএফ ব্যান্ড ব্যবহার করা হত।)। এফএম রিসিভারে এফএম সিগনালের জন্য একটি বিশেষ ডিটেক্টর ব্যবহৃত হয় যেটিতে ক্যাপচার ইফেক্ট আছে যেটিতে টিউনার দিয়ে দুটি চ্যানেলের মধ্যে শক্তিশালী স্টেশনটিকে ধরা হয়। এরকম সমস্যা এএম রিসিভারেও আছে যেখানে একই সময় দুইটা স্টেশন শোনা যায়। যাহোক, ফ্রিকোয়েন্সি সিলেক্টিভিটির অভাব বা কম্পাঙ্ক ড্রিফট এর কারণে একটি একটি স্টেশন আরেকটি স্টেশনের জায়গা দখল করে নিতে পারে। কম্পাঙ্ক ড্রিফট সমস্যা আগের সস্তা রিসিভারগুলোতে ছিল, অপর্যাপ্ত সিলেক্টিভিটি টিউনারকে প্রভাবিত করে।
স্টেরিও সিগনালকে বহন করতেও এফএম সিগনাল ব্যবহার করা যায়। এফএম প্রক্রিয়ার আগে ও পরে মাল্টিপ্লেক্সিং ও ডিমাল্টিপ্লেক্সিং করার মাধ্যমে এই কাজ করা হয়। এফএম মড্যুলেশন ও ডিমড্যুলেশন প্রক্রিয়াও আগের মতই। একটি উচ্চ-দক্ষতাসম্পন্ন রেডিও-কম্পাঙ্কের সুইচিং অ্যম্প্লিফায়ার দিয়ে এফএম সিগনাল প্রেরণ করা যায়। একটি নির্দিষ্ট সিগনালের জন্য সুইচিং অ্যম্প্লিফায়ার কম ব্যাটারি পাওয়ার ব্যবহার করে, ফলে লিনিয়ার অ্যম্প্লিফায়ার থেকে কম খরচ পড়ে। এটি এএম এবং কোয়াড্রেচার অ্যাম্প্লিচ্যুড মড্যুলেশন এর তুলনায় এফএমকে বাড়তি সুবিধা দেয়।
স্পিচ কমিউনিকেশন এবং রেডিও সম্প্রচারে সঙ্গীত প্রচারণার জন্য ভিএইচএফ রেডিও কম্পাঙ্ক এফএম এ ব্যবহার করা হয়। অ্যানালগ টিভি শব্দও এফএম এর মাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়। বাণিজ্যিক ও অ্যামেচার রেডিও সেটিং এ ভয়েস কমিউনিকেশনের জন্যও সরু-ব্যান্ড এফএম ব্যবহৃত হয়। অডিও ফিডেলিটি গুরুত্বপূর্ণ হলে প্রশস্ত-ব্যান্ড এফএম ব্যবহার করা হয়। দ্বি-পথ রেডিও, এর ক্ষেত্রে ল্যান্ড মোবাইল, মেরিন মোবাইল এবং অন্যান্য সেবার জন্য ব্যান্ডউইথ এর ব্যবহার কম রাখার জন্য সরু-ব্যান্ড এফএম ব্যবহার করা হয়।
১৯২৪ সালের ৫ অক্টোবর নিজনি নভোগোরোদ রেডিও ল্যাবরেটরিতে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত কথা বলার সময় প্রফেসর মিখাইল এ বঞ্চ-ব্রুভিচ টেলিফোনিতে তার নতুন পদ্ধতি উল্লেখ করেন বলে শোনা গেছে। ল্যাবরেটরি মডেলে ফ্রিকোয়েন্সি মড্যুলেশনের একটি প্রদর্শনীও করেন তিনি।[১৪]