বনি উতবাহ (আরবি: بني عتبة) | |
---|---|
নিসবা | আল-উতবাহ্ |
অবস্থান | আরব উপদ্বীপ |
শাখা | আল সাবাহ |
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
বনি উতবাহ্ (আরবি: بني عتبة, প্রতিবর্ণীকৃত: বানি 'উতবাহ্) আরব বংশের একটি উপজাতি গোষ্ঠী, যারা নজদ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ষোড়শ শতাব্দীতে একটি গোষ্ঠী পারস্য উপসাগরীয় উপকূলে চলে এলে এই গোষ্ঠীটি গঠিত হয় বলে মনে করা হয়। উতুব (আরবি: العتوب ʿউতুব) হলো বহুবচন, এর এক বচন হ'ল উতবি (আরবি: العتبي আল-উতবি)। বাহরাইন ও কুয়েতের বর্তমান শাসক পরিবারগুলি এই গোষ্ঠীর শাসক।
শিয়া সাফাভিদরা ১৬৯৭ সালে ওমান আক্রমণে উতুবের সহায়তা চেয়েছিল; কিন্তু তারা পরাজিত হয় ইতোমধ্যে তারা বসরার নিয়ন্ত্রণের জন্য উসমানীয়দের সাথে অন্য একটি যুদ্ধে লিপ্ত ছিল।[১]
১৭১৭ সালে ওমানের সুলতান বাহরাইনে আক্রমণে উতুবদের সহযোগিতা চান।[২]
আরও দেখুন: বাহরাইনে বনি উতবাহ’র আক্রমণ
আহমেদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে খলিফা এবং সালামা বিন সাইফ আল বিন আলীর সাথে বনি উতবাহ অনেক উপজাতির নেতৃত্বে ১৭৮৩ সালে বাহরাইন আক্রমণ করে এবং জয়লাভ করে। তখন থেকেই খালিফা রাজবংশ বনি উতবাহ বাহরাইন শাসন করছে।
১৭ মে ১৭৮৩ তারিখে আল বিন আলীর বনি উতবা উপজাতি এবং নসর আল-মধকুর সেনাবাহিনীর মধ্যে হঠাৎ যুদ্ধ শুরু হয়। জুবারাহ মূলত আল বিন আলী বনি উতবাহ উপজাতির ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু ছিল, তারা জুবারাহ শাসন করত এবং জুবারাহর আদি প্রভাবশালী উপজাতি ছিল। ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ২ হাজার পারস্য সৈন্য বাহরাইনে পৌঁছে যায়; এরপরে তারা ১৭ মে ১৭৮৩ সালে জুবারাহ আক্রমণ করে। পরাজয় বরণ করার পরে পারস্যরা তাদের অস্ত্র প্রত্যাহার করে এবং তাদের জাহাজে ফিরে যায়। কুয়েত থেকে একটি উতুব নৌ বহর একই দিনে বাহরাইনে এসে মনামাকে জ্বালিয়ে দেয়। পারস্য বাহিনী আরেকটি আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে সেন্য সংগ্রহের জন্য মূল ভূখণ্ডে ফিরে আসে, তবে বাহরাইনে তাদের গ্যারিসনগুলি শেষ পর্যন্ত উতুবদের কাছে পযুর্দস্ত হয়।
এটি সর্বজনবিদিত যে এই যুদ্ধের কৌশলবিদ ছিলেন শেখ নসর আল-মধকুর; তার বাহিনীর পতনের পর তার তলোয়ার সালামা বিন সাইফ আল বিন আলীর হাতে পড়ে এবং তার বাহিনী পরাজিত হয়।
