ফ্রিডা পিন্টো | |
---|---|
হিন্দি: फ्रीडा पिंटो | |
জন্ম | ফ্রিডা সেলেনা পিন্টো ১৮ অক্টোবর ১৯৮৪ বম্বে, মহারাষ্ট্র, ভারত |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
অন্যান্য নাম | ফ্রো |
মাতৃশিক্ষায়তন | সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, মুম্বই |
পেশা |
|
কর্মজীবন | ২০০৫–বর্তমান |
পিতা-মাতা |
|
ফ্রিডা সেলেনা পিন্টো (জন্ম ১৮ অক্টোবর ১৯৮৪) একজন ভারতীয় অভিনেত্রী এবং মডেল। তিনি মূলত আমেরিকান এবং ব্রিটিশ চলচ্চিত্রে কাজ করেন। পিন্টো স্লামডগ মিলিয়নিয়ার (২০০৮) ব্রিটিশ নাট্য চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেছিলেন, যেটি ভারতীয় লেখক বিকাশ স্বরূপের ২০০৫ সালের কোশ্চেন অ্যান্ড অ্যানসার উপন্যাসের ভিত্তিতে নির্মিত। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পাল্ম স্প্রিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ব্রেকথ্রু পারফরম্যান্স পুরস্কার জেতেন, পাশাপাশি ব্রিটিশ অ্যাকাদেমি চলচ্চিত্র পুরস্কার, শ্রেষ্ঠ ব্রেকথ্রু পারফরম্যান্স ও শ্রেষ্ঠ চুম্বন বিভাগে এমটিভি মুভি ও টিভি পুরস্কার, তিনটি বিভাগে টিন চয়েস পুরস্কার, শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কার, আউটস্ট্যান্ডিং এনসেম্বল বিভাগে ব্ল্যাক রিল পুরস্কার এবং মোশন পিকচারে অভিনয়ে অসাধারণ অবদানের জন্য স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কারের মনোনয়ন পেয়েছিলনে।
তার সর্বাধিক বাণিজ্যিক সাফল্য এসেছে রাইজ অব দা প্ল্যানেট অব দা এইপ্স (২০১১) বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি নির্ভর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ২০১১ সালে মাইকেল উইন্টারবটমের তৃষ্ণা চলচ্চিত্রে শিরোনাম চরিত্রে তার অভিনয় ব্যাপক পরিচিতি এবং প্রশংসা অর্জন করেছিল। তিনি ইমর্টাল্স (২০১১) মহাকাব্য ফ্যান্টাসি অ্যাকশন চলচ্চিত্রে ক্রিটেন রাজকন্যা ফাইদ্রা, গার্ল রাইজিং (২০১৩) প্রামাণ্যচিত্রে কথক হিসেবে এবং ডেজার্ট ড্যান্সার (২০১৪) জীবনী নাট্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সমালোচকদের মিশ্র প্রশংসা পেয়েছিলেন। ২০১৭ সালে, তিনি গেরিলা শোটাইম ক্ষুদেধারাবাহিকে, এবং ২০১৮ সালে লাভ সোনিয়া ভারতীয় নাট্য চলচ্চিত্রে এবং মোগলি: লিজেন্ট অব দা জাঙ্গল ফ্যান্টাসি রোমাঞ্চকর চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তার মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ চলচ্চিত্র লাভ, ওয়েডিং, রিপিট (২০২০)।
চলচ্চিত্রে অভিষেকের পূর্বে, পিন্টো মডেল এবং টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেছেন। যদিও ভারতীয় গণমাধ্যম তাকে বিদেশী চলচ্চিত্রে ভারতীয় নারীর স্টেরিওটাইপিক্যাল ভাবমূর্তি ভাঙার কৃতিত্ব দিয়েছিল, তবুও তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রে একজন স্বল্প পরিচিত ব্যক্তিত্ব এবং ভারতের বিশিষ্ট প্রযোজনায় তার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম। চলচ্চিত্রের কর্মজীবনের পাশাপাশি তিনি মানবিক প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ডে জড়তি এবং নারীর ক্ষমতায়নে সোচ্চার।
ফ্রিডা সেলেনা পিন্টো[১] ১৮ অক্টোবর ১৯৮৪ সালে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের বম্বে (বর্তমানে মুম্বই) নগরীতে,[২] কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোর সম্প্রদায়ের[৩][৪][৫] একটি ম্যাঙ্গালোরিয় ক্যাথলিক পরিবারে জন্ম নেন।[ক] তার মা সিলভিয়া পিন্টো মুম্বইয়ের গোরেগাঁও শহরের সেন্ট জন ইউনিভার্সাল স্কুলের অধ্যক্ষ, এবং তার বাবা ফ্রেডরিক পিন্টো ব্যাংক অফ বরোদার একজন ঊর্ধ্বতন শাখা ব্যবস্থাপক। পিন্টোর বড় বোন শ্যারন এনডিটিভি সংবাদ চ্যানেলের সহকারী প্রযোজক হিসেবে কর্মরত।[৭]
