বব উইলিস

বব উইলিস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
রবার্ট জর্জ ডিলন উইলিস
জন্ম(১৯৪৯-০৫-৩০)৩০ মে ১৯৪৯
সান্ডারল্যান্ড, কাউন্টি ডারহাম, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৪ ডিসেম্বর ২০১৯(2019-12-04) (বয়স ৭০)
সান্ডারল্যান্ড, কাউন্টি ডারহাম, ইংল্যান্ড
উচ্চতা৬ ফুট ৬ ইঞ্চি (১.৯৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৪৮)
৯ জানুয়ারি ১৯৭১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট১৬ জুলাই ১৯৮৪ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ২৬)
৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই৪ জুন ১৯৮৪ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬৯-১৯৭১সারে
১৯৭০-১৯৭৭এমসিসি
১৯৭২-১৯৮৪ওয়ারউইকশায়ার
১৯৭২/৭৩নর্দান্স ট্রান্সভাল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৯০ ৬৪ ৩০৮ ২৯৩
রানের সংখ্যা ৮৪০ ৮৩ ২,৬৯০ ৬১৫
ব্যাটিং গড় ১১.৫০ ১০.৩৭ ১৪.৩০ ৯.৪৬
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ০/২ ০/১
সর্বোচ্চ রান ২৮* ২৪ ৭২ ৫২*
বল করেছে ১৭,৩৫৭ ৩,৫৯৫ ৪৭,৯৯০ ১৪,৯৮৩
উইকেট ৩২৫ ৮০ ৮৯৯ ৪২১
বোলিং গড় ২৫.২০ ২৪.৬০ ২৪.৯৯ ২০.১৮
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৬ ৩৪
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ৮/৪৩ ৪/১১ ৮/৩২ ৭/৩২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩৯/– ২২/– ১৩৪/– ৮৪/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ মে ২০১৭

রবার্ট জর্জ ডিলন উইলিস, এমবিই (ইংরেজি: Bob Willis; জন্ম: ৩০ মে, ১৯৪৯ - মৃত্যু: ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯) ডারহাম কাউন্টির সান্ডারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। জন্মকালীন সময়ে তার নাম ছিল রবার্ট জর্জ উইলিস; কিন্তু বব উইলিস নামেই তিনি বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে সমধিক পরিচিত। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম ফাস্ট বোলার উইলিস ১৯৭১ থেকে ১৯৮৪ সময়কালের মধ্যে টেস্টএকদিনের ইংল্যান্ড দলের বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনেকবার। টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিকে ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি।

ডানহাতে আক্রমণাত্মক ভঙ্গীমায় দীর্ঘ দৌঁড়ের মাধ্যমে ফাস্ট বোলিং করে পরিচিত হয়ে আছেন। এছাড়াও, ঘরোয়া ক্রিকেটে সারে, ওয়ারউইকশায়ারনর্দার্ন্স ট্রান্সভালের হয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। উইজডেন কর্তৃপক্ষ ১৯৭৮ সালে তাকে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে ঘোষণা করে।[]

খেলোয়াড়ী জীবন

[সম্পাদনা]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বমোট উইকেট পেয়েছেন ৮৯৯টি। ব্যাটিংয়ে দূর্বল উইলিস প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দুইবার অর্ধ-শতক রানের কোটা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছেন। ২০.১৮ রান গড়ে লিস্ট এ ক্রিকেটে ৪২১ উইকেট পেয়েছেন।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি ৯০ টেস্টে অংশ নিয়ে উইকেট প্রতি ২৫.২০ রান দিয়ে ৩২৫ উইকেট লাভ করেছেন। তার এ সংগ্রহটি ঐ সময়ে বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় বোলার ডেনিস লিলি’র পর দ্বিতীয় স্থানে ছিল।[] বর্তমানে ইয়ান বোথামজেমস অ্যান্ডারসনের পর ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে তার বোলিং পরিসংখ্যানটি তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে হাঁটুর ব্যথায় ভুগতে থাকেন তিনি। সেজন্য দুইবার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে তাকে। এরফলে অবশ্য তার খেলোয়াড়ী জীবনের অগ্রযাত্রাকে রুখে দেয়া যায়নি।

অ্যাশেজ সিরিজ

[সম্পাদনা]

১৯৮১ সালের অ্যাশেজ সিরিজে তিনি তার নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৮/৪৩। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার এ বোলিং পরিসংখ্যান অদ্যাবধি অন্যতম সর্বকালের সেরা পরিসংখ্যান।[] সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ড দল ফলো-অনের কবলে পড়ে। তবে, ইয়ান বোথামের অপরাজিত ১৪৯ রান ও পরবর্তীতে তিনি ৮/৪৩ বোলিং পরিসংখ্যান গড়লে ইংল্যান্ড দল নাটকীয়ভাবে ১৮ রানে জয় পায়। অস্ট্রেলিয়া দলের দুই সদস্য ৫০০-১ ব্যবধানে বাজী ধরেছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো ফলো-অনে থাকার পরও জয়ের ঘটনা এটি। ২০০১ সালের পূর্ব-পর্যন্ত এ ঘটনা আর ঘটেনি।[]

