বনগাঁ | |
---|---|
শহর | |
পশ্চিমবঙ্গে ও ভারতের মানচিত্রে বনগাঁর অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°০১′৫০″ উত্তর ৮৮°৪৯′৫৮″ পূর্ব / ২৩.০৩০৫° উত্তর ৮৮.৮৩২৯° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
বিভাগ | প্রেসিডেন্সি বিভাগ |
জেলা | উত্তর চব্বিশ পরগনা |
মহকুমা | বনগাঁ মহকুমা |
পৌরসভা | ২৭ জানুয়ারি ১৯৪৫ |
সরকার | |
• ধরন | পৌরসভা |
• শাসক | বনগাঁ পৌরসভা |
• পৌরপিতা | (তৃণমূল কংগ্রেস) |
• বিধায়ক | অশোক কীর্তনিয়া |
আয়তন | |
• শহর | ১৪.২৭৪ বর্গকিমি (৫.৫১১ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ৭ মিটার (২৩ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• শহর | ১,০৮,৮৬৪ |
• ক্রম | ২৮তম (পশ্চিমবঙ্গ) |
• জনঘনত্ব | ৭,৬০০/বর্গকিমি (২০,০০০/বর্গমাইল) |
• মহানগর[২] | ১,১০,৬৬৮ |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | বাংলা |
• সহকারী | ইংরেজি |
• কথ্য | বাংলা |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৭৪৩২৩৫ |
টেলিফোন কোড | ০৩২১৫ |
যানবাহন নিবন্ধন | ডব্লিউবি XXX |
বনগাঁ (আদি নাম বনগ্রাম) পশ্চিমবঙ্গের ২৮তম জনবহুল নগর অঞ্চল[১] ও বনগাঁ মহকুমার সদর কার্যালয়। শহরটি উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনার পরে শহরটির জনসংখ্যা বেড়েছে এবং জুলাই ২০০১ সালের মার্চ মাস থেকে ২০১১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত জনসংখ্যা ৬,৭০১ জন বৃদ্ধি পেয়ে ১,০৮,৮৬৪ জন হয়।[১] এটি জনসংখ্যার ভিত্তিতে বনগাঁ মহকুমার বৃহত্তম পৌরসভা ও নগর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী জনসংখ্যার ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গের শহরপুঞ্জগুলি মধ্যে ২৮তম স্থানে রয়েছে।[২]
পণ্য রপ্তানি সম্পর্কিত শিল্প গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে অবস্থিত শহরটির অর্থনীতির বৃহত্তম খাত। শহরটির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকারের পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি হয় এবং বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা হয়। পণ্য পরিবহন এবং পণ্য বোঝাই ও খালাসের কাজে প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক নিযুক্ত রয়েছে। এই শহরের নিকটে পেট্রাপোল হল ভারতের সব থেকে বড় স্থল বন্দর ও উল্লেখযোগ্য সীমান্তবর্তী এলাকা।
বনগাঁ ২৩.০৭° উত্তর অক্ষাংশ থেকে ৮৮.৮২° পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মাঝে অবস্থিত।[৩] সমুদ্র থেকে শহরের গড় উচ্চতা ৭ মিটার (২২ ফুট)। শহরটি ১৪.২৭৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।
বনগাঁ ইছামতি-রায়মঙ্গল সমভূমির অন্তর্গত, যা নিম্ন গঙ্গা বদ্বীপে অবস্থিত জেলার তিনটি ভূ-তাত্ত্বিক (ফিজিওগ্রাফিক) অঞ্চলের মধ্যে একটি। শহরের পরিপক্ব কালো বা বাদামী রঙের দোআঁশ থেকে সাম্প্রতিক পলিযুক্ত মাটি পরিলক্ষিত হয়।
বনগাঁর জলবায়ু ক্রান্তীয় সাভানা প্রকৃতির (কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিভাগ অনুসারে Aw)।
বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ২৪° সেলসিয়াস থেকে ২৮° সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। এখানে গ্রীষ্মকাল উষ্ণ ও আর্দ্র। এই সময় গড় তাপমাত্রা ৩৫° সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকলেও মে-জুন মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কখনো কখনো ৪০° সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়।[৪] ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ১৮° সেলসিয়াস কাছাকাছি থাকে।[৪]
দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখাটি শহরে বৃষ্টিপাত ঘটায়। বর্ষাকাল সাধারণত স্থায়ী হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। শহরের বার্ষিক ১৯০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের অধিকাংশই এই সময়ে ঘটে থাকে।[৪] জুলাই মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সর্বোচ্চ থাকে। এই সময় গড়ে ৪৬৬.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।[৪]
গ্রীষ্মের শুরুতে প্রায়শই শিলাবৃষ্টি, ঝড় ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে, যা স্থানীভাবে কালবৈশাখী হিসাবে পরিচিত।
বাংলায় নীল বিদ্রোহের পরে ১৮৬২ সালের শেষের দিকে নদিয়া জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট হর্সেল ও বারাসত জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট অ্যাসলে ইডেন বনগাঁয় (তত্কালীন বনগ্রাম) আসেন। তাঁরা দুর্দশাগ্রস্ত নীল চাষিদের কাছে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বনগাঁ শহরকে কেন্দ্র করে বনগাঁ মহকুমা গঠনের ঘোষণা করেন। বনগাঁ মহকুমাটি ১৮৬৩ সালে তৎকালীন নদিয়া জেলার একটি মহকুমা হিসাবে গড়ে ওঠে। প্রশাসনিক সুবিধার জন্য ১৮৮২ সালে বনগাঁ শহর সহ বনগাঁ মহকুমাকে নদিয়া জেলার থেকে পৃথক করে যশোহর জেলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়।[৫]
ভারত ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট স্বাধীনতার লাভ করে, কিন্তু স্বাধীনতার দিনে বনগাঁ শহর তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত ছিল। বনগাঁ পূর্ব পাকিস্তানে থেকে যাওয়ায় সে সময়ে মুসলিম লীগের পক্ষ থেকে শহরে উৎসব করা হয়। তবে, বনগাঁ মহকুমা সহ বনগাঁ ও গাইঘাটাকে ১৮ অগস্ট ভারতের তৎকালীন অবিভক্ত ২৪ পরগনা জেলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়।[৫]
দেশভাগের সময়ে ও পার বাংলা থেকে বহু মানুষ বনগাঁ শহরে চলে আসেন। বাংলাদেশে ১৯৪৯ সালে বাগেরহাটে দাঙ্গার সময়েও দলে দলে মানুষ বনগাঁ শহরে আশ্রয় গ্রহণ করেন।[৫] বনগাঁ শহরের পরিচালনার জন্য ১৯৫৪ সালে বনগাঁ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান (অধুনা বাংলাদেশ) থেকে শরণার্থী হিসাবে বহু মানুষ শহরটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। শরণার্থীদের জন্য স্থানীয় বার্মা কলোনি, বিচুলিহাটা, মতিগঞ্জে শিবির করা হয়।
সম্পূর্ণ বনগাঁ শহর ও পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ এলাকা ২০০০ সালে এক ভয়ঙ্কর বন্যায় প্লাবিত হয়। ইছামতি নদীতে জলের অতিরিক্ত প্রবাহের কারণে বন্যার সৃষ্টি হয়েছিল।
ভারতের ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, বনগাঁ শহরের জনসংখ্যা হল ১,০৮,৮৬৪ জন।[৬] এর মধ্যে পুরুষ ৫১% এবং নারী ৪৯%। এই শহরের জনসংখ্যার ১০% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী। বনগাঁ শহরে স্বাক্ষরতার হার ৮৯.৭০% এবং নারী-পুরুষের অনুপাত হল ১০০০ জন পুরুষের বিপরীতে ৯৬৬ জন নারী। শিশুদের মধ্যে নারী-পুরুষের অনুপাত ১০০০/৯৪৩।
শহরটির প্রধান ভাষা বাংলা।[৭] বাংলা ও ইংরেজি সহ শহরের দাপ্তরিক ভাষা। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, মোট ১,০৮,৮৬৪ জন শহরবাসীর মধ্যে ১,০৮,০০৯ জন বাংলাভাষী এবং অবশিষ্টরা অন্যান্য ভাষায় কথা বলেন।[৭]