মালাদ শহরতলির একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে পিন্টো বেড়ে উঠেছিলেন।[৮][৯] তিনি তার পাঁচ বছর বয়সে প্রথমে অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন,[১০][১১] শৈশবকালে প্রায়শই টেলিভিশন অভিনয়শিল্পীদের মতোন পোশাক পরতেন এবং তাদের অনুকরণ করতেন।[১০][১২] পরে তিনি ১৯৯৪ সালের মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় সুস্মিতা সেনের বিজয়ে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন স্মরণ করে বলেছিলেন, "দেশটি তার (সুস্মিতার) জন্য সত্যিই গর্বিত হয়েছিল, এবং এটা আমার ভালো লেগেছিল, আমিও একই কাজ করতে চাই"।[১৩] পিন্টো মালাদে কার্মেল অব সেন্ট জোসেফ স্কুলে পড়েছেন।[১৪] বিদ্যালয়ে তিনি বিভিন্ন ক্রীড়ায় অংশগ্রহণ এবং সঙ্গীতদলে গান করতেন। এরপর তিনি মুম্বইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা করেন। সেখানে তার অধ্যয়নের প্রধান বিষয় ছিল ইংরেজি সাহিত্য, এবং স্নাতক বর্ষে তার অপ্রধান বিষয় ছিল মনোবিজ্ঞান ও অর্থনীতি।[১২][১৫] কলেজে তিনি অপেশাদার থিয়েটারে অংশ নিয়েছিলেন,[১২] তবে ২০০৫ সালে স্নাতক সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত অভিনয় ও মডেলিংয়ে কাজ করার থেকে বিরত থাকেন।[১৬]
শৈশবকাল থেকেই অভিনয়ে আগ্রহী হওয়া সত্ত্বেও, কলেজে অধ্যয়নকালে মনস্টার (২০০৩) চলচ্চিত্রটি দেখার আগ পর্যন্ত কর্মজীবনে কোন পথ অবলম্বন করা উচিত তা নিয়ে পিন্টো উদ্বিগ্ন ছিলেন। তিনি বিবৃতি দিয়েছিলেন যে: "এটা আমি অনুমান করি মনস্টার দেখার পর... তখন আমি বেশ জানতাম। আমাকে একটি উপায় খুঁজে বের করতে হতো। আমাকে এরকমই কিছু করতে হবে, সম্পূর্ণ রূপান্তরকামী কিছু।"[৪] ২০০৫ সালে, পিন্টো মডেলিং কর্মজীবন শুরু করতে এলিট মডেল ম্যানেজমেন্ট ইন্ডিয়ার সাথে যোগ দেন,[২] যে সংস্থার সাথে তিনি প্রায় আড়াই বছর কাজ করেছিলেন।[১২] তিনি রিগলে চিউইং গাম, স্কোডা, ভোডাফোন ইন্ডিয়া, এয়ারটেল, ভিসা, ইবে এবং ডি বিয়ার্সের মতো পণ্যের জন্য বেশকয়েকটি টেলিভিশন এবং মুদ্রণ বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিলেন।[১৭]
একই সময়ে, পিন্টো চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলির জন্য অডিশনে যেতে শুরু করেছিলেন। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে জি ইন্টারন্যাশনাল এশিয়া প্যাসিফিকে প্রচারিত ফুল সার্কেল নামে একটি আন্তর্জাতিক ভ্রমণ অনুষ্ঠান সঞ্চালন করার জন্য তাকে নির্বাচিত করা হয়েছিল।[১১] এই অনুষ্ঠান তাকে আফগানিস্তান, ফিজি, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ড সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিয়ে যায়।[১৮] মার্ক ফোর্সারের কোয়ান্টাম অব সোলেস (২০০৮) চলচ্চিত্রে বন্ড গার্ল ক্যামিলি মন্টেসের ভূমিকা সহ বলিউড ও হলিউডের উভয় প্রযোজনার জন্য তার অডিশনগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছিল।[১২][৪][১৮] পরে পিন্টো দাবি করেছিলেন যে, এটি ছিল একটি শেখার ভাল অভিজ্ঞতা, এবং উল্লেখ করে বলেন যে, তিনি "যেভাবে ঘটেছিল সেভাবেই আনন্দের বিষয় ছিলো। আমার প্রত্যাখ্যাত হবারই দরকার ছিল, এবং আমার এটি শিখতে হবে যে এটি খেলার অংশ... আমার ১০০টি প্রত্যাখ্যান থাকতে পারে তবে আমি নিশ্চিত যে এখানে একটি বিশেষ জিনিস হবে যা আমার জন্য প্রায় পূর্বনির্দিষ্ট।"[১৯]
২০০৭ সালে, পিন্টোর মডেলিং এজেন্সি তাকে অন্য ছয়জন মডেল সহকারে ড্যানি বয়লের স্লামডগ মিলিয়নিয়ার (২০০৮) চলচ্চিত্রের কাস্টিং পরিচালকের অনুরোধে মহিলা চরিত্রের অডিশনের জন্য বেছে নিয়েছিল।[২][১২] ছয় মাসের বিস্তৃত অডিশনের পরে, চলচ্চিত্রে দেব প্যাটেল অভিনীত মূল চরিত্র জামালের প্রেমের আগ্রহ লতিকা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পিন্টো।[২০] প্রযোজনা পরবর্তী সময়ে, তিনি মুম্বইয়ের ব্যারি জন অ্যাক্টিং স্টুডিওতে একটি অভিনয় কোর্সে অংশ নিয়েছিলেন।[৭] যদিও কোর্সটি তাকে অভিনয়ের "প্রযুক্তিগত দিকগুলি" সম্পর্কে শিখিয়েছিল, তিনি বলেছিলেন যে "প্রকৃত অভিজ্ঞতার নিরিখে সেখানে এর বাইরে এবং আসল চরিত্রে অভিনয়ের মতোন কিছুই ছিলো না... সুতরাং আমার কাছে আমার প্রিয় অভিনয় বিদ্যালয় ছিল ড্যানি বয়লের সাথে ছয় মাসের অডিশন"।[১২] বিশেষত প্লট এবং সাউন্ডট্র্যাকের জন্য প্রশংসিত স্লামডগ মিলিয়নিয়ার একটি স্লিপার হিট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।[২১][২২] মার্কিন$১৫ মিলিয়ন ডলার বাজেটে নির্মিত চলচ্চিত্রটি বিশ্বব্যাপী মার্কিন$৩৭৭.৯ মিলিয়ন ডলার আয় করে।