বম্বে | |
---|---|
পরিচালক | মণি রত্নম |
প্রযোজক | এস. শ্রীরাম মণি রত্নম ঝমু সুগন্ধ |
রচয়িতা | মণি রত্নম |
শ্রেষ্ঠাংশে | অরবিন্দ স্বামী মনীষা কৈরালা |
সুরকার | এ আর রহমান |
চিত্রগ্রাহক | রাজীব মেনন |
সম্পাদক | সুরেশ উরশ |
প্রযোজনা কোম্পানি | আলায়াম প্রোডাকশন্স |
পরিবেশক | আলায়াম প্রোডাকশন্স আইঙ্গারান ইন্টারন্যাশনাল |
মুক্তি | ১০ মার্চ ১৯৯৫ |
স্থিতিকাল | ১৩০ মিনিট[১] |
দেশ | ভারত |
ভাষা | তামিল |
বম্বে (তামিল: பம்பாய், বাংলা: মুম্বাই শহর) হচ্ছে ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি তামিল ভাষার চলচ্চিত্র। তামিল চলচ্চিত্র শিল্পের খ্যাতিমান পরিচালক মণি রত্নম দ্বারা পরিচালিত চলচ্চিত্রটি দুজন মানুষের মিষ্টি প্রেম কাহিনী দেখালেও এই চলচ্চিত্রের বিশেষত্ব হচ্ছে চলচ্চিত্রটি হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা নিয়ে, আর মূল অভিনেতা একজন হিন্দুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন এবং মূল অভিনেত্রী একজন মুসলিমের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।[২] চলচ্চিত্রটি ফিল্মফেয়ার সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার - তামিল জেতে, এছাড়াও অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রী পুরস্কার - তামিল জিতেছিলেন। চলচ্চিত্রটির গানগুলো জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো এবং এ আর রহমান শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার - তামিল জিতেছিলেন, পরিচালক মণি রত্নম পেয়েছিলেন সেরা তামিল চলচ্চিত্র পরিচালক বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের অযোধ্যায় বাবরী মসজিদ ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৩ সালের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত মুম্বাই শহরে হওয়া দাঙ্গা নিয়ে এই চলচ্চিত্রটির প্লট তৈরি করেন মণি রত্নম এবং এটি তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র যেটি ভারতের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ভেতরে প্রেম নিয়ে, এর আগে তিনি রোজা (তামিল, ১৯৯২) চলচ্চিত্র বানান এবং ১৯৯৮ সালে দিল সে.. চলচ্চিত্র মুক্তি পায় যেটি ছিলো হিন্দি ভাষার।[৩]
শেখর তামিলনাড়ুর একটি উপকূলীয় গ্রামে বসবাসকারী একজন রীতিশীল হিন্দু ব্যক্তি নারায়ণ পিল্লাই এর পুত্র। বম্বেতে অধ্যয়নরত সাংবাদিকতার ছাত্র শেখর তার পরিবারের সাথে দেখা করার জন্য তামিলনাড়ুতে আসে। তার এক প্রত্যাবর্তন ভ্রমণে, সে গ্রামের একটি মুসলিম মেয়ে শায়লা বানুকে লক্ষ্য করে এবং প্রথম দেখায় তাকে পছন্দ করে ফেলে। শায়লা শেখরের থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে, কিন্তু ঘন ঘন শেখরের সাথে দেখা হতে হতে সেও তাকে পছন্দ করে ফেলে।
শেখর শায়লাদের বাসায় যায় শায়লার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তবে শায়লার বাবা বশীর শেখরকে তাড়িয়ে দেয় ভিন্ন ধর্ম হওয়ার কারণে। শেখর তার বাবা পিল্লাইকে এসব কথা বললে পিল্লাই বশীরের সাথে ঝগড়া করে আসে। শেখর বম্বেতে চলে যায়। শায়লার এক বান্ধবীর কাছে শেখর চিঠি এবং বম্বের টিকিট পাঠায়। শায়লা প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা, বশীর শায়লার চিঠি পাওয়ার কথা জেনে যায় এবং শায়লার বিয়ের ব্যবস্থা করে। শায়লা এগুলো দেখে চিঠিতে লেখা ঠিকানা এবং বম্বের টিকিট নিয়ে বম্বেতে রওনা দেয়। বম্বেতে শেখরকে সে বিয়ে করে। কবীর নারায়ণ এবং কমল বশীর নামের দুই যমজ পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় শায়লা। যমজ দুইজনকে দুই ধর্মেরই শিক্ষা দেওয়া হয়। শেখর সাংবাদিক হিসেবে কাজ চালু রাখে আর শায়লা সংসারের কাজ করে। বিয়ের ছয় বছর পর তারা তাদের পরিবারের মধ্যে সমস্যার মিটমাট করার চেষ্টা করে।
১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর বাবরী মসজিদ ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে বম্বে শহরে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হয়, শেখর আর শায়লার দুই পুত্র দাঙ্গাবাজদের সামনে পড়ে যায় যদিও শেখর-শায়লা তাদের উদ্ধার করে। নারায়ণ পিল্লাই বম্বেতে দেখা করতে আসে শেখর আর শায়লাকে। পিল্লাই তাদের সঙ্গে থাকা শুরু করে। বশীরও তার স্ত্রীকে নিয়ে ঐ একই বাসায় ওঠে, পিল্লাই আর বশীর দুইজনেই তাদের নাতিদেরকে দেখে খুশী হয়।
১৯৯৩ সালের ৫ জানুয়ারীতে বম্বেতে আবার একটি হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হয়, শেখর-শায়লাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, পিল্লাই, বশীর আর তার স্ত্রী মারা যায়। শেখর আর শায়লার ছেলে দুটি হারিয়ে যায় যদিও পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়।