২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, বনগাঁর জনসংখ্যার ৯৬.৬৬ শতাংশ হিন্দু, ২.৮৫ শতাংশ মুসলিম, ০.২৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং ০.০২ শতাংশ শিখ; অন্যান ধর্মানুসারীরা রয়েছে ০.০১ শতাংশ।
বনগাঁর স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন কর্তৃপক্ষ হল বনগাঁ পৌরসভা। পৌরসভাটি ১৯৫৪ সালে আধুনিক স্বায়ত্বশাসনমূলক সংস্থা হিসেবে গঠিত হয়। বনগাঁ পৌরসভা একজন পৌরপিতা/পৌরমাতা ও ২২ জন কাউন্সিলর (পৌরপিতা সহ) নিয়ে গঠিত। পৌরসভার ২২ জন কাউন্সিলর শহরের এক একটি ওয়ার্ড থেকে নাগরিকদের ভোটে প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত কাউন্সিলরগণ নিজেদের মধ্য থেকে একজনকে পৌরপিতা/পৌরমাতা নির্বাচিত করেন। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে পাঁচ বছরের মেয়াদে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়। পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পৌরসভাটি ১৪.২৭৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ২২ টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে গঠিত।[৮] পৌরসভার প্রধান কাজ হল জল সরবরাহ, শহরের রাস্তাঘাট ও প্রকাশ্য স্থানসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ, রাস্তার আলোকদান, বাড়ি নির্মাণ নিবন্ধীকরণ ও নিয়ন্ত্রণ, পয়ঃপ্রণালী রক্ষণাবেক্ষণ ও কঠিন বর্জ্য পদার্থের অপসারণ ইত্যাদি।
পৌরভবনটি স্কুল রোডে অবস্থিত। এই ভবনটি ২০১৫ সাথে উদ্বোধন করা হয়।
বনগাঁ থানা শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ দমনে নিয়জিত।
বনগাঁয় গণ-পরিবহন পরিষেবা প্রদান করে সাইকেল রিকশা, বৈদ্যুতিক রিকশা ও অটোরিকশা। সাইকেল রিকশা ও বৈদ্যুতিক রিকশা বনগাঁ শহরের অভ্যন্তরে যাত্রী পরিবহন করে। অন্যদিকে অটোরিকশা শহরটির সাথে পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ এলাকার সাথে সংযোগ রক্ষা করে। ইছামতি নদীর উপর অবস্থিত রায় ব্রিজ ও রাখালদাস সেতু বনগাঁ শহরের পূর্ব অংশকে পশ্চিম অংশের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে।
শহরের মধ্য দিয়ে ১১২ নং জাতীয় সড়ক (পুরাতন সংখ্যায়ন অনুযায়ী এন এইচ ৩৫) ও ৩১২ নং জাতীয় সড়ক অগ্রসর হয়েছে। ১১২ নং জাতীয় সড়ক বনগাঁকে পশ্চিমে বারাসত ও কলকাতার সাথে এবং পূর্বদিকে পেট্রাপোল হয়ে বাংলাদেশের সাথে যুক্ত করে। এই সড়কটি যশোর রোড নামে অধিক পরিচিত। ৩১২ নং জাতীয় সড়কটি শহরটিকে দক্ষিণে বসিরহাট শহর ও উত্তরে দিকে নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর ও মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুর শহরের সাথে যুক্ত করে। এই সড়কটি ভারতমালা প্রকল্পের অংশ। এই সড়কটি বনগাঁ শহরের বাগদা রোড (যশোর রোড থেকে চাঁদাগামী সড়ক) ও রামনগর রোড (যশোর রোড থেকে বেড়ীপাঁচপোতাগামী সড়ক) নামে পরিচিত। বনগাঁ শহরের আর একটি প্রধান সড়ক হল বনগাঁ-চাকদহ রোড। এই সড়কটি দ্বারা বনগাঁ শহর নদিয়া জেলার চাকদহ শহরের সাথে সংযুক্ত রয়েছে।
বনগাঁ শহরটি বাসের জন্য দুটি বাস প্রান্তিক বা টার্মিনাস রয়েছে।
বনগাঁ শহরের একটি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে। স্টেশনটি একটি জংশন স্টেশন হিসাবে গড়ে উঠেছে। স্টেশনটি বনগাঁ-রাণাঘাট রেলপথ ও বনগাঁ শিয়ালদহ রেলপথের প্রান্তিক হিসাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। ভারতীয় রেলের অন্তর্ভুক্ত বনগাঁ জংশন রেলওয়ে স্টেশনটি বনগাঁ শহরে রেল পরিষেবা প্রদান করে। স্টেশনটি ১৮৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