[২৩] ৮১তম একাডেমি পুরস্কারে সবচেয়ে সফল চলচ্চিত্র হিসেবে এটি দশটি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল, যার মধ্যে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার সহ আটটি পুরস্কার জেতে।[২৪] পিন্টো পাম স্প্রিংস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ব্রেকথ্রু পারফরম্যান্স পুরস্কার জিতেছিলেন,[২৫] এবং চলচ্চিত্রের অন্যান্য সহ-শিল্পীদের সাথে মোশন পিকচারে অভিনয়ে অসাধারন অবদানের জন্য স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার জেতেন।[২৬] তিনি এছাড়াও শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।[২৭] চলচ্চিত্রে পর্দার পিন্টোর উপস্থিতি সীমিত থাকায়, তার অভিনয় সমালোচকদের সামান্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। দ্য টেলিগ্রাফ (কলকাতা) তার চরিত্র সম্পর্কে "মতামত তৈরি করা কঠিন" বলে মন্তব্য করেছিল; সেখানে কলামনিস্ট লেখক ভারতী এস প্রধান উল্লেখ করেছেন যে স্লামডগ মিলিয়নিয়ার আসলেই ফ্রিডার অভিনয় দক্ষতার পরীক্ষা ছিল না।"[১১]
স্লামডগ মিলিয়নিয়ার চলচ্চিত্রের সাফল্যের পরে, পিন্টো দুটি আর্ট হাউস প্রযোজনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন।[২৮][২৯] উডি অ্যালেনের ইউ উইল মিট অ্যা টল ডার্ক স্ট্রেইঞ্জার (২০১০) হাস্যরসাত্মক-নাট্য চলচ্চিত্রে,[৩০] তিনি আন্তোনিও বান্দেরাস, জশ ব্রোলিন, অ্যান্থনি হপকিন্স, অনুপম খের, এবং নাওমি ওয়াটসের সাথে অভিনয় করেছিলেন।[৩১] চলচ্চিত্রে তিনি একজন "রহস্যময় মহিলার" চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যিনি ব্রোলিন অভিনীত চরিত্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। ২০১০ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে আনুষ্ঠানিক প্রদর্শনীতে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পরে মিশ্র পর্যালোচনা লাভ করেছিল।[৩২][৩৩] এরপরে পিন্টো রুলা জেব্রিয়ালের আধা-জীবনী উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত, জুলিয়ান শ্নাবেলের মিরাল (২০১০) চলচ্চিত্রে একজন অনাথ ফিলিস্তিনি মহিলা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যিনি ইস্রায়েলের একটি শরণার্থী শিবিরে বেড়ে ওঠেন।[৩৪] ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলিতে চলচ্চিত্রটির প্রযোজনা শুরুর পূর্বে পিন্টো ওই অঞ্চলে বেশকয়েকটি শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের মাধ্যমে তার অভনীতব্য চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।[৩৫] তিনি বলেছিলেন যে, ১৯৪০-এর দশকে ভারত বিভাজনের সময় তার আত্মীয়-স্বজনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তার পূর্বজ্ঞানের কারণে তিনি তার চরিত্রের অভিজ্ঞতার সাথে সম্পর্কিত হতে পেরেছিলেন।[৩৫] চলচ্চিত্রটি বেশিরভাগ নেতিবাচক পর্যালোচনা পেয়েছিল,[৩৬][৩৭] এবং পিন্টোর অভিনয় সম্পর্কে সমালোচক ভিন্ন মতামত দিয়েছিলন।[৩৮] দি ইন্ডিপেন্ডেন্টের জিওফ্রে ম্যাকনাব লিখেছেন, "মিরাল... চরিত্রে ফ্রিডা পিন্টো খুব আকর্ষণীয়ভাবেই অভিনয় করেছিলনে",[৩৯] যেখানে দ্য গার্ডিয়ানের পিটার ব্র্যাডশো বলেছিলেন যে, "[পিন্টো]কে উদ্বেগসঞ্চারী এবং দুর্বৃত্ত দেখাচ্ছিল"।[৪০]
২০১১ সালে পিন্টোর চারটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। প্রথমটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি নির্ভর চলচ্চিত্র রাইজ অব দা প্ল্যানেট অব দা এইপ্স, যেটি প্ল্যানেট অব দা এইপ্স ধারাবহিিকের একটি রিবুট।[৪১] চলচ্চিত্রে তিনি ক্যারোলিন অরনাহ নামে একজন প্রাইমাটোলজিস্টের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যিনি জেমস ফ্রাঙ্কো অভিনীত মূল চরিত্রের প্রেমে পড়েন।[৪২][৪৩] এই চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি নিতে তিনি ব্রিটিশ নৃবিজ্ঞানী জেন গুডালের কর্মজীবন নিয়ে গবেষণা করেছিলেন।[২৮] চলচ্চিত্রটি বিশ্বব্যাপী সর্বমোট মার্কিন$৪৮১.৮ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে; আগস্ট ২০১৬-এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ] এটি ছিল তার সর্বোচ্চ-উপার্জনকারী চলচ্চিত্র।