অধুনা 'বঙ্গ' বা বাংলা ভূমি (Land of Bengal) ইতিহাসে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল, যা সুপ্রাচীন রাজ্য ও জনবসতি থেকে উদ্ভূত হয়।
বাংলা বা বেঙ্গল (Bengal) শব্দগুলির আদি উৎস অজ্ঞাত, কিন্তু বিশ্বাস করা হয় যে শব্দটি বং অথবা বাং নামক একটি দ্রাবিড়ীয়-ভাষী গোষ্ঠী থেকে উদ্ভূত হয়েছে। অনেকে মনে করেনবং জাতিগোষ্ঠী ১০০০ খ্রিস্টপূর্বের দিকে এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিলেন।[১]
অন্য তত্ত্ব বলছে যে শব্দটির উৎপত্তি অস্ট্রিক শব্দ "বঙ্গা" থেকে এসেছিল, যার অর্থ অংশুমালী। তবে এসব তত্ত্বসমূহের কোনো ঐতিহাসিক অথবা প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া যায় না। বঙ্গ কথাটির সর্বপ্রাচীন উল্লেখ ঋগ্বেদের ঐতরেয় ব্রাহ্মণ গ্রন্থে পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থ যেমনঃ অথর্ববেদ, বিভিন্ন উপনিষদ, জৈন গ্রন্থে, মহাভারত এবং পুরাণসমূহে বঙ্গের উল্লেখ পাওয়া যায়। আনুমানিক ৭২০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার সমতট অঞ্চলের দেব রাজবংশের রাজা মহারাজ আনন্দদেবের কুমিল্লার ময়নামতির একটি তাম্রশাসনে "বাঙ্গালা" শব্দের একটি প্রাচীন উল্লেখ পাওয়া যায়। তাম্রশাসন থেকে জানা যায় মহারাজ আনন্দদেব "শ্রী বাঙ্গালা মৃগাঙ্ক" উপাধি ব্যবহার করতেন, যার অর্থ বাঙ্গালার চন্দ্র।[২][৩] বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদেও বঙ্গ, বঙ্গালদেশ এবং বঙ্গালী জাতির উল্লেখ রয়েছে। "বাঙ্গালা" (বঙ্গাল/বঙ্গল)-এর আরো একটি পুরোনো উল্লেখ রাষ্ট্রকূট সাম্রাজ্যের শাসক গোবিন্দ ৩-এর নেসারি প্লেট্সে (৮০৫ খ্রিস্টাব্দ-আগে) রয়েছে, যেখানে পাল রাজা ধর্মপালকে "বাঙ্গালার রাজা" বলে অভিহিত করে এর বৃত্তান্ত লেখা আছে।[৪]