কলকাতা শহরতলি রেলের মাধ্যমে স্টেশনে রেল পরিষেবা চালু রয়েছে। বনগাঁ-শিয়ালদহ রেলপথের মাধ্যমে বনগাঁ-শিয়ালদহ লোকাল, বনগাঁ-বারাসত লোকাল, বনগাঁ-মাঝেরহাট লোকাল ও বনগাঁ-ক্যানিং লোকালসমূহ চলাচল করে। অপরদিকে বনগাঁ-রাণাঘাট রেলপথের মাধ্যমে বনগাঁ-রানাঘাট লোকাল, বনগাঁ-শান্তিপুর লোকাল, বনগাঁ-লালগোলা লোকাল চলাচল করে।
বনগাঁর সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলি অধিভুক্তির উপর নির্ভর করে পশ্চিমবঙ্গ বা কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হয় এবং একটি "১০+২+৩" পরিকল্পনা অনুসরণ করে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সরকারিভাবে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে পড়ে। শিক্ষার ভাষাগুলির মধ্যে রয়েছে বাংলা ও ইংরেজি। প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে, শিক্ষার্থীদের সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট বা ইন্ডিয়ান সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি এডুকেশন অর্জন করে। মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিক সুবিধাসহ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।
বনগাঁ শহরে ১১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে,[৯] পাশাপাশি অনেকগুলি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এই শহরের উল্লেখ যোগ্য ও সবচেয়ে প্রাচীন উচ্চবিদ্যালয় হল বনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়, প্রধান বালিকা বিদ্যালয় হল কুমুদিনি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়।
বনগাঁয় উচ্চ শিক্ষার জন্য একটিমাত্র মহাবিদ্যালয় রয়েছে – দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়, এটি শহরের একমাত্র ডিগ্রি কলেজ। কলেজটি বারাসতে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে (অতীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ছিল) অধিভুক্ত।[১০][১১]
বনগাঁ শহরে কোনো বড় বা বৃহৎ শিল্প গড়ে ওঠেনি। তবে, এখানে বহু ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বনগাঁ শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৩৫টি চিরুনি কারখানা বিদ্যমান। এই শিল্পের সাথে কয়েকশো মানুষযুক্ত রয়েছেন।[১২] এই শহরের তৈরি চিরুনি দেশের বিভিন্ন রাজ্য রপ্তানি করা হয়।[১৩] কৃষি নির্ভর কিছু শিল্প শহরে ও শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় দৃশ্যমান। শহরের নিকট কালপুর এলাকায় রাধাকৃষ্ণ রাইস মিল নামে পরিচিত একটি রাইচ মিল বা চাল মিল রয়েছে। রাইচ মিলটি প্রায় ₹ ৬ কোটি (ইউএস$ ০.৭৩ মিলিয়ন) ব্যায়ে নির্মিত হয় এবং এটি বনগাঁর লোকসভার সাবেক সাংসদ মমতা ঠাকুর ২০১৫ সালে উদ্বোধন করেন।[১৪]
বনগাঁ হল ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ও সীমান্ত-বাণিজ্য শহর। শহরটি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দেশের বৃহত্তম স্থল বন্দর পেট্রাপোল অবস্থিত। স্থল বন্দরের বিপরীতে বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দর অবস্থিত। এখানে বর্তমানে একটি সুসংহত চেকপোষ্ট গড়ে উঠেছে। বেনাপোল ও পেট্রাপোল স্থল বন্দর হয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করে। বনগাঁ শহরকে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার বেশির ভাগ বাণিজ্য সম্পাদিত হয়।
দুর্গাপূজা এই শহরের প্রধান উৎসব। কলকাতার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দুর্গোৎসব বনগাঁ শহরেই হয়ে থাকে। বনগাঁ শহরের কয়েকটি বিখ্যাত দুর্গাপূজা কমিটির নাম হলো:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)