[৪৪] পিন্টোর চরিত্রটি অত্যন্ত দ্বিমাত্রিক হিসেবে সমালোচনা পেয়েছিল: দ্য ইনডিপেন্ডেন্টের অ্যান্থনি কুইন একে "ব্যর্থতা" বলে উল্লেখ করেছিলেন,[৪৫] এবং দ্য হলিউড রিপোর্টারের টড ম্যাকার্থি চরিত্রটিকে "বছরের পর বছর পর্দায় দেখা বিরক্তিকরভাবে সাজসজ্জিত প্রেমিকা" হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।[৪৬] সে বছর পর্দার পিন্টোর দ্বিতীয় উপস্থিতি ছিল মাইকেল উইন্টারবটমের তৃষ্ণা চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায়। টমাস হার্ডির উপন্যাস টেস অব ডি'আরবারভিলিস অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে পিন্টো এক কিশোর রাজস্থানী কৃষিজীবীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন, যিনি রিজ আহমেদ অভিনীত একজন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ভারতীয় হোটেলকর্মীর জন্য কাজ করতে নিজের পরিবার ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।[৪৭][৪৮] চলচ্চিটি ২০১১ সালের টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আনুষ্ঠানিক প্রদর্শনীর পর সমালোচকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া অর্জন করেছিল।[৪৯][৫০] ইন্ডিয়া টুডের নিশাত বারী পিন্টোর চরিত্রটিকে সেই মুহুর্তে তার "সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য" বলে অভিহিত করেছিলেন।[৫১] দ্য গার্ডিয়ানের ফিলিপ ফ্রেঞ্চ বলেছিলেন যে, পিন্টো প্রধান চরিত্রে "মনমুগ্ধ করেছেন",[৪৭] যেখোনে শিকাগো সান-টাইমসের রজার ইবার্ট তার অভিনয়কে "ছোঁয়াচে সুন্দর" বলে মন্তব্য করেছেন।[৫২] অন্যদিকে, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের মনোহলা দারগিস লিখেছেন যে, পিন্টো "[চলচ্চিত্রের] অন্যতম প্রণয়োদ্দীপক আকর্ষণ, তবে তিনি এবং তার পরিচালক তৃষ্ণাকে স্পন্দন যোগাতে সক্ষম হননি"।[৫৩]
২০১১ সালের তৃতীয় চলচ্চিত্রের ভূমিকা হিসেবে পিন্টো রাজকন্যা লায়লা চরিত্রে অভিনয় করছিলেন ডে অব দা ফ্যালকন নামে স্বল্পমাত্রায় স্বীকৃত স্বাধীন চলচ্চিত্রে,[খ][৫৪] যেটি ১৯৩০-এর দশকের মধ্যপ্রাচ্যের পটভূমিতে নির্মিত, যেখানে তিনি অ্যান্টোনিও ব্যান্ডেরাস, মার্ক স্ট্রং এবং লিয়া কেবেডির সাথে অভিনয় করেছিলেন।[৫৫] সামগ্রিক নেতিবাচক পর্যালোচনা সত্ত্বেও, দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের অ্যান্ডি ওয়েবস্টার পিন্টো এবং কেবেডিকে "প্রণচঞ্চল" হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং তাদের "সচ্ছল পুরুষ-অধ্যুষিত প্রতিবেশের মধ্যে স্বাধীন উপস্থিতি"র প্রশংসা করেছেন।[৫৬] সে বছর পর্দার তার চূড়ান্ত উপস্থিতি ছিল ফ্যান্টাসি-অ্যাকশন ইমর্টাল্স চলচ্চিত্রে, যেখানে তিনি ওরাকল ধর্মযাজক ফাইদ্রা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।[৫৭] সমালোচকদের মিশ্র-থেকে-ইতিবাচক পর্যালোচনা পাওয়া সত্ত্বেও,[৫৮] চলচ্চিত্রটি বিশ্বব্যাপী মার্কিন$২২৬.৯ মিলিয়ন ডলার আয় করেছিল।[৫৯] দ্য হলিউড রিপোর্টারে লেখার ক্ষেত্রে টুড ম্যাকার্থি মন্তব্য করেছিলেন যে, ফাইদ্রা চরিত্রটি পিন্টোর মাধ্যমে "উপযুক্তভাবে মূর্ত" হয়েছে।[৬০]
২০১১ সালের পরে, পরবর্তী দুই বছরে পিন্টোর কোনও নতুন চলচ্চিত্র মুক্তি পায়নি। ২০১৩ সালে, তিনি ব্রুনো মার্সের একক "গরিলা" গানের সঙ্গীত ভিডিওতে উপস্থিত হয়েছিলেন। ভিডিওতে উপস্থিত হওয়ায় ভারতীয় গণমাধ্যমগুলি তার সমালোচনা করেছিল;[৬১] দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং হিন্দুস্তান টাইমস এটিকে "নোংরা নাচের" চেয়ে সামান্য কিছু বলে উড়িয়ে দিয়েছে।[৬২][৬৩] একই বছরে, পিন্টো গার্ল রাইজিং প্রমাণ্যচিত্রের অন্যতম বর্ণনাকারী হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন, যেটি একই নামের প্রচারণার অংশ হিসেবে নির্মিত যা বিশ্বজুড়ে মেয়েদের লেখাপড়ায় প্রবেশের প্রচারণা চালায়।[৬৪]