বোলিংয়ে যথেষ্ট সফলকাম হলেও ব্যাটিংয়ে তেমন সফলতা পাননি তিনি। নিম্নসারির ব্যাটসম্যানরূপে তিনি তার সর্বোচ্চ রান তুলেছেন অপরাজিত ২৮* রান। একসময় টেস্টে সবচেয়ে বেশি অপরাজিত থাকার রেকর্ডও গড়েছেন তিনি।[] টেস্ট ক্রিকেটের পাশাপাশি একদিনের আন্তর্জাতিকেও সফলকাম ছিলেন তিনি। ৬৪টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়ে ৮০ উইকেট লাভ করেছেন উইলিস।

১৯৭৭ সালের শতবার্ষিকী টেস্টে অংশ নেয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টের প্রথম ইনিংসে তার বাউন্সারে রিক ম্যাককস্কারের চোয়াল ভেঙ্গে যায়।

অধিনায়কত্ব

[সম্পাদনা]
টানটনে বব উইলিস

১৯৮২ সালের জুন থেকে মার্চ, ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ড দলের টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে ইংল্যান্ড সাত জয়, পাঁচ পরাজয় ও ছয় টেস্ট ড্র করতে সক্ষম হয়েছিল। এছাড়াও, ১৬টি একদিনের আন্তর্জাতিকে তার দল জয় পেয়েছিল। তার ভূমিকার কথা স্মরণ করে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত অল-রাউন্ডার ইয়ান বোথাম বলেছেন, “তুখোড় চেষ্টাকারী, সেরা সহযোদ্ধা ও একজন উদ্দীপক হিসেবে তাঁর ভূমিকা অবিস্মরণীয়।”[] আমার সময়কালে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের মধ্যে একমাত্র বিশ্ব সেরা ফাস্ট বোলার ছিলেন উইলিস।[] উইজডেনের সম্পাদকীয় কলামেও একই কথার পুণরাবৃত্তি ঘটে। টেস্ট উইকেট প্রাপ্তিতে ইংল্যান্ড সেবা করার মানসিকতা তার চেষ্টার প্রতিফলন ঘটেছে। শারীরিক ব্যথাপ্রাপ্তি স্বত্ত্বেও দেশের জন্য তার বোলিংয়ের উপর আত্মবিশ্বাস হারাননি।[]

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ১৯৮৪ সালের টেস্ট সিরিজের মধ্য দিয়ে তার সফলতম টেস্ট জীবনের অবসান ঘটে। এরপর তিনি স্কাই স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকাররূপে দায়িত্ব পালন করেন। ইয়ান বোথামের সাথে জুটি গড়েছিলেন। পরবর্তীতে ২০০৬ সাল থেকে দ্বিতীয়সারিতে ধারাভাষ্যকাররূপে যোগ দিয়ে আসছেন।[][১০] ধারাভাষ্যকারের পাশাপাশি বই প্রকাশ করেছেন ও প্রায়শঃই ক্রিকেটের আধুনিক সংস্করণের তুখোড় সমালোচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখা যেতো বব উইলিসকে।[১১][১২]

৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ তারিখে স্বল্পকালীন সময়ের জন্যে থাইরয়েড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বব উইলিসের দেহাবসান ঘটে।[১৩][১৪]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Bob Willis – Wisden Cricketer of the Year 1978"Wisden Almanack। CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০০৯ 
  2. Playfair Cricket Annual। Queen Anne Press। ১৯৮৫। পৃষ্ঠা 228আইএসবিএন 0-356-10741-8 
  3. Miller, Andrew (২৯ জুলাই ২০০৯)। "Scattered stumps and hexed batsmen"। CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০০৯ 
  4. "In Depth | The Ashes"। BBC Sport। ১৫ জুলাই ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৩ 
  5. "Bob Willis – an assessment"। Wisden. CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০০৯ 
  6. Botham, p. 370.
  7. Botham, p. 376.
  8. Wisden Cricketers' Almanack। ১৯৮৫। পৃষ্ঠা 51। আইএসবিএন 0-947766-00-6 
  9. "Player Profile: Bob Willis"। CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০০৯ 
  10. "'Death seems a better option than listening to those zombies'"। CricInfo and Wisden। ১৮ আগস্ট ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০০৯ 
  11. Buckland, William (২০০৮)। Pommies: England Cricket Through An Australian Lens। Troubador Publishing Ltd। পৃষ্ঠা 179আইএসবিএন 1-906510-32-6 
  12. Biggs, Simon (৩ সেপ্টেম্বর ২০০৩)। "Ex-players call for reform"Daily Telegraph। London: Telegraph.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০০৯ 
  13. Powell, Nick (৪ ডিসেম্বর ২০১৯)। "Bob Willis: Former England cricket captain dies aged 70"Sky News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  14. "Bob Willis, legendary England fast bowler, dies aged 70"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৯ 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]

ওয়েবসাইটে

মুদ্রিত মাধ্যমে

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
কিথ ফ্লেচার
ইংরেজ ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৮২-১৯৮৩/৮৪
উত্তরসূরী
ডেভিড গাওয়ার