আল বিন আলী তরোয়ালটি তাদের কাছে রেখেছিলেন এবং এটি রাজা আবদুল আজিজ বিন ফয়সাল আল সৌদকে উপহার হিসাবে দেওয়ার আগ পর্যন্ত এটি পুত্র থেকে নাতির কাছে বংশানুক্রমিকভাবে চলে যেতে থাকে, বর্তমানে এটি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের বাদশাহ আবদুল আজিজ যাদুঘরে আছে।[৩]
১৭৮২ সালে আল বিন আলী এবং বাহরাইন ও বুশিরের শাসক নসর আল-মধকুরের সেনাবাহিনীর মধ্যে জুবারাহ যুদ্ধে মূল উতুব আল বিন আলী পারস্যদের বাহরাইন থেকে পরাজিত ও বহিষ্কার করেন। বনি উতবাহ বাহরাইনে এ সময়ে বর্তমান ছিল, গ্রীষ্মের মরসুমে সেখানে স্থির হয়ে খেজুর বাগানগুলি কিনেছিল।[৪]
১৮৩৭ সালের ৫ ই মার্চ আল বিন আলী তাদের নেতা ইসা বিন তারিফের নির্দেশে মোম্বাসা আক্রমণ করে, মাস্কাট ও ওমানের সুলতান সাইদ বিন সুলতান উপজাতিটিকে জাহাজ এবং অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে, ১২ মার্চ পর্তুগিজরা আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত উপর্যুপরি যিশু দূর্গে বোমা মারতে থাকে। দুর্গটি পর্তুগিজ সাম্রাজ্যের অধিনে কেনিয়ান এবং পর্তুগিজ সৈন্যদের দ্বারা শাসিত হতো।[4]
যিশু দূর্গ ১৫৯৩ সালে স্পেনের রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ (পর্তুগালের প্রথম কিং ফিলিপ) এর আদেশে নির্মিত হয় এরপর এটি পর্তুগিজ এবং স্পেনীয় রাজ্যের যৌথ অধিনে থাকে; এটি কেনিয়ার মোম্বাসার পুরাতন বন্দর রক্ষার জন্য মোম্বাসা দ্বীপে অবস্থিত ছিল। এটি একটি মানব মূর্তির আকৃতিতে নির্মিত হয়েছিল (আকাশ থেকে দেখলে), এবং যিশুর নামে নামকরণ করা হয়, ১৮৩৭ সালে শেখ ইসা বিন তারিফ আল বিন আলী আল উতবী দুর্গটি জয় করেন।
বাসরার কাফেলা ও শাত আল-আরবে বাণিজ্য জাহাজের উপর তাদের লুণ্ঠন করার অভ্যাসের কারণে উসমানীয়রা ইরাকের উম্মে কসর থেকে উতুবদের পূর্বপুরুষদের বহিষ্কার করে।[৫] এরপরে তারা কুয়েতে পাড়ি জমায়। ১৭৬০ এর দশকের দিকে উতুব জাতীর অন্তর্ভুক্ত আল জালাহমা এবং আল খলিফা গোষ্ঠী আধুনিক কাতারে জুবারাহতে চলে আসে এবং আল সাবাহকে কুয়েতের একমাত্র স্বত্বাধিকারী হিসাবে রেখে যায়।[৬] উপজাতি দুটি জুবারার পোতাশ্রয়ে একটি মুক্ত-বাণিজ্য বন্দর স্থাপন করে, তবে আল খলিফারা আল জালাহমার সাথে অর্থনৈতিক লাভ ভাগ করে নিতে অস্বীকার করে, তাই পরবর্তীতে তারা আল রুওয়াইসে চলে যায়। আল খলিফারা কাতারের আশেপাশের মুক্তোর তীরগুলি কুক্ষিগত করে।[৭]
তাদের ভিতরে ক্ষোভ দূরে রেখে আল জালাহমা এবং আল খলিফার উতুব উপজাতিরা আরও কিছু আরব উপজাতিদের সাথে নিয়ে একটি অভিযানে ১৭৮৩ সালে পার্সিয়ানদের বাহরাইন থেকে বহিষ্কার করে, যা ১৭৮২ সালে জুবারাহতে পারস্য আগ্রাসনের সময়ে কিছুটা অভিযান চালানো হয়েছিল।[৮]