দুই বছর পর পিন্টোর প্রথম উপস্থিতি ছিল ডেজার্ট ড্যান্সার (২০১৪) জীবনীমূলক-নাট্য চলচ্চিত্রে, যা ইরানি নৃত্যপরিচালক আফশিন গাফেরিয়ানের জীবন নিয়ে নির্মিত।[৬৫] তিনি এই চলচ্চিত্রে হেরোইন-আসক্ত এলাহে চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যিনি রিচ রিচি অভিনীত প্রধান চরিত্রের প্রেমের আগ্রহ।[৬৬] এই ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য তাকে ১৪ সপ্তাহব্যপী আট ঘণ্টা মহড়া নিয়ে নৃত্য অনুশীলন করতে হয়েছিল।[৬৭] এছাড়াও তিনি তার ভূমিকার জন্য প্রস্তুতি নিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলিতে কয়েকটি অধিবেশনে অংশ নিয়েছিলেন।[৬৮] এটি বেশিরভাগ নেতিবাচক পর্যালোচনা পেয়েছিল,[৬৯][৭০] যদিও দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের অ্যান্ডি ওয়েবস্টার উল্লেখ করেছেন যে "পিন্টো এমনকি একটি অপ্রকাশিত এবং স্বল্পলিপিযুক্ত ভূমিকা নিয়েও মনমুগ্ধ করছে"।[৬৬]
২০১৫ সালের পিন্টোর প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্রটি ছিল টেরেন্স ম্যালিকের নাইট অব কাপস, এটি একটি পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র যেখানে ক্রিশ্চিয়ান বেল, কেট ব্লানচেট, ন্যাটালি পোর্টম্যান, এবং আন্তোনিও বান্দেরাস অভিনয় করেছিলেন।[৭১] তিনি হেলেনের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, যিনি এমন একজন মডেল যার সাথে বেল একটি "অমানবিক" কাণ্ড ঘটায়।[৭২][৭৩] কোনও স্ক্রিপ্ট ছাড়াই এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের বিষয়ে তিনি বলেছিলেন: "প্রথম দিন এটি অবশ্যই কিছুটা নার্ভ-র্যাকিং ছিল, কারণ আপনি কোথায় যাচ্ছেন তা আপনি জানেন না তবে একবার যদি আপনি এটি বুঝতে পারেন তা আসলে কোনও ব্যাপার নয়। এটা আসলে খুব স্বস্তিকর। এটি মজার এবং মুক্তিদায়ক। এটি এমন একটি অভিজ্ঞতা যা আমি পুরোপুরি আলিঙ্গন করি।"[৭৪] ৬৫তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে চলচ্চিত্রটির আনুষ্ঠানিক প্রদর্শনির পর,[৭৫][৭৬] সমালোচকদের কাছ থেকে মিশ্র পর্যালোচনা পেয়েছিল।[৭৭][৭৮] চলচ্চিত্রটি ২০১৬ সালের মার্চে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পেয়েছিল।[৭৯] ২০১৫ সালের ইউনিটি ১০০ জন বর্ণনাকারীর মধ্যে অন্যতম ছিলেন, এটি এমন একটি প্রামাণ্যচিত্রের যা পৃথিবীর প্রজাতির মধ্যে সম্পর্কের অন্বেষণ করে।[৮০] সে বছর তার তৃতীয় মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল কলম্বিয় অ্যাকশনধর্মী ব্লান্ট ফোর্স ট্রমা, যেখানে তিনি তার ভাইয়ের খুনির সন্ধানকারী একজন মহিলা চরিত্রে রায়ান কোয়ান্টেন এবং মিকি রুর্কের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন।[৮১] দ্য হলিউড রিপোর্টার জন ডিফোর্স চলচ্চিত্রটির সমালোচনা করে বলেছিলেন, এটি "দর্শকদের চেয়ে বেশি গুরুত্বের সাথে নিজেকে নিয়েছে।"[৮২] ২০১৫ সালে, পিন্টো অ্যান্ডি সার্কিসের মোগলি: লিজেন্ট অব দা জাঙ্গল চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন, যেটি রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের দ্য জঙ্গল বুক কাহিনির ভিত্তি করে নির্মিত মোশন ক্যাপচার দুঃসাহসিক ফ্যান্টাসি চলচ্চিত্র।[৮৩] তিনি চলচ্চিত্রে মোগলির দত্তক মা, মেসুয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন।[৭৪][৮৪] প্রাথমিকভাবে ২০১৬ সালের অক্টোবরে নির্ধারিত মুক্তির কথা থাকলেও ২০১৮ সালে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়।[৮৫][৮৬] একই বছর ব্ল্যাক নাইট ডিকোডেড নামে জব্বার রাইসানির স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
২০১৬ সালে তিনি পরপর দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন, প্রথমটি ড্যানিয়েল মালাকাই ক্যাবেরার টু বেলমেন টু এবং দ্বিতীয়টি ডেভিড ও রাসেলের পাস্ট ফযোয়ার্ড। ২০১৭ সালে ভয়েসওভারের কাজ করেন স্যাম কোগি হালে পরিচালিত ইয়ামসং: মার্চ অব দা হলোস অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রে।
২০১৮ সালে তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র তাবরেজ নূরানীর লাভ সোনিয়া, যেখানে পিন্টো মানবপাচারের নির্মম কাহিনিতে একজন মরিয়া যৌনকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।[৮৭] একই বছর দ্য গার্ডিয়ানের সাথে এক সাক্ষাৎকারে জানান যে তিনি আর উডি অ্যালেনের সঙ্গে কাজ করবেন না; যিনি ইতোপূর্বে তার দত্তক কন্যা ডিলান ফারোর সঙ্গে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।[৮৭]
