বারাবার গুহা ভারতের প্রাচীনতম টিকে থাকা পাথর-কাটা গুহা[১] । এটি ভারতের বিহারের গয়া জেলার অন্তর্গত বেলাগঞ্জ ব্লকে অবস্থিত। গয়া হতে ২৪ কিমি উত্তরে সম্ভবত মৌর্য সাম্রাজ্যের (৩২২-১৮৫ খ্রিস্টপূর্ব) সময় থেকে এ গুহাতে মানুষের করস্পর্শ পড়েছিল। এখানে অশোক এর কিছু শিলালিপিও পাওয়া গেছে।
বারাবার (চারটি গুহা) এবং নাগার্জুন (তিনটি গুহা) নামক যমজ পাহাড়ে এই গুহাসমূহ অবস্থিত । বারাবার পাহাড় থেকে ১.৬ কিমি দূরত্বে নাগার্জুন পর্বতের গুহাগুলি নাগার্জুনি গুহা হিসাবে চিহ্নিত । এই পাথর-কাটা কক্ষগুলি মৌর্যযুগের । সম্রাট অশোক (রাজত্ব কাল ২৭৩-২৩২ খ্রিস্টপূর্ব) এবং তাঁর পৌত্র দশরথ মৌর্য এবং খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে [২] বৌদ্ধরা নিজেদের ধর্মীয় সহনশীলতার নীতিতে বিশ্বাসী হওয়ায় এখানে বিভিন্ন জৈন বিভাগগুলিও বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়। [১]
গুহাগুলি বৌদ্ধধর্ম প্রতিষ্ঠাতা গৌতম বুদ্ধ,ও জৈনধর্ম প্রতিষ্ঠাতা [৩] শেষ এবং ২৪তম তীর্থঙ্করমহাবীর'এর সমসাময়িক মকখালি গোসালা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং অজীবিকাসম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীদের দ্বারা ব্যবহৃত হত । [৪] ঐ নির্মাণ-ভূমিতে বিভিন্ন পাথর-কাটা বৌদ্ধ এবং হিন্দু ভাস্কর্যও আছে।[৫]
বারাবারের বেশীরভাগ গুহাগুলি দুই কক্ষ নিয়ে তৈরি । সম্পূর্ণরূপে গ্রানাইট পাথরে খোদিত একটি অত্যন্ত মসৃণ আভ্যন্তরীন তলের সঙ্গে কক্ষগুলি যুক্ত। যেকোনও শব্দের উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিধ্বনি সৃজনের ফলে গুহাভ্যন্তর অদ্ভুত রহস্যমণ্ডিত মনে হয়। প্রথম কক্ষটি একটি বড় আয়তক্ষেত্রাকার প্রেক্ষাগৃহের ন্যায়; এটি মনে হয় উপাসকদের সমবেত হওয়ার জন্য ব্যবহৃত হত। দ্বিতীয়টি ছোট চক্রাকার গম্বুজের মত, সম্ভবত এটি পূজার জন্য ব্যবহৃত হত। আগে কখনো ভেতরের কক্ষটিতে একটি ছোট স্তূপ ছিল,কিন্তু এখন খালি। এই গুহাগুলি ইংরেজি লেখক ই এম ফর্স্টার রচিত এ প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া বইটিতে ভুলবশত মারাবার নামে বর্ণিত হয়েছে।
বারাবার পর্বতে চারটি গুহা রয়েছে, করণ চৌপর, ,লোমাস ঋষি এবং বিশ্ব জোপরি। সুদামা এবং ,লোমশ ঋষি গুহাগুলি ভারতে পাথর-খোদাই স্থাপত্যের প্রাচীনতম উদাহরণ,[২][৬]মৌর্য যুগের স্থাপত্য শিল্পের পুঙ্খানুপুঙ্খ সুক্ষ্মতা এর বৈশিষ্ট্য, যা পরবর্তী শতাব্দীতে স্থাপত্য শিল্পের এক অন্যতম ধারা হিসেবে বিকশিত হয়।[৭]মহারাষ্ট্র।মহারাষ্টেরঅজন্তা এবং কারলা গুহাগুলি।কারলা গুহাগুলিতে পাওয়া বড় বৌদ্ধ চৈত্যগুলির ন্যায় এগুলিও একই ধারার শিল্প, যা পরবর্তীকালে ব্যাপকভাবে দক্ষিণ এশীয় পাথর-খোদাই স্থাপত্যের ঐতিহ্যকে প্রভাবিত করে। [৪] বারাবার গুহাগুলিতে যে বিশালাকায় খিলানগুলি আছে তা প্রাচীন ইতিহাসে খুব কম দেখতে পাওয়া যায়।
বারাবার গুহাগুলি
বিহারের বারাবার পর্বতের গুহা মন্দিরের সাধারণ দৃশ্য।
বারাবার পর্বতে মৌর্য স্থাপত্য। লোমশ ঋষিরগ্রোত্ত 3rd century BCE.
সুদামা এবং লোমশ ঋষিগুহাগুলি একটি ১৮৭০ এর ছবি বারাবার,বিহারে
বারাবার গুহার এবং লোমস ঋষি গুহার প্রবেশপথের উচ্চতার পরিকল্পনা ,বারাবার,বিহার
লোমশ ঋষি গুহা: লোমশ ঋষি গুহার মুখ খিলানের মত আকৃতি,সমসাময়িক কাঠ স্থাপত্যের অনুকরণ। দরজার ওপর, স্তূপ প্রতীকের(নিদর্শন) দিকে একসারি হাতি এগিয়ে আসছে,চক্রাকার বরাবর স্তম্ভশীর্ষস্থ প্রধান কড়িকাঠ.[৮]
সুদামা গুহা: এই গুহাটি ২৬১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মৌর্য সম্রাট অশোক।অশোকের,দ্বারা নিবেদিত ছিল। সুদামা গুহার খিলানগুলি ধনুকাকার। গুহাগুলি একটি আয়তক্ষেত্রাকার মন্ডপ'এর সঙ্গে একটি চক্রাকার সমাধিকক্ষ রূপে গঠিত । [৯]
করন চৌপর :[১০] মসৃন মেঝের একক আয়তক্ষেত্রাকার কক্ষ নিয়ে গঠিত,সম্ভবত ২৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তারিখের শিলালিপি রয়েছে।
বিশ্ব: এখানে অশোক পদক্ষেপ/ সিঁড়ি দ্বারা পৌঁছান যায়, "এটি দুই আয়তক্ষেত্রাকার কক্ষ নিয়ে গঠিত,দুরারোহ পর্বতগাত্র কুঁদে তৈরি
IntroductionThe Cambridge Companion to E.M. Forster, by David Bradshaw, Contributor David Bradshaw, Cambridge University Press, 2007, আইএসবিএন০-৫২১-৮৩৪৭৫-৯. Page 188.