চলচ্চিত্রের কর্মজীবন শুরুর পূর্বে পিন্টো রোহান আনতাওর সাথে প্রণয়াবদ্ধ ছিলেন, যিনি এক সময়ে তার প্রচারক ছিলেন। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে এই সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে তিনি স্লামডগ মিলিয়নিয়ার চলচ্চিত্রে তার সহশিল্পী দেব প্যাটেলের সাথে ডেটিং শুরু করেন।[৮৮] ছয় বছরের সম্পর্কের পরে, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে এই দম্পতি আপসে পৃথক হয়েছিলেন।[৮৯] নভেম্বর ২০১৯-এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ] তিনি আলোকচিত্রশিল্পী করি ট্রানের সাথে জড়িত।[৯০]
স্লামডগ মিলিয়নিয়ারের সাফল্যের পরে কিছুকাল, পিন্টোর "নির্দিষ্ট ঠিকানা ছিল না", সে সময় তিনি মুম্বই, লন্ডন এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে বাস করতেন।[১৬][৮৮][৯১] ইউএসএ টুডের সাথে ২০১৫ সালের এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসে বাস করছেন।[৯২]
আমার কাছে নারীবাদ হলো সমতা। মহিলার উপরে পুরুষ নেই পুরুষ এবং একইভাবে পুরুষের উপরেও। নারীবাদ একটি খুব ভুল ধারণাযুক্ত এবং ভুল বোঝাবুঝির বিষয়। যত সহজে আমরা নারীবাদ বলি, এর অর্থ এই নয় যে সমস্ত পুরুষকে পরাধীন হতে হবে এবং মহিলাদেরই উচিত বিশ্বকে শাসন করা। প্রগতিশীল এবং সফল দেশ বা বিশ্বের একমাত্র উপায় হল যখন পুরুষ এবং মহিলা একে অপরকে সমতুল্য বলে বিবেচনা করে।
তার অভিনয়ের কর্মজীবনের পাশাপাশি, পিন্টো বেশকয়েকটি মানবিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন এবং নারী ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের উন্নয়নে সোচ্চার থেকেছেন।[৯৪][৯৫] তিনি অ্যাঞ্জেলিনা জোলি এবং মালালা ইউসুফজাইকে এই বিষয়ে "বিশাল" অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।[৯৬] ২০১০ সালে, পিন্টো আন্দ্রে আগাসি এবং স্টেফি গ্রাফের জনহিতকর সংস্থা অগাসি ফাউন্ডেশনের সমর্থনে যোগদান করেন। তিনি সংস্থাটির বাৎসরিক তহবিল সংগ্রহ মার্কিন$৭৫,০০০ ডলারে উন্নীত করার পাশাপাশি— "শিশুদের জন্য ১৫টি বৃহৎ বস্তি"— নির্মাণ করেছিলেন, যার লক্ষ্য ছিল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা।[৯৭][৯৮] দু'বছর পরে, তিনি প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের বিকজ আই অ্যাম অ্যা গার্ল[৯৯] প্রচারাভিযানের জন্য লক্ষ-লক্ষ মেয়েকে দারিদ্র্য থেকে দূরে রাখার লক্ষ্যে লিঙ্গ সমতার প্রচারণার জন্য বৈশ্বিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হন।[১০০]
২০১৩ সালে, পিন্টো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে মহিলাদের বিষয়ে তহবিল সংগ্রহ এবং সচেতনতার উদ্দেশ্যে গুচির "চাইম ফর চেইঞ্জ" প্রচারণার জন্য একটি ভিডিও ক্লিপে উপস্থিত হয়েছিলেন।[১০১] পরের বছর, তিনি লন্ডনে "গার্লস রাইটস সামিটে" অংশ নেন, যেখানে তিনি নারী লিঙ্গাগ্রচ্ছেদ এবং বাল্যবিবাহের অবসানের দিকে আরও অগ্রগতির আহ্বান জানান।[১০২] ২০১৫ সালের মার্চে, তিনি ইন্ডিয়া'স ডটার, ২০১২ দিল্লি গণধর্ষণ সংক্রান্ত লেসলি উদ্দিনের প্রামান্যচিত্রের উপর ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কথা বলেন।[১০৩] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটির আনুষ্ঠানিক প্রদর্শনী চলাকালীন, তিনি বলেছিলেন যে প্রামাণ্যচিত্রটি জনগণের কাছে পৌঁছানো দরকার কারণ এটি কোনও "লজ্জাজনক-ভারতীয় দলিল" নয়।[১০৪] ২০১৫ সালের একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন: "এই সমস্যাটি সমাধান করার জন্য চলচ্চিত্রটি কোনওভাবেই সহিংসতা প্রচার করছে না। বাস্তবে আমরা যা বলছি তা হল এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সভ্য সম্ভাব্য উপায়ে করা উচিত"।[১০৫]
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি, পিন্টো ঘোষণা করেছিলেন, তিনি "উই ডু ইট টুগেদার" নামে একটি অলাভজনক সংস্থার অংশ হবেন, যা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, প্রামাণ্যচিত্র এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলির জন্য অর্থ সরবরাহের মধ্য দিয়ে নারী ক্ষমতায়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে।[৯৪]
স্লামডগ মিলিয়নিয়ার চলচ্চিত্রে তিনি একটি গৌণ চরিত্রে অভিনয় করলেও, এটি পিন্টোকে ব্যাপক স্বীকৃতি এনে দেয়।[১০৬][১০৭] গণমাধ্যমগুলি প্রায়শই তার চরিত্র এবং উপার্জন সম্পর্কে অনুমান করে আসছে।[১৬][১০৮] ২০০৯ সালের মার্চে, দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ পিন্টোকে সর্বাধিক উপার্জনকারী ভারতীয় অভিনেত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছিল,[১০৯] যদিও তিনি ২০১৭ সাল নাগাদ কোনও বলিউড চলচ্চিত্রে উপস্থিত হননি।[১১০] সিএনএন-আইবিএন তাকে "পশ্চিমাদের প্রতি ভারতের শ্রেষ্ঠ রফতানি" হিসাবে অভিহিত করেছে,[১১১] যেখানে দ্য টেলিগ্রাফ (কলকাতা) তাকে "তর্কসাপেক্ষে ভারতের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক তারকা" হিসেবে বর্ণনা করেছে।[১০৬]
বিভিন্ন ম্যাগাজিন কর্তৃক পরিচালিত সৌন্দর্য এবং ফ্যাশন জরিপে পিন্টো প্রায়শই অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।[১১২][১১৩] ২০০৯ সালে পিপল ম্যাগাজিনের বার্ষিক তালিকা— "বিশ্বের সর্বাধিক সুন্দর মানুষ" ("World's Most Beautiful People") এবং "বিশ্বের সেরা পোশাকধারী মহিলা" ("World's Best Dressed Women") হিসাবে তিনি অন্তর্ভূক্ত হয়েছিলেন।[১১৪][১১৫] সেই বছর, তিনি ভোগ ম্যাগাজিনের "সেরা দশ সর্বাধিক স্টাইলিশ মহিলা" "top ten most stylish women" তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন।[১১৬] ২০১১ সালে, লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস ম্যাগাজিনের সংকলিত "চলচ্চিত্রে ৫০জন সুন্দরী মহিলা" ("50 Most Beautiful Women in Film") তালিকায় পিন্টোকে একমাত্র ভারতীয় সেলিব্রিটি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।[১১৭] পরবর্তী বছর, পিপল তাদের "প্রত্যেক বয়সে সবচেয়ে সুন্দর" "Most Beautiful at Every Age" তালিকায় তার নাম প্রকাশ করেছিল।[১১৮] ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত একাধারে আস্কম্যান পরিচালিত "শীর্ষস্থানীয় ৯৯ সর্বাধিক পছন্দের মহিলা" ("Top 99 Most Desirable Women") জরিপে তাকে স্থান দেওয়া হয়েছিল।[১১৯][১২০][১২১]
২০০৯ সালে, পিন্টো লোরেয়াল প্যারিসের স্পোক্সওমেন হিসেবে কাজ শুরু করেন।[১২২] দুই বছর পরে, ল'রিয়াল পণ্য প্রচারের বিজ্ঞাপনে উপস্থিতর পর বিতর্কিত হয়ে ওঠেন তিনি; যেখানে মেক-আপ বা সম্পাদনার কারণে চামড়ার রঙ উজ্জ্বল হচ্ছে, এমনটা দেখিয়েছিল। সবাই অনেকেই এই প্রচারণাকে বর্ণ বৈষম্যের সৃষ্টি করছে বলে মনে করে। সংস্থাটি পিন্টোর ছবি পুনরুদ্ধারের দাবি অস্বীকার করেছিল।[১২৩][১২৪]
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পিন্টো, ভারতে তুলনামূলকভাবে স্বল্প-পরিচিত ব্যক্তি হিসেবেই থেকে গেছেন;[১০৬][১২৫] সমালোচক এবং বিশ্লেষকরা এই ঘটনাকে ভারতে স্লামডগ মিলিয়নিয়ার চলচ্চিত্রের ব্যর্থতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।[১২৬] ভারতীয় সমাজবিজ্ঞানী আশিস নন্দি মন্তব্য করেছিলেন: "আমার পেরিস্কোপ তাকে বেছে নেবে না", অন্যদিকে সাংবাদিক খালিদ মোহাম্মদ বলেছিলেন: "তিনি মুম্বইয়ের কোনও ফ্যাক্টর নন।"[১০৬] ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় তার "তরঙ্গায়িত" উচ্চারণের সমালোচনা করেছে এবং তার অন্ধকার বর্ণের জন্য বলিউডে চরিত্র খুঁজে পেতে তার অক্ষমতা বলে অভিহিত করেছে।[১৬] এই সমালোচনা সত্ত্বেও, পিন্টোকে হলিউডে ভারতীয় হিসেবে স্টিরিওটাইপের স্কীকার এড়ানোর কৃতিত্ব দেয়া হয়, কারণ তিনি প্রায়শই অন্যান্য জাতীয়তার চরিত্রে অভিনয় করেন।[৪২][১২৭] হিন্দুস্তান টাইমসের সাথে ২০১২ সালের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন যে তিনি চেতনার সাথে স্টেরিওটাইপগুলিকে চিত্রিত করার ভূমিকা এড়িয়ে চলেছেন।[১২৮]
পিন্টো "স্মার্ট স্বাধীন চলচ্চিত্রের" পাশাপাশি "বৃহৎ বাজেটের হলিউড ব্লকবাস্টার" চলচ্চিত্রসমূহে কাজ করে তার কর্মজীবনকে ভারসাম্যপূর্ণ করেছেন। হলিউডের জন্য তার পছন্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জবাবে জানিয়েছিলেন: "আমি কেবল একজন অভিনয়শিল্পী হতে চেয়েছিলাম। অভিনয়শিল্পী হিসেবে আপনাকে নিজেকে কোনও নির্দিষ্ট সংস্কৃতি বা বর্ণের মধ্যে সীমাবদ্ধ করতে হয় না। আমি আমার কর্মদক্ষতা সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চাই এবং বিশ্বের যে কোনও অঞ্চলের চলচ্চিত্রের আহবানের জন্য প্রস্তুত।"[১২৯]
আসন্ন চলচ্চিত্র নির্দেশ করে |
বছর | শিরোনাম | চরিত্র | পরিচালক | টীকা |
---|---|---|---|---|
২০০৮ | স্লামডগ মিলিয়নিয়ার | লতিকা | ড্যানি বয়েল | |
২০১০ | ইউ উইল মিট অ্যা টল ডার্ক স্ট্রেইঞ্জার | দিয়া | উডি অ্যালেন | |
মিরাল | মিরাল | জুলিয়ান শ্নাবেল | ||
২০১১ | রাইজ অব দা প্ল্যানেট অব দা এইপ্স | ক্যারোলাইনা অরনা | রুপার্ট ওয়াট | |
তৃষ্ণা | তৃষ্ণা | মাইকেল উইন্টারবটম | ||
ডে অব দা ফ্যালকন[খ] | প্রিন্সেস লায়লা | জ্যঁ-জ্যাক আনু | ||
ইমর্টাল্স | ফাইদ্রা | তারসেম সিং | ||
২০১৩ | গার্ল রাইজিং | কথক | রিচার্ড ই রবিন্স | প্রামাণ্যচিত্র |
২০১৪ | ডেজার্ট ড্যান্সার | এলেহি | রিচার্ড রেমন্ড | |
২০১৫ | নাইট অব কাপ্স | হেলেন | টেরেন্স মালিক | |
ইউনিটি | কথক | শন মনসন | প্রামাণ্যচিত্র | |
ব্লান্ট ফোর্স ট্রমা | কোল্ট | কেন সানজেল | ||
ব্ল্যাক নাইট ডিকোডেড | অহনা | জব্বার রাইসানি | স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র | |
২০১৬ | টু বেলমেন টু | লায়লা প্যাটেল | ড্যানিয়েল মালাকাই ক্যাবেরা | স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র |
পাস্ট ফযোয়ার্ড | নারী #২ | ডেভিড ও রাসেল | স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র | |
২০১৭ | ইয়ামসং: মার্চ অব দা হলোস | গীতা | স্যাম কোগি হালে | ভয়েসওভার অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র[১৩০][১৩১] |
২০১৮ | লাভ সোনিয়া | রেশমি | তাবরেজ নূরানী | [১৩২][১৩৩] |
মোগলি: লিজেন্ট অব দা জাঙ্গল | মেসুয়া | অ্যান্ডি সার্কিস | [১৩৪] | |
২০১৯ | ওনলি | ইভা | টাকাশি ডসচা | [১৩৫] |
২০২০ | লাভ, ওয়েডিং, রিপিট | আমান্ডা | ডিন ক্রেগ | |
হিলবিলি এলিজি | উষা ভ্যান্স | রন হাওয়ার্ড | সম্ভাব্য মুক্তি: নভেম্বর | |
ঘোষিত হবে | নিডল ইন অ্যা টাইমস্ট্যাক | জন রিডলি | উৎপাদন পরবর্তি |
বছর | গান | পরিবেশনকারী | অ্যালবাম |
---|---|---|---|
২০১৩ | "গরিলা" | ব্রুনো মার্স | আনঅর্থোডক্স জুকবক্স |
বছর | অনুষ্ঠান | চরিত্র | চ্যানেল | টীকা |
---|---|---|---|---|
২০০৬ | ফুল সার্কেল | আয়োজক | জি ইন্টারন্যাশনাল এশিয়া প্যাসিফিক | টক শো[১৮] |
২০১৪ | কফি উইথ করণ | স্বভূমিকায় | ষ্টার ওয়ার্ল্ড ইন্ডিয়া | অতিথি |
২০১৫ | দা মিনডি প্রজেক্ট | স্বভূমিকায় | হুলু | অতিথি তারকা[১৩৬] |
ইন্ডিয়া: নেচার'স ওয়ান্ডারল্যান্ড | স্বভূমিকায় | বিবিসি টু | প্রকৃতির প্রামান্যচিত্র[১৩৭] | |
২০১৭ | গেরিলা | জাস মিত্র | শোটাইম / স্কাই আটলান্টিক | মূল চরিত্র; ক্ষুদেধারাবাহিক[১৩৮] |
২০১৮ | দা পাথ | ভিরা | হুলু | আবর্তক ভূমিকায় |
২০২০ | মিরা, রয়েল ডিটেক্টিভ | কুইন শান্তি | ডিজনি চ্যানেল | ভিয়েসওভার মূল ভূমিকা |
বছর | পুরস্কার | বিভাগ | কাজ | ফলাফল | সূত্র |
---|---|---|---|---|---|
২০০৮ | ব্ল্যাক রিল পুরস্কার | আউটস্ট্যান্ডিং এনসেম্বল | স্লামডগ মিলিয়নিয়ার | মনোনীত | [১৩৯] |
স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার | মোশন পিকচারের অভিনয়ের মাধ্যমে অসাধারন অবদান | বিজয়ী | [২৬] | ||
২০০৯ | এমটিভি মুভি ও টিভি পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ সেরা ব্রেকথ্রু পারফরম্যান্সের | মনোনীত | [১৩৯] | |
শ্রেষ্ঠ চুম্বন (দেব পাটেলের সঙ্গে যৌথভাবে) | মনোনীত | [১৩৯] | |||
পাল্ম স্প্রিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে | ব্রেকথ্রু পারফরম্যান্স | বিজয়ী | [২৫] | ||
ব্রিটিশ একাডেমি চলচ্চিত্র পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী | মনোনীত | [১৩৯] | ||
টিন চয়েস পুরস্কার | চয়েজ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী: নাট্য | মনোনীত | [১৪০] | ||
চয়েজ চলচ্চিত্র নবাগত নারী মুখ | মনোনীত | [১৪০] | |||
চয়েজ চলচ্চিত্র লিপলক (দেব পাটেলের সঙ্গে যৌথভাবে) | মনোনীত | [১৪০] | |||
সেন্ট্রাল ওহাইও চলচ্চিত্র সমালোচক সমিতি | শ্রেষ্ঠ এনসেম্বল | মনোনীত | [১৪১] | ||
২০১১ | এলি ওইমেন ইন হলিউড | ওইমেন অব দা ইয়ার | - | বিজয়ী | [১৪২] |
জিকিউ পুরস্কার, ভারত | ওইমেন অব দা ইয়ার | - | বিজয়ী | [১৪৩] |
গ্রন্থতালিকা